Can't find our books? Click here!

বিজ্ঞানীদের মস্তিষ্কের স্ট্রাকচার আলাদা?

মানুষের মস্তিষ্কের কোন অংশটি তাকে এক্সট্রা অর্ডিনারী করে তুলতে পারে?পৃথিবীর আট বিলিয়ন মানুষের মাঝে যে কেউ কী ইচ্ছে করলেই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আইনস্টাইন হতে পারে?ম্যাথমেটিক্স এবং ফিজিক্সের ওপর আধিপত্য অর্জন করলেই কী আইনস্টাইন হওয়া যায়? যদি যেত আইনস্টাইনের প্রতিশব্দ নেই কেনো ? আইনস্টাইন কেনো আইনস্টাইন?

জিনিয়াসরা কী জন্মায় নাকি তাদেরকে তৈরি করা হয়?জিনিয়াসদের সিক্রেট কী তাদের জিনের মধ্যেই লিখা আছে?নাকি জিনিয়াসদের মস্তিষ্কের নিউরনের সংখ্যা আমাদের চেয়ে বেশি? এটা আমরা সবাই জানি, আমাদের মস্তিষ্কের সেলগুলি আমাদের বয়সের পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হয় না!নিউরন সেলের সংখ্যা যদি সবার মাঝে একই হয় তবে জিনিয়াসরা কেন সবার থেকে আলাদা? এটা পরিস্কার যে জিনিয়াস হওয়ার জন্যে ৩০০ ট্রিলিয়ন নিউরনের কোনো প্রয়োজন নেই! বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, নিউরন সেলের ভেতর জিনিয়াসদের কোনো সিক্রেট লুকায়িত না থাকলেও গবেষণায় একটা বিষয় এখন বিজ্ঞানীরা পরিস্কার যে, যখন আমরা নতুন কিছু শিখি তখন আমাদের ব্রেন নিজেই পরিবর্তিত হয়ে যায়!বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যদিও সময়ের সাথে আমাদের মস্তিষ্কের কর্টেক্সে নিউরন সেল পরিবর্তন হয় না কিন্তু আমরা যখন নতুন কিছু শিখি তখন নিউরাল কানেকশন চেঞ্জ হয়ে যায়।

২০১১ সালে একজন ট্যাক্সিক্যাব ড্রাইভারের মস্তিষ্কের ওপর বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেন যিনি লন্ডনের ২৫ হাজার গোলকধাঁধার মতো রাস্তা মুখস্ত করে ফেলেছেন যা দ্বারা আধুনিক লন্ডন গঠিত।বিজ্ঞানীরা কিছু সাধারণ ড্রাইভারকে প্রথমে টেস্ট করেছিলেন তারপর তাদের তিন বছর প্রশিক্ষণ দেন, তিন বছর পর যারা উত্তীর্ণ হয়েছিল তাদের মস্তিষ্ক টেস্ট করে দেখা যায় তাদের মস্তিষ্কের পোস্টারিয়র এবং এন্টারিয়র হিপ্পোক্যাম্পাসে গ্রে ম্যাটারের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে; এগুলি ছিল সে স্থান যেখানে মেমরি প্রসেস হয়।

একজন ট্যাক্সিকেব ড্রাইভারের হিপ্পোক্যাম্পাস

মানুষের মস্তিষ্কের নিউরো প্লাস্টিসিটি ৯০ বছর বয়সেও একই থাকে যেন সে নতুন ইনফরমেশনের সাথে অভিযোজিত হতে পারে।বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, যে সকল ইঁদুররা অনেকগুলি টাস্ক একসাথে শেখে তাদের ব্রেন অন্যদের থেকে আলাদা। এর মানে এই নয় এ তাদের মস্তিষ্কের নিউরন সেলের সংখ্যা পরিবর্তিত হয়েছে যেটা পরিবর্তিত হয়েছিল সেটি ছিল তাদের মস্তিষ্কের নিউরাল কানেকশন যদিও নিউরন সেল একই থাকে আর এভাবে তাদের ব্রেন স্ট্রাকচার চেঞ্জ হয়ে যায়।কানাডিয়ান সাইকোলজিস্ট ড.ডোনার্ল্ড হেব আবিষ্কার করেছেন, আমরা যতই কোনো একটি কাজের দক্ষতা উন্নত করি তার সাথে সম্পৃক্ত আমাদের মস্তিষ্কের নিউরাল পথ Reinforced হয় এবং কাজটা করা আমাদের জন্যে সহয হয়ে উঠে।

বিস্ময়করভাবে এটা কোনো ডিজিটাল কম্পিউটারের পক্ষে সম্ভব নয়।আপনি কী কখনো শুনেছিলেন কম্পিউটারে নতুন একটা সফটওয়্যার ডেভেলাপ করার পর তার হার্ডওয়্যারের কানেকশন চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে ?একমাত্র আমাদের মস্তিষ্কই নতুন কিছু শেখার সাথে সাথে তার নিউরাল কানেকশনকেও আপডেড করে এবং এটি প্রতিটি মুহুর্তে সংঘটিত হয়।এটাই ডিজিটাল কম্পিউটার এবং আমাদের মস্তিষ্কের ভেতর ফান্ডামেন্টাল তারতম্য। বিজ্ঞানীরা মিউজিশিয়ানদের মস্তিষ্কের উপর গবেষণা করে দেখেছেন, একজন ব্যাক্তি যদি জীবনে দশ হাজার ঘন্টা মিউজিক প্রাক্টিস করে তবে তিনি ভবিষ্যতে মাস্টার হতে পারবেন কারণ তার মস্তিষ্কের নিউরাল কানেকশন আপডেট হতে প্রায় ৪১৬ দিন লাগে।বাস্কেটবল প্লেয়ার,সায়েন্স ফিকশন রাইটার,আইস স্ক্যাটার,কনসার্ট পিয়ানিস্টের ওপর গবেষণা করার পরেও একই ফলাফল পাওয়া যায়।

অতএব প্রমাণিত হয় যে, বহুল প্রচলিত উক্তি, Practice Makes a Man Perfect পুরোপুরি সত্য।আপনি ম্যাথমেটিশিয়ান হতে চান? তবে প্রাক্টিস করুন!ক্রমাগত প্রাক্টিসের কারণে আপনার মস্তিষ্কের নিউরাল কানেকশন চেঞ্জ হয়ে যাবে। আর যখনই নিউরোপ্লাস্টিসিটির কারণে নিউরাল কানেকশন শক্তিশালী হয়ে উঠবে তখন আপনার কাছে ম্যাথমেটিক্সকে আর কঠিন মনে হবে না! আমরা যদি ক্রমাগত প্রাক্টিসের মাধ্যমে আমাদের ব্রেন কানেক্টম লেভেলাপ করে ফেলি তবে যেকোনো কিছুই আমাদের পক্ষে করা সম্ভব!!!

একজন সিরিয়াল কিলারের মস্তিষ্কের কানেক্টম ডেভেলাপ হওয়ার কারণেই তার কাছে খুন করাটা একেবারেই সহজ!অনেকে তাদের জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তার জন্য অনেক বেশি অহংকার করে! এটা একেবারেই হাস্যকর! যে কারও পক্ষেই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ব্রেন কানেক্টম পরিবর্তন করে দেয়া সম্ভব! কিন্তু সত্যিকার অর্থেই কী আমরা আইনস্টাইন হওয়ার ক্ষমতা রাখি? আইনস্টাইন কী জেনেটিক্যালি আইনস্টাইন নয়! বন্ধুরা! আমি নেক্সট আর্টিকেলগুলিতে হিউম্যান ইন্টিলেজেন্টের সিক্রেট নিয়ে আরও গভীরভাবে আলোচনা করব।মানুষের ইন্টিলিজেন্টের নিউরোলজি এবং ট্যাকনোলজিকালি ইন্টিলিজেন্ট আপডেট করার পদ্ধতি নিয়ে আরও গভীর কিছু তথ্য নিয়ে আমার পরবর্তী আর্টিকেলগুলি সাজানো হবে…!

আমাদের আরো আর্টিকেলগুলি পড়ুন;
বিজ্ঞানীদের মস্তিষ্কের স্ট্রাকচার আলাদা; তথ্যসুত্র-