মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে চল্লিশ লক্ষ সূর্যের সমান ভরের একটি ব্লাকহোল পাওয়া গেছে। এর নাম স্যাগিটারিয়াস A* । ব্লাকহোলটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে। এই জায়ান্ট ব্লাকহোলটি গ্যালাক্সির একদম কেন্দ্রে অবস্থিত। কেন্দ্রীয় অন্ধকার এলাকায় যে কালো বৃত্তটি দেখা যাচ্ছে সেটি মহাশক্তিশালী গ্রেভিটেশনাল ফোর্স থেকে ত্বরণ্বিত উত্তপ্ত গ্যাস থেকে ছুটে আসা আলোর ঘূর্ণি। রিঙটি মূলত আমাদের নক্ষত্রের চারপাশে বুধ গ্রহের কক্ষপথের সমান। এটি প্রায় ৬০ মিলিয়ন কিমি বা ৪০ মিলিয়ন মাইল বিস্তারিত। এ ব্লাকহোলের ছবি তৈরি করেছে ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ কোলাবোরেশান( EHT)। ২০১৯ তারা সালে অন্য একটি গ্যালাক্সিতে আবিষ্কৃত Messier 87, or M87 নামক ব্লাকহোলের ছবি রিলিজ করে ইভেন্ট হরাইজন। আর এটি তাদের মুক্তি পাওয়া দ্বিতীয় ছবি। সেই বস্তুটি ৬.৫ বিলিয়ন সূর্যের ভর সম্পর্ন ছিল। কিন্তু এ ছবিটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আমাদের গ্যালাক্সির সুপারমেসিভ ব্লাকহোল।
EHT মূলত কী?
EHT হলো সারাবিশ্ব জুড়ে বিস্তারিত এন্টেনাগুলোর একটি অনন্য নেটওয়ার্ক যা ১০,০০০ কিলোমিটারব্যাপী ভার্চুয়ালি একটি টেলিস্কোপ তৈরি করে যা পৃথিবীর সমান প্রশস্ত। এই রেডিও ডিস নেটওয়ার্ক আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের জন্য প্রশিক্ষিত যেটি ২০১৫ সালে লঞ্চ করে। যার সাথে জড়িয়ে আছে পৃথিবীর ৮০ টি জ্যোতিবির্দ্যার ইনস্টিটিউট।
কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব?
সংজ্ঞা অনুসারে ব্লাকহোল থেকে আলো নিষ্ক্রিতি লাভ করেনা। কিন্তু EHT এ সমস্যাটি অন্যভাবে সমাধান করে। যখন ব্লাকহোলের খুব কাছাকাছি কোনো গ্রহ অথবা ধ্বংসাবশেষ আসে, ব্লাকহোলের ঘটনা দিগন্ত এগুলো চুষে নেয়। তারা মূলত গ্যাস ও ধূলিকণার উজ্জ্বল পটভূমিতে একটি ব্লাকহোলে সিলুয়েট শনাক্ত করে৷
স্যাগিটারিয়াস A* এর সাথে কী ঘটেছে?
মেঘের যে সকল বস্তু ব্লাকহোলের চারপাশে ঘোরে সেগুলোকে সুনির্দিষ্ট ব্যান্ডের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী দ্বারা শনাক্ত করা যায় যেটাকে মিলিমেট্রিক ওয়েব বলে, এটি টিভি স্যাটেলাইট ডিসের মতো একটি টেলিস্কোপ ব্যবহার করেই করা হয় তবে অনেক বিরাট।। পৃথিবী থেকে অনেক দূরের কোনো দূর্বল সংকেত শনাক্ত করার জন্য একে অনেক বিরাট হতে হয়। কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তিতে এত উচ্চ রেজুলেশনে কোনো রেডিওটেলিস্কোপ নেই। আর এজন্য জ্যোতির্বিদরা ইনফেরোমেট্রি ব্যবহার করে___যেখানে অসংখ্য রেডিও এন্টেনার সংযোগ ব্যবহার করা হয় যেগুলো একই বস্তু দেখার জন্য প্রশিক্ষিত। এটি বিস্তারিত বিবরণ তৈরি করতে পারে। জুমলেন্স ক্যামেরার মত।

কিন্তু এসব করে কী লাভ?
আমাদের মহাবিশ্বের গঠনপ্রকৃতি বোঝার জন্য স্যাগিটারিয়াস A* খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেটি আমাদেরকে সুপারমেসিভ ব্লাকহোলের দ্বিতীয় প্রমাণ প্রদান করে।আইনস্টাইনের রিলেটিভিটি এখনো ব্যাখ্যা করতে অক্ষম যে ব্লাকহোলের ভেতর একদম অসীম ক্ষুদ্রতর স্কেলে কী ঘটে। ব্লাকহোল তার পরিবেশগত কারণে অনেক চূড়ান্ত, বিশৃঙ্খল ও সংঘর্ষরত। কিন্তু EHT কে ধন্যবাদ কারণ আমরা এখন এ মৌলিক তত্ত্বের দিক গুলো পরীক্ষা করতে পারবো।
তথ্যসূত্রঃ
- Black hole: First picture of Milky Way monster,BBC
- Snapping a black hole: How the EHT super-telescope works, Physics org