Numerous universes might have been botched and bungled
throughout an eternity, ere this system was struck
out; much labor lost, many fruitless trials made, and a
slow but continual improvement carried out during infinite
ages in the art of world-making.
—David Hume
আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার সেকেন্ড গ্রেড টিচার একটি কারণিক মন্তব্য ( Causal Remark) করেছিলেন যা আমি কখনো ভুলবোনা। তিনি বলেন, ঈশ্বর পৃথিবীকে ভালোবাসেন আর সেজন্য তিনি পৃথিবীকে সূর্য থেকে কিছুটা দূরে রেখেছিলেন। ছয় বছরের একজন শিশু হিসেবে, আমি এ যুক্তির সরলতা ও ক্ষমতা দেখে বিমোহিত হয়েছিলাম। যদি ঈশ্বর সূর্যকে পৃথিবী থেকে অনেক দূরে রাখতেন তবে মহাসমুদ্র বরফ হয়ে যেতো। যদি পৃথিবীকে তিনি অত্যন্ত নিকটে রাখতেন, তবে সমুদ্র বাষ্প হয়ে যেতো। তার মতে, এর মানে, গড শুধুমাত্র অস্তিত্বশীলই নয় কিন্তু তিনি দয়াশীল, তিনি গ্রহকে এতটাই ভালোবাসেন যে, তিনি একে সূর্য থেকে সঠিক দূরত্বে রেখেছেন। এটা আমার উপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে।

আজ বিজ্ঞানীরা বলেন যে, পৃথিবী বাস করে সূর্য থেকে “গোল্ডিলক্স জোনে”, যথেষ্ট দূরে আর এ জন্য তরল পানি, বিশ্বজনীন দ্রাবক অস্তিত্বশীল যা জীবনের রসায়ন’কে তৈরি করে। যদি পৃথিবী সূর্য থেকে অনেক দূরে হতো, এটি মঙ্গলের মতো এক হিমায়িত মরুভূমি হয়ে যেতো, যেখানে তাপমাত্রা কঠোর ও বন্ধ্যা পৃষ্ঠ তৈরি করতো এবং কার্বন ডাই অক্সাইড মাঝেমাঝেই কঠিন বরফ হয়ে যেতো। এমনকি মাটির নিচেও পাওয়া যেতো মঙ্গলের একটি পারমাফ্রস্ট, হিমায়িত জলের স্থায়ী স্তর।
যদি পৃথিবী সূর্যের নিকটবর্তী হয়, তবে এটি অনেকটা শুক্র গ্রহের মতো হয়ে যাবে, যা আমাদের পৃথিবীর সমান কিন্তু যাকে ডাকা হবে গ্রীন হাউজ প্লানেট। কারণ এটি সূর্যের এতটাই নিকটে অবস্থিত যে এর বায়ুমন্ডল কার্বন ডাই অক্সাইডের তৈরি, সূর্যের আলো শুক্র গ্রহণ করে, তাপমাত্রাকে ৯০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে গর্জে উঠার জন্য প্রেরণ করে। এ জন্য ভেনাস একটি উত্তপ্ত গ্রহ, মোটের উপর, সোলার সিস্টেমের ভেতরে। সেখানে সালফিউরিক এসিডের বৃষ্টি, বায়ুমন্ডলের চাপ একশতগুণ বেশি এবং দাহক তাপমাত্রা। শুক্র সম্ভবত সোলার সিস্টেমের সবচেয়ে নারকীয় গ্রহ, বৃহৎভাবে এর কারণ, এটি পৃথিবীর তুলনায় সূর্যের অনেক নিকটবর্তী। আমার সেকেন্ড গ্রেড টিচারের যুক্তি বিশ্লেষণ করে, বিজ্ঞানীরা বলেন যে, তার এ বিবৃতি এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যালের একটি দৃষ্টান্ত যা বলে যে, প্রকৃতির সুত্রগুলোকে আয়োজন করা হয়েছে এই জন্যেই যে জীবন ও চেতনা যেনো সম্ভব হয়। এসব সুত্রগুলো কোন মহান ডিজাইন অথবা দূর্ঘটনা থেকে সৃষ্টি হয়েছে কিনা তা একটি বিতর্কের বিষয়, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে এর কারণ দূর্দমনীয় সংখ্যক দূর্ঘটনা অথবা কো-ইনসিডেন্স যা পাওয়া যায় যা জীবন ও চেতনাকে সম্ভবপর করে তোলে।

কারো মতে, এটি দেবতার প্রমাণ যিনি সুনির্দিষ্ট ভাবে প্রকৃতির সূত্রগুলোকে সাজিয়েছেন জীবন তৈরির জন্য এবং আমাদের। কিন্তু অন্য বিজ্ঞানীদের মতে, এর মানে হলো আমরা দূর্ভাগ্যজনক দূর্ঘটনার বিভিন্ন স্তরের একটি উপজাত। অথবা সম্ভবত, কেউ যদি ইনফ্লেশন ও এম-থিয়োরির শাখা প্রশাখায় বিশ্বাস করে, এটি হলো মাল্টিভার্সের একটি ইউনিভার্স।
এ যুক্তির জটিলতাকে এপ্রিসিয়েট করার জন্য, প্রথমে এ কো-ইনসিডেন্ট বিবেচনা করুন যা জীবনকে সম্ভব করে তোলে। আমরা শুধুমাত্র পৃথিবীর গোল্ডিলক্স জোনে বাস করছিনা, আমরা গোল্ডিলক্স জোনের একটি পরম্পরার মধ্যে বাস করছি। উদাহরণস্বরূপ – আমাদের চাঁদ শুধু সঠিক আকারে আছে পৃথিবীর কক্ষপথকে স্থির করার জন্য। যদি চাঁদ অনেক বেশি ছোট হয়, তবে পৃথিবীর অতি-ক্ষুদ্র বিক্ষোভ ধীরে ধীরে পুঞ্জীভূত হতে থাকবে কয়েকশত বছরের মধ্যে, যা পৃথিবীকে বিপর্যয়কর ভাবে কম্পিত করবে এবং ক্লাইমেটের মধ্যে ধবংসাত্মক পরিবর্তন সংঘটিত হবে যার জন্য জীবন হয়ে উঠবে অসম্ভব!
কম্পিউটার প্রোগ্রাম দেখিয়েছে যে বড় চন্দ্র ছাড়া, পৃথিবীর অক্ষগুলি ৯০ ডিগ্রির চেয়েও বেশি স্থানান্তরিত হতে পারে বহু মিলিয়ন বছর ধরে। যেহেতু বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, ডিএনএর সৃষ্টির জন্য শত বছরের ক্লাইমেটিক স্থিরতা প্রয়োজন। একটি পৃথিবী যা পর্যায়ক্রমে তার নিজের কক্ষ থেকে সরতে থাকে তা আবহাওয়াতে মারাত্মক বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে, ডিএনএর সৃষ্টিকে করে তোলে অসম্ভব।
সৌভাগ্যক্রমে, আমাদের চন্দ্র একদম ঠিক আকারের পৃথিবীর কক্ষকে স্থির করার জন্য, যে জন্য দুর্যোগ সংঘটিত হয়না। যার ফলে, মঙ্গল ধীরে ধীরে অস্থিরতার আর একটি যুগে প্রবেশ করে। অতীতে জ্যোতির্বিদরা বিশ্বাস করতো, মঙ্গল সম্ভবত তার অক্ষের উপর ঘূর্ণায়মান ৪৫ ডিগ্রিতে।
ফোর্সের সামান্য জোয়ারের কারণে, চন্দ্রও পৃথিবী থেকে দূরে গতিশীল প্রতি বছর ৪ সেঃমি হারে; ২ বিলিয়ন বছর পর এটি পৃথিবী থেকে এতটাই দূরে সরে যাবে যে এটি হয়তো পৃথিবীর স্থিরতাকে ধরে রাখতে পারবে না। এ সময় পৃথিবীর জীবনের জন্য অনেক বড় মাপের এক বিপর্যয়। আজ থেকে বিলিয়ন বছর পর, শুধুমাত্র রাতের আকাশ চন্দ্রকে হারাবে না, আমরা সম্ভবত সম্পূর্ণ ভিন্ন স্তরের কনস্টেলশন দেখবো, পৃথিবী তার কক্ষপথে ডিগবাজি খেতে থাকবে। পৃথিবীর আবহাওয়া অচেনা হয়ে যাবে যা জীবনকে করে তুলবে অসম্ভব।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের জিওলজিস্ট পিটার ওয়ার্ড এবং এস্ট্রোনোমার ডোনাল্ড ব্রাউনলি লেখেন, চন্দ্র ছাড়া, চন্দ্রের রশ্মি নেই, কোনো পাগলামি অথবা অ্যাপেলো প্রোগ্রাম নেই, কাব্য নেই, এমন এক বিশ্ব যার প্রতিটি রাত্রি অন্ধকার ও মেঘাচ্ছন্ন। চন্দ্র ছাড়া পাখি নেই,রেডউড নেই, তিমি নেই, ট্রিলোবাইট নেই অথবা অন্য উন্নত জীবন হয়তো পৃথিবীকে কখনো অনুগ্রহ করবে না।
একইভাবে, আমাদের সোলার সিস্টেমের কম্পিউটার প্রোগ্রাম দেখিয়েছে যে, আমাদের সোলার সিষ্টেমে বৃহস্পতির উপস্থিতি পৃথিবীতে জীবনের জন্য সৌভাগ্যময় একটি, কারণ এর বিশাল গ্র্যাভিটি গ্রহাণুকে আউটার স্পেসে ছুঁড়ে ফেলে দিতে সাহায্য করে। এটি প্রায় বিলিয়ন বছর সময় নেয়, ধুমকেতুর সময়কালে যা ৩.৫ বিলিয়ন থেকে ৪.৫ বিলিয়ন বছর অতীত পর্যন্ত প্রসারিত, সোলার সিস্টেমকে গ্রহাণুর ধবংসাবশেষ এবং কমেট থেকে পরিস্কার করার জন্য যা এর সৃষ্টি থেকে ছেড়ে গেছে। যদি বৃহস্পতি অনেক ক্ষুদ্র হতো এবং গ্র্যাভিটি দূর্বল হতো তবে আমাদের সোলার সিস্টেম গ্রহাণুতে পরিপূর্ণ হয়ে যেতো যা পৃথিবীতে প্রাণকে অসম্ভব করে তুলতো, যেহেতু গ্রহাণু আমাদের সমূদ্র দখল করে নিতো এবং জীবনকে ধবংস করে দিতো।
আমরা পৃথিবীর ভরের ক্ষেত্রেও গোল্ডিলক্স জোনে বাস করি। যদি পৃথিবী কিছুটা ক্ষুদ্র হতো, এর গ্র্যাভিটি এতোই দূর্বল হতো যে, এটি এর অক্সিজেন ধরে রাখতে পারতো না। যদি এটি অনেক বড় হতো, এটি হয়তো তার অনেক আদিম ও বিষাক্ত গ্যাস আটকে রাখতো, জীবন হতো অসম্ভব। পৃথিবীর ওজন যথেষ্ট যা বায়ুমন্ডলের গঠনকে জীবনের জন্য অনুকূল রাখে। আমরা অনুমোদিত গ্রহের কক্ষপথের গোল্ডিলক্স জোনেও থাকি। উল্লেখযোগ্য ভাবে ভিন্ন গ্রহের কক্ষপথ, প্লুটো ছাড়া, প্রায় সবাই বৃত্তাকার, এর মানে হলো, সোলার সিস্টেমে প্লানেটারি প্রভাব খুবই দূর্লভ। পৃথিবী কখনো কোন গ্যাসের দৈত্যের কাছে আসবেনা যা খুব সহযে পৃথিবীর কক্ষপথ বিঘ্নিত করে দেয়। এটি আবারও জীবনের জন্য ভালো, যা প্রয়োজন শত মিলিয়ন বছর স্থিরতার জন্য।
একইভাবে, পৃথিবী এছাড়াও, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির গোল্ডিলক্স জোনে অস্তিত্বশীল, এর কেন্দ্র থেকে ২/৩ দূরত্বে। যদি সোলার সিষ্টেম গ্যালাক্টিক সেন্টারের অনেক বেশি কেন্দ্রে হতো, যেখানে ব্লাকহোল লুকিয়ে আছে, রেডিয়েশন ফিল্ড এতটাই তীব্র হতো যে জীবন হতো অসম্ভব। আবার যদি সোলার সিস্টেম গ্যালাক্টিক সেন্টার থেকে অনেক বেশি দূরে হতো, এখানে হয়তো জীবন তৈরির জন্য উচ্চমাত্রিক কোন উপাদান পাওয়া যেতো না।
বিজ্ঞানীরা একটি বিশাল সংখ্যক উদাহরণ দিয়েছেন যে, পৃথিবী গোল্ডিলক্স লিমিটে অবস্থান করছে। জ্যোতির্বিদ ওয়ার্ড ও ব্রাউনলি দাবি করেন, আমরা এত বেশি ন্যারোব্যান্ড অথবা গোল্ডিলক্স জোনের মধ্যে বাস করি যে সম্ভবত আমাদের গ্রহে বুদ্ধিমান জীবন গ্যালাক্সিতে অনন্য, সম্ভবত সম্পূর্ণ মহাবিশ্বে। তারা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উপায় আবৃত্তি করেছেন, পৃথিবীর রয়েছে একদম ঠিক পরিমাণ সমূদ্র, প্লেট- টেকটোনিক, অক্সিজেন কন্টেন্ট, হিট কন্টেন্ট, এর অক্ষের কাত এবং আরো অনেককিছু যা বুদ্ধিমান জীবনকে সম্ভব করে তোলে। যদি পৃথিবী এসব ন্যারোব্যান্ডের একটি থেকেও বাহিরে থাকতো, তবে হয়তো আমরা এ প্রশ্নটি আলোচনার জন্য এখানে থাকতাম না।
পৃথিবীকে অজস্র গোল্ডিলক্স জোনের মাঝে রাখার অর্থ কী ঈশ্বর এটিকে ভালোবাসেন? সম্ভবত, আমরা পারি, সিদ্ধান্তে উপনিত হতে যেখানে দেবতার ও নির্ভরশীলতার প্রয়োজন নেই। সম্ভবত মিলিয়ন মিলিয়ন মৃত গ্রহ আছে স্পেসে, যারা তাদের সূর্যের খুব বেশি নিকটে, যাদের চাঁদ খুব ছোট, যাদের বৃহস্পতি অনেক ক্ষুদ্র অথবা সেটি গ্যালাক্টিক সেন্টারের অনেক বেশি নিকটবর্তী। পৃথিবীতে গোল্ডিলক্স জোনের অস্তিত্বের জন্য এমন ভাবার দরকার নেই ঈশ্বর আমাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখেন, এটি খুব সাধারণভাবে কাকতালীয়, মিলিয়ন মৃত গ্রহের মধ্যে একটি অতি দূর্লভ দৃষ্টান্ত যারা গোল্ডিলক্স জোন থেকে বাহিরে বাস করে! গ্রীক দার্শনিক যিনি এটমের অস্তিত্ব হাইপোথিসাইজড করেন তিনি বলেন, এখানে আছে অসীম সংখ্যক জগত বিভিন্ন আকারের। কিছু জগতে নেই সূর্য ও নেই চন্দ্র। জগতগুলোর দূরত্ব অসমান। কিছু দিকে সেগুলো আরো অনেক বেশি রয়েছে…..
ধবংসযজ্ঞ শুরু হয়, তাদের একে অপরের সাথে সংঘর্ষে। কিছু জগত প্রাণী ও উদ্ভিদের নিয়তি এবং সকল আদ্রতার।
২০০২ সালে, জ্যোতির্বিদরা আবিষ্কার করেন, শতাধিক এক্সট্রা সোলার প্লানেট নক্ষত্রে আবর্তিত হচ্ছে। প্রতি দু-সপ্তাহ একটি হারে এক্সট্রা-সোলার প্লানেট আবিষ্কৃত হচ্ছে। যেহেতু এক্সট্রা- সোলার প্লানেট তাদের নিজেদের কোন আলো বিচ্ছ্যুরিত করেনা বিজ্ঞানীরা তাদের পরোক্ষভাবে সনাক্ত করেছেন। সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য হলো মা তারার ঘূর্ণন পর্যবেক্ষণ করা, এটি সামনে ও পেছনে চলাচল করে এর বৃহস্পতির মতো গ্রহ বৃত্তের চারপাশে। ঘূর্ণায়মান মা নক্ষত্র থেকে নির্গত ডপলার শিপ্ট বিশ্লেষণ করে যে কেউ গণনা করতে পারে কতটা দ্রুততার সাথে এটি চলাচল করতে পারে এবং নিউটনের আইন ব্যবহার করে, এর গতি গণনা করার জন্য।
“আপনি একটি নক্ষত্রকে কল্পনা করতে পারেন যার আছে একটি বিশাল গ্রহ যে তার ডান্স পার্টনার। তাদের বিস্তৃত হাত তালি, দেয়ার সময় চারদিকে ঘুরছে। বাহিরের একটি ক্ষুদ্রতর গ্রহ বৃহৎ দূরত্বে চলাচল করে, একটি বিশাল বৃত্তে যেখানে এর ভেতরের বিশাল পার্টনার শুধুমাত্র তার পা দুটি আবর্তন করে একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র বৃত্তে__ অতি-ক্ষুদ্রতর আভ্যন্তরীণ বৃত্তের চারপাশে আবর্তন যা আমরা এসব নক্ষত্রের মাঝে দেখি __ কার্নেগী ইনস্টিটিউশনের ক্রিস ম্যাককার্টি বলেন। এ প্রক্রিয়াটি এখন এতটাই যথাযথ যে আমরা শুধুমাত্র ক্ষুদ্রতর বৈচিত্র্যতা পর্যবেক্ষণ করতে পারি ৩ মিটার প্রতি সেকেন্ডে একটি নক্ষত্র যা শতাধিক আলোকবর্ষ দূরে।
আরো একটি উদ্ভাবনী পদ্ধতি প্রস্তাব করা হয়েছে আরো অধিক গ্রহ খুঁজে পেতে। একটি হলো নক্ষত্রকে দেখা যখন এটি তার গ্রহকে গ্রহণ করে। যা এর উজ্জ্বলতা কিছুটা কমিয়ে দেয় যখন কোন একটি গ্রহ এর সামনে দিয়ে যায়। এবং পনের থেকে বিশ বছরের মধ্যে NASA ইন্টারফেরোমেট্রি স্পেস স্যাটেলাইট প্রেরণ করবে কক্ষপথে, যেটি সক্ষম হবে, আউটার স্পেসে ক্ষুদ্র ও পৃথিবী সদৃশ গ্রহকে খুঁজে পেতে। ( যেহেতু মা নক্ষত্রের আলো গ্রহটির উপর দুর্দমনীয় হয়ে উঠবে৷ এ স্যাটেলাইট মা নক্ষত্রের তীব্র বর্ণবলয়কে লাইট ইন্টারফেয়ারেন্সের মাধ্যমে ক্যান্সেল করে দেবে যা গ্রহটিকে অরক্ষিত রেখে ছেড়ে যাবে)
এখনো পর্যন্ত, বৃহস্পতি সমান কোনো এক্সট্রাসোলার প্লানেট আবিষ্কৃত হয়নি যা পৃথিবী সদৃশ, এবং সম্ভবত সবাই মারা গেছে। জ্যোতির্বিদরা তাদেরকে আবিষ্কার করেছেন, উচ্চমাত্রিকভাবে অনিয়মতান্ত্রিক কক্ষপথে অথবা এমন কক্ষপথে যা চুড়ান্তভাবে মা নক্ষত্রের কাছাকাছি__ উভয় ক্ষেত্রে, পৃথিবীর মতো, গোল্ডিলক্স জোনে অবস্থিত গ্রহ অসম্ভব। এ সকল বৃহস্পতি সম গ্রহ গোল্ডিলক্স সীমাকে অতিক্রম করে এবং পৃথিবীর মতো ছোট গ্রহকে মহাশূন্যে উড়িয়ে দেয়। জীবনকে প্রতিরোধ করে যেমন আমরা এর গঠন থেকে জানি।
উচ্চমাত্রিকভাবে এসেন্ট্রিক কক্ষপথ স্পেসে খুবই সাধারণ, এতটাই সাধারণ যে, যখন স্পেসে সাধারণ সোলার সিষ্টেম আবিষ্কৃত হয় তখন এটি ২০০৩ সালে হেডলাইন হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ও অস্ট্রেলিয়ার জ্যোতির্বিদ আবিষ্কার করেন, জুপিটারের মতো গ্রহ যা HD70642 নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। এ গ্রহের সবচেয়ে অস্বাভাবিক ব্যাপার হলো এটি ছিলো বৃত্তাকার কক্ষে, মোটের উপর অনুপাতের ঠিক যেমন আমাদের সূর্যে বৃহস্পতি।
ভবিষ্যতে, যাহোক, জ্যোতির্বিদদের সম্ভাব্য সোলার সিষ্টেম থেকে সম্ভাব্য নক্ষত্রদের তালিকা তৈরি করতে সক্ষম হওয়া উচিত। আমরা নিকটবর্তী ২, ০০০ নক্ষত্রকে পরিসংখ্যানের মধ্যে রেখেছি কার্নেগী ইনস্টিটিউশনের পল বাটলার বলেন। যিনি এক্সট্রাসোলার প্লানেটের প্রথম আবিষ্কারের সাথে বিজড়িত ছিলেন ১৯৯৫ সালে। আমাদের লক্ষ দ্বিগুণ, একটি প্রাথমিক নিরীক্ষা প্রদান করা, একটি প্রথম আদমশুমারী, স্পেসে আমাদের নিকটবর্তী প্রতিবেশীদের উপর, এবং মৌলিক প্রশ্নের মোকাবিলায় প্রথম তথ্য প্রদান করা, আমাদের সোলার সিষ্টেম কতটা সাধারণ অথবা কতটা দূর্লভ__ তিনি বলেন।
কসমিক এক্সিডেন্ট
Cosmic Accident
জীবন তৈরি করার জন্য, আমাদের পৃথিবীকে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল হতে হবে শত মিলিয়ন বছরের জন্য। কিন্তু যে বিশ্বটি শত মিলিয়ন বছর স্থিতিশীল সেটি তৈরি করা বিস্ময়করভাবে কঠিন। শুরু করুন যে পদ্ধতিতে এটম তৈরি হয়, এ সত্য দিয়ে যে প্রোটনের ভর নিউট্রন থেকে কম। এর মানে হলো যে, নিউট্রন অবশেষে প্রোটনে ক্ষয় হয়, যেটি নিন্মমাত্রিক এনার্জি স্টেট অধিকার করে। যদি প্রোটন শুধু এক ভাগ ভারী হতো, এটি নিউট্রনে ক্ষয় হতো এবং সকল নিউক্লি অস্থিতিশীল ও বিচ্ছিন্ন হয়ে উঠতো। পরমাণু উড়ে যেতো, জীবন অসম্ভব হয়ে উঠতো।
আর একটি মহাজাগতিক দূর্ঘটনা যা জীবনকে সম্ভব করে তোলে তা হলো প্রোটন স্থিতিশীল এবং এটি ক্ষয় হয়ে এন্টি ইলেক্ট্রনে পরিণত হয়না। একটি পরীক্ষা থেকে দেখা যায়, প্রোটনের ভর সত্যিকার অর্থেই এস্ট্রোনোমিক্যাল, আমাদের মহাবিশ্বের জীবনকাল থেকেও দীর্ঘ। স্থিতিশীল ডিএনএ তৈরির উদ্দেশ্যে, প্রোটন অবশ্যই শত মিলিয়ন বছর সময়ের জন্য স্থিতিশীল হয়।
স্ট্রং নিউক্লিয়ার ফোর্স যদি কিছুটা দূর্বল হতো, ডিউটেরিয়ামের মতো নিউক্লি দূরে ছিটকে পড়তো এবং মহাবিশ্বের কোন উপাদানই সফলতার সাথে নক্ষত্রের অভ্যন্তর তৈরি করতে পারতোনা নিউক্লিও সিন্থেসিসের মাধ্যমে। যদি নিউক্লিয়ার ফোর্স কিছুটা শক্ত হতো, নক্ষত্র তাদের নিউক্লিয়ার ফুয়েল খুব দ্রুত হারিয়ে ফেলতো এবং জীবন বিবর্তিত হতো না।
আমরা যদি দূর্বল শক্তির শক্তি পরিবর্তন করি, আমরা আবারও দেখি জীবন সম্ভব নয়। নিউট্রন যেটি উইক নিউক্লিয়ার ফোর্স দ্বারা কাজ করে, এটি গুরুত্বপূর্ণ বিস্ফোরণশীল একটি সুপারনোভা থেকে এনার্জিকে বাহিরের দিকে নিয়ে আসার জন্য। এ এনার্জি মূলত উচ্চমাত্রিক উপাদানগুলো তৈরির জন্য দায়ী যা আয়রণ এর উপরে। যদি উইকফোর্স সামান্যতম দূর্বল হতো, নিউট্রন অত্যন্ত কঠিনভাবে ইন্টারেক্ট করতো, এর মানে হলো সুপারনোভা আয়রণের উর্ধ্বে কোন উপাদান তৈরি করতে পারতো না। যদি উইকফোর্স কিছুটা স্ট্রং হতো, নিউট্রন সম্ভবত নক্ষত্রের কেন্দ্র থেকে বের হতে পারতো না, আবারও এটি উচ্চমাত্রিক উপাদানের তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করতো যা আমাদের শরীর ও বিশ্বকে তৈরি করেছে।
বিজ্ঞানীরা, মূলত, এ ধরণের ” হেপি কসমিক এক্সিডেন্টের” এক দীর্ঘ তালিকা তৈরি করেছেন। যখন আরোপিত এ তালিকার মুখোমুখি হই, এটি আবিষ্কার করে অভিভূত হই যে, মহাবিশ্বের কত পরিচিত ধ্রুবক লুকিয়ে রয়েছে, অত্যন্ত ন্যারোব্যান্ড নিয়ে যা জীবনকে সম্ভব করে তোলে। যদি এ এক্সিডেন্টগুলোর একটিও কলাপ্স করে, নক্ষত্র তৈরি হবেনা, মহাবিশ্ব উড়ে যাবে, ডিএনএ অস্তিত্বশীল হবেনা, জীবন বলতে আমরা যা বুঝি সেটি অসম্ভব হয়ে উঠবে, পৃথিবী উলটে যাবে অথবা শীতল হয়ে যাবে এবং আরো অনেক কিছু।
জ্যোতির্বিদ হিউজ রোজ বলেন, এ পরিস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাকে জোর দেয়ার জন্য, তিনি তুলনা করেন, এটি বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ যেটি সম্পূর্ণ একত্রিত হয় স্ক্রেপইয়ার্ড থেকে প্রচন্ড ঘূর্ণিজড় থেকে।
দ্যা এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল
The Anthropic Principle
পূনরায়, যে সকল যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে সবগুলো এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যালের আওতায় একত্রিত করা যায়। এখানে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যা যে কেউ গ্রহণ করতে পারে এই গুরুত্বপূর্ণ এ প্রিন্সিপ্যালটির সাথে সম্পৃক্ত। আমার সেকেন্ড গ্রেড টিচার অনুভব করেছিলেন যে এসব আনন্দদায়ক কাকতালীয় ঘটনা গ্রেন্ড ডিজাইন অথবা পরিকল্পনাকে গুরুত্ব প্রদান করে। পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রিম্যান ডাইসন একবার বলেছিলেন, এটি এমন যে মহাবিশ্ব জানে আমরা আসবো। এটি স্ট্রং এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপালের একটি উদাহরণ। এটি এমন একটি ধারণা পদার্থবিদ্যার ধ্রুবকগুলোর সুক্ষ্ম সমন্বয় (Fine Tuning) কোনো দূর্ঘটনা নয় কিন্তু কোনো না কোনোভাবে এটি ডিজাইনারের বিবৃত্তি প্রদান করে। ( উইক এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল খুব সাধারণভাবে বিবৃতি প্রদান করে যে, মহাবিশ্বের ফিজিক্যাল কনস্ট্যান্ট এমন যে এগুলো জীবন ও চেতনা তৈরি করে।)
পদার্থবিদ ডন পেজ এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যালের বিভিন্ন ফর্ম সামারাইজ করেন যা বছরের পর বছর প্রস্তাব করা হয়েছে-
উইক এন্থ্রেইপিক প্রিন্সিপাল – “আমরা মহাবিশ্বে যা কিছু পর্যবেক্ষণ করি তা পর্যবেক্ষকের প্রয়োজনীয়তা দ্বারা আবদ্ধ ।”
স্ট্রং ও উইক এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল – “অজস্র সংখ্যক মহাবিশ্বের মধ্যে অন্তত একটি মহাবিশ্বে জীবন উন্নত হবে।”
স্ট্রং এন্থ্রেইপিক প্রিন্সিপাল- মহাবিশ্বে অবশ্যই প্রাণের উপাদান থাকবে যেকোন সময়ের মধ্যে এটিকে উন্নত করার জন্য।
ফাইনাল এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল- বুদ্ধিমত্তা মহাবিশ্বের সাথেই উন্নত হয়েছে এবং এর কোন মৃত্যু নেই। একজন পদার্থবিদ যিনি এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপালকে মারাত্মকভাবে গ্রহণ করেছেন তিনি হলেন ভেরা কিস্তিয়াকোভস্কি, এমআইটির একজন পদার্থবিদ। তিনি বলেন, আমাদের বস্তুগত মহাবিশ্বের বৈজ্ঞানিক বোধের মধ্যে প্রদর্শিত শৃঙ্খলা স্বর্গের ডাক। দ্বিতীয় বিজ্ঞানী যিনি এটিকে সমর্থন করেন তিনি হলেন জন পোলকিংহর্ন, একজন পার্টিকেল ফিজিসিস্ট, যিনি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অবস্থায় পরিত্যাগ করেন ও ইংল্যান্ডের চার্চে যোগ দেন। তিনি লিখেন, মহাবিশ্ব শুধু মাত্র, “পুরাতন কোন জগত নয়” কিন্ত এটি বিশেষ এবং জীবনের জন্য অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে সমন্বিত কারণ এটি ঈশ্বরের সৃষ্টি তিনি ইচ্ছা করেছেন যে এটি হওয়া উচিত।” মূলত, আইজ্যাক নিউটন নিজেও, যিনি অপরিবর্তনীয় আইনের ধারণার জন্মদাতা যা গ্রহ ও নক্ষত্রকে স্বর্গীয় হস্তক্ষেপ ছাড়াই পরিচালনা করে, বিশ্বাস করতেন যে এ সকল আইনের নমনীয়তা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে চিহ্নিত করে।
কিন্তু নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী স্টিভেন ওয়েইনভার্গ নিশ্চিত নন। তিনি এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যালের আবেদন স্বীকার করেন, এটি প্রায়শ দুর্দমনীয় মানুষের জন্য বিশ্বাস করা যে, মানব জীবন হাস্যকর চেইন অব এক্সিডেন্ট থেকে এসেছে প্রথম তিন মিনিটে ফিরে যাওয়ার জন্য কিন্তু আমরা কোন একভাবে কাঠামো তৈরি করছি শুরু থেকে। যাহোক তিনি অন্তর্ভুক্ত করেন যে, স্ট্রং এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল মরমী মাম্বো জাম্বো থেকে সামান্য বেশি! আরো একজন এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল এর ব্যাপারে নিশ্চিত নয়। প্রাক্তন পদার্থবিদ হেইঞ্জ পেজলস একদা এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন কিন্তু এটি খুব শীঘ্রই ফুরিয়ে যায় কারণ এর কোন প্রেডিক্টিভ পাওয়ার নেই। এ তত্ত্ব টেস্টেবল নয়, এখান থেকে নতুন কোন ইনফরমেশন উত্তোলন করা সম্ভব নয়। পরিবর্তে, এটি টাউলোজির এক অন্তহীন স্রোত__ যে আমরা এখানে আছি কারণ আমরা এখানে আছি।
গুথ এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপালকে ডিসমিস করেছেন, এই বলে যে, আমার পক্ষে এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে কেউ এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল ব্যবহার করবে যদি তার কাছে আরো ভালো এক্সপ্লেইনেশন থাকে। আমি এমনকি, বিশ্বের ইতিহাসের এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপালও শুনেছি… এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপ্যাল হলো এমনকিছু যা মানুষ চিন্তা করে যদি তারা এর চেয়ে ভালো কিছু চিন্তা করতে না পারে।
মেগাভার্স
Megaverse

স্যার পার্টিন রিচের মতো বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এ মহাজাগতিক ঘটনাকে মেগাভার্সের অস্তিত্বের প্রমাণ হিসেবে চিন্তা করার জন্য। রিচ বিশ্বাস করেন, আমরা যে শতাধিক কো-ইনসিডেন্টের অবিশ্বাস্য ক্ষুদ্র একটি ব্যান্ডের ভেতর বাস করি এ বাস্তবতাটি সমাধান করার উপায় মিলিয়নস প্যারালাল ইউনিভার্সের অস্তিত্বের দাবি। মহাবিশ্বের এ মাল্টিভার্সে, প্রায় মহাবিশ্ব মৃত।
প্রোটন স্থিতিশীল নয়। এটম ঘনীভূত হয়না। ডিএনএ গঠিত হয়না। মহাবিশ্ব অপরিপক্ক দশায় কলাপ্স করে অথবা খুব দ্রুত হিমায়িত হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের মহাবিশ্বে মহাজাগতিক ইভেন্টের একটি পরম্পরা সংঘটিত হয়, অপ্রয়োজনীয়ভাবে এর কারণ ঈশ্বরের হাত নয় কিন্তু এর কারণ LAW OF AVERAGE!
একটি দৃষ্টিকোণ থেকে, স্যর মার্টিন রিচ ছিলেন শেষ ব্যক্তি যিনি প্যারালাল মহাবিশ্বের ধারণা জনপ্রিয় করেন। তিনি রয়েল ইংল্যান্ডের একজন জ্যোতির্বিদ এবং মহাবিশ্বের উন্নতির দৃষ্টিকোণের প্রতিনিধিত্বকারী অনেক দায়িত্ব তিনি বহন করেন। সিলভার রঙের চুল, প্রসিদ্ধ, অনবদ্য জামা, রিস ছিলেন সাধারণ মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট মহাবিশ্বের বিস্ময় নিয়ে আলোচনায় সমানভাবে স্বতস্ফুর্ত।
এটি কোন দূর্ঘটনা নয়, তিনি বিশ্বাস করেন যে মহাবিশ্ব সূক্ষ্ম সমন্বিত জীবনের অস্তিত্বশীলতাকে অনুমোদন দেয়ার জন্য। এখানে রয়েছে সাধারণত অজস্র দূর্ঘটনা মহাবিশ্বের জন্য এ ধরণের ন্যারোব্যান্ডে উপনিত হওয়ার জন্য যা জীবনের অনুমোদন দেয়। রিচ লিখেছেন, দৃশ্যমান সূক্ষ্ম সমন্বয় যেখানে আমাদের অস্তিত্ব নির্ভর করে হতে পারে কাকতালীয় (Coincidence)। “আমি এক সময় তা’ই ভাবতাম, কিন্তু এখন সে দৃষ্টিকোণ সংকীর্ণ মনে হয়…. আমরা যখন একবার এটাকে গ্রহণ করি, বৈচিত্র্যময় সুস্পষ্টভাবে মহাবিশ্বের বিশেষ বৈশিষ্ট্য __ সেগুলো যা কিছু থিওলোজিয়ানরা একসময় প্রমাণ হিসেবে পেশ করতেন, দেবতার প্রমাণ অথবা নকশা হিসেবে __ উপলক্ষ্য বিষ্ময়কর নয়।
রিচ তার যুক্তির সারাংশ প্রদান করার চেষ্টা করেছেন, এ ধরণের কিছু কনসেপ্টের সারাংশ কোয়ান্টিফাই করে। তিনি দাবি করেন যে, মহাবিশ্ব প্রতীয়মান হয়, পরিচালিত হচ্ছে ছয়টি সংখ্যা দ্বারা, যার প্রতিটি গণনাযোগ্য ও সুক্ষ্মভাবে সমন্বিত। এ ছয়টি সংখ্যা অবশ্যই জীবনের অবস্থাকে সন্তুষ্ট করে, অথবা অন্যথায় তারা মৃত মহাবিশ্ব তৈরি করে।
প্রথমটি এপসিলন, যা ০.০০৭ এর সমান হাইড্রোজেনের একটি তুলনামূলক পরিমাণ যা মহাবিস্ফোরণের ফিউশন থেকে হিলিয়ামে কনভার্ট হয়েছে। যদি এ সংখ্যা ০.০০৭ এর পরিবর্তে ০.০০৬ হতো, এটি নিউক্লিয়ার ফোর্সকে দূর্বল করে দিতো। প্রোটন ও নিউট্রন একে অপরের সাথে আবদ্ধ হতো না, ডিউটেরিয়াম গঠন হতো না, নক্ষত্রের মধ্যে ভারী বস্তু গঠিত হতো না, গঠিত হতো না আমাদের দেহের এটম, সমগ্র মহাবিশ্ব হয়তো হাইড্রোজেনে বিলুপ্ত হয়ে যেতো। এমনকি নিউক্লিয়ার ফোর্সের অতিক্ষুদ্রতর হ্রাস, পর্যায়সারণী’তে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতো যেখান থেকে জীবন তৈরি হয়।
যদি এপসিলন ০.০০০৮ হতো, তবে ফিউশন হতো অনেক দ্রুতগামী। মহাবিস্ফোরণ থেকে কোন হাইড্রোজেন সার্ভাইভ করতে পারতোনা, এবং কোন নক্ষত্র থাকতোনা আজ এখানে গ্রহকে শক্তি প্রদান করার জন্য। হয়তো দুটি প্রোটন পরস্পর আবদ্ধ হয়ে যেতো, আবারও নক্ষত্রের ফিউশনকে অসম্ভব করে দিতো। রিস সে বাস্তবতার প্রতি ইঙ্গিত করেন যা ফ্রেড হোয়েল আবিষ্কার করেছিলেন, যদি নিউক্লিয়ার ফোর্সের ভেতর পরিবর্তন ৪ শতাংশও হতো তবে নক্ষত্রের ভেতর কার্বনের গঠন অসম্ভব হয়ে উঠতো। হোয়েল আবিষ্কার করেন যে, যদি কেউ নিউক্লিয়ার ফোর্সকে আংশিক পরিবর্তন করে, তবে বেরিলিয়াম হয়তো এতটাই অস্থিতিশীল হয়ে যাবে যে এটি কার্বন এটম তৈরিতে ব্রিজ হতে পারবেনা।
দ্বিতীয় হলো N, যা ১০-৩৬ এর সমান, যা ইলেক্ট্রিক ফোর্সের দৃঢ়তা গ্র্যাভিটির দৃঢ়তা দ্বারা বিচ্ছিন্ন, এটি দেখায় গ্র্যাভিটি ঠিক কতটা দূর্বল। গ্র্যাভিটি যদি আরো দূর্বল হতো, তাহলে নক্ষত্র সম্ভবত ঘনীভূত হতো না এবং তৈরি করতো না ব্যাপক তাপমাত্রা ফিউশনের জন্য প্রয়োজনীয়। এভাবে, নক্ষত্র উজ্জ্বল হতো না, গ্রহ অন্ধকারের বরফে ডুবে যেতো।
কিন্তু গ্র্যাভিটি যদি একটু শক্তিশালী হতো, এটি নক্ষত্রকে দ্রুত উত্তপ্ত করে দিতো এবং তারা তাদের পুড়িয়ে ফেলতো, এতটাই দ্রুত যে জীবন কখনোই শুরু হতো না। এছাড়া, শক্তিশালী গ্র্যাভিটি বোঝায় যে, গ্যালাক্সি গঠিত হবে অতীতে এবং হবে খুবই ক্ষুদ্র। নক্ষত্র হতো খুবই ঘণ বস্তু, বিভিন্ন নক্ষত্রের মধ্যে শুরু হয় বিপর্যয়কর সংঘর্ষ, বিভিন্ন নক্ষত্র ও গ্রহের মাঝে, তারপর মহাবিশ্ব সম্ভবত সম্প্রসারিত হবে এবং খুব দ্রুত শীতল হয়ে উঠবে। কিন্তু যদি ওমেগা অনেক বড় হতো, তবে মহাবিশ্বে জীবন শুরু হওয়ার পূর্বেই পতিত হতো।
রিচ লিখেন, মহাবিস্ফোরণের এক সেকেন্ড পর, ওমেগা ঐক্য থেকে বিচ্চ্যুত হয়নি মিলিয়ন বিলিয়ন ভাগের এক ভাগও (১০-১৫ এর মধ্যে ১), মহাবিশ্বকে আজকের মতো করার জন্য, দশ বিলিয়ন বছর পর, এখনো সম্প্রসারিত হচ্ছে, ওমেগার এমন একটি মান যা নিশ্চিত ভয়ানকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়নি এর একতা থেকে।
চতুর্থত, ল্যামডা, মহাজাগতিক কনস্ট্যান্ট যা মহাবিশ্বের গতি নির্ধারণ করে। যদি এটা মাত্র কয়েকগুণ বড় হতো, যে এন্টি গ্র্যাভিটি এটি তৈরি করতো তা মহাবিশ্বকে দূরে বিচ্ছিন্ন করতো, এটাকে তাৎক্ষণিক মহাশীতলতার মধ্যে নিক্ষেপ করতো, জীবনকে করে তুলতো অসম্ভব। কিন্তু যদি কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট নেগেটিভ হতো, মহাবিশ্ব সম্ভবত সংঘর্ষমূলকভাবে সংকোচিত হতো, জীবন গঠনের বহু পূর্বেই। অন্যকথায়, এ কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট, ওমাগার মতো, নিশ্চিত নির্দিষ্ট ন্যারোব্যান্ডের মধ্যে আছে জীবনকে সম্ভব করে তোলার জন্য।
পঞ্চম হলো Q, কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ডের অনিয়মানুবর্তিতা, যা ১০-৫, এর সমান। যদি এ সংখ্যা কিছুটা ক্ষুদ্র হতো, তবে মহাবিশ্ব চুড়ান্তভাবে ইউনিফর্ম হতো, জীবনহীন গ্যাস ও ধুলিকণা, যা কখনো আজকের নক্ষত্র অথবা গ্যালাক্সিতে ঘনীভূত হতো না। মহাবিশ্ব হয়তো অন্ধকার হতো, একীভূত, বৈশিষ্ট্যহীন, জীবনহীন। যদি Q অনেক বিশাল হতো, বস্তু ইতিহাসে অনেক পূর্বেই ঘনীভূত হয়ে যেতো একটি সুপার গ্যালাক্টিক স্ট্রাকচারে। ” এই মহান বস্তুর দলা বিশাল ব্লাকহোলে ঘনীভূত হতো।” এ ব্লাকহোল সমগ্র গ্যালাক্টিক ক্লাস্টার থেকে ভারীবস্তু হতো, তারা এ বিশাল গ্যালাক্টিক ক্লাস্টারে কঠিনভাবে অবরুদ্ধ হয়ে যেতো আর এতে করে প্লানেটারি সিষ্টেম হয়ে উঠতো অসম্ভব। এই ব্লাকহোল সম্ভবত গ্যালাক্সির সামষ্টিক ক্লাস্টার থেকে ভরসম্পন্ন। যা কিছু গঠিত হয়, এ বিশাল ক্লাস্টারের মধ্যে তা কঠিন ভাবে অবরুদ্ধ হয়ে যায় এবং প্লানেটারি সিষ্টেম অসম্ভব হয়ে উঠে।
অবশেষে আছে, D, স্থানিক মাত্রার সংখ্যা, এম-থিওরির প্রতি আকর্ষণ থেকে, পদার্থবিজ্ঞানীরা একটি প্রশ্নে ফিরে যান জীবন কি সম্ভব উচ্চ ও নিন্মমাত্রায়। যদি স্পেস এক মাত্রিক হয় তবে জীবন সম্ভবত সম্ভব নয় কারণ মহাবিশ্ব তুচ্ছ। স্বভাবত, পদার্থবিজ্ঞানীরা যখন কোয়ান্টাম তত্ত্বকে একমাত্রিক জগতে প্রয়োগ করে, আমরা দেখি যে পার্টিকেল একে অপরকে অতিক্রম করছে ইন্টারেক্ট করা ছাড়াই। অতএব এটি সম্ভব যে মহাবিশ্ব একমাত্রিকতায় অস্তিত্বশীল, তা জীবনকে সমর্থন করেনা কারণ কণাগুলো একে অন্যের সাথে ঐক্যজোট হয়না, ক্রমবর্ধমানভাবে জটিল অবজেক্ট গঠনের জন্য।
দ্বিমাত্রিক স্পেসে, আমাদের আরো একটি সমস্যা আছে কারণ জীবনের কাঠামো হয়তো সম্ভবত বিচ্ছিন্ন হবে। কল্পনা করুন, একটি দ্বিমাত্রিক প্রজাতি, সমতল সত্ত্বা, যাকে ফ্ল্যাটল্যান্ডার বলে, টেবিলের উপর বাস করে। কল্পনা করুন, তারা খেতে চেষ্টা করছে, তার মুখের ভেতর দিয়ে যে পথ পেছন পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে এটি ফ্ল্যাটল্যান্ডারকে বিভক্ত করে ফেলবে, এবং সে দুদিকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আর এভাবে এটা কল্পনা করা কঠিন যে কিভাবে ফ্ল্যাটল্যান্ডার অস্তিত্বশীল হতে পারে একটি জটিল সত্ত্বা হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন খন্ডে বিচ্ছিন্ন হওয়া ব্যতীত।



চিত্র- দ্বিমাত্রিক জগত থেকে যে কেউ ত্রিমাত্রিক জগতের উচ্চতা নামক ডায়মেনশনে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে কিন্তু দ্বিমাত্রিক জগতের কোন সত্ত্বা তাদের দেখবেনা, কারণ দ্বিমাত্রিক জগতে আলো প্রবাহিত হবে ডানে, বামে, সামনে ও পেছনে । সে জগতে উপর ও নিচ নামক কোনো দিক কাজ করেনা। আর এ জন্য আকস্মিক দ্বিমত্রিক জগত থেকে কাউকে ত্রিমাত্রিক জগত বা উচ্চতার মধ্যে দাঁড় করালে তার দেহের আলো দ্বিমত্রিক জগতের প্রাণিরা দেখবেনা কারণ আলো তার শরীরের নিচে দিয়ে ভ্রমণ করবে যা পুরোপুরি এম্পটিস্পেস। ঠিক একইভাবে, ফোরথ ডায়মেনশনের কোনো প্রাণীকে যদি পঞ্চম মাত্রায় উঠিয়ে নেয়া হয়, তবে আলো তার নিচে দিয়ে ভ্রমণ করবে, এ জন্যই আমরা পঞ্চম মাত্রার কোনো প্রাণীকে দেখতে পাবোনা। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, দ্বিমাত্রিক জগতের কোনো প্রাণীকে খাওয়ানো যায়না, থিকনেস বা উচ্চতা না থাকার কারণে খাবার সরাসরি মুখের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে একেবারে দেহের বাহিরে শূন্যস্থানে চলে যায়।
আর একটি যুক্তি এসেছে, জীববিজ্ঞান থেকে যা নির্দেশ করে, বুদ্ধিমত্তা ত্রিমাত্রিক থেকে কম মাত্রায় থাকতে পারে না। অথবা মস্তিষ্ক একটি বড় সংখ্যক অধিক্রমণশীল (Overlapping) নিউরন দ্বারা সংযুক্ত বিশাল ইলেক্টিক্যাল নেটওয়ার্ক। যদি মহাবিশ্ব এক বা দ্বিমাত্রিক হয়, তবে কমপ্লেক্স নিউরাল নেটওয়ার্ক গঠন করা খুব কঠিন, বিশেষ করে একটির উপর অন্যটি রাখলে যদি তারা শট শার্কিট করে। নিন্মমাত্রিক ডায়মেনশনে, আমরা মারাত্মকভাবে কমপ্লেক্স লজিক সার্কিটের সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং নিউরন যাদের আমরা ক্ষুদ্রতর এলাকায় স্থাপন করি। আমাদের ব্রেনে , উদাহরণস্বরূপ – ১০০ বিলিয়ন নিউরন বিদ্যমান, ঠিক যেমন মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির নক্ষত্র, যাদের প্রতিটি নিউরন ১০০০০ অন্যান্য নিউরন দ্বারা যুক্ত। এ ধরণের জটিলতা সম্ভবত নিন্মমাত্রায় নকল করা খুবই কঠিন।
ফোর্থ স্পেস ডায়মেনশনে, আরো একটি সমস্যা আছে- গ্রহ সেখানে তাদের সূর্যের চারপাশের কক্ষপথে স্থিতিশীল থাকবেনা। নিউটনের বিপরীত বর্গ বিপরীত ঘণক্ষেত্র (Inverse cube) দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে এবং ১৯১৭ সালে, পল আর্নেস্ট আইনস্টাইনের কাছের এক সহকর্মী, কল্পনা করেছেন, বিকল্প ডায়মেনশনে ফিজিক্স কেমন হতে পারে। তিনি বিশ্লেষণ করেন যেটাকে বলে পয়সন-ল্যাপলেস সমীকরণ ( যা প্লানেটারি বস্তুর গতি ও এটমের ইলেক্ট্রিক্যাল চার্য শাসন করে) এবং তিনি দেখেন যে, চার্য বা তার অধিক মাত্রায় কক্ষপথ স্থিতিশীল নয়। যেহেতু এটমের ইলেক্ট্রন এবং প্লানেট র্যান্ডম কোয়ালিশনের স্বীকার হবে, এর মানে হলো যে, এটম ও সোলার সিষ্টেম সম্ভবত উচ্চমাত্রায় অস্তিত্বশীল নয়। অন্য কথায়, ত্রিমাত্রিকতা আসলেই বিশেষ।
রিচ বলেন, এনথ্রেইপিক প্রিন্সিপাল মাল্টিভার্সের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় যুক্তিগুলোর একটি। ঠিক একইভাবে, পৃথিবীর গোল্ডিলক্স জোন এক্সট্রাসোলার প্লানেটকে বোঝায়, আমাদের মহাবিশ্বে গোল্ডিলক্স জোনের উপস্থিতি বোঝায় যে এখানে প্যারালাল মহাবিশ্ব আছে। রিচ মন্তব্য করেন, যদি এখানে জামার বিশাল একটি স্টোক থাকে, আপনি বিষ্মিত হবেন না যে যদি কোন একটি আপনার শরীরের সাথে মানানসই হয়।
যদি এখানে অজস্র মহাবিশ্ব থাকে, প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা দ্বারা পরিচালিত হয়, এখানে অবশ্যই একটি থাকবে যেখানে বিশেষ সেটের সংখ্যা থাকবে যা জীবনের জন্য উপযুক্ত। আমরা তাদের একটিতে। অন্যকথায়, আমাদের মহাবিশ্ব হলো একটি উপায় এর কারণ গড়ের সুত্র, মাল্টিভার্সের অজস্র মহাবিশ্বের মধ্যে, কোন গ্রেন্ড ডিজাইনের জন্য নয়।
ওয়েইনবার্গ এ বিষয়ে একমত বলে মনে হয়। ওয়েইনবার্গ আসলে মাল্টিভার্সের ধারণাটিকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সন্তোষজনক মনে করেন। তিনি এ ধারণা পছন্দ করেন না যে সময় আকষ্মিক মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে এবং এর পূর্বে সময় অস্তিত্বশীল ছিলো না। মাল্টিভার্সে আমাদের রয়েছে অনন্ত সৃষ্ট মহাবিশ্ব।
রিচ মাল্টিভার্সকে পছন্দ করার সাপেক্ষে আরো একটি সুস্পষ্ট কারণ রয়েছে। তিনি দেখেছেন, মহাবিশ্ব সামান্য পরিমাণ কদর্যতা ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ, পৃথিবী কিছুটা উপবৃত্তাকার, যদি এটি পুরোপুরিভাবে বৃত্তাকার হতো তবে, যে কেউ দাবি করতে পারতো, ধার্মিকদের মতো, এটি ডিভাইন ইন্টারভেনশনের একটি বাই-প্রোডাক্ট। কিন্তু এটি তা নয়, এটি সংকীর্ণ গোল্ডিলক্স ব্যান্ডের মধ্যে নিশ্চিত পরিমাণ কিছু বিশৃঙ্খলা প্রদর্শন করে। একইভাবে কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট সম্পূর্ণ শূন্য নয় কিন্তু ক্ষুদ্র যা নির্দেশ করে যে, আমাদের মহাবিশ্ব বর্তমান প্রয়োজনীতা থেকে অনেক বেশি বিশেষ নয়। এগুলোর সবগুলোই আমাদের মহাবিশ্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে মহাবিশ্ব উৎপত্তি লাভ করেছে দূর্ঘটনা থেকে।
মহাবিশ্বের বিবর্তন
Evolution of Universe
দার্শনিক না হয়ে, জ্যোতির্বিদ হওয়ার কারণে, রিচ বলেন, শেষ কথা হলো যে, এ সব তত্ত্ব প্রমাণের যোগ্য। প্রকৃতপক্ষে এটি ছিলো কারণ যে জন্য তিনি মাল্টিভার্স এর ধারণার অনুকূলে ছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী রহস্যবাদীতত্ত্বের পরিবর্তে। মাল্টিভার্স তত্ত্ব তিনি মনে করেন, পরবর্তী বিশ বছরের মধ্যে পরীক্ষা করা সম্ভব। এ মাল্টিভার্সের ধারণার একটি প্রকরণ বর্তমানে পরীক্ষাযোগ্য। পদার্থবিদ লি স্মোলিন রিচ থেকেও অনেক দূর চলে যান এবং কল্পনা করেন যে, মহাবিশ্বের বিবর্তন সংঘটিত হয় ডারউইনের বিবর্তনের সমরূপ, আল্টিমেটলি এটি আমাদের মহাবিশ্বের নেতৃত্ব দেয়। কেয়োটিক ইনফ্লেশনারী তত্ত্বে, উদাহরণস্বরূপ, বোন মহাবিশ্বের ভৌত ধ্রুবক মা মহাবিশ্বের ভৌত ধ্রুবক (Physical Constant) থেকে আলাদা। যদি মহাবিশ্ব ব্লাকহোল থেকে উচ্ছ্বসিত হয়, যেমন কিছু পদার্থবিদ বিশ্বাস করেন, তবে মহাবিশ্ব যারা মাল্টিভার্সকে শাসন করে তারা হলো সেগুলো যাদের রয়েছে বেশিরভাগ ব্লাকহোল। এর মানে হলো যে, প্রাণীর রাজত্বে, যে সকল মহাবিশ্ব, অধিকাংশ বাচ্ছা জন্ম দিতে পারে, অবশেষে ডোমিনেট হয় এবং তাদের জেনেটিক্যাল ইনফরমেশন ছড়িয়ে দেয়__ মহাবিশ্বের ভৌত ধ্রুবক।
যদি এটি সত্য হয় তবে অতীতে আমাদের মহাবিশ্বের সম্ভবত অজস্র সংখ্যক পূর্বসূরি মহাবিশ্ব রয়েছে এবং আমাদের মহাবিশ্ব ট্রিলিয়ন বছরের ন্যাচরাল সিলেকশনের ফলাফল। অন্যকথায়, আমাদের মহাবিশ্ব সার্ভাইভাল ফিটেস্টের একটি বাইপ্রোডাক্ট, এর মানে এটি হলো সে সকল মহাবিশ্বের সন্তান যাদের রয়েছে সর্বোচ্চ ব্লাকহোল।
যদিও মহাবিশ্বের ডারউইনীয় বিবর্তন একটি মহান ধারণা, স্মোলিন বিশ্বাস করেন যে, এটি খুব সহযেই ব্লাকহোলের সংখ্যা পরিমাপ করে পরীক্ষা করা যায়। আমাদের মহাবিশ্ব সম্ভবত ব্লাকহোল তৈরির জন্য সর্বোচ্চ অনুকূল। ( যদিও কেউ এটা প্রমাণ করতে পারবেনা কোন ব্লাকহোলটি এমন মহাবিশ্বের জন্ম দেয় যা প্রাণবান্ধব)
যেহেতু এ ধারণা পরীক্ষাযোগ্য। বিপরীত যুক্তিও গ্রহণযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ এটা দেখানো যায় যে, সম্ভবত, মহাবিশ্বে সমন্বিত আনুমানিক ভৌত প্যারামিটার সে সকল ব্লাকহোল থেকে এসেছে সেগুলো এমন কোন মহাবিশ্বে তৈরি হয়েছে যেটি জীবনহীন। উদাহরণস্বরূপ, সম্ভবত, যে কেউ দেখাতে সক্ষম যে, অত্যন্ত শক্তিশালী নিউক্লিয়ার ফোর্সের একটি মহাবিশ্বের এমন সব নক্ষত্র আছে যারা চুড়ান্ত দ্রুততার সাথে তাদের নিজেদের পুড়িয়ে ফেলে। সে সকল মহাবিশ্বে নিউক্লিয়ার ফোর্সের বিশাল মান নির্দেশ করে যে, নক্ষত্রের জীবন খুব সংক্ষিপ্ত, এমনকি জীবন শুরুই হওয়ার সময় পায়না, কিন্তু এসব মহাবিশ্বেরও সম্ভবত অজস্র ব্লাকহোল আছে, যেজন্য স্মোলিনের ধারণাটি অপ্রমাণিত হয়ে যায়। এ ধারণার একটি সুবিধা হলো, এটাকে পরীক্ষা, পূনরুৎপাদন এবং মিথ্যা বর্ণনা করা যায়। সময়ই বলে দেবে এটি থাকবে কী থাকবেনা!
যদিও যেকোনো তত্ত্ব যা ওয়ার্মহোল, সুপারস্ট্রিং এবং হায়ার ডায়মেনশনের সাথে জড়িত তা আমাদের সাম্প্রতিক এক্সপেরিমেন্টাল ক্ষমতার মধ্যে নেই, নতুন এক্সপেরিমেন্ট পরিচালিত হবে এবং ভবিষ্যতের একজন পরিকল্পনা করবে যা নির্ধারণ করবে এ তত্ত্ব সত্য কি মিথ্যা। আমরা পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের মধ্যস্থলে, স্যাটাইটের পরিপূর্ণ ক্ষমতা, স্পেস টেলিস্কোপ, গ্র্যাভিটি ওয়েভ ডিটেক্টর এবং লেজার সত্ত্বা এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আসবে। এসব পরীক্ষার প্রভূত ফসল বিশ্বতত্ত্বের কিছু গভীর প্রশ্নের সমাধান করবে। ( ইনফ্লেইশন এন্ড প্যারালাল ইউনিভার্স )
অনুবাদঃ
প্যারালাল ওয়ার্ল্ড মিচিও কাকু
বইটি ক্রয় করতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ
হেলিক্স ভার্চুয়াল ইউনিভার্সিটির যেকোনো এডমিনের সাথে।
মহাবিশ্বের একজন ডিজাইনার মহাবিশ্বের একজন ডিজাইনার মহাবিশ্বের একজন ডিজাইনার মহাবিশ্বের একজন ডিজাইনার মহাবিশ্বের একজন ডিজাইনার মহাবিশ্বের একজন ডিজাইনার মহাবিশ্বের একজন ডিজাইনার