সেপিয়েন্সরা আধুনিক প্রযুক্তির তৈরি সময়ে প্রবেশ করেছে মাত্র দুইশত বছর পূর্বে আর তারও আগে তারা কৃষিকাজ করতো, তাদের কৃষি জীবনের দৈর্ঘ ছিলো মাত্র দশ হাজার বছর, ১০২০০ বছর অতীতে সেপিয়েন্সদের রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, ইন্টারনেট অথবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স কিছুই ছিলোনা, তারা জব বা ব্যবসা সম্পর্কে কোনো ধারণা রাখতো না, ১০২০০ বছর পূর্বে প্রযুক্তি ছিলো আমাদের চেতনার আড়ালে আর আমরা যাপন করেছিলাম শিকারী সংগ্রাহকের জীবন সে জীবনের দৈর্ঘ এতটাই বিশাল ছিলো যে ১০২০০ বছর সে বিরাট দৈর্ঘের সময়ের কাছে একটি ন্যানোসেকেন্ড হয়তো!এত অল্পসময়ের মধ্যে সেপিয়েন্সদের মধ্যে জিনগত কোনো পরিবর্তন ঘটেনি বললেই চলে। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে সেপিয়েন্সদের আচার,আচরণ ও মানসিক প্রবণতা গুলি তৈরি হয়নি এগুলির অধিকাংশ তৈরি হয়েছে ১ লক্ষ বছর অতীতের দীর্ঘ সে সময়ের কারাগারে এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীর দুটোই অভিযোজিত হয়েছে আজ থেকে ৭০ হাজার বছর পূর্বের শিকারী সংগ্রাহক জীবনে যে তথ্যগুলি এখনো আমাদের জিন আমাদের শরীরে বহন করছে, বহন করছে আমাদের মস্তিষ্ক।আমাদের অধুনিক মনস্তত্ব,খাদ্যভ্যাস অথবা আচরণের প্রায় সবটাই Post Modern সময়ের সাথে আমাদের শিকারি সংগ্রাহক মস্তিষ্কের যুগ যুগান্তর ধরে ক্রিয়াশীল মিথস্ক্রিয়ার ফলাফল! তখন কম্পিউটার ছিলোনা, ছিলোনা ফেসবুক, টুইটার অথবা নেটফ্লিক্স।সময় আমাদের সম্পদ দিয়েছে, দিয়েছে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ও দীর্ঘায়িত জীবন।
কিন্তু এটি একইসাথে আমাদের মস্তিষ্কে জাগিয়ে দিয়েছে একাকীত্ব, হতাশা আর বিভিন্ন মানসিক চাপ! কারণ আমাদের নিউরাল সার্কিট ৭০ হাজার বছর পূর্বের আফ্রিকার সাভানায় ভ্রমণরত যাযাবর শিকারী সংগ্রাক জীবন থেকে আজও বেরিয়ে আসতে পারেনি।
গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকার প্রতি ৫ জনের মধ্যে তিনজন শূন্যতাবোধ করে। আমেরিকার প্রায় ৪ মিলিয়ন মানুষ একাকীত্বের যন্ত্রণায় কাতর , তারা মানসিকভাবে একা। পৃথিবীর ২৬৪ মিলিয়ন মানুষ বৈশ্বিকভাবে ডিপ্রেসনে আক্রান্ত!কিন্তু কেনো! কেনো একাকীত্ব ও হতাশা গ্লোবালি করোনা ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে আছে!অনেকেই এসব প্রশ্নের উত্তর জানে না!তারা এ একাকীত্বকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে যে ব্যাখ্যাগুলি তাদের সে একাকীত্বের যন্ত্রণাকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে, আশ্রয় নেয় ধর্মের!

কিন্তু আমাদের চেতনার আড়ালে লুকিয়ে থাকা এ একাকীত্বের বিবর্তনীয় সত্য আমরা জানিনা! আসলে সেপিয়েন্সরা জেনেটিক্যালি বিবর্তিত হয়েছে শিকারী সংগ্রাহক হিসেবে এবং এখনো তাদের ডি এন এ মনে করে তারা শিকারী সংগ্রাহক হিসেবে তৃণভূমিতে পড়ে আছে, তাদের ডিএন এ এখনো ৭০ হাজার বছর অতীতকেই স্মরণ করে যা তাদের মধ্যে জাগিয়ে তোলে হতাশা ও একাকীত্ব।তাদের ফিফথ সেন্স যে মহাবিশ্বকে পর্যবেক্ষণ করে তারা জিনগতভাবে মহাবিশ্বের সে সময় সীমায় বাস করেনা তারা ৭০ হাজার বছর অতীতের কোনো এক অচেনা জঙ্গলে এখনো শিকারী সংগ্রাহক হিসেবে ফলমুল সংগ্রহ করে এবং পশু শিকার করে নৃশংস আনন্দে উন্মত্ত হতে চায় আর তাদের জেনেটিক্যাল মন উপস্থিত বাস্তবতার সাথে নিজেকে পুরোপুরিভাবে অভিযোজিত করে নিতে পারেনা যা জন্ম দেয় মানসিক চাপ এবং অস্থিরতা!
আরো পড়ুনঃ
তথ্যসুত্রঃ


