লিহন প্রাইমের লেখা “সায়ানোব্যাক্টেরিয়া থেকে সাইবারসেক্স: মানব সভ্যতার যৌনতার প্রাইমাল নেক্সাস এবং ল্যাপস” বইটি নিছক একটি পাঠ্য নয়—এটি মহাবিশ্বের এক বিশাল রহস্যের দরজা খুলে দেয়!
বইটির মূল ভাবনাটি সত্যিই চমকপ্রদ: মহাবিশ্বের প্রায় 10^80 অণুর মধ্যে ডিএনএ অণুই হলো সেই একমাত্র অণু, যাকে আমরা “নিউক্লিক অ্যাসিড” বলি, যা পৃথিবীতে জীবনের সূচনা করেছে । হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম যেমন গ্রহ-নক্ষত্র গড়ে তুলেছে, তেমনি ডিএনএ অণু গড়ে তুলেছে জীবন । আর এই ডিএনএ অণুকেই ট্রান্সমিট ও প্রিজার্ভ করার তাগিদ থেকে আমাদের যৌনতা এবং ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ানো ।
এই বইটি আপনাকে সেই ৩.৬ বিলিয়ন বছর পূর্বের প্রাইমাল স্যুপে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে , যেখানে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে মুক্তির জন্য কোনো প্রোটেক্টিভ আমব্রেলা ছিল না পৃথিবীর মাথায় । ঠিক সেই বিপজ্জনক ও বিশৃঙ্খল পরিবেশে জীবনের প্রথম রূপ ফটোসিন্থেসিস সায়ানোব্যাক্টেরিয়া বের হয় । লেখক দেখিয়েছেন, কীভাবে এই সায়ানোব্যাক্টেরিয়া সমুদ্রে অক্সিজেন বৃদ্ধি করেছিল, যা ছিল জীবনের জন্য একটি টক্সিন , এবং কীভাবে এই অক্সিজেন ফ্রি রেডিক্যাল থেকে জেনেটিক উপাদানকে রক্ষা করার জন্য প্রথম সেক্স বিবর্তিত হয়েছিল! এটি যেন জীবনের উৎপত্তির এক হাড় শীতল করা সত্যের সন্ধান!
গবেষক, লেখক ও অনুবাদক লিহন প্রাইম শুধুমাত্র এই শ্বাসরুদ্ধকর বিবর্তনের গল্পটিই বলেননি, বরং ভালোবাসাকেও নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তাঁর মতে, ভালোবাসা আর কিছুই নয়—এটি পেট্রোলিয়াম ও টিনের মতোই সাধারণ এক পদার্থ , যা ডোপামিন, সেরেটোনিন, অক্সিটোসিন ও ভেসোপ্রেসিনের মতো অল্পকিছু অণুর মিথস্ক্রিয়া । এই জটিল পদার্থটি কীভাবে কাজ করে, তা তিনি ফিজিক্স ও রসায়নের নিয়মে পরিচালিত একটি অবজেক্ট হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন ।
ডাইনোসরের বিলুপ্তি থেকে শুরু করে নারীর যোনি দেখা দেওয়ার প্যারাডক্সিক্যাল ইতিহাস, স্পার্মের যুদ্ধ, রোম্যান্টিক ভালোবাসা, একগামিতা, বহুগামিতা, নারীবাদ-পুরুষতন্ত্র, এবং সাইবার ওয়ার্ল্ড এক্সপোজার ও মানব সভ্যতার যৌনতার এক ভয়াবহ মিসস্টেপ—সকল কিছুই এই গ্রন্থে উদ্ভাবন করা হয়েছে!
“সায়ানোব্যাক্টেরিয়া থেকে সাইবারসেক্স” বইটি অসংখ্য বিতর্কিত থিয়োরি ও হাইপোথিসিসের এক শক্তিশালী সমাবেশ । যারা মহাবিশ্বের রহস্য ও জীবনের বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি মাস্ট-রিড!


