অনেকে ভাবতে পারেন সঙ্গীকে অপমান, তিরস্কার ও শারীরীকভাবে শাস্তি দিয়েও কেউ যৌন সুখ পায়? উত্তর, হ্যাঁ পায় এবং এটা সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর। যাইহোক, আমরা কনসেপ্টটি বোঝার পূর্বে “BDSM” নামক এই সংক্ষিপ্ত রূপটির মিনিং জেনে নেই:
B= Bondage,
D= Dominance,
S=Submission and Sadism,
M= Masocism
BDSM কীভাবে কাজ করে? প্রথমত, বন্ডেজ হলো, আপনি যার সাথে সেক্স করবেন তার ফিজিক্যাল মুভমেন্টের ওপর সীমাবদ্ধতা প্রদান। উদাহরণস্বরূপ, যেমন তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা, হ্যান্ডকাফ লাগানো ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, ডিসিপ্লিন। যেই সঙ্গী ইন্টারকোর্সের সময় লিডিং রোলসে থাকবে তার পক্ষ থেকে প্রদত্ত নিয়ম মেনে চলা এবং নিয়মভঙ্গের জন্য স্বেচ্ছায় শাস্তি মেনে নেয়া। তৃতীয়ত, ডোমিন্যান্স। সেক্সের সময় অথবা রুমের বাহিরে সঙ্গীর ওপর ডোমিন্যান্স প্রদর্শন করা। চতুর্থত, সাবমিশন। ডোমিনেন্ট সঙ্গীর কাজ ও ইচ্ছাকে অনুসরণ করা। পঞ্চমত, স্যাডিজম এবং ম্যাসোসিজম অথবা স্যাডোম্যাসোসিজম।
স্যাডিজম হলো প্রেমিকাকে ব্যাথা, অস্বস্তি ও নিপীড়ন করা। এজন্য প্রেমিকাকে স্প্যাঙ্কিং, ফ্লগিং, ক্যানিং, বাইটিং অথবা অন্য কোনো “BDSM” টুলস দিয়ে আঘাত করা হয়। স্পেঙ্কিং করার সময় সঙ্গী বিভিন্ন টুলস দিয়ে আঘাত করা হয়, তার দেহের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন টুলস দিয়ে টর্চার করা হয়। ফ্লোগিং করার জন্য ফ্লোগ নামক একপ্রকার টুলস ব্যবহার করা হয়।
“BDSM” এর অনেকগুলো প্রকারভেদ আছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঙ্গীকে অন্য কোনো চরিত্রে রোল প্লে করতে বলা হয় অথবা সেনসরি ডেপ্রিভেশন তৈরি করা হয়। “BDSM” নারী ও পুরুষ দুজনেরই সম্মতিক্রমে ঘটে। দীর্ঘসময় এ ধরনের শারীরীক ও মানসিক নির্যাতনের পর দুজনের মধ্যে যে প্লেজার তৈরি হয় সেটাকে বলা হয় ম্যাসোসিজম। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৪৭% নারী ও ৬০% পুরুষ তার সঙ্গীকে সেক্সচুয়াল ইন্টারকোর্সের সময় ডোমিনেট করতে চায়।
গবেষকরা দেখিয়েছিলেন BDSM অ্যাকটিভিটিজ আমাদের মস্তিষ্কে এন্ডোরপিন ট্রিগার করে, যেটি একটি ন্যাচারাল অপিওয়েড, যেটি আমাদের মাঝে সুখ ও কল্যাণ অনুভূতি তৈরি করে। এটি আমাদের মাঝে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে এবং এখান থেকে তারা যে আনন্দ পায়, তা তাদের আরও বেশি BDSM প্রাক্টিস করতে অনুপ্রাণিত করে। আমরা এ ধরনের যৌন আচরণ করে থাকি মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সিস্টেমকে বৈচিত্র্যতা প্রদান করার জন্য। যেন আমাদের মস্তিষ্ক এক্সট্রিম ও আনএক্সপেক্টেড রিওয়ার্ড অর্জন করতে পারে, আমাদের মস্তিষ্কের ফ্যান্টাসিগুলো দূর হয়।
বিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের পূর্বসূরী অতীতে প্রজনন ও সঙ্গী নির্বাচনের জন্য আমরা ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অনুসরণ করেছিলাম। সমাজে কিছু কিছু মানুষ ছিল প্রভাবশালী আর অন্যরা ছিল আনুগত। প্রভাবশালী পুরুষরা অধিক সংখ্যক সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে সমর্থ ছিল। আর অন্যদিকে, যে সকল মানুষ আনুগত ছিল, তারা কেবল তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছিল এবং আনুগত্যের ভূমিকা পালন করেই তারা তাদের যৌন সন্তোষ উপভোগ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, একজন আলফা পুরুষ অসংখ্য নারী দখল করেছিল এবং সেক্সচুয়াল ইন্টারকোর্সের সময় সে ছিল ডোমিনেট।
কিন্তু BDSM নারী ও পুরুষ দুজনকেই তাদের রোলস পরিবর্তন করার সুযোগ দেয়। তাদের ভেতরের অবদমিত ও সুপ্ত ইচ্ছাকে প্রকাশ করার অনুমোদন দেয়। এটি নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের ভেতর অবদমিত সমতা ও ন্যায়ের অনুভূতিকে প্রকাশ করে, এটাকে দেখা যেতে পারে, সম্মতিক্রমে মডারেট পর্যায়ের ধর্ষণ।
তার মানে দেখা যাচ্ছে, নারী ও পুরুষ দুজনের মাঝেই একে অন্যকে ডোমিনেট করার একটি সহজাত প্রবণতা আছে। মস্তিষ্কের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে গাঁজার নেশা বা অপিয়েড তৈরি করার জন্য এটি খুবই ইফেক্টিভ, যেটি আমাদের মধ্যে পজেটিভ অনুভূতি ও মঙ্গল চিন্তা বুস্ট করে।
আর পড়ুন:
- নষ্ট মেয়েদের যৌন সুখ দেয়ার উপায়?
- প্রেমিকাকে গোপন ফ্যান্টাসি কীভাবে শেয়ার করব?
- নারী কেন জনি সিন্সকে ভয় পায় আর পুরুষ কেন পুলিশে বিশ্বাস করে না?
Reference:
- The Potential Benefits of a BDSM Relationship
- BDSM: pathological or healthy expression of intimacy?
- Healthy BDSM Relationships Are Possible