Can't find our books? Click here!

প্যারালাল আমার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কত?

15 বিলিয়ন বছর আগে, মহাবিস্ফোরণের পরের মুহূর্তে সকল ম্যাটার ও এনার্জির গতি নির্দিষ্ট হয় যা এ মহাবিশ্বের রুপ লাভ করে, এমনকিছু ঘটেছিল তখন যা ছিল অসাধারণ! স্পেস-টাইম ফ্যাব্রিক নিজেই আলোর থেকে দ্রুত গতিতে সম্প্রসারিত হতে থাকে- যা ছিলো আইনস্টাইনের থিয়োরি অব রিলেটিভিটি অনুযায়ী অসম্ভব! থিয়োরি অভ রিলেটিভিটি অনুসারে, “Nothing” Travel Faster then Speed of Light _ বা লাইট অভ ওয়েভ থেকে দ্রুতগতিতে কোনোকিছুই পথ চলতে পারে না। যদি তাই হয়ে থাকে তবে Bigbang- এর মাধ্যমে কিভাবে স্পেস-টাইম আলোর থেকেও দ্রুত গতিতে সম্প্রসারিত হয়েছিল?

এর উত্তর মিচিও কাকু তার “Parallel World” গ্রন্থে দিয়েছিলেন, তিনি বলেন, মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে কোনোকিছুই ( Nothing Expand) সম্প্রসারিত হয়নি, আইনস্টাইন বলেছিলেন, আলোর থেকে দ্রুত গতিতে “কোনোকিছু ” পথ চলতে পারে না কিন্তু মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে আসলে “Nothing Travel করেছিল”  যা আসলে “কোনোকিছু” নয়___ অতএব আলোর থেকে দ্রুত “Nothing Expand” হচ্ছে! অন্যকথায় স্পেস-টাইমের ভেতর আসলে কোনোকিছু এক্সপেন্ড হচ্ছে না!

The ‘raisin bread’ model of the expanding Universe, where relative distances increase as the space (dough) expands. The farther away any two raisin are from one another, the greater the observed redshift will be by time the light is received. The redshift-distance relation predicted by the expanding Universe is borne out in observations, and has been consistent with what’s been known all the way back since the 1920s.
NASA / WMAP Science Team

কসমিক ইনফ্ল্যাশন আমাদেরকে এমন একটি মহাবিশ্বে রেখেছে যে মহাবিশ্ব আমাদের পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতার চেয়েও আরও অনেক অনেক অনেক বিশাল। এ ব্যাপারটি বোঝার জন্য আপনি একটি বেলুনের মধ্যে একটি বিন্দু অংকন করুন, যে বিন্দুটি আমাদের মহাবিশ্ব, এ বিন্দুর মধ্যেই আমাদের “Observable Universe!” এখানে রয়েছে দুই ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সি, দশ কোয়াড্রিলিয়ন ভিগিন্টিলিয়ন এবং একশ হাজার কোয়াড্রিলিয়ন ভিগিনটিলিয়নের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক অ্যাটম যা আমরা সাধারণত গণনা করে শেষ করতে পারব না। সম্পূর্ণ বেলুনটি আলোর চেয়েও দ্রুত গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে কিন্তু আপনি শুধুমাত্র একটি ক্ষুদ্র বিন্দুকে পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন, প্রকৃত ইউনিভার্স আপনার থেকে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে সরে গেছে, আসলে আপনি শুধু এ বিন্দুটিকেই জানেন, অ্যাক্সচুয়াল মহাবিশ্ব আপনার নিকট শুধু অজানাই (Unknown) নয়, অনন্তকাল আপনার নিকট এটি অজানাই (Unknowable) থেকে যাবে। আমরা যদি এ বিন্দু থেকে  সম্প্রসারিত বেলুনটির কিনারা খোঁজ করার জন্য আলোক তরঙ্গও ছুঁড়ে দেই, আলোকতরঙ্গ বেলুনের দূরবর্তী বিন্দুগুলো স্পর্শ করার জন্য অনন্তকাল ছুটতে থাকবে কিন্ত কোন কিনারা খুঁজে পাবেনা! এ ৪৬ আলোকবর্ষ রেডিয়াসের বিন্দুটিকে অতিক্রম করে আমরা আর কোনোকিছুই জানতে পারি না! কী আছে সেখানে? অন্য কোনো মহাবিশ্ব? সৌভাগ্যজনকভাবে, ইনফ্লেশনারী থিয়োরি আমাদের তাই বলছে, এখানে রয়েছে  ‘’মেগা ইউনিভার্স’’ !

The observable Universe might be 46 billion light years in all directions from our point of view, but there’s certainly more, unobservable Universe just like ours beyond that. Image credit: Wikimedia Commons users Frédéric MICHEL and Azcolvin429, annotated by E. Siegel.

আমাদের পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্ব ১৩.৮ বিলিয়ন বছরে আজ ৪৬ বিলিয়ন লাইট ইয়ার্স এক্সপান্ড হয়েছে। সে তার বয়সের তুলনায় অনেক অনেক দ্রুত গতিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। আমরা বেলুনের সারফেসে বসে থাকা একটি পিঁপড়া, ইনফ্লেশনের কারণে আমাদের নিকট মনে হচ্ছে আমাদের চারপাশ সমতল। এর আর একটি কারণ ডার্ক এনার্জি, ডার্ক এনার্জি স্পেসের প্রোপার্টি এবং একে টাইম থেকেও আলাদা করা যায়না, আজ থেকে এক মিলিয়ন বছর পূর্বে যে পরিমাণ ডার্ক এনার্জি ছিল এখনো ঠিক ততটুকু, এটি কখনোই হালকা হয় না, আর তাই ডার্ক এনার্জি স্পেস-টাইমের ভেতর দিয়ে মহাবিশ্বের সকল ডিরেকশনেই এই সম্প্রসারণকে ত্বরাণ্বিত করে চলছে যার ফলে এটি তার বয়সের তুলনায় বিলিয়ন বিলিয়ন গুণ এক্সপান্ড হয়ে গেছে, মহাকাশে এমন অনেক গ্যালাক্সি আছে যেগুলো থেকে এখনো আমাদের মহাবিশ্বে আলো এসে পৌঁছাতেই পারেনি, তারা আমাদের থেকে এতটাই দূরে আর এ জন্যই রাতের আকাশ অন্ধকার এটাকে আবার বেন্টলির্স প্যারাডক্স বলে যা ইনফ্লেশনারী থিয়োরির মাধ্যমে সলভ করা যায়! মূলত বেলুনের একটি বিন্দু আর একটি বিন্দু থেকে এত দূরে অপসারিত হয়েছে যে মাঝখানে অনেক জায়গা রয়েছে যেগুলোতে আলো আসার পর্যাপ্ত সময় পায় না, আর তাইতো এ মহাবিশ্বে অন্ধকারের অস্তিত্ব আছে !

Inflation set up the hot Big Bang and gave rise to the observable Universe we have access to, but we can only measure the last tiny fraction of a second of inflation’s impact on our Universe. Image credit: Bock et al. (2006, astro-ph/0604101); modifications by E. Siegel.

আজ যে আয়তনের মহাবিশ্বকে পর্যবেক্ষণ করছি এটি হলো সে মহাবিশ্ব যেটি ৪৬ বিলিয়ন লাইট ইয়ার্স ব্যাসার্ধে ছড়িয়ে গেছে, এমন কিছু আলো সঙ্গে করে যা এই মাত্র আমাদের চোখে প্রবেশ করেছে আর আমরা বুঝতে পেরেছি আমাদের পরিমাপের সীমারেখা। মূলত, আমাদের মহাবিশ্বের পর্যবেক্ষণের সীমারেখা পনের বিলিয়ন বছর। আমরা যদি আলোর গতিতেও ভ্রমণ করি তবুও আমরা ৪৬ বিলিয়ন লাইট ইয়ার্স দূরে যেতে পারব না কিন্তু তবুও আমরা ৪৬ বিলিয়ন লাইট ইয়ার্স দূরের গ্যালাক্সিগুলোকেও দেখি। কারণ তারা একসময় আমাদের অনেক নিকটে ছিল। আমাদের কাছে থাকাকালীন যে আলো তারা নিঃস্বরণ করেছিল তা এখনো আমাদের মহাবিশ্বের ঘটনা দিগন্তের দূরত্ব পনের বিলিয়ন বছরের মধ্যেই আছে কারণ গ্যালাক্সি গুলো যত দূরে অপসারিত হয়েছে, তাদের Wave length ততই বড় হয়েছে আর তারা ডফলার ইফেক্টের ফলে ততবেশি উজ্জ্বলতর হয়ে উঠেছে। মূলত Longer Wave Length- এর কারণেই আমরা এমন সব গ্যালাক্সিকেও দেখি, যারা আমাদের ইউনিভার্সের ঘটনা দিগন্ত থেকে বহু আগেই পালিয়ে গেছে। আর ৬৮ বিলিয়ন আলোক বছর দূরের কোনো গ্যালাক্সিকে আমাদের পক্ষে কোনোদিন দেখা সম্ভব না, তাদের আলো আমাদের মহাবিশ্বে আসার পূর্বেই আমরা ধবংস হয়ে যাব, আমরা যদি আলোর গতিতেও ভ্রমণ করি আমরা অনন্তকালেও একে অন্যকে স্পর্শ করতে পারব না , আমাদের নিকট স্পেসের এ সকল এলাকা চিরকাল অজানা থেকে যাবে, এই “Unobservable Universe”-এর ভেতর কখনোই আলোক তরঙ্গ গিয়ে পৌঁছাতে পারবে না। ___ আমরা অদৃশ্য হয়ে যাওয়া মহাবিশ্বকে দেখি?

এর মানে হলো যে, আমাদের পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বের বর্ডারের বাহিরে আরো অজস্র মহাবিশ্ব রয়েছে, যে মহাবিশ্বগুলো ইনফ্লেশনারী বলের কারণে এত দূরে অপসারিত হয়েছে যে, আলোকতরঙ্গ সেখানে ভ্রমণ করার সময় পাচ্ছে না।

বিগব্যাং- এর কিছু মডেল বলছে, যে ইনফ্লেশন সময়ের শুরুতে স্পেসকে প্রসারিত করেছে, সেটি অসীম সংখ্যক পকেট ইউনিভার্স তৈরি করেছে যা দুর্ভেদ্য ইনফ্ল্যাটেট স্পেস দ্বারা পৃথক। এ দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে মহাবিশ্ব ফ্র্যাক্টাল ড্রয়িং- এর মতো, এর রয়েছে গণনাতীত ফাটল। যে ফাটলগুলোতে পকেট ইউনিভার্স অবস্থান করে। সে সকল মহাবিশ্বে সময়ের রয়েছে অন্তহীন পুনরাবৃত্তি, প্রতিটি মহাবিশ্ব একে অন্যের চেয়ে একটু আলাদা। একটি ইউনিভার্সে যদি আমি হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে হাঁটি আর অন্য আর একটি মহাবিশ্বে আমি পরিধান করেছি সাদা পাঞ্জাবি, এভাবে প্রতিটি আলাদা আলাদা মহাবিশ্বে অনন্ত সংখ্যক আমি বাস্তবায়ন হয়ে আছে। এক একটি ইউনিভার্সে আমি যদিও অসম্পূর্ণ কিন্তু ম্যাটাভার্সাল আমি পরিপূর্ণ ও সম্পূর্ণ, এমন অনেক মহাবিশ্ব রয়েছে যেখানে আমি এখনো জন্মাইনি, এমন অনেক ইউনিভার্স আছে যেখানে আমি লুক স্কাই ওয়াকার!

প্যারালাল আমার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কত?

ইনফ্লেশন মূলত আমাদের যা বলছে তা হল, মহাবিশ্ব জন্মের পূর্বে খুবই উত্তপ্ত, ঘণ এবং সর্বত্র ম্যাটার ও রেডিয়েশনে পরিপূর্ণ ছিল না। এটি এমন একটি স্টেটে ছিল যা বিপুল পরিমাণ শক্তি দ্বারা শাসিত ছিল যে শক্তি স্পেসেরই একটি সহজাত বৈশিষ্ট্য; এটা ছিল ভ্যাকুয়াম এনার্জিরই একটি রুপ। তবে এটা বর্তমানের ডার্ক এনার্জির মতো নয়। যার ঘণত্ব খুবই কম ( যেটি স্পেসের প্রতি কিউবিক সেঃমি একটি প্রোটনের ঘণত্ব সমান), ইনফ্লেশনের সময় এনার্জির ঘণত্ব ছিল অনেক ভয়াবহ, যা আমাদের সাম্প্রতিক ডার্ক এনার্জি থেকে 1050 গুণ বেশি। ইনফ্লেশনের সময় মহাবিশ্ব আমাদের সাম্প্রতিক মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ থেকেও দ্রুতহারে সম্প্রসারিত হয়েছে। ম্যাটার ও রেডিয়েশন নিয়ে সম্প্রসারিত মহাবিশ্বের আয়তন বৃদ্ধি পায় যেখানে পার্টিকেলের সংখ্যা সমান আর এভাবে ঘণত্ব পতন হয়। যেহেতু শক্তির ঘণত্ব স্পেসের প্রসারণ এর সাথে জড়িত, সম্প্রসারণ একসময় স্থির হয়ে যায় কিন্তু এই এনার্জি স্পেসের সহজাত বৈশিষ্ট্য, এর ঘণত্ব একইরকম থেকে যায়, অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে মহাবিশ্ব দ্বিগুণ সম্প্রসারিত হয়। সময়ের সাথে সাথে এটা ডাবল হতে থাকে। সময়ের অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি ভগ্নাংশের ভেতর, অ্যাটম থেকেও ক্ষুদ্র একটি স্পেস আমাদের সাম্প্রতিক দৃশ্যমান মহাবিশ্বের থেকেও বিলিয়ন গুণ বড় হয়ে ওঠে । তাহলে আমরা এখন বলতে পারি, মহাবিস্ফোরণ আমাদের “Observable Universe” এর শুরু হলেও এটি স্পেস ও টাইমের শুরু নয়। মহাবিস্ফোরণের পূর্বে কসমিক ইনফ্লেশন নামক একটি প্রক্রিয়া চলমান ছিল। মহাবিশ্বে ম্যাটার ও রেডিয়েশন ছিল না। মহাবিশ্ব ছিল-

. এমন শক্তি দ্বারা পরিপূর্ণ যা স্পেসের ধর্ম।

. এটি কনস্ট্যান্টলি সম্প্রসারণ হয়েছিল, জ্যামিতিক হারে।

৩. এটি নতুন স্পেস এত দ্রুত তৈরি করেছে যে ১০-৩২ সেকেন্ডে প্লাঙ্ক ল্যাংথের মতো ক্ষুদ্র একটি এলাকাকে আমাদের Observable Universe এর আকারে পরিণত করেছে। মানে, প্রতি ১০-৩২ সেকেন্ডে ৪৬ বিলিয়ন আলোকবর্ষ থেকেও বিরাট স্পেস এক্সপেন্ড হয়েছে!

ইনফ্লেশন শুধু জ্যামিতিক নয় এটি অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন। ১০-৩৫ সেকেন্ডের টাইমস্কেলেই এটি ডাবল হয়ে যায়। যেমন- ১০-৩৪ সেকেন্ডে মহাবিশ্ব তার প্রাথমিক কন্ডিশন থেকে ১০০০ গুণ বৃদ্ধি পায়; ১০ -৩৩ সেকেন্ডে মহাবিশ্ব তার প্রাথমিক আকার থেকে ১০^৩০ গুণ বড় হয়ে যায়, ১০-৩২ সেকেন্ডে মহাবিশ্ব ১০^৩০০ গুণ বড় হয়ে যায় এন্ড সো অন।  এই এক্সপোনেনশিয়াল সম্প্রসারণ এই জন্য ক্ষমতাবান নয় যে এটি খুব দ্রুতগতিসম্পন্ন, এটি ক্ষমতাবান কারণ এটি অবিরাম।

আসলে এই ইনফ্লেইশন শুধু সময়ের অতি-ক্ষুদ্র একটি ভগ্নাংশে ঘটেনা যা মহাবিশ্বকে এক্সপোনেনশিয়ালি এক্সপান্ড করে চলছে । এ ঘটনা ১৩.৮ বিলিয়ন বছর ঘটছে। হিসেব করে দেখুন ১৩.৮ বিলিয়ন বছর সময়ে সময়ের কতগুলো ফ্র্যাকশন রয়েছে, আর সময়ের প্রতিটি ফ্র্যাকশনেই এক একটি প্লাঙ্ক ল্যাংথ এক একটি অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের আকার ধারণ করেছে, আর এভাবে আমাদের মহাবিশ্বের সাথে আরও বিলিয়ন বিলিয়ন স্পেসের পকেট এক্সপান্ড হয়েছে, জন্ম নিয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন ইউনিভার্স কারণ আমরা আগেই জেনেছি ইনফ্লেশন এ জন্য শক্তিশালী নয় যে , এটি অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন, ইনফ্লেইশনের মূলশক্তি হলো এটি চলমান, অবিরাম, অপ্রতিরোধ্য, শাশ্বত ।

১৩.৮ বিলিয়ন বছরকে সেকেন্ডে প্রকাশ করলে দাঁড়ায় ৪×১০^১৭ সেকেন্ড। যদি ১০-৩৫ সেকেন্ডেই এ মহাবিশ্ব অবজার্ভেশনাল ইউনিভার্স থেকেও বিরাট স্পেস তৈরি করে! তবে ১৩.৮ বিলিয়ন বছরে যত সংখ্যক প্লাঙ্ক টাইম আছে, সবগুলো প্লাঙ্ক টাইমে সে ঠিক কত সংখ্যক স্পেসকে ইনফ্লেট করেছে? এটা কী মারাত্মক ভয়াবহ আয়তনের মহাবিশ্ব নয়? এর মানে হলো, ১০^১০^৫০ সংখ্যক মহাবিশ্ব পাওয়া যাবে যেগুলো আমাদের মত একই প্রাথমিক অবস্থা থেকেই শুরু করেছে যা হয়তো আমাদেরই মতো। ১০^০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ সংখ্যক মহাবিশ্ব যা কল্পনা করা আমাদের পক্ষে খুবই কঠিন।

যদিও এ সংখ্যা অনেক বড় কিন্তু এটি আমাদেরকে পার্টিকেলদের সম্ভাব্য ইন্টারেকশন সম্পর্কে বর্ণনা করে। এই প্রতিটি মহাবিশ্বে ১০^৯০ পার্টিকেল আছে। ১৩.৭ বিলিয়ন বছরে আমাদের মতো হুবহু আর একটি মহাবিশ্ব পেতে হলে পার্টিকেলগুলোকে Exact ইন্টারেকশনে থাকতে হবে। ১০^৯০ সংখ্যক কোয়ান্টাম পার্টিকেল পরিপূর্ণ একটি মহাবিশ্বে ১০^১০^৫০ থেকেও অল্প সংখ্যক পসিবিলিটি আছে কিভাবে ১৩.৮ বিলিয়ন বছরে এ পার্টিকেলগুলো ইন্টারেক্ট করবে। আপনি যে সংখ্যা দেখবেন তা হবে ১০০০ বা 10^3! অথবা ১০০০ ফ্যাক্টোরিয়াল। যা আমাদের নিকট ১০০০ সম্ভাব্য সংখ্যক বিন্যাসের বর্ণনা দেয় যা যেকোন মুহূর্তে শৃংখলা পাবে। কিন্তু মহাবিশ্বে শুধুমাত্র ১০০০ পার্টিকেল নয়। এখানে রয়েছে ১০^৯০ পার্টিকেল। সবসময় দুটো পার্টিক্যাল ইন্টারেক্ট করছে, যাদের শুধু একটি আউটকাম নয়, কিন্তু সামগ্রিক আউটকামের একটি কোয়ান্টাম স্পেক্ট্রাম কাজ করছে। দুঃখ্যজনক ভাবে এখানে ১০^৯০ এর-  চেয়েও অধিক সম্ভাব্য আউটকাম আছে। মহাবিশ্বের পার্টিকেলদের সম্ভাব্য আউটকাম অসংখ্য গুগলপ্ল্যাক্স থেকেও বড়। এটি তুচ্ছ ১০^১০^৫০ থেকেও বড়। তার মানে যেকোনো মহাবিশ্বের পার্টিকেলদের সম্ভাব্য ইন্টারেক্টের প্রবণতা অসীম, ইনফ্লেশনের মাধ্যমে যত দ্রুত মহাবিশ্ব তৈরি হয় তার থেকেও বিশাল। আমরা যদি, সম্ভাব্য ফান্ডামেন্টাল কনস্ট্যান্ট, পার্টিকেল ও ইন্টারেকশনকে একপাশেও রাখি এবং এমনকি,  আমরা যদি ম্যানিওয়ার্ল্ড থিয়োরি যা এসব ফিজিক্যাল রিয়েলিটিকে ব্যাখ্যা করে সেটিকেও দূরে সরিয়ে রাখি, তারপরও মূল সমস্যা এই যে, এ ধরণের সম্ভাব্য আউটকাম এত দ্রুত তৈরি হয় , এটি এক্সপোনেনশিয়াল গতি থেকেও দ্রুতগতি সম্পন্ন , অসীম পরিমাণ সময় ইনফ্লেশন সংঘটিত না হলে, আমাদের মহাবিশ্বের সমরুপ কোন প্যারালাল মহাবিশ্ব আর কোথাও পাওয়া যায় না! তার মানে বুঝতে পারছেন, আপনার মতো আর একটি সত্ত্বা এ মাল্টিভার্সে কত দূর্লভ?

স্ট্যান্ডফফোর্ড ইউনিভার্সিটির আন্ড্রেই লিন্ডে বলেন, ইনফ্লেইশন মূলত অসীম সংখ্যক ইউনিভার্স জন্ম দেয়। একবার ইনফ্লেইশন শুরু হওয়ার পর, এটি আর শেষ হয় না। গুথ বলেন, যে এলাকায় এটি শেষ হয়, একপ্রকার ক্ষয়ের মাধ্যমে তা এটিকে স্থিতিশীল করে তোলে, স্পেস ও টাইম খুব শান্তভাবে আমাদের মহাবিশ্বের মতো একটি মহাবিশ্বে স্ফিত হয়। অন্যত্র স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়াসলি জ্যামিতিক হারে এক্সপান্ড হতে থাকে, অনন্তকাল বাবল তৈরি করতে থাকে। প্রতিটি স্পেস-টাইম বাবল ভিন্ন ভিন্ন প্রাথমিক কন্ডিশন থেকে বৃদ্ধি পায়, যারা বৈচিত্র্যময় শক্তিক্ষয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। কিছু বাবল এক্সপান্ড হয় আবার কিছু বাবল সংকুচিত হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে “Eternally Inflating Multiverse” সর্বত্র শক্তির নিত্যতা সূত্র, স্পিড অব লাইট, থার্মোডায়মামিক্স, জেনারেল থিয়োরি সভ রিলেটিভিটি ও কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স মেনে চলে। কিন্তু এ সকল “ল” যে সকল কনস্ট্যান্ট নিয়োগ করে সেগুলো র‍্যান্ডমলি একটি বাবল থেকে অন্য আর একটি বাবলে পৃথক।

হরাইজন প্রবলেম:

ইনফ্লেইশনের মাধ্যমে আমরা দিগন্তের সমস্যা সমাধান করতে পারি। মনে করুন, মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে না। এবার মনে করুন, প্রাথমিক মহাবিশ্ব থেকে আপনি একটি ফোটন ছেড়ে দিয়েছেন যেটি পৃথিবীর উত্তরমেরুর দিকে মুক্তভাবে ভ্রমণ করছে। এবার কল্পনা করুন যে আরো একটি ফোটন একইসময় রিলিজ করা হয়েছে প্রথমটির বিপরীত দিকে যেটি দক্ষিণ মেরুতে ভ্রমণ করছে। এই দুটি ফোটন কি তাদের যে সময় ছেড়ে দেয়া হয়েছিল সে সময় থেকে কোন ইনফরমেশন আদান প্রদান করতে পারবে? অবশ্যই না! কারণ একটি ফোটন থেকে আর একটি ফোটনে তথ্য যেতে যে সময় প্রয়োজন হবে তা মহাবিশ্বের বয়সের ভিন্ন ভিন্ন সময়।

কার্যকারণগতভাবেই দুটি ফোটন ডিসকানেক্ট হয়ে যাবে। তারা একে অপরের নিজস্ব  ঘটনা দিগন্ত থেকে আলাদা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা দেখেছি দুটি ফোটন একে অপরের সাথে অপজিট ডিরেকশন থেকেই কমিউনিকেট করে কারণ Cosmic Microwave Background Radiation সকল দিকে যথাযথভাবেই সমান। এ সমস্যাটি একটি ধারণার মধ্য দিয়ে সমাধান করা যায়। আর তা হলো, মহাবিশ্ব প্লাঙ্ক টাইমের ভেতরেই মহাবিস্ফোরণের ভেতর দিয়ে বিরাট মাত্রায় সম্প্রসারিত হয়ে যায় আর এ জন্য সম্পূর্ণ মহাবিশ্বে আমরা কার্যকারণগত সম্পর্ক বা ক্যাজুয়াল কন্ট্যাক্ট ও সাধারণ তাপমাত্রা দেখতে পাই। যে সব এরিয়া আজ সুবিস্তৃতভাবে একে অন্যের চেয়ে পৃথক সেগুলো এক সময় পরস্পর পরস্পরের কাছাকাছি ছিল। আর এ থেকেই আমরা বুঝতে পারি কেনো এ সব এলাকার ফোটনের মধ্যে একই টেম্পারেচার দেখা যায়।

কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশন:

ফোলানোর পূর্বে একটি বেলুন চুপসে থাকে। ঐ চুপসে থাকা বেলুনে আমি যদি E=MC2 অথবা রাইম্যানের মেট্রিক টেন্সর  লিখে রাখি তাহলে বেলুনটি কুচকে থাকার কারণে আপনি সেই মেসেজটি পড়তে পারবেন না বা ব্লার হয়ে যাবে। যখনই আমি বেলুনটি ইনফ্লেট বা ফোলাব তখনই এ মেসেজটি আপনার কাছে রিডেবল হয়ে উঠবে। এ থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে,  ইনফ্লেশন আসলে কুচকে যাওয়া স্পেসের কোনো বেলুনের ভেতরই ঘটেছে যা হয়তো অ্যাটম থেকেও ক্ষুদ্র বা হয়তো প্লাঙ্ক ল্যাংথের সমান। একটি হাইড্রোজেন অ্যাটমের মধ্যেই ১০ ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন প্লাঙ্ক ল্যাংথ রাখা সম্ভব। অ্যাটম যদি পৃথিবী হয় তবে প্লাঙ্ক ল্যাংথ পৃথিবীর একটি কণার সমান! এত ক্ষুদ্র একটি স্পেসের ভেতর নিশ্চয় আপনি কোন মেসেজ রিড করতে পারবে না? তারমানে ইনফ্লেশন ঘটেছে মাইক্রোস্কোপিক এরিয়ায় এবং এ ক্ষুদ্র কুচকে থাকা স্পেস বা প্রাথমিক বেলুনটি হয়তো প্রসারিত হয়ে উঠেছে মাইক্রোস্কোপিক লেভেল থেকে, আর মেসেজটিও রিডেবল হয়ে উঠেছে! সে মেসেজটি ছিল সম্ভবত দুই ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সি এবং পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্ব কিন্তু ১৩.৮ বিলিয়ন বছরে এটি এত এত বিলিয়ন লাইট ইয়ার্স এক্সপান্ড হয়েছে যে আমরা যদি আলোর গতিতেও ছুটি তাকে পিছনে ধাওয়া করে স্পর্শ করতে পারব না!

একই পদ্ধতিতে আমরা কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশনকেও দেখতে পারি, যা ইনফ্লেশনের শুরুতে সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা জানি, মাইক্রোস্কোপিক লেভেলে কোয়ান্টাম অনিশ্চয়তা এবং ফ্লাকচুয়েশন একটিভেট হয়ে উঠে আর তাই প্রায় প্লাঙ্ক স্কেলের সমান সেই কুচকে থাকা বেলুনও ছিল কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশন এর একটি হোস্ট ! ইনফ্লেইশনের যুগে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ একটি বিশাল মাইক্রোস্কোপ হিসেবে কাজ করে যা কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশন বা দোদুল্যমানতা বৃদ্ধি করে যা ১০-২৮cm এর সাথে সম্পৃক্ত, কসমোলজিক্যাল দূরত্ব। আর এখান থেকেই মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড (Hotter and Colder Region) রেডিয়েশন এবং গ্যালাক্সির ডিস্ট্রিবিশন তৈরি হয়। ক্লাসিক্যাল ফিজিক্স অনুসারে, ইনফ্লেইশনারী মহাবিশ্ব হোমোজিনিয়াস। স্পেসের প্রতিটি বিন্দু এখানে একই পদ্ধতিতে বিবর্তিত হয়। যাইহোক, কোয়ান্টাম আনসার্টেইনটি প্রাথমিক কন্ডিশনে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি করে। এ অনিশ্চতা থেকে যে ভেরিয়েশন তৈরি হয় তা স্থানিক বিন্দুগুলোর ভেতর কিছুটা তারতম্য তৈরি করে, ফ্ল্যাকচুয়েশন যখন অ্যামপ্লিফায়েড হয় তখন স্পেসের এক একটি স্থানে ম্যাটারের ঘণত্বের মধ্যে তারতম্য তৈরি হয়, যেখানে ঘণত্ব অপেক্ষাকৃত বেশি সেখানে গ্রেভেটি প্রভাবশালী হয়ে ও ঠে, এবং সে এলাকার বস্তুগুলো সংকুচিত হয়ে গ্যালাক্সি তৈরি হয়। আপনি যদি একটি বেলুনের উপর পিঁপড়ে ছেড়ে দিয়ে সেটিকে ফোলান পিঁপড়াটি বেলুনের চারপাশের বক্রতা অনুভব করতে পারবে না, আমরাও ইনফ্লেশনের মধ্যে ফুলে ওঠা একটি বেলুনের সারফেজে । বেলুনটি স্পিড অভ লাইট থেকেও দ্রুত গতিতে ফুলেছে  কিন্তু আমরা এতটাই ক্ষুদ্র যে আমাদের নিকট  বেলুনটিকে ফ্ল্যাট মনে হয়েছে। আর এভাবেই আমরা ফ্ল্যাটনেস প্রব্লেম মিমাংসা করতে পারি।

প্রাথমিক মহাবিশ্বে কোয়ান্টাম অনিশ্চয়তার দাগঃ

২০০১ সালে WMAP স্যাটেলাইট কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন ডিটেক্ট করতে সক্ষম হয়, তারা টেম্পারেচার এর মধ্যে তাপমাত্রার এ তারতম্য দেখতে পায়। পরিসংখ্যাণিক ডেটার সাথে থিয়োরিক্যাল গণনা মিলিয়ে দেখা যায় যায় যে, এ দুটো ক্যালকুলেশন একতা প্রদর্শন করেছে। নিচের ছবিতে লাল এবং নীল বিন্দু গরম ও ঠান্ডা তাপমাত্রার প্রতিনিধিত্ব করছে। ___ইনফ্লেইশন এন্ড প্যারালাল ইউনিভার্স

প্যারালাল আমার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কত?

তথ্যসুত্রঃ

আর একজন আমার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কত?

প্যারালাল আমার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কত?

প্যারালাল একজন আমার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কত?

প্যারালাল একজন আমার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কত?

প্যারালাল আমার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কত?