স্টিফেন হকিং ছিলেন বিজ্ঞানের অত্যন্ত ব্যাথাদায়ক ব্যক্তিত্ব। যিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন, এমন একটি রোগ আক্রান্ত হয়ে যার কোনো প্রতিকার নেই, ডিজেনারেটিভ ডিজিজ। তিনি অক্লান্তভাবে রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে কাজ করেছিলেন আর সম্মুখ্যীন হয়েছেন অজস্র প্রতিবন্ধকতার। তিনি তার হাত, পা, শব্দ এবং অবশেষে ভোকাল কর্ডের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। একটি হুইল চেয়ারই ছিল তার বিশ্ব। খুব কম পদার্থ বিজ্ঞানীই এ অবস্থায় বিজ্ঞানের কঠিন সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাইতেন। তিনি পেন্সিল বা কলম দিয়ে কাজ করতে পারতেননা, তিনি সকল গণনা সম্পাদন করতেন তার মস্তিষ্কে। ভোকাল কর্ডের কার্যকারীতা হারিয়ে ফেলায় তিনি একটি ম্যাকানিকাল ডিভাইসের মাধ্যমে বাহিরের জগতের সাথে যোগাযোগ করতেন। আর ঠিক এভাবেই তিনি তার বেস্ট- সেলিং বুক ব্রিফ হিস্টরি অব টাইম লিখেছিলেন, বিশ্বজুড়ে তিনি বক্তব্য প্রদান করেছিলেন।

হকিং তার সৃষ্টিশীল সময়ের বেশিরভাগই ব্লাকহোলের জন্য অপচয় করেছিলেন যা তাকে বিখ্যাত করে তোলে। তিনি গ্রেন্ড ইউনিফায়েড তত্ত্বের জন্য সবচেয়ে বড় খেলা খেলেছিলেন। হকিং কোয়ান্টাম থিওরিস্ট না হয়ে তার কেরিয়ার শুরু করেছিলেন একজন ক্লাসিক্যাল রিলেটিভিস্টিক হিসেবে। এবং ভিন্নতর দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করেছিলেন। তিনি আর তার সহকর্মীরা আইনস্টাইনের ক্লাসিক্যাল ইউনিভার্স নিয়ে শুরু করেন আর তারপর তারা সমস্ত মহাবিশ্বকে কোয়ান্টাইজ করেন!
হকিং ছিলেন নতুন এক বৈজ্ঞানিক শৃঙ্খলা কোয়ান্টাম কসমোলজির একজন প্রবক্তা। সর্বপ্রথম এটা শুনতে কন্ট্রাডিক্টরি মনে হয়। কারণ আমরা জানি যে কোয়ান্টাম শব্দটি ইনফাইনিটেস্টিমালি ক্ষুদ্র অবজেক্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, কোয়ার্ক এবং নিউট্রিনোসদের উপর কিন্তু আমরা কসমোলজি বলতে যা বুঝি সেটি সীমাহীন সম্প্রসারণকে ইঙ্গিত করে। হকিং ও অন্যান্যরা বিশ্বাস করতেন যে, কোয়ান্টাম কসমোলজি আল্টিমেট কোয়ান্টাম উপসংহার যেটি অসীম সংখ্যক প্যারালাল ইউনিভার্সের অনুমোদন দেয়।
কোয়ান্টাম তত্বের শুরুতেই, আমরা দেখি যে, ওয়েভ ফাংশন একটি পার্টিকেলের বিভিন্ন স্টেটকে ব্যাখ্যা করে। এটা বোঝার জন্য, আপনি কল্পনা করুন, একটি বিশাল,অনিয়মিত বজ্রঝড়ের কথা যেটি আকাশকে পূর্ণ করে রেখেছে। এই মেঘ যত কালো হবে আমরা বুঝতে পারবো যে এই মেঘের ভেতর ততবেশি পানির বাস্প ও ধুলিকণা কেন্দ্রীভূত থাকবে। আর তাই আমরা মেঘের দিকে তাকিয়েই ভবিষ্যতবাণী করতে পারবো, আকাশের কোন একটি অংশে পানি ও ধুলিকণার বিশাল পুঞ্জ রয়েছে। মিচিও কাকুর-প্যারালাল ওয়ার্ল্ড
এই মেঘটিকে আপনি একটি স্বতন্ত্র পার্টিকেলের ওয়েভ ফাংশন হিসেবে ভাবতে পারেন। বজ্রের মেঘের মতোই এটি স্পেসকে পূরণ করে রাখে। একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে এর ভ্যালু যত বেশি হবে, ইলেক্ট্রনটিকে সেখানে পাওয়ার সম্ভাবনাও তত বেড়ে যাবে। এই ওয়েভ ফাংশন বিশাল অবজেক্টের সাথেও সম্পৃক্ত থাকতে পারে, যেমন- কোন একজন মানুষের সাথে। আমি এখন ঢাকা, টিএসসি বসে আছি। আমি জানি যে আমার শ্রডিঙ্গারের প্রবাবিলিটি ওয়েভ ফাংশন রয়েছে। আপনি যদি কোন একভাবে আমার ওয়েভ ফাংশনের দিকে তাকান। এটি দেখতে অনেকটা আমার শরীরের আকারের মতো হবে। কিন্তু কিছু ক্লাউড স্পেসের সর্বত্র ছড়িয়ে যাবে, হয়তোবা মঙ্গলে চলে যাবে, এমনকি আমাদের সোলার সিস্টেমের বাহিরে, যদিও এ ওয়েভ ফাংশনটি আমার কাছাকাছি অত্যন্ত ক্ষুদ্র। আর এ জন্যই আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি এ মুহূর্তে মঙ্গলে নয়, আমি আসলে টিএসসি’ই আছি। যদিও আমার শরীরের ওয়েভ ফাংশনের একটি অংশ মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি অতিক্রম করে আরো দূরে কোথাও ছড়িয়ে গেছে, এখানে অসীম ক্ষুদ্র একটি সম্ভাবনা আছে যে আমি হয়তো অন্যকোনো গ্যালাক্সিতে বসে আছি।
এ ছবিতে আমরা দেখতে পাই, Wave function of the Universe spread out all possible Universes! কিন্তু এ ওয়েভফাংশন আমাদের মহাবিশ্বের কাছাকাছি খুবই বিরাট, আর এ জন্য একটি ভালো সম্ভাবনা রয়েছে যে আমাদের মহাবিশ্ব একটি Correct Universe! যাইহোক এ ওয়েভ ফাংশন কিন্তু সকল ইউনিভার্সেই ছড়িয়ে আছে, এমনকি যে সকল মহাবিশ্বে কোন জীবন নেই সে সকল মহাবিশ্বেও যেগুলো আমাদের পরিচিত ফিজিক্স এর সুত্রের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সেগুলোতেও। যেহেতু এ ওয়েভ ফাংশন ঐ সকল ইউনিভার্সের ক্ষেত্রে ধ্বংসাত্মকভাবে ক্ষুদ্র, আমরা প্রত্যাশা করতে পারিনা যে আমাদের ইউনিভার্স অন্যকোনো ইউনিভার্সে নিকটবর্তী ভবিষ্যতে কোয়ান্টাম লিপ করবে!

কোয়ান্টাম কসমোলজিস্টদের এ দাবিটি গাণিতিকভাবে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হয়েছিল। তারা এটা দেখিয়েছিল যে আমাদের মহাবিশ্বের নিকটবর্তী ওয়েভ ফাংশন অত্যন্ত বড় আর বিকল্প মহাবিশ্বগুলোর ওয়েভ ফাংশন অত্যন্ত ক্ষুদ্র। আর এর মানে হলো আমাদের এ মহাবিশ্ব অনন্য ও স্থিতিশীল। আমরা যদি হকিংকে খুব সিরিয়াসলি গ্রহণ করি, আমাদেরকে আমাদের এনালায়সিস শুরু করতে হবে, শুরুতেই অসীম সংখ্যক সম্ভাব্য মহাবিশ্ব নিয়ে, যেগুলো আমাদের সাথে সহ-অবস্থান করছে। আমরা যদি অকপটে বলতে যাই The word Universe is no longer “all that Exist”, it now means that ” all that can Exist! উদাহরণ – স্বরূপ, আপনারা চিত্রটি পর্যবেক্ষণ করুন। আমরা দেখছি যে ওয়েভ ফাংশন অব দি ইউনিভার্স সকল কয়েকটি সম্ভাব্য মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে, আমাদের মহাবিশ্ব হলো সম্ভবত একটি কিন্তু নিশ্চিতভাবে একমাত্র নয়। হকিং এর এই ওয়েভ ফাংশন এ মহাবিশ্বগুলোকে কোলাইড করারও অনুমোদন দেয়। এবং এ মহাবিশ্বগুলোর মাঝে এ প্রক্রিয়ায় ওয়ার্মহোল তৈরি হয় যা এদেরকে কানেক্ট করে দেয়। কিন্তু এ ওয়ার্মহোল আমাদের জানা গতানুগতিক ওয়ার্মহোলের মতো নয় যা থ্রি-ডায়মেনশনাল স্পেসকে তার নিজের সাথে কানেক্ট করে, এ ওয়ার্মহোলগুলো মূলত ভিন্ন ভিন্ন মহাবিশ্বকে কানেক্ট করে। আপনি, বিপুল পরিমাণ স্যোপ বাবলের কথা চিন্তা করুন। সাধারণত প্রতিটি সোপ বাবল মহাবিশ্ব স্বয়ং এটি নিয়মিত একে অপরকে ধাক্কা দেয়, আর এতে করে আরো বড় স্যোপ বাবল তৈরি হয় অথবা একটি বাবল দুটি আলাদা বাবলে মাঝখান দিয়ে বিভক্ত হয়ে যায়। পার্থক্য হলো যে প্রতিটি স্যোপ বাবল একটি সামগ্রিক টেন ডায়মেনশনাল মহাবিশ্বে রয়েছে।যেহেতু স্পেস-টাইম শুধু প্রতিটি বাবলের ভেতরই অস্তিত্বশীল সে জন্য দুটি বাবলের মাঝখানে স্পেস ও টাইম বলতে কিছু নেই। প্রতিটি মহাবিশ্বেরই, এ প্রক্রিয়ায় Self Contained Time রয়েছে। আর এ জন্য, এটা বলা মিনিংলেস যে প্রতিটি মহাবিশ্বে সময় সমান হারে প্রবাহিত হচ্ছে। আর এ জন্য আমরা অবশ্যই এক মহাবিশ্ব থেকে অন্যটতে ট্রাভেল করতে পারবো। যদিও আমাদের প্রযুক্তি এখনো প্রাইমেটিভ লেভেলে রয়েছে! আমরা মহাবিশ্বগুলোর ভেতর কোয়ান্টাম ট্রান্সজিশনও প্রত্যাশা করতে পারি, যদিও এ জন্য আমাদেরকে মহাবিশ্বের বয়স থেকেও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে। অজস্র মহাবিশ্ব মৃত, জীবন শূন্য। এ সকল মহাবিশ্বে ফিজিক্সের আইনগুলো আলাদা। আর এ জন্য ফিজিক্যাল কন্ডিশন যা জীবন তৈরি করতে পারে তা সন্তোষজনক নয়। শুধু একটিতেই Right set of Physical Law রয়েছে। এটা সত্য যে হকিং এর Baby Universe থিওরি ট্রান্সপোর্টেশনের কোন প্রাক্ট্রিক্যাল পদ্ধতি নয়। এটি অনেক দার্শনিক ও ধর্মীয় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশ্বতত্ত্ববিদদের মধ্যে জাগ্রত করে দিয়েছে সুদীর্ঘ বিতর্ক।
হকিং এর এই ধারণা সমস্ত মহাবিশ্বকেই ট্রিট করেছে একটি কোয়ান্টাম পার্টিকেল হিসেবে। আমরা কিছু সরল পদক্ষেপ পুনরাবৃত্তি করে এখান থেকে চক্ষু উন্মোচকারী কিছু সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারি। আমরা এমন একটি ওয়েভ ফাংশনের কথা কল্পনা করতে পারি যেটি Set of all possible ইউনিভার্সকে ডেসক্রাইভ করতে পারে। আর এ জন্য বলতে পারি যে, হকিং এর এ তত্ত্বের শুরুতে Infinite set of Parallel Universe রয়েছে যেটাকে বলা হয় Wave Function of the Universe! হকিং এবার সরল কিছু এনালাইসিসের মাধ্যমে “পার্টিকেল” শব্দটিকে “ইউনিভার্স” হিসেবে প্রতিস্থাপন করলেন, সেটি বিশ্বতত্ত্বে চিন্তার পদ্ধতিতে একটি বিপ্লবের সূচনা করলো।
ইশ্বরকে মহাবিশ্বের পেছনে ফেলে আসা!
প্রথম যে বিতর্কের জন্ম হয়, তা মূলত, এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যাল নিয়ে। কয়েক শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানীরা দেখতে শুরু করেছিল যে, মহাবিশ্ব মানুষের পক্ষপাতের উর্ধ্বে।
আমরা এখন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে মানবিক কুসংস্কার এবং তিরস্কার আরোপ করিনা। ঐতিহাসিকভাবে প্রাচীন বিজ্ঞানীরা এনথ্রোপোমর্পিজমে আক্রান্ত হয়েছিলেন যা অনুমান করেছিল যে, বস্তু ও প্রাণীদের মানুষের মতো গুণ আছে। এ ভুল অনেকেই করেন যখন কেউ পোষা বেড়ালের প্রতি মনিবের ভালোবাসা দেখে বিভ্রান্ত হন।
এনথ্রোপোমর্পিজম একটি বহু প্রাচীন সমস্যা। আইয়োনিয়ান দার্শনিক জেনোফেনস একবার বলেন, মানুষ কল্পনা করে ঈশ্বর জন্মগ্রহণ করে, তার জামাকাপড় আছে এবং তার রয়েছে কন্ঠস্বর ও শারীরিক কাঠামো ঠিক তাদের নিজেদের মতো। আর এ জন্যই দেখা যায়, ইথোপিয়ানদের ঈশ্বর কালো ও তার নাক চ্যাপ্টা, থ্রাসিয়ানদের ঈশ্বরের চুল ছিল লাল এবং নীল রঙের চোখ। অতীতের কয়েক দশকে, কিছু বিজ্ঞানী আতঙ্কে শিহরিত হয়েছিলেন, যখন তারা দেখেন, এনথ্রোপোমর্পিজম হামাগুড়ি দিয়ে বিজ্ঞানের জগতে প্রবেশ করেছে, এনথ্রোইপিক প্রিন্সিপ্যালের ছদ্মবেশ ধারণ করে, যারা এটিকে সমর্থন করেন, তারা উন্মোক্তভাবেই প্রচার করেন, তারা পূনরায় বিজ্ঞানের ভেতর ঈশ্বরকে প্রতিস্থাপন করবেন। আসলে, এখানে কিছু সায়েন্টিফিক মেরিট রয়েছে এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল নিয়ে এ বিতর্কের ক্ষেত্রে যা আমাদের চারদিকে অনস্বীকার্যভাবে আবর্তিত হচ্ছে, যদি মহাবিশ্বের ফিজিক্যাল কনস্ট্যান্টগুলো একটুও অল্টার হত, মহাবিশ্বে জীবনের অস্তিত্ব হয়ে উঠতো অসম্ভব। এই যে এ উল্লেখযোগ্য ঘটনা এটি কী শুধুমাত্র সৌভাগ্যক্রমে একটি কাকতালীয় ঘটনা, নাকি এটি কোন সুপ্রিম গডের অস্তিত্বকে ইঙ্গিত দিচ্ছে?
এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপলের দুটি ভার্সন রয়েছে। উইক এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যাল আমাদের বলে যে, যবুদ্ধিমান জীবন যারা মহাবিশ্বে অস্তিত্বশীল তাদেরকে একটি এক্সপেরিমেন্টাল ফ্যাক্ট হিসেবে নেয়া যেতে পারে মহাবিশ্বের কনস্ট্যান্টগুলো বোঝার জন্য। নোবেল বিজয়ী স্টিফেন ওয়েইনবার্গ এটাকে এভাবে এক্সপ্লেইন করেছেন, The world is the way it is, at least in part, because otherwise there would be no one to ask why it is the way it is.
মহাবিশ্বে জীবনের অস্তিত্বের জন্য আপনার প্রয়োজন দূর্লভ সব সংযোজন বিভিন্ন দূর্ঘটনার। যেখানে জীবন নির্ভর করে বৈচিত্রময় বায়োকেমিক্যাল রিয়েকশনের উপর। এটা কখনোই অনুষ্ঠিত হতোনা যদি আমরা মহাবিশ্বের কোন একটি কনস্ট্যান্ট পরিবর্তন করে দিতাম। উদাহরণস্বরূপ, যদি যে সকল কনস্ট্যান্ট নিউক্লিয়ার ফিজিক্সকে পরিচালিত করে তা সামান্য পরিমাণও পরিবর্তন হতো তবে নিউক্লিও সিন্থেসিস এবং ভারী বস্তুগুলোর গঠন অসম্ভব হয়ে উঠতো। আর এ জন্য এটম অস্থিতিশীল হয়ে উঠতো এবং সুপারনোভার তৈরি হওয়াই ছিল তখন অসম্ভব। DNA এর সৃষ্টি এবং প্রোটিন মলিকিউলের জন্য জীবন সাধারণত আয়রণের মতো ভারী উপাদানগুলোর উপর নির্ভর করে। আর এ জন্য নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের সামান্যতম পরিবর্তন মহাবিশ্বের ভারী উপাদানগুলোর সৃষ্টিকে করে তুলতো অসম্ভব। আমরা নক্ষত্রের সন্তান; যদি “ল” অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স সামান্য পরিমাণও পরিবর্তন হতো তবে আমাদের পিতামাতার শরীরে কোন সন্তান জন্ম নিতোনা। অন্য একটি উদাহরণের মাধ্যমে বলা যায়, প্রাচীন সূমূদ্রে জীবন গঠিত হতেই ১-২ বিলিয়ন বছর চলে যেতো। আমরা যদি কয়েক মিলিয়ন বছরের মধ্যে কোনোভাবে প্রোটনের জীবনকালকে এক বিলিয়ন বছর থেকে কয়েক মিলিয়ন বছরের মধ্যে সংকোচিত করে দিতে পারতাম, তাহলে জীবন অসম্ভব ছিল, র্যান্ডম কোয়ালিশন থেকে জীবন সৃষ্টি হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় আমাদের কাছে থাকতোনা আর এভাবে জীবন হয়ে যেতো অসম্ভব।
অন্যকথায়, সবচেয়ে বড় সত্য যে জন্য আমরা এ মহাবিশ্বে আছি এ প্রশ্নটি করার জন্যই যে, এ ধরণের কমপ্লেক্স সিকোয়েন্স অব ইভেন্ট অপরিহার্যভাবে ঘটবে। এরমানে হল, প্রকৃতির ফিজিক্যাল কনস্ট্যান্টগুলোর অবশ্যই নির্দিষ্ট রেঞ্জের ভ্যালু রয়েছে, আর এ জন্যই নক্ষত্রগুলো দীর্ঘকাল সার্ভাইভ করে, যা আমাদের দেহের ভারী উপাদানগুলো তৈরি করতে একে সক্ষম করে তোলে, আর এ জন্য প্রোটন অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ক্ষয় হয়ে যায়না জীবন অঙ্কুরিত হওয়ার পূর্বে। অন্যকথায়, মানুষের অস্তিত্ব, যারা এ মহাবিশ্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারে নিয়োজিত হয়েছিল ফিজিক্সের Huge number of Rigid Constraints উদাহরণস্বরূপ – এর বয়স, কেমিক্যাল কম্পোজিশন, টেম্পারেচার,আকার এবং এর ফিজিক্যাল প্রসেস।
এ ধরণের কসমিক কো-ইনসিডেন্ট পর্যবেক্ষণ করে, পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রীম্যান ডাইসন বলেছিলেন, আমরা যদি মহাবিশ্ব গ্রহণ করি এবং ফিজিক্স ও এস্ট্রোনোমির অজস্র এক্সিডেন্ট আইডেন্টিফাই করি সেগুলো একসাথে আমাদের ভেনিফিটের জন্যই কাজ করে, এর মানে হল এই যে, মহাবিশ্ব কোন একভাবে জানতো যে আমরা আসবো। আর এটাই আমাদেরকে এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপলের স্ট্রং ভার্সনের দিকে নিয়ে যায়। যা আমাদেরকে বলে মহাবিশ্বের সকল ফিজিক্যাল কনস্ট্যান্ট সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত যা কোন এক ঈশ্বর বা সুপারন্যাচারাল সত্ত্বা আমাদের জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছেন, আর এ জন্যই মহাবিশ্বে আমাদের অস্তিত্ব সম্ভব হয়েছে।
সুস্পষ্টভাবেই আমরা দেখতে পাচ্ছি , অল্পকিছু ফিজিক্যাল কনস্ট্যান্ট জীবন গঠনের জন্য প্রয়োজন যার রয়েছে সুনির্দিষ্ট ভ্যালু অথচ সবগুলো অন্ধ ভাগ্য দ্বারা নির্দিষ্ট মেনে নেয়া যায়না। আর এ জন্য বিশাল সেটের ভৌত ধ্রুবক জীবনের জন্য অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি ন্যারোব্যান্ড নির্ধারণ করেছে যা মহাবিশ্বে জীবনকে সম্ভব করে তোলে এ ধরণের মহাজাগতিক এক্সিডেন্ট আসলে Highly Improbable! যেহেতু এ ধরণের এক্সিডেন্ট আসলে খুব বেশি অসম্ভব অতএব কোন স্বর্গীয় ঈশ্বর সেগুলো আমাদের জীবন গঠনের উদ্দেশ্য সুক্ষ্মভাবে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। যখনই তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীরা এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যালের কিছু ভার্সন শোনেন তারা মুহূর্তেই পেছনে সরে যায়। পদার্থবিদ হেইঞ্জ পেগেইলস বলেন, এ ধরণের যুক্তি এতটাই অস্বাভাবিক যে তাত্বিক পদার্থবিদরা নিজেদের ব্যবসায় ফিরে যান।
এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল ঈশ্বর সংক্রান্ত অতীতের একটি আর্গুম্যান্টের একটি সহয ভার্সন যা বলে যে ঈশ্বর পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সূর্য থেকে একেবারে সঠিক দূরত্বে। যদি ঈশ্বর পৃথিবীকে সূর্য থেকে অনেক দূরে স্থাপন করতো হয়তো পৃথিবী প্রাণের বিকাশের জন্য প্রয়োজন মত উত্তাপ পেতোনা। যদি ঈশ্বর পৃথিবীকে সূর্যের অনেক কাছে রাখতেন তবে এটি এতটাই উত্তপ্ত হতো যে জীবনকেই সমর্থন করতোনা। এ যুক্তির একটি ফ্যালাসি হলো যে, তারা ধরেই নিয়েছে গ্যালাক্সির মিলিয়ন প্লানেট পৃথিবীকে Right Distance এ রাখার জন্য নিজেরাই Wrong Distance এ রয়েছে। আবার অনেকে বলে, গ্যালাক্সির মিলিয়ন গ্রহ Wrong Distance এ রয়েছে তাই সেখানে জীবন অসম্ভব। যাইহোক না কেনো কিছু গ্রহ একেবারে পিউর এক্সিডেন্টের কারণেই Right Distance এ রয়েছে। আর আমাদের প্লানেট তার মধ্যে একটি৷ আর এ জন্যই আমরা এ প্রশ্নটি নিয়ে কথা বলতে পারছি।
অবশেষে, অধিকাংশ বিজ্ঞানী এনথ্রেপিক প্রিন্সিপাল দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন কারণ এর কোন প্রেডিক্টিভ পাওয়ার নেই এবং এটাকে টেস্টও করা যায়না। পেইগেল উপেক্ষার সাথে বলতে থাকেন যে, ফিজিক্সের প্রিন্সিপালের মতো, এটি সঠিক বা ভুল তা ডিটারমাইন বা টেস্ট করার উপায় নেই। আমাদের প্রচলিত পদার্থ বিজ্ঞানের সুত্রের মতো আমরা এটাকে এক্সপেরিমেন্টালি ফলসিফিকেশন করতে পারিনা__ যেটি একটি সুনিশ্চিত চিহ্ন যে, এটি কোন সায়েন্টিফিক প্রিন্সিপলই না। পদার্থবিদ এলান গুথ অকপটে বলেন যে, এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপল হল এমন একটা বিষয় যেটা নিয়ে পদার্থবিদরা কাজ করেন যখন আসলে তাদের করার মতো ভালো কোন কাজই থাকেনা।
রিচার্ড ফাইনম্যান বলেন, ফিজিক্সের উদ্দেশ্যই হলো আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব মিথ্যা প্রতীয়মান করা। কিন্তু এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যাল বন্ধ্যা এটাকে আসলে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা যায়না। ওয়েইনবার্গ বলেন, যদিও বিজ্ঞান বিজ্ঞানী ছাড়া বন্ধ্যা। এটি পরিস্কার নয় যে, বিজ্ঞান ছাড়া মহাবিশ্ব অসম্ভব। এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল নিয়ে বিতর্ক বহু বছর পর্যন্ত ঘুমিয়ে ছিল কিন্তু সহসাই হকিং এর ওয়েভ ফাংশন এ বিতর্কটিকে জাগ্রত করে তুলল। মিচিও কাকু বলেন, যদি হকিং সত্য হয়, তাহলে অবশ্যই এখানে অসীম সংখ্যক প্যারালাল ইউনিভার্স রয়েছে, আর অজস্র মহাবিশ্বের ফিজিক্যাল কনস্ট্যান্ট আলাদা। কিছুকিছু মহাবিশ্বে হয়তো প্রোটন অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ক্ষয় হয়ে যায় এবং নক্ষত্র আয়রনের উর্ধ্বের ভারী উপাদানগুলো তৈরি করতে ব্যর্থ হয় অথবা বিগক্রান্স এত দ্রুততার সাথে সংঘটিত হয় যে জীবন তৈরি হওয়ার সময়ই পায়না। প্রকৃতপক্ষে, অসীম সংখ্যক প্যারালাল ইউনিভার্স আসলে মৃত, সেখানে সে সকল ফিজিক্সের নিয়ম নেই যা জীবন গঠন করতে সক্ষম।
এ ধরণের একটি প্যারালাল ইউনিভার্সে পদার্থবিদ্যার আইন জীবনের সাথে সুসাঞ্জস্যপূর্ণ। আর তার প্রমাণ হলো আমরা আজ মহাবিশ্বে আছি এ ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য।। যদি এটি সত্য হয়ে থাকে তবে কেনো আমাদের মহাবিশ্বে আমাদের অস্তিত্ব সম্ভব এবং কেনো জীবন মূল্যবান সেটি ব্যাখ্যা করার জন্য ঈশ্বরকে জাগ্রত করার কোন দরকার নেই। যাইহোক, এটি উইক এনথ্রেপিক প্রিন্সিপলের পসেবিলিটি ওপেন করে আর তা হলো, আমরা অজস্র মৃত মহাবিশ্বের সাথে Co-Exist করছি, আর আমাদের মহাবিশ্ব হলো একমাত্র মহাবিশ্ব যেটি জীবনের জন্য উপযোগী। আর দ্বিতীয় যে বিতর্ক সেটি হকিং এর ওয়েভ ফাংশন অব দি ইউনিভার্স জাগ্রত করে যেটি আরো গভীর এবং প্রকৃতপক্ষে এখনো অসম্পূর্ণ। আর এটাকে বলা হয় শ্রডিঙ্গার কেট প্রবলেম।
শ্রডিঙ্গার কেট
যদিও হকিং এর বেবি ইউনিভার্স এবং ওয়ার্মহোল কোয়ান্টাম তত্ত্বের ক্ষমতা ব্যবহার করছে, এটি অপরিহার্যভাবে, একটি অমিমাংসিত সমস্যা পূনরায় উন্মোচন করে। হকিং এর ওয়েভ ফাংশন অব দি ইউনিভার্স বা মহাবিশ্বের ওয়েভ ফাংশন কোয়ান্টাম তত্ত্বের সম্পূর্ণ প্যারাডক্স সমাধান করেনি; এটি শুধুই বিস্ময়করভাবে এ সমস্যাটির উপর নতুন আলো নিক্ষেপ করেছে।
কোয়ান্টাম তত্ত্ব, আমরা স্মরণ করছি, বলে যে, প্রতিটি অবজেক্টের একটি ওয়েভ ফাংশন আছে। যা একটি অবজেক্টকে নির্দিষ্ট একটি পয়েন্টে পাওয়ার সম্ভাবনা পরিমাপ করে। কোয়ান্টাম তত্ত্ব আমাদের আরো বলে যে, State of Particle আপনি কখনোই জানতে পারবেননা যতক্ষণ না আপনি Observation তৈরি করছেন। Observation এর পূর্বে, পার্টিকেলটি বৈচিত্র্যময় স্টেটে থাকে যেটিকে শ্রডিঙ্গারের ওয়েভ ফাংশনের মাধ্যমে ডেসক্রাইভ করা যায়। এভাবে, Before observation or Measurement is Made আপনি আসলে একটি পার্টিকেলের অবস্থান জানতে পারবেননা। প্রকৃতপক্ষে পার্টিকেল কোন অবস্থানেই থাকেনা। আমরা এটাকে বলতে পারি যে, the particle exist in a nether state, a sum of all possible states, until a observation made.
যখন এ ধারণাটি সর্বপ্রথম নীলস বোর ও ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ প্রস্তাব করেছিল, আইনস্টাইন এ কনসেপ্টের বিরূদ্ধাচরণ করেছিলেন। তিনি প্রশ্ন করেন, Does the moon Exist just Because a Mouse looks at it? তিনি এ প্রশ্নটি করতে খুব ভালোবাসতেন। কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সের একটি কঠিন নিয়ম ছিলো, The moon before is observed, Does’t really exist as we know it! চন্দ্র অসীম সংখ্যক অবস্থার যেকোনটিতেই থাকতে পারে, মহাকাশে ঝুলে থাকার পরিবর্তে এটি পৃথিবীর তলদেশেও ঝুলে থাকতে পারে অথবা এটি কোথাও নাও থাকতে পারে। কিন্তু যখনই আমরা পর্যবেক্ষণ করি তখনই দেখতে পাই যে, চন্দ্র মূলত পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে! চন্দ্র শুধু আমার পর্যবেক্ষণেই পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।
আইনস্টাইন ও নিউটনের সাথে এ বিষয়টি নিয়ে দুর্দান্ত কিছু তর্কবিতর্কও সংঘটিত হয়। এমনকি শ্রডিঙ্গার যিনি নিজেই ওয়েভ ফাংশনের ধারণার জন্ম দিয়েছিলেন তিনি নিজেও তার ইকুয়েশনের বিপক্ষে প্রোটেস্ট করেন। তিনি বলেন, আমি এ ইকুয়েশন পছন্দ করিনা এবং আমি খুব দুঃখিত যে আমি এটি নিয়ে কখনো কাজ করেছি। এই বৈপ্লাবিক ইন্টারপ্রিটেশনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য, সমালোচকরা প্রশ্ন করলেন, বেড়ালটি কী জীবিত নাকি মৃত পর্যবেক্ষণ করার পূর্বে? এ প্রশ্নটি কতটা হাস্যকর তা বোঝানোর জন্য শ্রডিঙ্গার একটি বেড়ালকে বাক্সের মধ্যে রাখলেন। বেড়ালটিকে একটি বন্ধুকের নলের সামনে রাখা হয়েছিল যেটি গাইগার কাউন্টারের সাথে কানেক্টেড যেটি আবার রেডিওএকটিভ ইউরেনিয়ামের একটি খন্ডের সাথে সংযুক্ত। আমরা জানি, যে ইউরেনিয়াম এটম আনস্টেবল এবং এটি রেডিও একটিভ ক্ষয়ের জন্ম দেবে। তারপর এটি আবার বন্ধুক ট্রিগার করবে যার বুলেট হত্যা করবে বেড়ালটিকে। কিন্তু বেড়ালটি জীবিত নাকি মৃত তা আমরা পর্যবেক্ষণ করবো কিভাবে? এ জন্য অবশ্যই আমাদেরকে বাক্সের দরজা খুলতে হবে। কিন্তু বাক্সের দরজা খোলার পূর্বে বেড়ালটি কোন স্টেটে থাকে? কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুসারে, আমরা বেড়ালটিকে চিন্তা করতে পারি ওয়েভ ফাংশন হিসেবে, যে ওয়েভ ফাংশন একই সাথে মৃত ও জীবিত বেড়ালের একটি যোগফল। কারণ ইঁদুর পর্যবেক্ষণ করার পূর্বে চন্দ্র একই সময় এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সিতে অথবা আমাদের ছায়াপথে একইসাথে থাকতে পার। তারমানে, কোয়ান্টাম ফিজিক্স অনুসারে, বেড়ালটির জন্ম ও মৃত্যু আসলে একই ওয়েভ ফাংশনে লোকেট করছে। তারমানে বেড়ালটি আসলে জীবিতও নয়, মৃতও নয় যেটি ছিল চুড়ান্ত পর্যায়ের এক হাস্যকর ঘটনা। কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সের কোন এক্সপেরিমেন্ট আমাদের এর কোন সমাধান দিতে পারে নি। বর্তমানে প্রতিটি এক্সপেরিমেন্ট কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সকে সত্যায়িত করতে সক্ষম হয়েছে। শ্রডিঙ্গারের বেড়াল এতটাই অদ্ভুত ছিল যে যে কেউ লুইস ক্যারলের গল্পের এলিসের কথা স্মরণ করতে পারেন যখন সে সিজারের বেড়ালকে দেখে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছিল, বেড়াল এলিসকে বলেছিল তুমি আমাকে এখানে দেখছো আর তারপরই অদৃশ্য হয়ে গেলো। এলিস আসলে এ ঘটনা দ্বারা খুব একটা বিস্মিত হয়নি কারণ সে এটাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল। তিনটি প্রধান উপায়ে পদার্থ বিজ্ঞানীরা এ জটিলতাকে মোকাবিলা করে থাকেন। মিচিও কাকু বলেন, প্রথমত, আমরা কল্পনা করতে পারি যে ঈশ্বর আছেন। কারণ সকল পর্যবেক্ষণ একজন পর্যবেক্ষককে নির্দেশ করছে তার মানে There must be some Consciousness in the Universe!
কিছুকিছু পড়ার্থবিজ্ঞানী, বিশেষ করে নোবেলবিজয়ী উইজিন উইগনার বলেন, Quantum theory proves Some Sort of Universal Cosmic Consciousness in the Universe!
কিন্ত ঈশ্বর ছাড়াও আমরা দ্বিতীয় একটি উপায়ে এই প্যারাডক্স সমাধান করতে পারি যা বিশাল সংখ্যক পদার্থ বিজ্ঞানীদের অনুকূলে__ আর তা হলো এ সমস্যাটিকে উপেক্ষা করা। অন্যদিকে অধিকাংশ পদার্থবিজ্ঞানী বলছে যে, A camera Without any Consciousness can also make Measurements, Simply wish that this sticky, but unavoidable, Problem Would go away.
একবার পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান বলেছেন, আমি মনে করি, এটা বলা নিরাপদ যে, কেউই কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স বোঝেনি। কিন্তু কেনো এটা এমন হলো? এর কারণ আসলে তুমি এমন একটা সুড়ঙ্গ দিয়ে পথ চলছো সে সুড়ঙ্গ থেকে কেউই নিষ্কৃতি লাভ করেনি। কেউই জানে না কেনো এটা এমন।। মাঝেমাঝে অনেকে বিরক্ত হয়ে বলে এ পর্যন্ত যত থিয়োরি প্রস্তাব করা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে অথর্ব যে তত্ত্বটি সেটিই আসলে কোয়ান্টাম ফিজিক্স। কিন্তু তৃতীয় আর একটি উপায় আছে যে উপায়ে আপনি এ প্যারাডক্সটি সমাধান করতে পারবেন যেটিকে বলে, ম্যানি ওয়ার্ল্ড থিওরি। এ তত্ত্বটি এনথ্রেইপিক তত্ত্বের মতোই বিগত দশকে খাদে পড়ে গিয়েছিল কিন্তু স্টিফেন হকিং এর ওয়ভ ফাংশন অব দি ইউনিভার্স এটিকে আবার জাগ্রত করে তুলেছে।
ম্যানিওয়ার্ল্ডস
১৯৫৭ সালে পদার্থবিজ্ঞানী হিউ এভারেট একটি সম্ভাবনা দাবী করেন যে, মহাবিশ্বের বিবর্তনের সময়, এটি নিরবিচ্ছিন্নভাবে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায় অনেকটা রাস্তার কাটাচামুচের মতো। একটি রাস্তা যেমন পথ চলতে চলতে আকস্মিক দুটো রাস্তায় পরিণত হয় ঠিক যেমনি একটি মহাবিশ্ব দুটি ভিন্ন ভিন্ন মহাবিশ্বে পরিণত হয়, যদি এদের একটিতে ইউরেনিয়াম এটম ভেঙে যায় তবে বেড়ালটি মারা যাবে। যদি এভারেট সঠিক হয়, এখানে রয়েছে অসীম সংখ্যক মহাবিশ্ব। একটি মহাবিশ্ব অন্য আর একটি মহাবিশ্বের সাথে কাটাচামুচের মতো নেটওয়ার্ক দ্বারা সংযুক্ত৷ আর্জেন্টেনিয়ান লেখক জর্জ লুইস বোর্হেস তার In the Garden of Forking Path এ লিখেছিলেন, সময় গণনাতীত ভবিষ্যতের দিকে কাটা চামুচের মতো শাশ্বতকাল ধেয়ে চলছে। পদার্থবিজ্ঞানী ব্রাইস ডেভিট যিনি ম্যানিওয়ার্ল্ডস তত্ত্বের একজন প্রবক্তা তিনি বলেন, প্রতিটি নক্ষত্রে সংঘটিত প্রতিটি কোয়ান্টাম ট্রান্সজিশন, প্রতিটি গ্যালাক্সি, এবং মহাবিশ্বের প্রতিটি দূরবর্তী প্রান্ত, আমাদের স্থানীয় বিশ্ব পৃথিবীর অজস্র কপি তৈরি করছে।
মিচিও কাকু বলেন, I still Recall Vividly the Shock I experienced on first encountering this Multi-world Concept. ম্যানিওয়ার্ল্ড থিয়োরি দাবি করেছে যে, সকল সম্ভাব্য কোয়ান্টাম জগত অস্তিত্বশীল কিছুকিছু বিশ্বে মানুষ পৃথিবীর উপর প্রভাব বিস্তার করছে এবং অন্যকোনো জগতে কোন একটি সাব-এটমিক ইভেন্ট সংঘটিত হয়েছে যেটি মানুষকে এ গ্রহে Evolve হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রাংক উইলজেক বলেছেন, It is said that the History of the World would be Entirely different if Helen of Troy had had a wart at the tip of her Nose. Well, warts can arise from mutation in Single cells, often triggered by exposure to the Ultraviolet rays of the Sun.
এর মানে হলো, অসংখ্য অজস্র অজস্র জগত আছে যেখানে হেলেনের নাকের ঢগায় কোন তিল নেই। আসলে মাল্টিপল ইউনিভার্সের এ ধারণা অনেক বৃদ্ধ। দার্শনিক সেন্ট আলবার্টাস ম্যাগনাস একবার বলেছিলেন,একটির পরিবর্তে, এখানে কি অজস্র মহাবিশ্ব রয়েছে? প্রকৃতিকে স্টাডি করতে গেলে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সুমহান একটি প্রশ্ন। কিন্ত নতুন টুইস্ট হলো যে, এই প্রাচীন ধারণাটিই শ্রডিঙ্গারের কেটসকে ঘিরে আবর্তিত হয়। একটি মহাবিশ্বে এ বেড়ালটি মৃত কিন্তু অন্য আর একটি মহাবিশ্বে এটি জীবিত।
এভারেটের ম্যানিওয়ার্ল্ড তত্ত্ব এতটাই বিস্ময়কর ছিল যে, যে কেউ প্রদর্শন করতে পারতো যে, এটি কোয়ান্টাম তত্ত্বের ইন্টারপ্রিটেশনের সাথে খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু ঐতিহ্যগতভাবে শ্রডিঙ্গারের ম্যানিওয়ার্ল্ড তত্ত্ব পদার্থবিদদের নিকট জনপ্রিয় নয়। যদিও এ ধারণাটি আসলে উড়িয়ে দেয়া যায়না কিন্তু অসীম সংখ্যক মহাবিশ্ব সমানভাবে বৈধ। প্রতিটি মুহূর্তেই অর্ধেকে ভাগ হয়ে যায় যা পদার্থবিজ্ঞানীদের জন্য একটি দার্শনিক স্বপ্ন যারা এটিকে ভালোবাসে। এখানে রয়েছে একটি প্রিন্সিপাল যেটাকে বলে ওকাম রেজর, যা আমাদের বলে যে, আমাদের সবসময় সরল সম্ভাব্য পথ গ্রহণ করা উচিত এবং সবচেয়ে জটিল বিকল্প করতে হয় পরিত্যাগ। (যেমন একটা সময় অকাম রেজর ইথারকে বাতিল করে দিয়েছিল। যা বলতো যে, একটি রহস্যজনক গ্যাস মহাবিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকে। শব্দ কম্পনের জন্য যেমন বাতাসের কম্পন প্রয়োজন ঠিক তেমনি আলোর জন্যও প্রয়োজন ইথারের কম্পন যেটি ভাইব্রেট করে আর তার ভেতর দিয়ে আলো মহাবিশ্বে ভ্রমণ করে। কিন্ত আইনস্টাইন এসে বললেন, ইথার অপ্রোয়জনীয়, তিনি বলেননি যে, ইথারের অস্তিত্ব নেই, শুধুমাত্র ওহকামের রেজর দিয়ে পদার্থবিজ্ঞানীরা ইথারকে বাদ করে দিয়েছিলেন।
যে কেউ প্রমাণ করতে পারে যে, এভারেটের ম্যানিওয়ার্ল্ডে কমিউনিকেশন করা অসম্ভব। আর এ জন্য একটি মহাবিশ্ব আর একটি মহাবিশ্ব সম্পর্কে Unware থাকে। কিন্তু যদি এক্সপেরিমেন্ট এ সকল বিশ্বের অস্তত্ব প্রমাণ করতে না পারে তবে আমাদের উচিত, ওহকামের রেজর দিয়ে এগুলোকে এলিমিনেট করে দেয়া।
ঠিক একইভাবে বিজ্ঞান কখনোই ক্যাটাগরিক্যালি বলেনা যে, এঞ্জেল অথবা মিরাকলের অস্তিত্ব নেই। হয়তো তাদের অস্তিত্ব আছে। কিন্তু ডেফিনেশন অনুসারে, মিরাকলকে পুনরাবৃত্তি করা যায়না আর এ জন্য এটা এক্সপেরিমেন্টালি পরিমাপযোগ্য নয়। ম্যানিওয়ার্ল্ড তত্ত্বের একজন মেন্টর জন হুইলার বলেন, উপেক্ষার সাথে এটাকে প্রত্যাখ্যান করেন কারণ তিনি বলেন, It required too much metaphysical Baggage to Carry around!
ম্যানিওয়ার্ল্ড তত্ত্ব এ ভাবেই তার জনপ্রিয়তা হারায়। যাহোক, হকিং এর Wave function of the Universe জনপ্রিয়তা লাভ করে। এভারেটের তত্ত্বটি গঠিত ছিল একটি স্বতন্ত্র পার্টিকেলের উপর ভিত্তি করে, যেখানে একটি মহাবিশ্ব অন্য আর একটি মহাবিশ্ব থেকে পৃথক হয়ে যাওয়ার পর কমিউনিকেশন করার কোন উপায়ই ছিলনা। যাইহোক, হকিং এর তত্ত্ব আরো অগ্রগতি লাভ করেছিল, আরো সামনে, এটি মূলত, অসীম সংখ্যক Self-Contained Universes দ্বারা গঠিত এবং এটি দাবি করে যে দুটি মহাবিশ্বের সাথে Tunneling সম্ভব।
হকিং Wave Function of The Universe এর এ কঠিন ক্যালকুলেশনের কাজ নিজের ঘাড়ে তুলে নিয়েছিলেন। তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে তার পদক্ষেপ আংশিক সত্য কারণ তার তত্ত্বটি ছিলো Well Defined! ( If we Mentioned, the theory is ultimately defined Ten Dimension) । তার লক্ষ্য ছিল এটা দেখানো যে, তার ওয়েভ ফাংশন অব দি ইউনিভার্স আমাদের মহাবিশ্বের কাছাকাছি লার্জ ভ্যালু প্রদর্শন করে, যে মহাবিশ্বটি আমাদের মতো। আর এ জন্য আমাদের মহাবিশ্ব সবচেয়ে সম্ভাবনাময় কিন্তু অবশ্যই একমাত্র মহাবিশ্ব নয়। মহাবিশ্বের ওয়েভ ফাংশন নিয়ে বিভিন্ন সময় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স আয়োজিত হয়েছিল কিন্তু এ ওয়েভ ফাংশনের সাথে যে ম্যাথমেটিক্স জড়িত তা আমাদের গ্রহের কারো পক্ষেই সম্পাদন করা সম্ভব নয়, এটা আমাদের গ্রহের ৮ বিলিয়ন মানুষের ক্ষমতার বাহিরে, হকিং এর ইকুয়েশনের সে সুকঠিন সলিউশন বের করার জন্য আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে, হয়তোবা কোন একদিন কোন এক বিস্ময়কর সেপিয়েন্স এ ইকুয়েশনের সমাধান বের করবে।। কিন্তু কে সে?
হিউ এভারটের ওয়েভ ফাংশনের সাথে হকিং এর ওয়েভ ফাংশনের পার্থক্য একটাই ছিল আর তা হলো হকিং এর ওয়েভ ফাংশন দুটি ইউনিভার্সের মধ্যে “Wormhole” তৈরি করতো। আর এটাই এ তত্ত্বের কেন্দ্রীয় বিষয়। তার মানে, এটা বিস্ময়ের বিষয় নয় যে আপনি যদি কোনদিন ঘুম থেকে উঠে, দরজা খুলে দেখেন, আপনি প্যারালাল ইউনিভার্সে চলে গেছেন এবং আপনার পরিবার আর আপনাকে শুনছেনা তবে বিস্মিত হওয়ার কোন কারণ নেই। হয়তোবা প্যারালাল জগতের পিতামাতা আপনাকে আপ্যায়ন না করে অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে জেলেও পুরে দিতে পারে। হকিং এর পদক্ষেপ ছিল, ওয়ার্মহোল, নিরবিচ্ছিন্নভাবে আমাদের ইউনিভার্সকে বিলিয়ন বিলিয়ন প্যারালাল ইউনিভার্সের সাথে সম্পৃক্ত করে কিন্তু এ ওয়ার্মহোলের আকার, গড়ে, অত্যন্ত ক্ষুদ্র, একেবারে প্লাঙ্ক ল্যাংথের সমান। (প্রোটন থেকেও বিলিয়ন বিলিয়ন টাইম ক্ষুদ্র, এত ক্ষুদ্র যে সেখানে মানুষ প্রবেশই করতে পারেনা)। তাছাড়া দুটি মহাবিশ্বের মধ্যে কোয়ান্টাম ট্রান্সনিশন খুবই অনিয়মিত, আর এ জন্য আমাদের অনেক দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে, হয়তোবা আমাদেরকে আমাদের মহাবিশ্বের বয়সের চেয়েও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে, যতদিন না এ ধরণের ঘটনা সংঘটিত না হয়।
এটি পদার্থবিজ্ঞানের সুত্রের সাথে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ যে, যে কেউ একটি টুইন ইউনিভার্সে এন্টার করতে পারবে যা একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের ইউনিভার্সের মত কিন্তু এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ তারতম্য আছে মহাবিশ্বগুলো সময়ের একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে তৈরি হয়েছে যখন তারা পরস্পর পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। এ ধরণের প্যারালাল ওয়ার্ল্ড আবিষ্কার করেছিলেন Jhon Wyndham তার “Random Quest” গল্পে। কলিন ট্রেফর্ড নামের একজন নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্ট ১৯৫৪ সালে প্রায় মারাই গিয়েছিল যখন একটি নিউক্লিয়ার এক্সপেরিমেন্ট বিস্ফোরিত হয়। কিন্তু তিনি নিজেকে হসপিটালে খুঁজে পাওয়ার পরিবর্তে খুঁজে পান লন্ডনের দূরবর্তী একটি জায়গায়। কিন্তু শীঘ্রই আবিষ্কার করেন কিছু একটা গোলমাল হয়ে গেছে। নিউজপেপারের হেডলাইন পড়ে সে বুঝতে পারলো এসব কথাবার্তা একদম অসম্ভব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নাকি সংঘটিত হয়নি। এটম বোমা এখনো আবিষ্কারই হয়নি।। ইতিহাস টুইস্ট করেছে, সে একটি বইয়ের দোকানে বইয়ের দিকে চোখ রাখে, সে দেখলো সে বইয়ের রাইটার সে স্বয়ং, যে বই ছিল বেস্ট সেলার। প্যারালাল ওয়ার্ল্ডে তার অবিকল একটি কাউন্টার পার্ট আছে যে একজন লেখক নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্ট হওয়ার পরিবর্তে। সে কি এ সব কিছু স্বপ্ন দেখছে? এক বছর আগে সে ভেবেছিল, সে রাইটার হবে কিন্তু সে রাইটার না হয় নিউক্লিয়ার ফিজিক্স নির্বাচন করে, সুস্পষ্টভাবে এ প্যারালাল ইউনিভার্সে তার বিকল্প নির্বাচনটি কার্যকর হয়ে আছে।
ট্রাফোর্ড লন্ডনের একটি টেলিফোন বুকে তার নামের তালিকা পায়, কিন্তু বাড়ির ঠিকানা ছিল ভুল। সে ভুল ঠিকানায় বাড়ি যায়। এপার্টম্যান্টে প্রবেশ করে দেখে তার স্ত্রী এমন একজন যাকে সে পূর্বে কখনো দেখেইনি। সে একজন সুন্দরী নারীর দেখা পায় যে ছিল অজস্র নারীর সাথে পরকীয়ার জন্য তার স্বামীর উপর প্রচন্ড বিরক্ত কিন্তু সে দেখলো তার স্বামী কিছুটা Confused! তার প্রতিরুপ, ট্রেফর্ড দেখলো যে, একজন নারী লোভী। তারপর লোকটি সিদ্ধান্ত নেয়, তার প্রতিরুপ এ নারীর সাথে যে সকল অপরাধ করেছে সে তার সবকিছু মিটিয়ে দেবে। সে শীঘ্রই তার স্ত্রীর প্রেমে পড়ে কিন্তু সে জানেনা যে তার প্রতিরুপ তার স্ত্রীর সাথে কত জঘন্য আচরণ করছে। কয়েক সপ্তাহ অতিবাহিত করার পর সে তার এ জগতের ভালোবাসাকে ছেড়ে আগের জগতে ফিরে আসে। এবং উন্মাদের মতো তার স্ত্রীকে খুঁজতে থাকে। সে আবিষ্কার করে যে, সবাই না হলেও, অধিকাংশ মানুষেরই প্রতিরুপ এ জগতটিতে আছে, সে যুক্তি দাঁড় করায় যে, তার স্ত্রীও হয়তো এ জগতটিতে আছে। সে আসক্ত হয়ে উঠে, ফেলে আসা টুইন মহাবিশ্বের সকল স্মৃতি একত্র করে, ইতিহাস ও ফিজিক্সের সুত্রকে জমাটবদ্ধ করে, সে সিদ্ধান্তে উপনিত হয় যে, দুটি বিশ্ব একে অপরের থেকে Diverge হয়ে গেছে কারণ ১৯২৬ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে কোন একটি ঘটনা ঘটেছে, একটি স্বতন্ত্র ঘটনা, অবশ্যই দুটো ইউনিভার্সকে আলাদা করে দিয়েছে। সে সাবধানে কয়েকটি পরিবারের জন্ম ও মৃত্যু তারিখ অনুসন্ধান করে, অজস্র লোকের কাছ থেকে সে ইন্টার্ভিও নেয় এবং তার স্ত্রীর ফ্যামলি বৃক্ষ লোকেট করতে সক্ষম হয়, আল্টিমেটলি সে তার নিজের বিশ্বে তার স্ত্রীকে খুঁজে পায়ভ। অবশেষে, তাকে বিয়ে করে।
ওয়ার্মহোলে আক্রমণ
কোলেমন দাবি করে বসলেন, তিনি মহাজাগতিক ধ্রুবকের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হয়েছেন যা পদার্থবিদদের প্রায় ৮০ বছর বিভ্রান্ত করে রেখেছিল।। তার কাজকে ডিস্কভার ম্যাগাজিনের কাভার করা হয়েছিল সে সময় একটি আর্টিকেল যার নাম ছিল ” Parallel Universes; The New Reality__From Harvard’s Wildest Physicst! তিনি সায়েন্স ফিকশনের ব্যাপারেও ছিলেন খুবই জংলী, মারাত্মক একজন সায়েন্স ফিকশনের ভক্ত, এছাড়া তিনি Advent Publisher এর কো-ফাউন্ডার, যেটি সায়েন্স ফিকশনের সমালোচনা করে বই প্রকাশ করতো।
সাম্প্রতিক এ বিজ্ঞানী বলে বেড়াচ্ছে বিজ্ঞানীরা নাকি আমাদের জীবদ্দশায় ওয়ার্মহোলের সমাধান বের করতে পারবেনা। আমরা যদি থ্রোনের টাইম মেশিনে বিশ্বাস করি তবে আমাদেরকে এক্সোটিক ম্যাটার অথবা কাসিমির ইফেক্টের উপর মাস্টারিং করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এর পূর্বে আমাদের টাইম মেশিনের ইঞ্জিন কাজ করবেনা যেটি আমাদের অতীতে নিক্ষেপ করতে পারে। একইভাবে আপনি যদি হকিং এর ওয়ার্মহোলে বিশ্বাস করেন, তবে আপনাকে অবশ্যই ইমাজিনারি টাইমে প্রবেশ করতে হবে। ওয়ার্মহোলের ভেতর ভ্রমণ করার জন্য। ইমাজিনারী টাইম কী? ইমাজিনারি টাইম হলো একটি ম্যাথমেটিক্যাল সিমপ্লিফিকেশন যেটি কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স ও জেনারেল রিলেটিভিটির কিছু ইকুয়েশনে ব্যবহার করা হয়। এ ধারণাটি জনপ্রিয় করেছিলেন স্টিফেন হকিং তার Universe in Nutshell গ্রন্থটিতে। মহাবিস্ফোরণের সময় কী ঘটেছিল?
অধিকাংশ মানুষ বলে, মহাবিস্ফোরণ তারপর সবকিছু একইসাথে ও একইসময় বিস্ফোরিত হয়। কিন্তু সময়ের শুরুতে আসলে কী ছিল? এ প্রশ্নটি বিজ্ঞানীদের জর্জরিত করেছিল। আমরা যখন মহাবিশ্বের শুরু নিয়ে কথা বলি, তখন শুরুর পূর্বের সময় বলতে আমরা কোনোকিছু আর বুঝতে পারিনা। আপনি কিভাবে 10 -33 সেকেন্ডকে অনুধাবন করবেন? এ সংখ্যাটির রয়েছে ডেসিমাল পয়েন্টের সাথে ৩০ টি শূন্য। আমরা একেবারে শুরুর সময় নিয়ে কোন কথা বলতে পারিনা, কারণ আমরা সিঙ্গুলারিটিতে এপ্রোচ করি, যেখানে স্পেস-টাইম ও ম্যাটার একটি পয়েন্টে সেন্ট্রালাইজ হয়ে যায় বা একটি বিন্দুই শুধু অবশিষ্ট থাকে, আমরা যদি আজ ২৮ বিলিয়ন গিগাপার্সেক আয়তনের এ মহাবিশ্বকে ক্ষুদ্র করতে করতে একেবারে একটি বিন্দুতে পরিণত করি যেটিকে আর ছেদ করা যায়না তবে আমরা সে বিন্দুর অতীতে কোনোকিছুই জানতে পারবোনা। এটি হলো মহাবিস্ফোরণের প্রারম্ভের একটি দশা। আমরা যতই সিঙ্গুলারিটির দিকে যাবো ফিজিক্সের সুত্র ভেঙে পড়বে। কিন্তু আমরা যদি শুরুর কাছাকাছি সময়কে এনালাইজ করতে চাই তবে আমাদেরকে ইমাজিনারি টাইমে প্রবেশ করতে হবে। একটি অনুভূমিক রেখা অংকন করুন। এই রেখার প্রতিটি বিন্দু সময়ের এক একটি আলাদা আলাদা মুহূর্তকে নির্দেশ করবে। বাম দিক অতীতকে নির্দেশ করছে আর ডানদিক নির্দেশ করছে ভবিষ্যত। এটাকে বলা হয় রিয়েল টাইম। এবার আপনি রিয়েল টাইমের উপর একটি লম্ব অংকন করুন। এটি অপরিহার্য ভাবে ইমাজিনারি টাইমকে নির্দেশ করবে। আপনি যখন রিয়েল টাইমের উপর লম্ব অংকন করবেন, এটি মহাবিশ্বের সকল ঘটনাকে একসাথে ঘটার অনুমোদন দেবে।

আমি আর একটু সহয করে বলি, আপনি আপনার খাতার পাতায় একটা বিন্দু অংকন করুন। মনে করুন সে বিন্দুটি সিঙ্গুলারিটি, সে বিন্দুর দুদিকে দুটি অক্ষ অংকন করুন, যেটি একটি টানেলের মতো তৈরি করবে। বিন্দু থেকে যে দুটি রেখা সামনের দিকে ছুটে চলছে সেটাই আপনার মহাবিশ্ব, রিয়েল টাইম। কিন্তু আমরা রিয়েল টাইম থেকে ঐ বিন্দুর বাহিরের সাদা কাগজটিকে দেখছিনা, বিন্দুর পেছন থেকে দেখলে আমরা দেখবো, মহাবিশ্বের সকল ঘটনা ঐ বিন্দু থেকেই সংঘটিত হচ্ছে এবং আপনি সবকিছু একসাথে দেখবেন।

এই কাল্পনিক সময় সবকিছুকে একসাথে ঘটার অনুমোদন দেয়, আমরা সময়ের শুরুর ধারণাটি প্রত্যাখ্যান করতে পারি, কোন প্রকার শুরুর পয়েন্ট নেই, ইমাজিনারি টাইম এমনকিছু যা সবসময় অস্তিত্বশীল। কাল্পনিক সময় শুরুর কোন বাউন্ডারী নেই। কাল্পনিক সময় থেকে দেখলে কোনো বিগব্যাং নেই, রিয়েল সময়ের কাছাকাছি। কাল্পনিক সময় সময়ের যে কোন পয়েন্টে একই থাকে। এখানে সিঙ্গুলারিটি নামক কোনোকিছু নেই। মুহূর্তেই কাল্পনিক সময়কে ভিজুয়ালাইজ করা এত সহয নয় কিন্তু সিঙ্গুলারিটির মতো বিষয়গুলো গণনা করতে কাল্পনিক সময়ে পদার্থবিজ্ঞানীদের বেস্ট ফ্রেন্ড। হকিং এর ওয়ার্মহোল যেহেতু প্লাঙ্ক ল্যাংথের সমান বা এটা প্রোটন থেকেও মিলিয়ন মিলিয়ন টাইম ক্ষুদ্র, এর অতীতে আমরা রিয়েল টাইমে যেতে পারবোনা, ঠিক যেমনি মহাবিস্ফোরণ বিন্দুর অতীতে যেতে পারিনা আর এ জন্য এ ধরণের ওয়ার্মহোলগুলোতে প্রবেশ করতে হলে ইমাজিনারি টাইমের ভেতর দিয়েই প্রবেশ করতে হবে। কিন্তু আমাদের সাম্প্রতিক প্রযুক্তি খুবই অনুন্নত, বিশ শতকের দুর্বল যন্ত্র দিয়ে আমরা প্লাঙ্ক স্কেলে কাজ করতে পারবোনা। আর এখানেই কোলম্যান কাজ শুরু করেন।
তিনি সাম্প্রতিক দাবি করেন, ওয়ার্মহোল খুবই দৃশ্যমান, খুবই পরিমাপযোগ্য ফলাফল তৈরি করতে পারে, এটি আমাদের জন্য অদূর ভবিষ্যতের কোন ব্যাপার নয়। যেটা আমরা পূর্বে বলেছিলাম, আমরা জানি যে আইনস্টাইনের ম্যাটার ও এনার্জির সারাংশ স্পেসের বক্রতা নির্ধারণ করে। আইনস্টাইন অনুসন্ধান করেছিলেন একেবারে বিশুদ্ধ শূন্যস্থানে কোন এনার্জি আছে কি না। নাকি বিশুদ্ধ শূন্যতা শক্তি মুক্ত? যাহোক, ভ্যাকুয়াম এনার্জিকে এমনকিছু দিয়ে পরিমাপ করা হয় যেটাকে বলে Cosmologocal Constant! মূলনীতি অনুসারে, কোনোকিছুই এ মহাজাগতিক ধ্রুবকে ইকুয়েশনে প্রবেশ করতে নিষেধ করতে পারেনা। তিনি ভাবলেন যে এক ধারণাটি সৌন্দর্যের দিক বিচারে খুব বিশ্রি কিন্তু এটাকে ফিজিক্যাল অথবা ম্যাথমেটিক্যাল গ্রাউন্স থেকে সরানো যায়না। ১৯২০ সালে অত্যন্ত হতাশার সাথে তিনি তার মহাবিশ্বের ইকুয়েশন সমাধান করার চেষ্টা করছিলেন, যে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। তখনকার প্রজ্ঞা বলতো যে, মহাবিশ্ব স্থির ও অপরিবর্তিত। তার তত্ত্বকে প্রতারিত করে তিনি এই সম্প্রসারণের প্রতিবাদ করেন। আইনস্টাইন অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি মহাজাগতিক ধ্রুবক যোগ করেন এবং বলেন এই কনস্ট্যান্ট শুধু সম্প্রসারণের সাথে ভারসাম্য রক্ষা করবে, একটি স্থির ও স্থিতিশীল মহাবিশ্ব তৈরি করবে। আইনস্টাইন কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্টকে ধবংস করে দেন এবং বলেন, এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল।
আমরা আজ জানি যে মহাজাগতিক ধ্রুবক শূন্যের কাছাকাছি। যদি এই মহাজাগতিক ধ্রুবক সামান্য নেগেটিভ হতো? সম্ভবত গ্র্যাভিটি দানবীয়ভাবে বৃদ্ধি পেতো, আর মহাবিশ্ব হয়তো কয়েক ফিট বিস্তৃত হতো মাত্র। আপনি আপনার হাত দিয়েই আপনার চোখের সামনে বিবর্তিত আপনাকে স্পর্শ করতে পারতেন। যদি মহাজাগতিক ধ্রুবক সামান্য পজেটভ হতো, তবে রিপুলসিভ ফোর্স অনেক শক্তিশালী হতো, সবকিছু আপনাকে ছেড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো, গ্যালাক্সিগুলো একে অপরের থেকে এত দ্রুত দূরে সরে যেতো যে স্বয়ং আমাদের গ্যালাক্সি থেকেও আমাদের গ্রহে আলো এসে পৌঁছাতনা। কিন্তু যেহেতু এ দুটির কোনোটাই ঘটেনি, আমরা আত্মবিশ্বাসের সাথেই বলতে পারবো যে, এই মহাজাগতিক ধ্রুবক শূন্য বা অনেক ক্ষুদ্র।
এ ব্যাপারটি ১৯৭০ সালে পূনরায় সারফেসে আসে যখন স্টান্ডার্ড মডেল ও GUT থিওরি সিমেট্রি ব্রেকিং নিয়ে ব্যপকভাবে স্টাডি করছিল। যখন সিমেট্রি ভেঙে যায় বিশাল মাপের এনার্জি শূন্যস্থানে নিক্ষিপ্ত হয়। আসলে, ভ্যাকুয়ামে যে এনার্জির বন্যা প্রবাহিত হয় তার আমাদের অবজার্ভেশনাল এমাউন্ট থেকে ১০১০০ টাইম বেশি। ফিজিক্সের সবকিছুতে এ তারতম্য ১০১০০ প্রশ্নাতীত ভাবে বড়। সাম্প্রতিক আমরা তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে থিয়োরি( যা সিমেট্রি ব্রেকাপের সময় বিশাল ভ্যাকুয়াম এনার্জি প্রেডিক্ট করে) ও অবজার্ভেশনের( যেটি আমাদের মহাবিশ্বে জিরো কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট পরিমাপ করে) মধ্যে বিশাল এই ব্যতীক্রম দেখা যায়। আর এখানেই কোলম্যানের ওয়ার্মহোল প্রবেশ করে কারণ এগুলোর জন্য প্রয়োজন মহাজাগতিক ধ্রুবকের Unwanted Contribution প্রত্যাখ্যান করা। হকিং এর মতে, এখানে রয়েছে অসীম সংখ্যক বিকল্প মহাবিশ্ব যেগুলো আমাদের সাথে Coexist করছে যেগুলো আবার Infinite Web of interlocking Wormhole দ্বারা কানেক্টেড। কোলম্যান এ সসীম ক্রমের কন্ট্রিবিউশন এড করার চেষ্টা করেছিলেন। যখন এ যোগ সম্পাদন হয়। বিস্ময়কর এক ফলাফল আসে। আমাদের মহাবিশ্বের ওয়েভ ফাংশন জিরো কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট পছন্দ করে যেটি ছিল আমাদের প্রত্যাশিত।
যদি এই কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট জিরো হয় তবে, ওয়েভ ফাংশন বিশেষভাবে অনেক বড় হয়ে যায়, এর মানে হলো, জিরো কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্টেই এ মহাবিশ্বকে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি৷ তাছাড়া এ ওয়েভ ফাংশন দ্রুত ভেনিসড হয়ে যায়, যদি কসমলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট নন-জিরো হয় তবে এর মানে হলো, অপ্রত্যাশিত মহাবিশ্বের জন্য জিরো প্রভাবিলিটি কাজ করছে। আর এটা ছিল এক্সেক্টলি সেটাই যার মাধ্যমে আমরা কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্টকে ক্যান্সেল করে দিতে পারি। অন্যকথায় বললে, অধিক সম্ভাব্য ফলাফলের জন্য কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট শূন্য। বিলিয়ন বিলিয়ন মহাবিশ্ব থাকার একমাত্র এফেক্ট হল এটি আমাদের মহাবিশ্বের কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট শূন্য রাখে।
কারণ এটি ছিল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল, পদার্থ বিজ্ঞানীরা সহসাই এ ফিল্ডে লাফিয়ে পড়ে। যখন সিডনি এ কাজের সাথে যুক্ত হয়, সবাই লাফ দেয়,” স্টান্ডফোর্ড ইউনিভার্সিটির লিওনার্দো সাসকিন্ড স্মরণ করেন। তিনি তার ক্লাসিক্যাল দুষ্ট উপায়ে, এই সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল কিছুটা হিউমারের সাথে প্রকাশ করেন, It is always Possible that unknown to myself I am up to my nechk in Quicksand and sinking fast.
কিন্তু ক্রিটিসিজম সারফেজে প্রবাহিত হতে শুরু করে, সবচেয়ে শক্ত সমালোচনা ছিল তিনি ভেবেছিলেন, ওয়ার্মহোল খুবই ক্ষুদ্র, যা প্লাঙ্ক ল্যাংথের সমান এবং তিনি বড় ওয়ার্মহোলগুলো যোগ করতে ভুলে গিয়েছিলেন। সমালোচনকদের মতে, তার যোগফলে বড় ওয়ার্মহোলগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা যেহেতু এখনো বড় কোন ওয়ার্মহোল দেখিনি, এর মানে হলো তার গণনায় মারাত্মক কোন ত্রুটি ছিল।
Unafazed By Criticism কোলম্যান তার স্বাভাবিক পথে হেঁটে যান, তিনি একটি পেপার প্রকাশ করেন যেটির ছিল ভয়ানক টাইটেল। বিশাল ওয়ার্মহোলগুলোকে তার গণনায় অস্বীকার করা হয়েছে এটা প্রমাণ করার জন্য, তিনি প্রতিরোধমূলক একটি সমালোচনা লেখেন যার টাইটেল ছিল, “Escape from the Menace of the Giant Wormholes!” যখন তাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হল, তিনি উত্তর দেন, “এ টাইটেলের জন্য যদি নোবেল প্রাইজ প্রদান করা হতো তবে আমি নিজেই নিজেকে মনোনিত করতাম”!
যদি কোলম্যানের গাণিতিক দাবি বিশুদ্ধ ভাবে সঠিক হয় তবে এটি অত্যন্ত কঠিনভাবে ফিজিক্যাল প্রমাণ উপস্থাপন করবে যে, ওয়ার্মহোল সকল ফিজিক্যাল প্রসেসের জন্য অপরিহার্য এবং শুধুমাত্র কিছু পাইপ ড্রিম নয়। এর মানে হলো যে, ওয়ার্মহোল খুবই প্রয়োজনীয় অসীম সংখ্যক মৃত মহাবিশ্বের সাথে আমাদের মহাবিশ্বকে কানেক্ট করার জন্য। এটি মহাবিশ্বের এমন এক অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য যা আমাদের মহাবিশ্বকে নিজের উপর নিজেকে বক্র (Wrap) হয়ে সংকোচিত হয়ে যাওয়া থেকে উদ্ধার করে। যদি ওয়ার্মহোল না থাকতো তবে কোনকিছুই ইউনিভার্সকে তার নিজের উপর ওয়ার্প হয়ে যাওয়া থেকে Prevent করতে পারতোনা। এটি ঘণ, শক্ত, একটি ক্ষুদ্র বলে পরিণত হতো এবং দ্রুত গতিতে বিস্ফোরিত হতো। এর মানে হল যে, আমাদের মহাবিশ্বকে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রাখার জন্য ওয়ার্মহোল অপরিহার্য। কিন্তু যেহেতু এটি প্লাঙ্ক ল্যাংথে গঠিত হয়, ওয়ার্মহোলের ফাইনাল সলিউশন বোঝার জন্য আমাদেরকে কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি অনুধাবন করার পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, আর এ জন্য প্রয়োজন হবে সুপারস্ট্রিং থিয়োরি। বিশেষ করে, আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, তার তত্ত্বের সসীম কোয়ান্টাম কারেকশন পর্যন্ত। আর এসব অদ্ভুত প্রেডিকশনকে অপেক্ষা করতে হবে আমাদের ক্যালকুলেশন টুলস আরো ধারালো হওয়া পর্যন্ত। আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি যে এ সমস্যাটি মূলত থিওরিটিক্যাল। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ব্রেনপাওয়ার নেই যার মাধ্যমে আমরা এই সুসঙ্গায়িত গাণিতিক প্রবলেম সমাধান করতে পারবো। এই ইকুয়েশন আমাদের ব্লাকবোর্ডেই পড়ে থাকে কিন্তু আমরা অসহায়, এখান থেকে সসীম কোন সলিউশন খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে। যেদিন পদার্থবিজ্ঞানীরা প্লাঙ্ক এনার্জির ফিজিক্স আরো ভালোভাবে অনুধাবন করবে তখন সম্পূর্ণ নতুন সম্ভাব্য মহাবিশ্বের দরজা খুলে যাবে। যেকেউ অথবা যেকোনো সিভিলাইজেশন যারা প্লাঙ্ক ল্যাংথের এনার্জির সত্যিকার মাস্টার তারা ফান্ডামেন্টাল ফোর্সগুলির উপরও মাস্টারি করতে পারবে। আর তখনই আমরা Master of the Hyperspace কে প্রত্যাশা করতে পারবো!