সিলিকন কনশাসনেসকে আমরা স্যাপিয়েন্স কনশাসনেসের মতোই মিচিও কাকুর স্পেসটাইম থিওরি অনুযায়ী এক্সপ্লেইন করতে পারি। আমরা জানি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্টদেরকেও মানুষের ইমোশনের সাথে সমন্বয় করে তৈরি করা হচ্ছে যাতে করে স্যাপিয়েন্সদের সাথে তাদের বন্ডিং তৈরি হয়। অতএব মানুষ এবং রোবটের কনশাসনেসকে একই মডেলের আওতায় এক্সপ্লেইন করা যায়। কনশাসনেস হলো বিশ্বের মডেল তৈরির জন্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে চলমান একটি সিমুলেশন যেটি লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে মহাবিশ্বের মডেল তৈরি করে , কিন্তু প্রশ্ন হলো এলিয়েনদের কনশাসনেস কী রোবটদের মতোই মানুষের সাথে রিজোন্যাট হবে ? যদি এলিয়েনদের ইমোশন এবং ডেস্টিনি মানুষের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নরকম হয় তবে সেক্ষেত্রে কনফ্লিকশনের সম্ভাবনাই বেশি থাকে ! H.G ওয়েলস তার The World War সায়েন্স ফিকশনে দেখিয়েছেন কীভাবে মঙ্গল গ্রহ থেকে এলিয়েনরা পৃথিবীকে আক্রমণ করেছে ! এছাড়া বিগত সময়ে Earth vs. the Flying Saucers and Independence Day এর মতো এমন কয়েক হাজার ফিল্ম তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র এক্সট্রা- টেরিস্টিয়াল প্রাণীদের অস্তিত্ব নিয়ে যদিও এই মুভিটিতে বিশেষ করে দেখানো হয়েছে এলিয়েনরা দেখতে অনেকটা মানুষেরই মতো !
Institute for Advanced Study at Princeton এর পদার্থবিজ্ঞানী Dr. Freeman Dyson ২০০১ সালের এলিয়েন কনশাসনেসের উপর একটি মুভির কনসালটেন্ট ছিলেন। যখন তিনি ফাইনালি মুভিটি দেখেছিলেন তিনি এর চমকপ্রদ ইফেক্ট দেখে আনন্দিত হননি বরং তিনি আনন্দিত হয়েছিলেন এ জন্যেই যে এটি ছিলো এলিয়েন কনশাসনেস নিয়ে প্রথম মুভি যেখানে দেখানো হয়েছে এলিয়েনদের আশা, স্বপ্ন এবং লক্ষ্য মানুষ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ! ২০১১ সালে স্টিফেন হকিং বলেছিলেন, আমাদের এলিয়েনদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত যেটি সায়েন্টিক কমিউনিটিতে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে !
২০১১ সালে কেপলার স্যাটেলাইট সর্বপ্রথম আমাদের গ্যালাক্সি সম্পর্কে একটি পরিসংখ্যান দেখিয়েছিলেন। কয়েক হাজার নক্ষত্রের আলোকে বিশ্লেষণ করার পর বিজ্ঞানীরা প্রেডিক্ট করেন এদের ২০০ টির একটিতে মানুষের মতো দেখতে ইন্টিলিজেন্ট প্রাণীর অস্তিত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ক্যাপলার স্যাটেলাইট ক্যালকুলেট করেছে বিলিয়ন নক্ষত্রের মধ্যে Earth Like মানববান্ধব গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে। আমরা যখন বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের নক্ষত্রের দিকে তাকাই তখন হয়তোবা মহাকাশ থেকে অন্য কেউ ঠিক আমাদের দিকেও তাকিয়ে থাকে… ! ক্যাপলার স্যাটেলাইট এরই মধ্যে স্পেসে ২৫০০ Super Earth like এক্সোপ্লানেট (Exoplanet) আবিষ্কার করেছে যেগুলিতে মানব সভ্যতার মতো প্রাণীর বিকাশের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি ! ২০১৩ সালে নাসা ১২০০ আলোকবর্ষ দূরের কনস্টেলেসন লারাতে কেপলার স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আরও একটি এক্সোপ্লানেট আবিষ্কার করেন যেটি ছিলো পৃথিবীর টুইন ব্রাদার !
১৯৬০ সালে এস্ট্রোনোমার ফ্র্যাংক ড্রেক ভার্জিনিয়ার গ্রীন ব্যাংকের ভেতর Project ozma নামক একটি প্রজেক্টে ২৫ মিটার রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করেন যেটাকে বলা হয় Search for Extraterrestrial Intelligence বা SETI কিন্তু দুঃখ্যজনক ব্যাপার হলো এটি এলিয়েনদের কোন সিগনাল শনাক্ত করতে পারেনি। ১৯৭১ সালে নাসা Project Cyclops নামক আরও একটি প্রজেক্ট প্রস্তাব করেন যার খরচ ছিলো দশ বিলিয়ন ডলার যে প্রজেক্টে থাকবে ১৫০০ রেডিও টেলিস্কোপ। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত কনগ্রেস সেটা অনুমোদন করেন নি। কিন্তু আরও উন্নত মাপের একটি প্রস্তাবে তারা ফান্ডিং করেছিলেন আর সেটা ছিলোঃ ১৯৭১ সালে সর্বপ্রথম ১৬৭৯ বিট ইনফরমেশন সম্পন্ন একটি কোডেড মেসেজ Arecibo radio telescope নামক একটি দৈত্যাকার যন্ত্রে ট্রান্সমিট করা হয় যেটি 25,100 light-years দূরের গ্লোবুলার ক্লাস্টার M13 কে উদ্দেশ্য করে পাঠানো হয়। এটি ছিলো (মানব জাতীর প্রয়োজনীয় তথ্য সমৃদ্ধ) এলিয়েনদের উদ্দেশ্যে পাঠানো বিশ্বের সর্বপ্রথম Cosmic Greetings Card। যদিও বিজ্ঞানীরা এখনো এলিয়েনদের থেকে এই মেসেজের কোন রেসপন্স পায়নি। হতে পারে এলিয়েনরা মেসেজটি উপেক্ষা করেছে অথবা তারা আমাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়নি। মেসেজটির উত্তর পাওয়ার জন্য মানব সভ্যতাকে সম্ভবত 52,174 বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন ! কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন আমরা অযথাই এলিয়েনদের উদ্দেশ্যে আউটার স্পেসে আমাদের অস্তিত্বের এডভার্টাইজ দিচ্ছি , এলিয়েনদের ইনটেনশন না বুঝেই। তারা Messaging to ExtraTerrestrial Intelligence বা METI প্রজেক্টের ব্যাপারে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন আমাদের পৃথিবী থেকে এমনিতেই অজস্র রেডিও ও টিভি সিগনাল আউটার স্পেসে যাচ্ছে, আর এত বিপুল পরিমাণ সিগনালের মধ্যে আমাদের পাঠানো মেসেজটি খুব একটা পার্থক্য তৈরি করবেনা। এলিয়েনদের সাথে কমিউনিকেশনের জন্য সবচেয়ে মহান প্রজেক্টের নাম হলো SETI@home project। ১৯৯১ সালে University of California at Berkeley এস্ট্রোনোমাররা যে প্রজেক্টটি শুরু করেন যে প্রজেক্টটিতে মিলিয়ন মিলিয়ন অপেশাদার পিসির মালিকরা আর্মি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন এলিয়েনদের শিকার করার উদ্দেশ্যে। আপনার স্ক্রিন সেভার আকষ্মিক Arecibo radio telescope in Puerto Rico থেকে এলিয়েনদের ডাটা ক্রাঞ্চ করে ফেলবে। আর আপনি হবেন ইতিহাসের প্রথম কলম্বাস যিনি এলিয়েনদের সাথে প্রথম যোগাযোগকারী হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। ২৩৪’টি দেশের প্রায় 5.2 million ব্যবহারকারী ইতোমধ্যে এটিতে Sign Up করেছেন। এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগের জন্য এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কম্পিউটার প্রজেক্ট ! ড্রেক সমীকরণের মাধ্যমে ফ্র্যাংক ড্রেক আমাদের গ্যালাক্সিতে কয়েক হাজার অ্যাডভান্স সিভিলাইজেশনের সম্ভবনাকে অনুমান করেছেন আর অন্যদিকে কার্ল স্যাগান অন্য এক ধরণের গণনার মাধ্যমে যে সংখ্যাটিকে প্রেডিক্ট করেছেন তা ছিলো এক মিলিয়ন !
Dr. Seth Shostak কে একবার মিচিও কাকু প্রশ্ন করেছিলেন যদি এত বিপুল পরিমাণ অ্যাডভান্স সিভিলাইজেশনের অস্তিত্ব থেকে থাকে তবে তারা আমাদের সাথে কমিউনিকেশন করছেনা কেনো ? তিনি উত্তর দেন এর কারণ ফার্মিন প্যারাডক্স যেটি Enrico Fermi এর নামে অনুসারে নামকরণ করা হয়। নোবেল প্রাইজ প্রাপ্ত এ পদার্থ বিজ্ঞানী এটম বোমা তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন এবং এটমিক নিউক্লিয়াস তারই আবিষ্কার ! অনেক থিওরি মতে, তারকাদের মাঝখানে বিরাট মাপের দূরত্ব, আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী কেমিক্যাল রকেট নিকটবর্তী নক্ষত্রে যেতে সময় নেয় seventy thousand years ! সম্ভবত সে সকল নিকটবর্তী সিভিলাইজেশন প্রযুক্তিগতভাবে আমাদের থেকে মিলিয়ন বছর এগিয়ে। হতে পারে তারা নিউক্লিয়ার যুদ্ধে নিজেদের বহু পূর্বেই ধবংস করে দিয়েছে ! জন এফ কেনেডি একবার বলেছিলেন, “I am sorry to say there is too much point to the wise crack that life is extinct on other planets because their scientists were more advanced than ours.”
মিচিও কাকু বলেন, কল্পনা করুন, আপনি একটি গ্রামের রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন, আকষ্মিক একটি পিঁপড়ার পর্বত আপনার সামনে পড়লো, আপনি কী তাদেরকে বলবেন, Hello পিঁপড়া ! দেখো তোমাদের জন্য উপহার এনেছি, নেকলেস এনেছি, তোমাদেরকে নিউক্লিয়ার এনার্জি দেবো, স্বর্গ তৈরি করে দেবো, আমাকে কী তোমাদের লিডার হিসেবে নেবে ?
এবার মনে করুন, আপনি এন্টহিলের অপজিটে এইট লেনের একটি Super highway তৈরি করছেন, এখন পিঁপড়া কী জানে আপনারা একে অপরের সাথে কোন ফ্রিকোয়েন্সীতে কথা বলছেন ? তারা কী এটা জানে এইট লেনের সুপার হাইওয়ে আসলে কী জিনিস ? হতে পারে এলিয়েনরা আমাদের থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর এগিয়ে ! তারা এতটাই অ্যাডভান্স যে তাদেরকে আমাদের দেয়ার মতো কোন কিছুই নিই কিন্তু তারপরেও আমরা অহংকারের বশে চিন্তা করছি তারা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন মাইল অতিক্রম করে আমাদের সাথে দেখা করতে আসবে ! কিন্তু প্রশ্ন হলো এলিয়েনদের সাথে আমাদের ফাস্ট কন্ট্রাক্ট ঠিক কোথায় হবে ! কাকু বলেন এটি নিশ্চয় হোয়াইট হাইজ লনে ফ্লাইং শশারের মতো ল্যান্ডিং করবেনা SETI@home project এর মিলিয়ন মিলিয়ন পিসি ইউজারদের স্ক্রিনেই এলিয়েনদের অস্তিত্বের সংবাদ প্রথম আসবে অথবা SETI প্রজেক্ট এলিয়েনদের থেকে মেসেজের রিপ্লাই পাবে ! কাকু আরও বলেন, The conversations that we hear on the radio may give us valuable insight into this alien civilization. But most of the message will likely be gossip, entertainment, Music, etc., with little scientific content.
মিচিও কাকু Dr. Shostak কে প্রশ্ন করেছিলেন এলিয়েনদের সাথে ফাস্ট কন্ট্রাক্টের সংবাদ সরকার গোপন রাখবেন কিনা ? এটি কি পেনিক, রিলিজিয়াস হিস্টেরিয়া অথবা বিশৃঙ্খলার কারণ হবেনা ? তিনি বিষ্ময়করভাবে বলেন, না, তারা সরকার ও বিশ্বের সকল জনগনকে এলিয়েনের অস্তিত্বের সংবাদ জানাবেন ! পরবর্তী প্রশ্নটি ছিলো, এলিয়েনরা কীভাবে চিন্তা করে বা আমরা তাদের চিন্তাকে কীভাবে বুঝবো ? তিনি বলেন, To understand alien consciousness, perhaps it is instructive to analyze another consciousness that is quite alien to us, the consciousness of animals. We live with them, yet we are totally ignorant of what goes on in their minds.
অতএব আমরা দেখতেই পাচ্ছি আমরা যদি প্রাণীদের কনশাসনেসকে বুঝি তবে আমরা এলিয়েন কনশাসনেসকেও বুঝতে পারবো ! আমরা পেনফিল্ডের ডায়াগ্রামের ভেতর দিয়ে দেখবো যে পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রাণীর মস্তিষ্কের পেনফিল্ড ডায়াগ্রাম সম্পূর্ণ আলাদা, বা প্রাণীদের কনশাসনেসও মানুষের তুলনায় সম্পূর্ণ এলিয়েন… !
চিত্রঃ যেখানে এড হয়ে আপনি আপনার কম্পিউটারকেও এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগের জন্য আর্সিভো রেডিও টেলিস্কোপের সাথে কানেক্ট করতে পারেন ।
এলিয়েনদের কনশাসনেস কেমন ? পশুদের চেতনার মধ্যেই এলিয়েনদের চেতনার রহস্য লুকিয়ে আছে !
প্রাণীরা কী চিন্তা করতে পারে ? তারা ঠিক কীভাবে চিন্তা করে ? হাজার খ্রিষ্ঠাব্দ ধরে বিশ্বের মহান মস্তিষ্কগুলো এ প্রশ্নে জর্জরিত ! গ্রিক রাইটার এবং ইতিহাসবিদ Plutarch and Pliny উভয়েই এ প্রশ্নটি উপস্থাপন করেছেন যা আজও অমীমাংসিত ! এ নিয়ে একটি বিখ্যাত গল্প প্রচলিত আছে। একটি কুকুর যে তার মালিককে অনুসন্ধান করছে কিন্তু খোঁজ পাচ্ছেনা। ভ্রমণ করতে করতে সে একটি শাখা বিশিষ্ট রাস্তার মুখোমুখি হলো, যে রাস্তাটির তিনটি ডিরেকশন, প্রথমে সে ডানপাশের রাস্তাটাতে মনিবকে খোঁজ করলো এবং এদিক ওদিক তাকালো কিন্তু পেলোনা এরপর সে বাম পাশের রাস্তাটিতে প্রবেশ করলো এবং এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো তাও মনিবকে খুঁজে পেলোনা এবার সে সরাসরি কোনোদিকে না তাকিয়ে মাঝখানে রাস্তাটিতে প্রবেশ করলো, মনে হচ্ছিলো যেনো সে নিশ্চিত তার মনিব মাঝখানের রাস্তাটিতেই আছে। কুকুরটির মনে সত্যিকারার্থে কী চলছিলো ! অনেক মহান দার্শনিক এ প্রশ্নের যে উত্তর দিয়েছিলেন তা মোটেও সুবিধাজনক ছিলোনা। ফ্রেন্স দার্শনিক Michel de Montaigne বলেছিলেন সম্ভবত মাঝখানের রাস্তাটিই ছিলো More Probabilistic আর এখান থেকে তিনি সিদ্ধান্তে আসেন যে কুকুর Abstract Thinking করতে পারে ! কিন্তু তের শতকের দার্শনিক টমাস আকোইনাস বলেছিলেন, The appearance of abstract thought is not the same thingas genuine thinking. We can be fooled by superficial appearances of intelligence.
এর একশত বছর পর জন লক এবং জর্জ বার্কলের মধ্যে পশুদের কনশাসনেস নিয়ে মত বিনিময় হয়, জন লক সোজাসুজি বলে দেন, পশুদের কোনো এবস্ট্রাক্ট থট নেই। আবার অনেক দার্শনিক পশুদের উপর মানবিক কনশাসনেস আরোপ করেন এবং মনে করেন পশুরাও মানুষের মতোই চিন্তা করতে পারে। এটাকে বলা হয় mistake of anthropomorphism যেখানে মনে করা হয় পশুরা আমাদের মতোই চিন্তা ও আচরণ করে।
মিচিও কাকুর স্পেস-টাইম থিওরি অব কনশাসনেস থেকে আমরা জানি, পশুদের কনশাসনেসকে মানুষের থেকে আলাদা করা হয় তারা যে সকল প্যারামিটারের ভিত্তিতে বিশ্বের মডেল তৈরি করে তার সাথে মানবিক প্যারামিটারের পার্থক্যের উপর। ডেভিড ইগলম্যান বলেন, সাইকোলজিস্টরা এটাকে বলে “umwelt, ” যার অর্থ হলো পশুদের মহাবিশ্বের বোধ। তিনি বলেন অন্ধ এবং বধিররা টেম্পারেচার এবং বুট্রিক এসিডের গন্ধের জগতে বাস করে, ব্লাকগোস্ট ক্লিফেফিশদের বিশ্ব হলো ইলেক্ট্রিক্যাল ফিল্ড, প্রতিধ্বনির মাধ্যমে লোকেশন নির্ণয়কারী বাদুড়ের বিশ্ব air-compressed waves। এক্ষেত্রে আমরা কুকুরের কথাই বলতে পারি যারা গন্ধের ঘূর্ণাবর্তে বাস করে। তারা গন্ধের মাধ্যমেই তাদের খাদ্য ও বন্ধুদের খুঁজে বের করে। স্মেল বা গন্ধের মাধ্যমে কুকুর তার চারপাশে যা কিছু Exist করছে তার একটি Mental Map তৈরি করে ! কুকুর ঘ্রাণের মাধ্যমে বিশ্বের যে মেন্টাল ম্যাপ তৈরি করে তা আমাদের চোখ দিয়ে তৈরি মেন্টাল ম্যাপ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন যেটাকে বলা যায় Entirely Different set of Information ! ড.পেনফিল্ড আমাদের মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্সের ম্যাপ কনস্ট্রাক্ট করেছিলেন যেটি আমাদের দেহের বিকৃত ইমেজ প্রদর্শন করে। এবার যদি আমরা কুকুরের মস্তিষ্কের পেনফিল্ড ডায়াগ্রাম তৈরি করি তবে তবে দেখা যাবে তার মস্তিষ্কের প্রায় সম্পূর্ণটাই Sense of Smell এর জন্যেই ডেডিকেটেড কারণ তার জগতই Smell ! এবার যদি আমরা আউটার স্পেসের কোন এলিয়েনের মস্তিষ্কের পেনফিল্ড ডায়াগ্রাম তৈরি করি সেটি হতে পারে আমাদের জানা সকল ডায়াগ্রাম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা !
দূর্ভাগ্যবশত আমরা প্রাণীদের কনশাসনেসকে আমাদের নিজেদের মতো মনে করি যদিও তাদের বিশ্বদৃষ্টি আমাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কুকুর তার মনিবের শরীরের ঘ্রাণকে অনুসরণ করে রেসপন্স করে কারণ আমরা যেমন একে অপরের ইমেজ দেখে থ্রি-ডায়মেনশনাল স্পেসে মুভ করি, কুকুর ঠিক তেমনি মুভ করেনা, সে ঘ্রাণের মাধ্যমেই থ্রি-ডায়মেনশনাল স্পেসে তার ব্যক্তিগত অবস্থানকে ডিফাইন করে। আমরা কুকুরকে প্রভুভক্ত প্রাণী মনে করি, আমরা মনে করি কুকুর তার মালিককে প্রচন্ড সম্মান ও ভক্তি করে কিন্তু কুকুরের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ আলাদা। কুকুর Canis lupus নামক একপ্রকার বাদামী নেকড়ে থেকে বিবর্তিত হয়েছে, যারা তাদের গোষ্ঠীর সাথে দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে গোষ্ঠীর নির্দেশনা গুলো পরিপূর্ণভাবে মেনে শিকার করে। কুকুর আপনাকে মনিব মনে করেনা সে মনে করে আপনি তাদের গোষ্ঠীর আলফা মেল বা তার লিডার ! এক কথায় আপনি যে কুকুরটিকে প্রভুভক্ত মনে করেন সে আপনাকে তাদের দলের TOP DOG মনে করে ! কিন্তু অধিক ম্যাচিউর কুকুররা বুঝতে পারে যে আপনি তাদের দলের কেউ নই।
ষোল শতকের দার্শনিক Michel de Montaigne বলেন, যখন আমি আমার বেড়াল নিয়ে খেলা করি তখন আমি কীভাবে জানবো যে বেড়াল আমাকে নিয়ে খেলা করছেনা ? (“When I play with my cat, how do I know that she is not playing with me rather than I with her ? ”)। প্রশ্ন হলো আমি বেড়াল নিয়ে খেলছি নাকি সে আমাকে নিয়ে খেলছে ? গবেষণা বলছে বেড়ালরা বন্য বেড়াল থেকে বিবর্তিত হয়েছে, তাদের কোন লিডার নিই তারা নির্জন শিকারী অতএব বেড়াল আমার সাথে খেলছেনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই ! বেড়াল আমাকে নিয়ে খেলা করছে, আমি তার খেলার সামগ্রি !
বাদুড়ের কনশাসনেস সম্পূর্ণ ভিন্নরকম। তার সম্পূর্ণ মহাবিশ্বটাই শব্দ। চিঁ-চিঁ শব্দের ফিডব্যাক লুপের মাধ্যমে সে থ্রিডি ইউনিভার্সের বিভিন্ন অবজেক্টকে লোকেট করতে পারে, যদিও সে Blind কিন্তু সাউন্ডের মাধ্যমে তার মস্তিষ্ক তার জগতের কালার এবং টেক্সার তৈরি করে। পেনফিল্ড ডায়াগ্রাম দিয়ে তাদের মস্তিষ্কের যে ম্যাপ তৈরি করা হয় তা সম্পূর্ণ এলিয়েন। তাদের মস্তিষ্কের অধিকাংশ পার্ট তাদের কানে শোনার ক্ষমতার সাথে জড়িত বা তাদের পুরো ব্রেনটাই নিজেকে কানের জন্য Invest করেছে। ডলপিনের কনশাসনেস হিউম্যান কনশাসনেস থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এটি সোনারের (Sonar) উপর ডিপেন্ড করে। এর প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স ক্ষুদ্র, একটা সময় মনে করা হতো এটি ইন্টিলিজেন্ট, মূলত এ প্রাণীটিকে বুদ্ধিমান মনে হওয়ার কারণ হলো এর প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স ক্ষুদ্র হওয়ার কারণে গোটা মস্তিষ্ক প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্সের শূন্যতাটা পূরণ করতে চায় বা Compensation দেয়, এ জন্য এদের ব্রেন বিরাট বড়। আপনি যদি ডলপিনের নিউরো-কর্টেক্স Unfold করেন তবে এটি ছয়টি ম্যাগাজিনের পাতা Cover করবে। আর অন্যদিকে মানুষের নিউরো-কর্টেক্স Unfold করলে এটি দুটি ম্যাগাজিনের পাতা Cover করবে। ডলপিনের রয়েছে well-developed পেরিটিয়াল ও টেম্পোরাল কর্টেক্স যার দ্বারা তারা পানির ভেতরে sonar signals কে ডিফাইন করতে পারে ! অন্যকোনো প্রাণী আয়নায় নিজের চেহারাকে শনাক্ত করতে পারেনা কিন্তু ডলফিন পারে সম্ভবত এর কারণ তাদের এই Well Developed কর্টেক্স ! ডলফিনদের ব্রেন হিউম্যান ব্রেন থেকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে ডিজাইন করা কারণ মানব মস্তিষ্ক ডলফিন থেকে আলাদা হয়েছে ৯৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে। ডলফিনদের নাকের প্রয়োজন নিই তাদের ওলফ্যাক্টরি নার্ভ জন্মের পরপরই অদৃশ্য হয়ে যায়। কিন্তু মিলিয়ন বছর পূর্বে ডলফিনদের অডিটরি কর্টেক্স এক্সপ্লোডেড হয় কারণ তারা echolocation বা Sonar এর মাধ্যমে তাদের খাদ্যকে খুঁজে পেতে পারে। বাদুরদের মতোই তাদের জগত হলো Echo and Vibration। মানুষের সাথে তুলনা করলে ডলফিনদের লিম্বিক সিষ্টেমে মানুষের থেকে একটি এক্সট্রা লোব বেশি থাকে যেটাকে বলে প্যারালিম্বিক সিষ্টেম যার মাধ্যমে তারা সমাজের সাথে স্ট্রং বন্ডিং তৈরি করতে পারে !
এছাড়াও ডলফিনদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ইন্টেলেকচুয়াল ভাষা আছে। ডলফিনরা একে অপরের সাথে সোনার সিগনাল বা ভাইব্রেশনের মাধ্যমে যে শিশ বা মিউজিক সেন্ড করে সেটাকে রেকর্ড এবং কম্পিউটার দ্বারা এনালাইসিস করা হয়। বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ ছিলো যে তাদের এই র্যান্ডম সিগনালের মধ্যে ইন্টিলিজেন্ট প্যাটার্ন পাওয়া যাবে। যেমন ইংরেজি এলফাভেটের মধ্যে E সবচেয়ে কমন। বিজ্ঞানীরা এমন একটি এলফাভেটের লিস্ট তৈরি করেন যেগুলো অধিক ব্যবহার করা হয়। আপনি ইংরেজী যেকোনো বই কম্পিউটার দিয়ে এনালায়সিস করলেই দেখবেন কিছু এলফাভেট ফ্রিকোয়েন্টলি ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা কম্পিউটার পোগ্রামের মাধ্যমে ডলফিনদের ভাষা এনালাইসিস করেন। বিষ্ময়করভাবে তারা সেখানে ইন্টেলেকচুয়ালিটির প্যাটার্ন পেয়েছেন। অন্যান্য মামেলদের ক্ষেত্রে এই প্যাটার্নটি Break Down করে। সিগনাল ক্রমশ র্যান্ডম হয়ে যায়। এখন প্রশ্ন হলো এলিয়েনদের কনশাসনেস কেমন ? এলিয়েন কনশাসনেসকে অনুমান করার জন্য আমরা পশুদের কনশাসনেস নিয়ে আলোচনা করবো, হতে পারে পশুদের চেতনার মধ্যেই এলিয়েনদের চেতনার রহস্য লুকিয়ে আছে ! (হোমো ডিউস কনশাসনেস)
পরের পর্বগুলো-
তথ্যসুত্র-
THE ALIEN MIND |
1 So far, more than one thousand: Kepler Web Page, http://kepler. |
nasa.gov. |
2 In 2013, NASA scientists announced: Ibid. |
3 how they can distinguish false messages: Interview with Dr. |
Wertheimer in June 1999 for Exploration national radio broadcast. |
4 I once asked him about the giggle factor: Interview with Dr. Seth |
Shostak in May 2012 for Science Fantastic national radio broadcast. |
5 He has gone on record: Ibid. |
6 “Remember, this is the same government”: Davies, p. 22. |
7 The Greek writers: Sagan, p. 221. |
8 But St. Thomas Aquinas: Ibid. |
9 We can be fooled: Ibid. |
10 “If the fact that brutes abstract”: Ibid., p. 113. |
11 “In the blind and deaf world”: Eagleman, p. 77. |
12 we have to expand our own horizon: Interview with Dr. Paul |
Davies in April 2012 for Science Fantastic national radio broadcast. |
13 “My conclusion is a startling one”: Davies, p. 159. |
14 “Although there is only a tiny probability”: Discovery News, |
December 27, 2011, http://news.discovery.com/space/seti-to-scour– |
the-moon-for-alien-tech-111227.htm. |
CHAPTER 15: CONCLUDING REMARKS |
1 In an article in Wired: Wired, April 2000, http://www.wired.com/ |
wired/archive/8.04/joy.html. |
2 “several separate and unequal species”: Garreau, p. 139. |
3 “This techno utopia is all about”: Ibid., p. 180. |
4 “The idea that we are messin’ ”: Ibid., p. 353. |
5 “Technologies—such as gunpowder”: Ibid., p. 182. |
6 “The you that all your friends know”: Eagleman, p. 205. |
7 “Our reality depends on what”: Ibid., p. 208. |
8 “How it is that anything so remarkable”: Pinker, p. 132. |
9 somehow create a twin of the Earth: Interview with Dr. Stephen Jay |
Gould in November 1996 for Exploration national radio broadcast. |
10 “Homo sapiens is one small twig”: Pinker, p. 133. |
11 “nothing gives life more purpose”: Pinker, “The Riddle of Knowing |
You’re Here, ” Time: Your Brain: A User’s Guide (Winter 2011), p. 19. |
12 “What a perplexing masterpiece”: Eagleman, p. 224 |