Can't find our books? Click here!

পুরুষ কেন সিনিয়র নারীদের পছন্দ করে?

প্রাইম রঙ তিনটি, কিন্তু এ তিনটি রঙ দিয়ে ১৬ মিলিয়ন কালার তৈরি করা যায়। প্রাইম স্বাদ চারটি, কিন্তু এই চারটি স্বাদের কম্বিনিশন ঘটিয়ে গণনাতীত খাবারের আইটেম তৈরি হয়। একই ব্যাপার কী মানুষের অনুভূতির উপর অ্যাপ্লাই করা যায়? সম্ভবত, এর উত্তর হলো, ইয়েস। মানুষের প্রধান নিউরো-ট্রান্সমিটার ৭টি এবং হর্মোন ৯টি। এ সকল নিউরোট্রান্সমিটার ও হর্মোনের কম্বিনিশনে হাজার হাজার অনুভূতি তৈরি হয়। মানুষের আকাঙ্খা আসলে খুবই জটিল।

আমরা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে মহাবিশ্বের তের বিলিয়ন বছর অতীত দেখতে সক্ষম হয়েছি, কিন্তু এখনো মানব আকাঙ্খার অনেক কিছুই জানি না। আর মানুষের এই জটিল আকাঙ্খার ভেতর লুকায়িত মৌলিক সমীকরণ বুঝতে আমাদের যে প্ল্যাটফর্মটি সহযোগিতা করেছিল, তার নাম পর্নোইন্ডাস্ট্রি।

১৯৭৩ সালে মনোবিজ্ঞানী কেনেথ গারজেন একটি এক্সপেরিমেন্ট করেছিলেন। তিনি ১০ জন নারী ও পুরুষকে একটি অন্ধকার ল্যাবে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করে দিয়েছিলেন, একদম নিস্তব্ধ অন্ধকার। তিনি তাদের বলেছিলেন, আপনাদের যা ইচ্ছা তাই করুন। তিনি দেখতে চেয়েছিলেন, একজন মানুষকে যখন অন্ধকারে রাখা হয়, সে কী করতে চায়।মজার ব্যাপার হলো, ৯০% নারী ও পুরুষ অন্ধকারে কিস করেছিল, তাদের দেহের সংবেদনশীল স্থানে হাত রেখেছিল। উত্তেজনার চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছানোর ঠিক পূর্বেই, তিনি লাইট অন করলেন এবং সকল অংশগ্রহণকারীকে বের করে নিয়ে আসলেন।

কিন্তু গারজেন অবাক হয়ে দেখলেন, ৮০% অংশগ্রহণকারী কাকুতি মিনতি করে বলছে, আমাদের আবার অন্ধকার ল্যাবে রেখে দিন। আজকের যুগের পর্নোগ্রাফিক সাইটগুলো হলো, কেনেথ গারজেনের সেই অন্ধকার ল্যাবের সম্প্রসারিত ভার্সন। যেখানে প্রতিদিন মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ অন্ধকারে ক্লিক করছে। আর আমাদের ইমেইল আইডি ও জেন্ডারের ওপর ভিত্তি করে গবেষকরা আমাদের নিয়ে গবেষণা করছেন। আমরা বুঝতেও পারছি না যে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে।

ডগপাইল নামক একটি মেটা সার্চ ইঞ্জিন আছে। গবেষকররা সে সাইটের ওপর গবেষণা করেছিলেন। তারা দেখতে পান, ডগপাইলে অধিকাংশ পুরুষ কোন ধরনের নারীদের পর্নো অনুসন্ধান করে। তারা দেখেছিলেন বেশিরভাগ পুরুষ একজন নারীর বয়সকে, তার অন্যান্য গুণ থেকে বেশি প্রায়োরিটি দিচ্ছে। প্রায় সকল পুরুষ সুনির্দিষ্ট একটি বয়সের নারী অনুসন্ধান করেছিলেন আর সেটা ছিল “nake-d 25-year-olds” or “se-xy 40-year–olds”।

ইউটিউব আসার পর ইউটিউবকে কপি করে আরও অসংখ্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়। কিন্তু ইউটিউবের সাথে সেগুলোর তারতম্য ছিল, সেগুলো অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করত। ২০০৭ সালে অসংখ্য অ্যাডাল্ট প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল Red#ube, X#Tube, You#Porn, and XN#XX। তারা একপ্রকার একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতাই করেছিল। পূর্বে এই সকল সাইটের আয়ের উৎস ছিল সাবস্ক্রাইব কিন্তু পর্নোগ্রাফি নিয়ে প্রতিযোগিতা এতটাই তুমুল হয়ে উঠেছিল যে, অসংখ্য সাইট জনসাধারণকে ফ্রি অ্যাকসেস দিয়ে দেয়, তাদের আয়ের উৎস এখন বিজ্ঞাপন।

পর্নোহাব এসেছিল ২০০৭ সালে। এটি প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ভিজিটরকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়। অতীতের সকল ইন্ডাস্ট্রিকে পর্নোহাবের এই সফলতা ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু কী এমন ইউনিক ছিল এখানে যে পর্নোহাব আসার পর, অন্যান্য সাইটগুলোর রিচ কমে যায়? এর একমাত্র কারণ ছিল, তারা নিষিদ্ধ ভিডিও আপলোড করেছিল, ধর্ষণ, অজাচার ও পশুকাম। কিন্তু আপনি কী জানেন, পর্নোহাবের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ টার্ম কোনটি? এই প্রশ্নের উত্তর হলো “Mom”। মিলিয়ন মিলিয়ন পুরুষ সেক্স করার জন্য “মম” ফিগার অনুসন্ধান করেছে! আর এই “মম” পর্নোহাবকে আরও বেশি জনপ্রিয় করে তোলে। বয়স্ক নারীর প্রতি এই যৌন তাড়নার ওপর ভিত্তি করে পর্নো ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন একটি টার্ম চালু হয় “MILF” যার মিনিং হলো “Mo#ther I’d Like to Fu#ck।

যেখানে আমাদের দেশে আমরা মাদার লাইক ফিগারকে সম্মান করি। সেখানে এই সম্মানিত ফিগারকে অন্ধকারে, বিশ্বের মিলিয়ন মিলিয়ন পুরুষ কামনা করেছে শয্যাসঙ্গী হিসেবে! ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সালে, এটি ছিল সেক্সচুয়াল আকর্ষণের সবচেয়ে লাভজনক জনরা। এটি এত বেশি প্রফিট করেছিল যে, সবশেষে মানুষের আকাঙ্খা পূরণ করার জন্য একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়, যার নাম MILF Hunter।

এমনকি রক্ষনশীল ইন্ডিয়াতেও, আমরা তাদের নিজস্ব ভার্সনের MILF দেখতে পাই, যার মধ্যে বিখ্যাত ছিল “Savita Bhabhi”। কিন্তু টিনএজ অথবা তরুণী নারী রেখে, কেন পুরুষরা সবিতা ভাবীকেই চেয়েছিল, যে দুধ বিক্রেতা থেকে শুরু করে চা-দোকানদার সবাইকে আকৃষ্ট করতে চায়? সবিতা ভাবী গল্পের সিরিজ এতটাই বিখ্যাত হয়েছিল যে, এটি কয়েকটি ভাষায় অনুদিত হয়েছিল এবং পরে এটি রাষ্ট্রীয়ভাবে ভ্যান করা হয়। কিন্তু কেন? ২০১০ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, ২৭ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীরা যৌনতার ক্ষেত্রে অনেক বেশি উন্মুক্ত হয়, তাদের মধ্যে ব্যাপক সেক্সচুয়াল ফ্যান্টাসি কাজ করে এবং তারা অতিরিক্ত পরিমাণে ওয়ান নাইট স্ট্যান্ডে যেতে চায়।

অ্যালেক্সা কোম্পানি নামক একটি কোম্পানি আছে, যেটি বিভিন্ন সাইটের ট্র্যাফিক গণনা করে। একবার এই কোম্পানি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের তালিকা প্রকাশ করেছিলেন, যার মধ্যে ৪২,৩৩৭টি ওয়েবসাইট ছিল অ্যাডাল্ট সাইট। ২০১০ সালের এই গবেষণা অনুসারে, এই সংখ্যা ছিল মোট সাইটের ৪%। আর এই চার শতাংশ সাইটের মধ্যে ৩১৩ ছিল “granny sites”, যে সাইটহগুলোতে পুরুষ মমকে ছেড়ে গ্র্যান্ড মমকে অনুসন্ধান করেছিল।

ঠিক এ সময় ইংল্যান্ড এবং কেনিয়ায় “rules of sexual shame” নামক একটি আইন করা হয়, যে আইনের মূল কথা ছিল, তরুণ ছেলেরা দাদী ও নানীর সাথে খোলাখুলি সেক্সচুয়াল কথাবার্তা বলতে পারবে। রাশিয়া, ইন্ডিয়া, ইউরোপ ও জাপানের ওয়েবসাইটগুলোর ওপর একবার অ্যালেক্সা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, সেখানে বলা হয়, এ সকল ওয়েবসাইটের মধ্যে ২,৪৬২ ওয়েবসাইট ছিল তরুণী নারীদের এবং ১,২৩৭টি সাইট ছিল বয়স্ক মহিলা বা MILF। কিন্তু কেন পুরুষ মম লাইক ফিগারের প্রতি এত আকৃষ্ট? কেন অধিকাংশ পুরুষের সেক্সচুয়াল অভিজ্ঞতা সিনিয়র কোনো নারীর সাথেই হয়? কেন আমাদের দেশে ভাবী চরিত্রটি এত বেশি সেক্সি? এর বিজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী?

আসলে তরুণী নারীরা আনপ্রেডিক্টেবল, এদের হর্মোনাল ফ্ল্যাকচুয়েশন অনেক বেশি, এরা অস্থিতিশীল ও অপরিপক্ক। এজন্য পুরুষ ম্যাচুরিটি সম্পন্ন নারী পছন্দ করে। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান অনুসারে, তরুণরা বয়স্ক নারী এজন্যই পছন্দ করে কারণ তারা সন্তান লালন-পালন করার মতো স্থিরতা রাখে। কিন্তু সমস্যা হলো, বয়স্ক নারীদের উর্বরতা বয়সের সাথে হ্রাস পায়। আর তাই পুরুষের উচিত ছিল, বয়স্ক নারী পছন্দ না করে, তরুণ নারী পছন্দ করা কিন্তু তারা তার বিপরীত কাজই করছে। কিন্তু কেন?কারণ হলো, একজন নারী যখন একবার সফলতার সাথে সন্তান জন্ম দেয়, তখন এটি আমাদের অবচেতন মনে তার উর্বরতার সিগন্যাল পাঠায়। এটি আমাদের বলে, এই নারী অতীতে সন্তান উৎপাদনে সফল হয়েছে, আর তাই তোমারও তাকে কামনা করা উচিত।

এছাড়া আফ্রিকার জঙ্গলে বয়স্ক নারীদের সামাজিক অবস্থান ভালো ছিল, তাদের স্থিতিশীল সম্পদ ছিল, আর তাই তরুণরা হয়তো, সে নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল, তার সম্পদ সন্তান লালন-পালনে ব্যবহার করার জন্য। রবার্ট ট্রিভার বলেন, বয়স্ক নারীরা সন্তানের জন্য অনেক বেশি ইনভেস্ট করে, তারা খুবই বিশ্বস্ত হয়, তাই আমাদের অবচেতন মন সিনিয়র নারীর প্রতিই সেক্স ফিল করে। আর তরুণী নারীর প্রতি আমাদের আগ্রহ থাকা খুবই স্বাভাবিক কারণ তারা উর্বর। কিন্তু আপনি স্বীকার করুন বা নাই করুন, পৃথিবীর ৯৫% পুরুষ প্রতি মাসে একবার হলেও “মম” লিখে সার্চ করে।

___ লেখাটি আমার প্রকাশিতব্য বই “এক্স-ইউনিভার্স: ফেমিনিন ফিউশন” থেকে

Reference: A Billion Wicked Thoughts: What the Internet Tells Us About Sexual Relationships Paperback 

আমাদের বইয়ের জন্য ভিজিট করুন- “হাইপারস্পেস প্রকাশনীর বই

পুরুষ কেন সিনিয়র নারীদের পছন্দ করে?/ পুরুষ কেন সিনিয়র নারীদের পছন্দ করে?