হাইপারস্পেস থিয়োরি আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি থেকেই সৃষ্টি হয়। থিয়োডোর কালুজা সর্বপ্রথম বলেন যে , আলো এবং গ্রেভেটিকে একই গণিতের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়। আর এটাই ছিল প্রকৃতির প্রতিটি ফোর্সকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রথম প্রচেষ্টা যেটি ফিজিক্সের আল্টিমেট গোল। এ জন্য শুধু একটাই রাস্তা খোলা আছে আর তা হলো এক্সট্রা ডায়মেনশন যোগ করা। ফিফথ ডায়মেনশন গাণিতিক ভাবে সম্ভব কিন্তু এটি রিয়েলিটির প্রকৃত উপাদান হিসেবে কখনো প্রস্তাব করা হয়নি। তবুও এ তত্ত্বের উপকারীতা আসলে ফেলে দেয়ার মতো নয়। ফিফথ ডায়মেনশনে মূলত লাইট এবং গ্রেভেটিকে একীভূত করা যায়। এখন প্রশ্ন হলো, ফিফথ ডায়মেনশন আসলে কোথায়? কালুজা ক্লেইন একটি থট এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে ব্যাপারটি বুঝিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিফথ ডায়মেনশন এটম থেকে ক্ষুদ্র, এতটাই ক্ষুদ্র যে আমরা এটাকে দেখতে পারিনা কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এটি আমাদের থ্রি-ডায়মেনশনাল ইউনিভার্সের বাহিরে। এটি এমনভাবে বক্র হয়ে আছে , আমরা একে দেখিনা , অন্য তিনটি ডায়মেনশন সম্প্রসারিত তাই তা আমাদের কাছে দৃশ্যমান। বক্র ডায়মেনশন কী এ ব্যাপারটি বোঝার জন্য কল্পনা করুন, একটি পিঁপড়া একটি স্ট্রিং বা রশির উপর বাস করে বা লাইনল্যান্ডার। অনন্তকাল সে শুধু দুটি ডিরেকশন সম্পর্কেই সজাগ ছিল, ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড। সে শুধু সামনে ও পেছনে মুভ করতে পারতো। তার জগত ছিল এক মাত্রিক।

কিন্তু আপনি যদি খুব গভীরভাবে রশিটির দিকে তাকান, রশিটির আসলে পরিধি আছে, একটি এক্সট্রা- ডায়মেনশন, বাঁকানো একটি বৃত্তে এটি নিজের উপর আবৃত। আপনি যদি এ ডায়মেনশনটি ধরে টান দেন, এই টান পরিধিকে আরো বড় করে তুলবে এবং সম্ভবত পিঁপড়াটি সিলিল্ডার বা নলের দ্বিমাত্রিক পৃষ্ঠে বাস করবে। কিন্তু যখনই এটি পুনরায় বক্র হয়ে যাবে, পিঁপড়া ব্যাপারটি অনুধাবন করতে পারবেনা কিন্তু সহসা রশিটি বক্র হয়ে যাওয়ায় মিডিয়ামে ভাইব্রশন তৈরি হবে অথবা অন্য কোনো ফিজিক্যাল ইফেক্ট।

হাইপারস্পেস তত্ত্ব অনুসারে, আমাদের ফোর্থ ডায়মেনশনাল মহাবিশ্ব আরও ছয়টি ডায়মেনশন লুকিয়ে রেখেছে। মনে করুন, আমাদের দ্বিমাত্রিক একটি সমতল রয়েছে যেটি বড় আকারে দেখা যায়। প্লেনের প্রতিটি পয়েন্টেই গোলকের দুটি বক্র মাত্রা রয়েছে। আমাদের মহাবিশ্বে প্রতিটি পয়েন্টে গোলক নেই। কিন্তু হায়ার ডায়মেনশনাল অবজেক্টের ছয়মাত্রিক Calabi Yau Manifost রয়েছে। আমরা কেন এই ম্যানিফোল্ড দেখিনা কারণ এগুলো 19^– 33 সেঃ মি। এতটাই ক্ষুদ্র যে শুধু ক্ষমতাবান মাইক্রোস্কোপই ধরতে পারে। কিন্তু এ ম্যানিফোল্ডের ভেতর স্ট্রিং এর কম্পন সকল ফিজিক্সের সোর্স।
আমাদের মহাবিশ্বে তিনটি ডায়মেনশন রয়েছে, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা। যেগুলোকে আমরা X,Y ও Z, অক্ষের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারি। এ তিনটি সংখ্যার মাধ্যমে আপনার নাকের ডগা থেকে শুরু করে মহাবিশ্বের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত, আপনি সকল অবজেক্টের লোকেশন নির্ণয় করতে পারবেন। এ ডায়মেনশনের উর্ধ্বে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, আরো অজস্র মাত্রা রয়েছে। আসলে স্ট্রিং তত্ত্বের থিওরিটিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক থেকে দেখলে মহাবিশ্ব দশটি আলাদা ডায়মেনশনে অবস্থান করছে। এ ভিন্ন ভিন্ন ডায়মেনশনগুলোই মহাবিশ্ব, প্রকৃতির ফান্ডামেন্টাল ফোর্স এবং সকল এলেমেন্টারি কণাকে শাসন করে। প্রথম ডায়মেনশন, যা ইতোমধ্যে বলা হয়েছে।। এটি আপনাকে দৈর্ঘ্য প্রদান করবে( X অক্ষ) ।

একমাত্রিক অবজেক্টের সবচেয়ে দারুণ উদাহরণ হলো, সরল রেখা। এর কোন দৃশ্যমান গুণ নেই। যখনই আপনি এর সাথে সেকেন্ড ডায়মেনশন যোগ করবেন, Y-axis অথবা উচ্চতা তখন এটি দ্বিমাত্রিক অবজেক্টে পরিণত হবে ( অনেকটা বর্গক্ষেত্রের মতো)।

থার্ড ডায়মেনশন গভীরতার( depth) সাথে জড়িত (z-axis)। যেটি আমাদের সকল বস্তুকে সেন্স অব এরিয়া ও ক্রস সেকশন প্রদান করে। এর একটি ভালো উদাহরণ হল, ঘণক্ষেত্র। যেটি তিন মাত্রায় অস্তিত্বশীল এবং রয়েছে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা এবং অবশ্যই আয়তন।

এর বাহিরেও আরো সাতটি ডায়মেনশন আছে যেগুলোকে আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারিনি কিন্তু মহাবিশ্ব ও রিয়্যালিটিতে এর গুরুত্বপূর্ণ ইম্প্যাক্ট রয়েছে। কোন একটি প্রাণীর যদি “Depth” না থাকে তবে সে কোনোকিছু খেতে পারবেনা, তার খাদ্যনালী তার দেহকে দু-ভাগে বিচ্ছিন্ন করে দেবে, কোনকিছু ধরে রাখার জন্য Third Dimension অপরিহার্য। খাতার একটি পাতার কথা কল্পনা করুন যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে কিন্তু কোনো উচ্চতা নেই। এটি একটি দ্বিমাত্রিক পৃষ্ঠ৷। আপনি যদি দ্বিমাত্রিক জগতের কোনো একজন কয়েদিকে ত্রিমাত্রিক জগতে তুলে নেন পাহারাদাররা সেটা টেরই পাবেনা। কারণ তারা শুধু Forward, Backward, Left ও right বোঝে “উচ্চতা” নামক থার্ড ডায়মেনশন সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। আর এ জন্য তাদের মনে হবে তাদের জগত থেকে কেউ একজন মিস্টেরিয়াসলি অদৃশ্য হয়ে গেছে।


ফোর্থ ডায়মেনশন হল সময়। সময়কে চতুর্থ মাত্রা বলা হয়। যা আমাদেরকে একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে বস্তুর প্রোপার্টি সম্পর্কে ধারণা দেয়। প্রথম, তিনটি মাত্রা বস্তুর পজিশন এর সাথে সম্পর্কযুক্ত, আর চতুর্থ মাত্রা মহাবিশ্বে এর পজিশনকে অঙ্কন করে। একটা বস্তুর, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা আছে কিন্তু সময়ের ডিউরেশন নেই, তবে সেই বস্তু কোথাও তার পজিশন তৈরি করতে পারবেনা।

স্পেসের ভেতর আমরা সামনে, পেছনে, ডানে, বামে, উপরে ও নিচে যেতে পারি, সময়ের ভেতর শুধু অতীত থেকে ভবিষ্যতের দিকে ভ্রমণ করা যায় কিন্তু ভবিষ্যত কখনো অতীতের দিকে যায়না। অন্যভাবে বললে, P- axis সবসময় F- axis কে অনুসরণ করে কিন্তু F কখনো P কে অনুসরণ করেনা। আমরা উপরের দিকে লাফ দিলে গ্রেভেটির টানে নিচে পড়ে যাই ঠিক তেমনি আমাদের ব্রেন ভবিষ্যতকে স্মরণ করতে চাইলে কোন এক অদেখা ফোর্স আমাদের প্রতিবন্ধকতা আরোপ করে। আর সে ফোর্স তৈরি হয় থার্মোডায়নামিক্সের দ্বিতীয় সূত্র থেকে যা সময়ের সাথে মহাবিশ্বের “এন্ট্রপি” বাড়িয়ে চলে।
ফিফথ ডায়মেনশনঃ একটি আপেলের কথা চিন্তা করুন যার পৃষ্ঠ দ্বিমাত্রিক। সে দ্বিমাত্রিক পৃষ্ঠে একটি ফ্ল্যাটওয়ার্ম বাস করে যার নাম নিউটন। নিউটন শুধু দুটি মাত্রা অনুভব করে। ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড। একদিন নিউটন অনুভব করলো, তার আপেলটি কোন এক অদেখা ডায়মেনশনে বক্র হয়ে আছে। সে বুঝতে পারেনি সেই ডায়মেনশন আসলে কেমন কিন্তু এটাকে বোঝার জন্য, সে Up ও Down দুটো শব্দ আবিষ্কার করে। একদিন তার এই আবিষ্কারকে প্রমাণ করার জন্য সে একটি দীর্ঘ ভ্রমণের আয়োজন করে। নিউটন অবাক হয়ে দেখে, সমস্ত আপেলটি ভ্রমণ করে সে আবার পূর্বের পয়েন্টে ফিরে আসে। Point A থেকে সে পথ চলতে চলতে সম্পূর্ণ আপেলটি ঘুরে আবার সে Point A তে’ই ফিরে এলো ।

সে আকস্মিক আবিষ্কার করলো, সে অতীত ভ্রমণ করেছে। শনিবার ১২.৩০ মিনিট যদি পয়েন্ট A হয় , সে সম্পূর্ণ আপেল ঘুরে আবার সেই শনিবারের ১২.৩০ মিনিট বা পূর্বের সময়েই ফিরে এসেছে! এবার সে নিশ্চিত হল, তার এই দ্বিমাত্রিক জগত সীমাবদ্ধ। কোনো এক অদেখা মাত্রায় বক্র হয়ে থাকার কারণেই মূলত সে তার জগতটি তাকে দীর্ঘ পথ ঘুরিয়ে আবার পূর্বের পয়েন্টেই নিয়ে আসছে। এর মানে হলো, এ জগতটিতে অসীমকাল ঘুরলেও সে একই সময়ে ফিরে আসবে। সে শিহরিত হলো! তার এই আপেল ওয়ার্ল্ড এমন একটা মাত্রায় বক্র হয়ে আছে, যে ডায়মেনশন থেকে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত একসাথে দেখা যায়। এবার সে ভিন্ন কিছু চিন্তা করলো, পয়েন্ট A থেকে পয়েন্ট B তে ভ্রমণ করার নতুন একটা উপায় । সে আপেলটির মাঝখানে একটা ছিদ্র করে দুটি পয়েন্টকে একটি টানেল দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দেয় । এবং সে গর্তের মধ্যে প্রবেশ করে । কিন্তু একি! পূনরায় সে আগের জায়গায় ব্যাক করছে, যে অতীত থেকে সে ভ্রমণ শুরু করেছিল। কল্পনা করুন, মাকড়সার জ্বালের কথা, একটি মাকড়সা তার বৃত্তাকার তন্তুগুলোতে ঘুরে বেড়ায়। মাকড়সার জালের দুটি পৃষ্ঠ থাকে। একটি upper Surface আর অন্যটি Lower। সে চাইলে উপরের পৃষ্ঠ থেকে নিচের পৃষ্ঠে তার তন্তুগুলো বেয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে পারে আবার সম্পূর্ণ জালের মাঝখানে যে ক্ষুদ্র ছিদ্র আছে সে ছিদ্রের ভেতর পড়েও যেতে পারে যেটাকে বলা যায় ওয়ার্মহোল। এ ওয়ার্মহোলে যখন সে পতিত হবে, সে অপর পৃষ্ঠে নিজেকে খুঁজে পাবে ( সময় ও স্থান ফিল করবেনা) । কিন্তু একি এ জগত হুবহু তার আগের জগতের রেফ্লিকা!

আর এভাবেই ফ্ল্যাটওয়ার্ম বিজ্ঞানী বুঝতে পারে মূলত আপেল আর একটি ডায়নেনশনে বক্র আর এ ডায়মেনশন থেকে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের কোন ঘটনাই হারায় না। আর এটি থার্ড ডায়মেনশন। যেটাকে আমরা “উচ্চতা” বলে জানি। আমাদের জগতও মূলত, ফিফথ ডায়মেনশনে বাস করে। ফ্ল্যাটওয়ার্মের মতোই আমরা থ্রিডি থেকে এটাকে বুঝতে পারিনা কিন্তু এর প্রভাব অনুভব করতে পারি। আমাদের চারপাশে সে শূন্যস্থান এটি মূলত এই ফিফথ ডায়মেনশনে বক্র হয়ে আছে, আর ইলেক্ট্রিসিটি, ম্যাগনেটিজম হল ফিফথ ডায়মেনশনেরই কম্পন। শব্দ যেমন বাতাসে কম্পন তৈরি করে ঠিক তেমনি আলোও ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন আলোকবর্ষ দূর থেকে এই ফিফথ ডায়মেনশনের কম্পনের কারণেই মহাবিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যায়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এক্সপেরিমেন্ট করে দেখেছেন, আলো মহাবিশ্ব ভ্রমণ করার সময় কিছুটা বক্র হয়ে যায়। আর এখান থেকে প্রমাণিত হয় আপেল ওয়ার্ল্ডের মতোই আমাদের ইউনিভার্স পঞ্চম মাত্রায় বক্র হয়ে আছে। ফিফথ ডায়মেনশনে বক্র হয়ে থাকার কারণে আমাদের ইউনিভার্সও সসীম।।
ফ্ল্যাটওয়ার্মের মতোই আমরা যদি সমস্ত মহাবিশ্ব ঘুরে আসতে পারি তবে আমরা হয়তো নিজেদেরকে পূর্বের সময়েই ফিরে পাবো। আবার আমরা চাইলে এ পঞ্চম মাত্রার ভেতর টানেল তৈরি করে পয়েন্ট A থেকে পয়েন্ট B তে চলে যেতে পারবো। আর এভাবে আমরা টাইম ট্রাভেল করতে সক্ষম হবো। আমাদের ইউনিভার্স যেহেতু পঞ্চম মাত্রায় বক্র,অতএব এ মহাবিশ্বের কোন ঘটনাই পঞ্চম মাত্রার বাহিরে নেই। আমরা যদি পঞ্চম ও ষষ্ঠ মাত্রায় প্রবেশ করতে পারি আমরা স্পেসের যে বিন্দুতেই অবস্থান করিনা কেনো মহাবিশ্বের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের ক্রমবিকাশ একসাথে দেখতে পাবো।
খাতার দ্বিমাত্রিক পৃষ্ঠায় অংকিত কোন ছবি যেমন আমাদের ত্রিমাত্রিক সত্ত্বার অগোচর নয় ঠিক তেমনি ফিফথ ও সিক্সথ ডায়মেনশন থেকে আমাদের মহাবিশ্বের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতও একসাথে দেখা যায়। আপনি যদি ফিফথ ডায়মেনশনের ভেতর দিয়ে তাকান তবে আমাদের মহাবিশ্ব থেকে কিছুটা ভিন্ন মহাবিশ্ব দেখতে পাবেন, আর এভাবে আমাদের জগত ও সম্ভাব্য জগতের সাথে সাদৃশ্যতা নির্ণয় করতে পারবেন। মূলত, সিক্সথ ডায়মেনশন থেকে আপনি প্লেন অব ওয়ার্ল্ড দেখতে পাবেন। যেখানে আপনি সম্ভাব্য সকল মহাবিশ্বের পজিশন তুলনা করতে পারবেন যে মহাবিশ্বগুলো মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে একই প্রাথমিক অবস্থা থেকে শুরু হয়। তাত্ত্বিকভাবে, আপনি যদি ফিফথ ও সিক্সথ ডায়মেনশনের মাস্টার হতে পারেন আপনি সময়ের অতীতে ভ্রমণ করতে পারবেন অথবা চলে যেতে পারবেন ভিন্ন ভিন্ন ভবিষ্যতে।

সেভেন্থ ডায়মেনশনে, আপনি সে সকল সম্ভাব্য মহাবিশ্বগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন যেগুলো একই প্রাথমিক পরিস্থিতিতে সৃষ্টি হয়নি। যেখানে ফিফথ ও সিক্সথ ডায়মেনশনের ক্ষেত্রে প্রাথমিক কন্ডিশন একই কিন্তু পরবর্তী বা সাবসিকোয়েন্ট কন্ডিশন ভিন্ন কিন্তু সাত মাত্রা থেকে আপনি দেখবেন, সে সকল মহাবিশ্ব যে সব মহাবিশ্বে সময়ের শুরু থেকেই সবকিছু ভিন্ন ভিন্ন।
এইটথ ডায়মেনশন ( Eighth Dimension) থেকে আপনি সম্ভাব্য এমন সব মহাবিশ্বের সমান্তরাল ইতিহাস দেখতে পাবেন, যার প্রতিটি ভিন্ন প্রাথমিক কন্ডিশন থেকে শুরু হয়েছে এবং অসীমভাবে তারা কাটা চামুচের মতো শাখা প্রশাখা বিস্তার করে নতুন নতুন মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রক্রিয়া ধরে রেখেছে। (আর এ জন্য এগুলোকে অসীম বলা হয়)
নাইন্থ ডায়মেনশ (Ninth Dimension) থেকে আপনি কম্পেয়ার করতে পারবেন সম্ভাব্য মহাবিশ্বের ইতিহাস, যেগুলো ভিন্ন ভিন্ন পদার্থবিজ্ঞানের সুত্র ও ভিন্ন ভিন্ন প্রাথমিক কন্ডিশন থেকে শুরু করেছে।
আর টেনথ ডায়মেনশনে (Tenth Dimension) , আমরা এমন একটি পয়েন্টে চলে যাবো যেখান থেকে যা কিছু সম্ভব এবং যা কিছু কল্পনা করা যায় সবই দেখবো। Beyond This আমার আর আপনার মতো কোন নশ্বর সত্ত্বা কোনোকিছুই আর দেখতে পাবেনা। এটা হলো, একটি প্রাকৃতিক লিমিটেশন যা আমাদের একটা সীমারেখায় বেঁধে দেয় ডায়মেনশনাল টার্ম থেকে আমরা কতটা জানতে পারবো।আমরা অতিরিক্ত ছয়টি ডায়মেনশনকে অনুধাবন করতে পারিনা কিন্ত স্ট্রিং তত্ত্বের জন্য এ ডায়মেনশন খুবই প্রয়োজনীয়। আমরা যে চারটি ডায়মেনশনকে অনুভব করি সেটাকে দুটো ম্যাকানিজমে ব্যাখ্যা করা যায়। সম্ভবত, এক্সট্রা ডায়মেনশন, খুবই ক্ষুদ্রতর স্কেলে সংকোচিত হয়ে আছে। অথবা আমাদের জগত একটি ত্রিমাত্রিক সাবম্যানিফোল্ডে বাস করে যা ব্রেনের সাথে সম্পৃক্ত। যেখানে আমাদের জানা সকল পার্টিকেল গ্রেভেটির সাথে রেস্ট্রিক্টেড হয়ে আছে।
যদি এক্সট্রা ডায়মেনশন সংকোচিত হয়ে থাকে তাহলে এক্সট্রা ডায়মেনশন অবশ্যই Calabi-Yau Manifold এর ভেতর। যদিও আমাদের ইন্দ্রীয়ে এগুলো অদৃশ্য কিন্তু প্রথম থেকেই এগুলো মহাবিশ্বের গঠনকে পরিচালনা করতো। আর এ জন্য বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, তারা যদি সময় ভ্রমণ করে মহাবিশ্বের দূরবর্তী অতীতে চলে যায় এবং টেলিস্কোপের মাধ্যমে একবারে কাছাকাছি অবস্থান থেকে মহাবিশ্বের শুরুর সময়কে পর্যবেক্ষণ করে তবে তারা অবশ্যই এ সকল অবশিষ্ট ডায়মেনশন দেখতে পাবে যা আমাদের মহাবিশ্বের বিবর্তনকে প্রভাবিত করে।
গ্রেন্ড ইউনিফায়েড থিয়োরির প্রতিদ্বন্দ্বী, দি থিয়োরি অব এভ্রিথিং (TOE) যা বিশ্বাস করে যে মহাবিশ্ব দশ মাত্রার তৈরি, এটি হলো একটি পদক্ষেপ যার মাধ্যমে আমরা স্ট্যান্ডার্ড মডেল অব পার্টিকেল ফিজিক্সকে গ্রেভেটি সহ একীভূত করতে পারবো। মোটকথা, এটি আমাদের মহাবিশ্বে ইন্টারেক্ট করছে এমন জানা সকল ফোর্সকে এক্সপ্লেইন করে এবং ব্যাখ্যা করে কি করে সম্ভাব্য মহাবিশ্বগুলো পারস্পরিকভাবে কাজ করে। আবারও যদি কেউ প্রশ্ন করে এ মাত্রাগুলো কী একে অন্যের সাথে সম্পর্কহীন? তবে কল্পনা করুন, সেই দড়ির কথা যেটিকে দূর থেকে দেখতে একটি রেখা মনে হলেও, কাছ থেকে দেখলে বোঝা যায় এর পরিধি আছে। একটা লাইনল্যান্ডার পিঁপড়া যদিও শুধু সামনে ও পেছনে পথ চলে কিন্তু আপনি নিশ্চিত জানেন এ দড়িটির কিছু মাত্রা তাদের লুকিয়ে রেখেছে। অথবা আপনি ফ্ল্যাটওয়ার্মের সেই আপেলের কথা চিন্তা করুন। দ্বিমাত্রিক জগতটি আপেলের চামড়া কিন্ত সেটি আপেল থেকে পৃথক কিছু নয় যদিও থার্ড মাত্রাটি ফ্ল্যাটওয়ার্মের অজানা থাকে।
ঠিক তেমনি আমরাও সে পিঁপড়ার মতো। আমরা শুধু ফোর্থ ডায়মেনশনকে দেখছি , অন্য সাতটি ডায়মেনশন ফোর্থ ডায়মেনশনের মাঝেই বক্র হয়ে আছে আর এ দশটি ডায়মেনশনের ভেতরই প্যারালাল ওয়ার্ল্ড ও মেগাভার্স অস্তিত্বশীল। এর অর্থ হলো প্যারালাল ওয়ার্ল্ড ও মেগা ইউনিভার্স যেই দশমাত্রিক জগতে অবস্থান করে আমি আর আপনিও Same Tenth Dimensional জগতে বাস করছি কিন্তু অন্যান্য মাত্রাগুলো বক্র হয়ে যাওয়ার কারণে আমরা শুধু ফোর্থ ডায়মেনশনাল রিয়েলিটিই অনুভব করতে পারি। আমরা অন্যান্য ডায়মেনশনের প্রেক্ষিতে প্যারালাল ওয়ার্ল্ড ও মাল্টিভার্সকে Observe করতে পারিনা। দড়ির নিকট গিয়ে ক্লোজলি তাকালে যেমন অন্যকিছু দেখা যায় ঠিক তেমনি আমরা ডায়মেনশনাল সেনসিটিভিটি চেঞ্জ করতে পারলেই, এক একটি মাত্রা থেকে এক একটি রিয়্যালিটি দেখা যাবে। এর মানে হল যে, আমরা যে মহাবিশ্বকে দেখছি সেটা আসল মহাবিশ্ব নয়, এটা হলো আমাদের ডায়মেনশন দেখার ক্ষমতা, ডায়মেনশন পরিবর্তন করলে মহাবিশ্ব ও মহাবিশ্বগুলোর বাস্তবতা সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন হয়ে যাবে।
তথ্যসুত্রঃ
- String Theory and Calabi-Yau Manifolds
- A Visual Journey Through 11 Dimensions
- A universe of 10 dimensions
- Parallel World and HyperSpace , Michio Kaku



