যে দেশের মানুষ প্রস্টিটিউশনের পাশে সেক্সের পর ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া একটি কন্ডমের গায়ে আরবী বর্ণমালা দেখে নিজের অজান্তেই কিস করে ফেলে, সে দেশের মানুষের বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য ফিজিক্স অথবা ম্যাথ ব্যবহার করা অত্যন্ত হাস্যকর! আর আমি সে হাস্যকর কাজটাই করেছি। এজন্য আমার নিজেকে ভীষণ বোকা মনে হচ্ছে।
প্রায় একমাস ভীষণ জ্বর ও শারীরীক অসুস্থ্যতা নিয়ে, যখন আমি নিজ গ্রামে নিজের ঘরে যন্ত্রণায় কাৎরাচ্ছিলাম, তখন মেডিক্যাল পরামর্শের পরিবর্তে, যখন দলে দলে আত্মীয় স্বজন এসে, আমাকে পরামর্শ দিচ্ছিল, নাস্তিকতা ছেড়ে দিয়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে, তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, আমি এ বইটি লিখে চরম ও ভীষণ একটি অন্যায় করছি।
অসুস্থ্যতার চূড়ান্তে, যখন আমি হসপিটালে গিয়ে দেখলাম, হসপিটাল উপাসনালয়, ডাক্তারের মুখে দাড়ি ও টুপি আর দাম্ভিকতার পরিপূর্ণ তাদের আচরণ। আমি তখন আতঙ্কিত হয়ে অনুভব করেছিলাম, আমি মারাত্মক একটি ভুল কাজ করছি।
যখন ঢাকা শহরে দাঁড়িয়ে আমি অনুভব করেছিলাম, আমি কোনো শহরে নয়, আমি আফ্রিকার জঙ্গলে দাঁড়িয়ে আছি, আর আমার চারপাশে যারা চলাচল করছে, এরা বুদ্ধিমান কোনো প্রাণী নয়, এরা নেকড়ে ও সিংহ। তখন আমি অনুভব করেছিলাম, আমার ফাইট অর ফ্লাইট রেসপন্স সক্রিয় হচ্ছে, বাংলাদেশের মানচিত্রকে আমার লাথি মেরে সৌরজগতের বাহিরে ফেলে দিতে ইচ্ছে করছে!
আমার এ বই লেখা একদম উচিত হয়নি। আমার ভীষণ মন খারাপ হয়।
এদেশের কাজের বুয়া থেকে শুরু করে, প্রাইমিনিস্টার সবাই ধার্মিক
কিন্তু কারও মাঝে সূক্ষ্ম চিন্তা ও নৈতিক চেতনা নেই। এদেশের সংসদ ভবন থেকে শুরু করে পাবলিক টয়লেট সর্বত্র স্ট্রেস হর্মোন কর্টিসল তৈরির কারখানা!
এদেশের মানুষ ভালোবাসা ও যুক্তিতে বিশ্বাসী নয়, তারা বিশ্বাস করে আগ্রাসন ও হিংস্রতায়। যখন আগ্রাসনের চুড়ান্তে গিয়ে পাবলিক প্লেসে উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করেছি, তখন আমার সাথে কয়েকজন আগন্তুক এসে ভালো ব্যবহার শুরু করেছিল। আমি বুঝতে পেরেছি, এখানে আঘাত ছাড়া কেউ কাউকে রেসপন্স করে না। আপনার কাছে ক্ষমতা ও আগ্রাসী মনোভাব থাকতে হবে!
আমার পরিবার থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব কেউ আমার ভদ্রতাকে সম্মান করেনি। তখন আমি বুঝেছি, এদের জন্য ম্যাথম্যাটিক্স ও ফিজিক্স নয়, অন্যকিছু প্রয়োজন!
আমি এ বইটি লিখেছি, নাস্তিক ও সম্ভাব্য শিক্ষিত নাস্তিকদের জন্য , যেন তারা তাদের যুক্তিকে আরও পরিশীলিত করতে পারে। কোনো তথাকথিত আস্তিকের জন্য আমি এ বই লিখিনি। তবে এখানে বিজ্ঞানমনস্ক মডারেট আস্তিকদের উদ্দেশ্যে ১৭ টি প্রশ্ন ও ১৭ লাখ টাকার চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কেউ যদি আমার প্রশ্নের গবেষণা বেইসড উত্তর দিতে পারে তবে, আমি অনেস্টলি বলছি, আমার গ্রুপের পক্ষ থেকে আমি তাকে উন্মুক্তভাবে ১৭ লাখ টাকা উপহার দেব।
প্রচ্ছদ মূল্য:৮০০৳ ,বিক্রয় মূল্য: ৫৫০ ৳ (৩১.২১% ডিসকাউন্ট),পেজ সংখ্যা: ৫৫০ হার্ডকাভার, ম্যাট লেমিনেটিং
সায়ানোব্যাক্টেরিয়া থেকে সাইবারসেক্স: মানব সভ্যতার যৌনতার প্রাইমাল নেক্সাস ও ল্যাপস
চলো আবিষ্কার করি, জীবনের উৎপত্তির এক হাড় শীতল করা সত্য এবং ৩.৬ বিলিয়ন বছর পূর্বের প্রাইমাল স্যুপ থেকে পর্নোগ্রাফির গল্প। তখন পৃথিবী ছিল বিপজ্জনক, আল্ট্রাভায়ালোট রশ্মি থেকে মুক্তির জন্য পৃথিবীর মাথায় সূর্যের বিপক্ষে কোনো প্রোটেক্টিভ আমব্রেলা ছিল না। এ বিশৃঙ্খল পরিবেশে জীবনের প্রথম রূপ বের হয়__ ফটোসিন্থেসিস সায়ানোব্যাক্টেরিয়া সমুদ্রে অক্সিজেন বৃদ্ধি করে যেটি ছিল জীবনের জন্য একটি টক্সিন। একটি হাইপোথিসিস অনুসারে, প্রথম সেক্স বিবর্তিত হয়েছিল অক্সিজেন ফ্রি রেডিক্যাল থেকে জেনেটিক উপাদান প্রোটেক্ট করার জন্য, শ্বাসরুদ্ধকর মিসিং লিংক রেখে বহুকোষী জীবন দেখা দেয়___দেখা যায় ম্যামাল। একটি হাইপোথিসিস অনুসারে, ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে ডায়নোসরের বিলুপ্তির পর প্রকট হয়েছিল নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের বিভাজন। নারীর ব্রেস্ট, ম্যামারি গ্ল্যান্ড ও প্লাসেন্টার বিবর্তনে হয়তো যোগাযোগ আছে ডায়নোসরেরও! তবে এটাই শেষ কথা নয়! আছে চূড়ান্ত বিতর্ক। এ গ্রন্থ অসংখ্য বিতর্কিত থিওরি ও হাইপোথিসিসের সমাবেশ। ৫০৮ মিলিয়ন বছর পূর্বের কেম্ব্রিয়ান যুগে পাওয়া যায় প্রথম পেনিসের ফসিল কলম্বোসাথন । নারীর যোনি দেখা দেয় ৩০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে কার্বনিফেরাস যুগে! কিন্ত এসব কী আকস্মিক? না ! তবে রহস্যটা কোথায়? হ্যাঁ, সে রহস্যই আমরা উদ্ভাবন করব এখানে। স্প্যার্মের যুদ্ধ, রোম্যান্টিক ভালোবাসা, একগামিতা, বহুগামিতা, নারী পুরুষের বৈষম্য, সাইকোলজিক্যাল ক্ল্যাশ, নারীবাদ-পুরুষতন্ত্র এবং সাইবার ওয়ার্ল্ড এক্সপোজার ও মানব সভ্যতার যৌনতার এক ভয়াবহ মিসস্টেপ!
প্রচ্ছদ মূল্য:৮০০৳ ,বিক্রয় মূল্য: ৫৫০ ৳ (৩১.২১% ডিসকাউন্ট),পেজ সংখ্যা: ৪০০ হার্ডকাভার, ম্যাট লেমিনেটিং
প্রস্তর যুগ থেকে স্ক্রিনওয়ার্ল্ড
পাওয়া যাচ্ছে প্রস্তর যুগ থেকে স্ক্রিনওয়ার্ল্ড ভ্রমণের টাইম মেশিন টিকিট। ইয়েস! এই মাত্রই আমি শেষ করেছি আমার ল্যাটেস্ট বই “প্রস্তর যুগ থেকে স্ক্রিনওয়ার্ল্ড”। এ বইটি বিবর্তনীয় অতীত ও আধুনিক বিশ্বের এনথ্রলিং সব মিসম্যাচ তুলে ধরবে । আপনি যদি জানতে চান কীভাবে আফ্রিকার শিকারী সংগ্রাহক বায়োলজি আপনার এ মুহূর্তের আচরণ ও সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে, এ বইটি আপনার জন্য
প্রচ্ছদ মূল্য:৮০০ ৳ ,বিক্রয় মূল্য: ৫৬০ ৳ (৩১.২৫% ডিসকাউন্ট),পেজ সংখ্যা: ৫৫০ হার্ডকাভার, ম্যাট লেমিনেটিং
ডোপামিন:দ্যা মলিকিউল অভ মোর, ডেনিয়েল জেড লিভারম্যান
আমার নতুন অনূদিত বই “ডোপামিন: দ্যা মলিকিউল অভ মোর"। এটি তিনজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানীর যৌথভাবে লেখা। সময়ের শ্রেষ্ঠতম নিউরোসায়েন্টিস্টরা এই বইটির প্রশংসা করেছেন। নিউরোসায়েন্টিস্ট ডেভিড ইগলম্যান তো বলেই দিয়েছেন, এই বইয়ের একটি স্বতন্ত্র পাতা থেকেও তিনি চোখ সরাতে পারেননি, তিনি একপ্রকার চ্যালেঞ্জই ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। সত্যি বলতে প্রথমে কথাটি শুনে অবিশ্বাস করলেও আমি কিন্তু এক সেকেন্ডের জন্যেও চোখ সরাতে পারিনি! আমি তোমাদের ভাষায়, তোমাদের উপযোগী করে এই বইটি খুব সহজ করে অনুবাদ করেছি। কোনো জটিলতা নেই, পরিস্কার। পুরো বইটি আমার মুখস্ত বলতে পারো। আমি এতটাই প্রভাবিত। দু- মাস পর উপলব্ধ হবে এটি আমাদের হাইপারস্পেস প্রকাশনী থেকে।
আমি তোমাদেরকে তার আগে এই বইটি সম্পর্কে কিছু কথা বলে রাখতে চাই। এই বইটি মূলত বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য করে লেখা। কিন্ত যদি তুমি মিলিয়নস-এর উর্ধ্বে গিয়ে হ্যারি পটার মুভির স্ন্যাপ অথবা প্রফেসর এক্স-এর মতো মাইন্ড রিডার হতে চাও তবে এই বই তোমার। ফিকশন নয়, বাস্তবতা।
এই বইটি তোমাকে মস্তিষ্কের দুই গ্রুপ নিউরোকেমিক্যালের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে। একটি গ্রুপে প্লেয়ার শুধু একজন আর তার নাম ডোপামিন। তোমার মস্তিষ্কের সুপারম্যান সে। ডোপামিন যে সার্কিটে কাজ করে তার নাম ফিউচার অ্যান্টিপেসন সার্কিট। আর অন্য গ্রুপটিতে কাজ করে সেরেটোনিন, অক্সিটোসিন, এন্ডোরপিন ও এন্ডোক্যানাবিনোয়েড ( গাঁজার নেশা)। এদেরকে তুমি ব্যাটসম্যান, স্পাইডারম্যান ব্লা ব্লা ভাবতে পারো। এই গ্রুপ যে সার্কিটে বাস করে তার নাম হেয়ার অ্যান্ড নাউ সার্কিট।
কিন্তু মজার ব্যাপার হল এদের প্রত্যেকে একত্রে যুদ্ধ করেও তোমার মস্তিষ্কের ডোপামিন অণুর সাথে টিকে উঠতে পারে না। তোমার মস্তিষ্কের ৮৬ বিলিয়ন সেলের মধ্যে মাত্র ০.০০০৫% সেলই ডোপামিন তৈরি করতে পারে। প্রতি দুই মিলিয়নের মধ্যে একটি! কিন্তু তুমি শুনলে অবাক হবে প্রতি দুই মিলিয়নের মধ্যে এই একটা সেলই তোমার স্মৃতি, কল্পনা, আশা, পরিকল্পনা, লজিক, রোম্যান্টিক ভালোবাসা, সেক্স,অর্গ্যাজম, বিরহ, বিচ্ছেদ, সৃষ্টিশীলতা, ইন্টারস্টেলার ট্র্যাভেল, ঈশ্বর বিশ্বাস, মাল্টিভার্স, থিওরী অভ এভরিথিং এবং সম্পূর্ণ মানব সভ্যতার ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। তোমার মস্তিষ্কের স্পাইডারম্যান অথবা ব্যাটসম্যান কেউই এই দুরন্ত, দুর্দান্ত আনফিলিং ডোপামিনের সাথে পাল্লা দিতে পারে না!
অনেকে মনে করেন ডোপামিন সুখের অণু! এটা একদম ভুল ধারণা! অনেকে ভাবেন ডোপামিন শুধু ফ্যান্টাসি তৈরি করে এটাও মিসলিডিং ইনফরমেশন! ডোপামিনের ফাংশন যে তার থেকেও অনেক সুদূরপ্রসারী তা নিশ্চয় তুমি এতক্ষণে বুঝতে পেরেছ? এজন্যই বইটির নাম মলিক্যুল অভ মোর। এই বইটি তোমাকে আস্তিক, নাস্তিক ও মুক্তমনা নির্বিশেষে কার মস্তিষ্কে কখন কোন মুহূর্তে কোন রাসায়নিক পরিস্থিতি কাজ করছে তা বলে দেবে। তুমি জাস্ট কিছু বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ও আচরণের মুড পড়েই যে কারও মনের ভেতর ঢুকে যেতে পারবে। পিকের মতো তোমাকে কারও হাত স্পর্শ করতে হবে না। প্রয়োজন নেই টেলিপ্যাথি হেলমেট!
একটি রকেটের ভেতর ফুয়েলের ফাংশন কী? ফুয়েল কি শুধু রকেটকে উড়তে সাহায্য করে? এটা বুঝার জন্য তো তোমার রকেট সায়েন্স জানতে হবে না। যে ফুয়েল একটি রকেটকে উড়ায়, একই ফুয়েল মহাকাশে রকেটকে নিয়ন্ত্রণ করে, আবার একই ফুয়েল রকেটটিকে একটা পর্যায়ে থামিয়েও দিতে পারে। পার্থক্য হল, কেবল প্রতিটি ফাংশন সম্পাদনের জন্য পথ আলাদা আলাদা! তোমার মস্তিষ্কের ডোপামিন হল তোমার দেহ রকেটের ফুয়েল। এটি শুধু তোমার মধ্যে স্বপ্ন, আশা অথবা ফ্যান্টাসি তৈরি করে না, এটাই তোমার নৈতিকতা-লজিক-পরিকল্পনা-উদ্ভাবন ও তোমার মাল্টিভার্সে বিশ্বাসের কারণ! এটাই তোমার ঈশ্বর বিশ্বাস আর এই ডোপামিনই তোমার ইন্টারস্টেলার ট্র্যাভেলে নেতৃত্ব দেয় !
এই বইটি তোমাকে দেখাবে, এতদিন তুমি ডোপামিন সম্পর্কে যা কিছু জেনে এসেছ তা বিভ্রান্তিকর ও অসম্পূর্ণ। সাম্প্রতিক পাবলিকের মন ভোলানো যে সকল ডোপামিন ডিটক্স টাইপ বই পাওয়া যায় এই বইটি তার থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র! কারণ এই বই বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্যে লেখা, এক্সপার্টদের উদ্দেশ্যে লেখা, এক্সপার্ট তৈরির উদ্দেশ্যে লেখা। এই বই যদি তুমি পড়ো তবে তুমি এরকম শত শত বই লিখতে পারবে। তুমি নিজেই তখন মনের ইঞ্জিনিয়ার!
এই বইটি শুধু ডোপামিন নিয়েই আলোচনা করবে না, এটি তোমার নিকট আলোচনা করবে মনের অন্য সকল অণু সম্পর্কেও। কীভাবে তারা একে অন্যের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে আর বলে দেয় কোন মুহূর্তে তোমার কি করা উচিত। এ বইটি তোমার কাছে হার্ডলি প্রমাণ করে দেবে ব্যক্তি স্বাধীনতার অস্তিত্ব নেই।
ভালোবাসার ফসিল
একগামিতা, বহুগামিতা, বিরহ, বিচ্ছেদ ও নৈতিকতার ১৩ মিলিয়ন বছর সময় ভ্রমণের একটি টাইম মেশিন
প্রচ্ছদ মূল্য: ৮০০৳ ,বিক্রয় মূল্য: ৫৬০৳ (৩০% ডিসকাউন্ট),পেজ সংখ্যা: ৫৫০, হার্ডকাভার, ম্যাট লেমিনেটিং
হাইপারস্পেস: অ্যা সায়েন্টিফিক ওডিসি থ্রু প্যারালাল ইউনিভার্স,টাইম ওয়্যার্প্স অ্যান্ড টেনথ ডায়মেনশন
সিক্রেট অব ক্রিয়েশন ফাঁকা করার জন্য হায়ার ডায়মেনশনের সূচনা খুবই অপরিহার্য। এ তত্ত্ব অনুসারে মহাবিস্ফোরণের পূর্বে আমাদের মহাবিশ্ব প্রকৃতপক্ষে পরিপূর্ণ দশমাত্রিক মহাবিশ্ব ছিল (Tenth Dimensional Universe)। কিন্তু এ দশমাত্রিক জগত ছিল অস্থিতিশীল। এক্ষেত্রে সাবানের ফেনায়িত বুদ্বুদের কথা কল্পনা করুন। সাবানের বুদ্বুদের মধ্যে ভাইব্রেশন তৈরি হলে এটি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। এটি অ্যাটম বোমার মতো নিজের ভেতর ভেঙে (Fission) যায়। ফেটে গিয়ে এটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আরও অসংখ্য বুদ্বুদ তৈরি করে। ঠিক তেমনি আমাদের মহাবিশ্বও সৃষ্টির শুরুতে দশমাত্রিক একটি বুদ্বুদ ছিল। যেহেতু দশমাত্রা অনেক বেশি অস্থিতিশীল এটি ফেটে যায় এবং দুটি স্বতন্ত্র বুদ্বুদ তৈরি করে: একটি ছয়মাত্রিক ইউনিভার্স আর অন্যটি চারমাত্রিক। দশমাত্রিক জগত ফেটে যাওয়ার সময়কেই আমরা মহাবিস্ফোরণ বলে জানি। দশমাত্রিক জগত থেকে বিচ্ছিন্নতার পর আমাদের চারমাত্রিক মহাবিশ্ব বিস্ফোরক গতিতে সম্প্রসারিত হতে থাকে আর আমাদের মহাবিশ্বের টুইন সিক্সথ ডায়মেনশনাল মহাবিশ্ব সাংঘর্ষিকভাবে সংকুচিত হতে থাকে। পদার্থবিদ পিটার ফ্রেউন্ড বলেছিলেন, পঞ্চম মাত্রার আকার সম্ভবত ১০-৩৩ সেন্টিমিটার যা প্রায় প্ল্যাংক ল্যাংথের সমান। আমরা জানি, নিউট্রিনো পার্টিক্যাল ইলেক্ট্রন থেকে এক মিলিয়ন গুণ ক্ষুদ্র, সেকেন্ডে ১০০ ট্রিলিয়ন নিউট্রিনো আমাদের দেহকে ভেদ করে চলে যায়, শূন্য ভরের উপর মাধ্যাকর্ষ কাজ করেনা। অন্যদিকে প্ল্যাংক ল্যাংথ হলো সৌরজগতের বিশালত্বের কাছে একটি অ্যাটমের সমান। এজন্য অবশিষ্ট ছয়মাত্রিক জগতের সাথে আমরা ধাক্কা খাইনা। এটি লেজারের মতোই আমাদের দেহ ভেদ করে, তাই আমরা এম্পটিস্পেস দেখতে পাই, যদিও আমাদের সাথেই সহাবস্থান করছে আদার ইউনিভার্স। দশমাত্রিক বাবল ফেটে ছয়মাত্রিক জগত ততক্ষণ সংকুচিত হয়েছিল যতক্ষণ না এটি অসীম ক্ষুদ্র একটি বিন্দুতে উপনীত হয়। আর এটাই আমাদের নিকট ‘Origin of Bigbang’ ব্যাখ্যা করতে পারে।
দ্য গড ইকুয়েশন: দ্য কোয়েস্ট ফর থিওরী অব এভরিথিং
তখন ছিল সময়ের শুরু। মহাশূন্য একা। এটা বিশ্বাস করা হয় এই আদি সময় শুধু একটি সুপারফোর্স ছিল। মহাবিশ্ব যে সকল পরমাণু দিয়ে গঠিত সকল পারমাণবিক কণা একটি কণায় পরিণত হয়েছিল। ছিল না পারমাণবিক ব্যাবচ্ছেদ! কিন্তু এই সুপারফোর্স ছিল একটি সোপ বাবলের মতোই অস্থিতিশীল । এটি ছিল প্রকম্পিত (Vibration)। তাই সে বিভক্ত হয়। সুপারফোর্স ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। প্রথমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে সরে যায় গ্র্যাভিটি, গ্র্যাভেটিকে অনুসরণ করে একে একে সরে যেতে থাকে স্ট্রং ফোর্স ও উইক নিউক্লিয়ার ফোর্স। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স সবার থেকে আলাদা ও একা হয়ে যায়। এই সুপারফোর্স ভেঙে যাওয়ার কারণে আজ আমাদের মহাবিশ্বকে ক্ষতবিক্ষত মনে হয়, আমরা অসম্পূর্ণ এক মহাবিশ্বে বিবর্তিত হয়েছি, অপরিপূর্ণতাই আমাদের জীবনকে করেছে সম্ভবপর। আর পদার্থবিজ্ঞানের কর্তব্য হল, ঈশ্বর সমীকরণের ভেঙে যাওয়া টুকরোগুলো জোড়া লাগানো যা এই চারমাত্রিক মহাবিশ্বে সম্ভব নয়। এখানে ঈশ্বর সমীকরণের জন্য রুম খোলা নেই। আমরা যদি ঈশ্বরের মুখ দেখতে চাই তবে আমাদের যেতে হবে দশমাত্রিক হাইপারস্পেস। আমরা যদি ১০26 কেলভিন তাপমাত্রার দেবতা হতে পারি তবেই আমরা প্রায়োগিকভাবে দেখতে পাব গড ইকুয়েশন। ঠিক তখনই দুটি মহাবিশ্বের মধ্যে ইন্টারডায়মেনশনাল টানেল তৈরি হবে। আর আমাদের উত্তরসূরিরা হাইপারস্পেসের ভেতর দিয়ে পালিয়ে যাবে অন্য কোনো ইউনিভার্স।
দ্যা সেলফিশ জিন, রিচার্ড ডকিন্স
রিচার্ড ডকিন্সের সেলফিশ জিন বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী বইগুলোর একটি। মাল্টি-মিলিয়ন কপি বেস্ট সেলার বই এটি। কিন্তু এ বইটিকে বেশিরভাগ মানুষই নিরবিচ্ছিন্নভাবে ভুল বুঝেছে!বাংলাদেশে এই মিস-আন্ডারেস্টেন্ডিং ব্যাপক! বিশেষ করে জেনেটিক্যাল স্বার্থপরতা বিষয়টি বেশিরভাগ মানুষই ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেনি। তারা স্বার্থপরতা শব্দটিকে নিয়েছিল আক্ষরিকার্থে। যৌক্তিক ও গাণিতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়। তারা এ স্বার্থপরতাকে দেখেছিলেন বায়োলজিক্যাল দেহের স্বার্থপরতা হিসেবে জিনের স্বার্থপরতা হিসেবে নয়। ক্যানিভাল মাকড়সা যখন সেক্স করে তখন স্ত্রী মাকড়সা এক কামড়ে তার মাথাটি খেয়ে ফেলে। জিন তাকে প্রেমিকার খাদ্যে পরিণত হওয়ার জন্য এভাবেই প্রোগ্রাম করেছে। ক্যানিভালের দেহ ও মন কোনোটাই জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়! কিন্তু কেন? কারণ সন্তান গর্ভে থাকাকালীন স্ত্রীর পক্ষে যথাযথ নিউট্র্যাশন যোগাড় করা সম্ভব নয়। আর যদি সন্তানের মৃত্যু হয় তবে তার জিন ফিউচারে প্রবেশ করতে পারবে না। এজন্য স্বার্থপর জিন পুরুষ কেনিভালকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করেছে যেন সে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও সেক্সের মাধ্যমে সন্তান উৎপাদন করে! সন্তানের লালন-পালনের জন্য মায়ের জীবন পিতার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আর তাই সে তার প্রেমিকাকে ভবিষ্যৎ জিনের জন্য একা রেখে হারিয়ে যায়! এই দৃশ্যকল্পে, স্বার্থপর জিন যে পদ্ধতিতে নিজের ভবিষ্যতের জন্য পুরুষ কেনিভালকে হত্যা করেছে ঠিক একই পদ্ধতিতে সামগ্রিক মানব সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য সে নিউটন ও আইনস্টাইনকেও হত্যা করে। পৃথিবীর বেশিরভাগ শিল্পি, বিজ্ঞানী এবং ক্রিয়েটিভ পারসনরা মানসিক রোগাক্রান্ত হয়। কেউ সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত তো, কেউ অটিজম এসপার্গার ডিজিজে আক্রান্ত। তারা পরিবারের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না, তারা সমাজিক ইমোশনের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না, তারা বর্তমান জীবনের প্রয়োজনীয়তার সাথে সংযুক্ত হতে পারে না। কারণ তাদের মস্তিষ্কে সেন্স অভ প্রেজেন্টের সাথে সম্পৃক্ত ব্রেইন সার্কিট স্বার্থপর জিন দূর্বল করে দেয়( Here and Now Circuit)। তারা মানুষের সাথে ইমোশনাল বন্ধন তৈরি করতে পারে না। তাদের ব্রেইন সবসময় সেন্স অভ ফিউচারের ভেতর ডুবে থাকে( Future Anticipation Circuit)। তারা ইউনিভার্সের ফিউচার নিয়ে ভাবে, ভাবে মহাবিশ্বের শেষ তিন মিনিট নিয়ে কিন্তু তারা এই মুহূর্তে তাদের সামনে অবস্থানরত নিজের ফ্যামলি ও ফ্রেন্ডের কথা ভাবে না! এ পদ্ধতিতে স্বার্থপর জিন কেনিভাল মাকড়সার মতো জিনিয়াসদের ব্রেইনকে মানব সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য হত্যা করে! এজন্য আইনস্টাইন বলেছিলেন, আমি হিউম্যানিটিকে ভালোবাসি, হিউম্যানকে নয়! আলফ্রেড নোবেল বলেছিলেন, "আমি একজন মিসেন্থোপ। আমি মানবতার সেবা করার স্বপ্ন দেখি কিন্তু আমি একজন মানুষের সাথে দু-দিনের বেশি টিকতে পারব না! মানুষ যতই কাছে আসে তাদের প্রতি আমি ততই বিরূপ হয়ে উঠি!" এভাবে এডনা সেন্ট ভিনসেন্ট, ফিওদর দস্তয়েভস্কি, চার্লস শুলজ অথবা পল ডিরাক এদের প্রত্যেকেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছিলেন!ন্যাশনাল একাডেমি অভ সায়েন্স, রয়েল সোসাইটির সদস্য এবং টপ লেভেলের নোবেল প্রাইজ উইনারদের মধ্যে আমরা এই প্রবণতা দেখতে পাই।( বিস্তারিত আমার বই "ডোপামিন: দ্যা মলিকিউল অভ মোরে পাবেন) আইনস্টাইন যে শুধু সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে দূর্বল ছিলেন তাই নয়। তিনি কখনোই একজন প্রেমিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন না। কারণ যাদের মস্তিষ্কে সবসময় সেন্স অভ ফিউচার কাজ করে তাদের মস্তিষ্ক ডোপামিন ড্রাইভ, আর ডোপামিন তাদেরকে এক প্রেমিকার উপর সন্তুষ্ট হতে দেয় না। ডোপামিন সব সময় তাকে অবাস্তব, অসম্ভব ও অজানা বাস্তবতার দিকে চালিত করে, তারা বাস করে সেখানে যা নেই আর এভাবেই ডোপামিন তাদের মস্তিষ্কে বর্তমান অর্জনের প্রতি অসন্তোষ তৈরি করে, ভয়াবহ দুঃখ, যন্ত্রণা আর একাকীত্ব দিয়ে নতুন নতুন সৃষ্টিশীলতার উদ্ভব ঘটায়, তাদের ব্রেইন থেকে বেরিয়ে আসে বাস, ট্রাক, বিমান, রকেট ও কম্পিউটার! যে ডোপামিন আইনস্টাইনের ব্রেন থেকে পদার্থবিদ্যার সমীকরণ বের করেছিল , ব্ল্যাকহোল, ওয়ার্মহোল, হোয়াইটহোল ও বিগব্যাং বের করেছিল, একই ডোপামিন আইনস্টাইনকে বের করে দিয়েছিল পারিবারিক সুখ, শান্তি ও সামাজিক বন্ধন থেকে, তিনি সারাজীবন ছিলেন সিঙ্গুলারিটি পয়েন্টের মতোই একা ! একই ডোপামিনের প্রভাবে আইনস্টাইনের এক সন্তান সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত অবস্থায় একটি আশ্রমে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তারা জীবিত থেকেও কেনিভাল মাকড়সার মতোই মৃত ছিলেন! আর সমাজ ও পরিবার তাদের জেনেছিলেন চরিত্রহীন, উদাস, নির্লিপ্ত ও স্বার্থপর হিসেবে! ভেতর ও বাহির কোথাও তারা সুখ খুঁজে পান নি! (সূত্র: ডোপামিন: দ্য মলিকিউল অভ মোর) সেলফিশ জিন খুবই ভয়াবহ একটি বই! এ বইটি পড়লে আপনি আবেগীয়ভাবে প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হবেন কিন্তু এই বইটি একটি আশাবাদী বই কারণ এ বইটি আপনাকে শেখাবে কেন দলবদ্ধ হতে হয়, কেন পরার্থপর হতে হয় এবং কেন আমাদের নৈতিক হতে হয়। ডায়নোসরের জিন সেলফিশ, তার জিন সেলফিশ বলেই মিলিয়ন মিলিয়ন বছর পরও সে আধুনিক পাখির দেহে টিকে আছে! আজ থেকে ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বের পুরগাতারউসের জিন সেলফিশ, তার জিন এতটাই সেলফিশ যে ৬৫ মিলিয়ন বছর পরও তার উত্তরসূরী আমি টিকে আছি, যে এ মুহূর্তে এ লেখাটি লিখছে! তার জিন যদি সেলফিশ না হত তবে এ মুহূর্তে লিহন অস্তিত্বশীল থাকতে পারত না! মানব সভ্যতা উদ্ভবের পূর্বেই বিলুপ্ত হয়ে যেত ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে! যে স্বার্থপর জিন মানব নামক একটি রোবট তৈরি করে বিশ্বের মিলিয়ন মিলিয়ন জীবকে হত্যা করছে আজ। একই স্বার্থপর জিন আর্কিওপটেরিক্স থেকে ১০,০০০ প্রজাতির পাখির বিবর্তন ঘটিয়েছে পৃথিবীতে! আর্কিওপটেরিক্সের জিন যদি স্বার্থপর না হত তবে আমরা আজ ডায়নোসরের আধুনিক রূপ মুরগির মাংসের গ্রিল খেতে পারতাম না! এ বইটি জটিল গাণিতিক প্রক্রিয়ার শাব্দিক প্রকাশ! প্যারাডক্স আর থ্রিলে পরিপূর্ণ! এ বই আপনাকে আবেগীয়ভাবে অত্যাচার করার জন্য নয়, আপনার মনকে জীবনের প্রতি ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলার জন্যও নয়, এ বইটি আপনাকে শেখাবে কোন পদ্ধতিতে চিন্তা করতে হয়, কোন পদ্ধতিতে চিন্তা করলে জীব বৈচিত্র্য ও জীবদের আচরণ বোঝা সম্ভব! যারা বিবর্তন তত্ত্বকে বুঝতে চান এবং সামগ্রিকভাবে এ বই হল তাদের জন্য চিন্তার সমীকরণ, দ্য থট বাইবেল!
বিবর্তন কেন সত্য
ডারউইন যখন তার ‘অরিজিন অব স্পিসিস’ প্রকাশ করেছিলেন, তখন বিকল্প আরেকটি তত্ত্ব ছিল, সেটি হচ্ছে সৃষ্টিতত্ত্ব বা ক্রিয়েশনিজম, জীবনের বৈচিত্র্য ব্যাখ্যা করতে ধর্মবিশ্বাস প্রসূত যে ব্যাখ্যাটিকে একমাত্র গ্রহনযোগ্য তত্ত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সুতরাং এই বইয়ের প্রমাণগুলো সজ্জিত সৃষ্টিতত্ত্ববাদের বির্বতন বিরোধী অযৌক্তিক অবস্থানটি চিহ্নিত করে। যেভাবে বিজ্ঞানে সাধারণত প্রতিদ্বন্দ্বী তত্ত্বগুলোকে তুলনামূলক বিচার পর্যালোচনা করে তাদের মধ্যে সত্যতা যাচাই করা হয়। আর সেই কারণেই এই বইটা লেখা হয়েছে। কয়েন বইটিতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় পাঠকদের বারবার প্রশ্ন করেছেন, তাদের চিন্তা ও বিশ্লেষণী মননকে নাড়া দিয়ে - ‘সৃষ্টিতত্ত্ববাদীরা তাহলে জীববিজ্ঞানের এই বিষয়টি কীভাবে ব্যাখ্যা দেবে’? স্পষ্টতই প্রমাণ বলে দিচ্ছে সৃষ্টিতত্ত্ববাদ এর ব্যাখ্যা দিতে পারে না। সুতরাং শুধু বিবর্তনের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন শেখানোই এই বইটির মূল উদ্দেশ্য নয়, এই বইয়ের আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে ভালো আর খারাপ বিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য শনাক্ত করার কৌশল শেখানো।
প্রচ্ছদ মূল্য: ৮০০৳ ,বিক্রয় মূল্য: ৫৫০৳(৩১.৫% ডিসকাউন্ট),পেজ সংখ্যা: ৫০০, হার্ডকাভার, ম্যাট লেমিনেটিং
ব্রেন:তোমার কানেক্টমের গল্প
এই গ্রন্থে লেখক দেখিয়েছেন, চেতনা মূলত নিউরনের উপর নির্ভরশীল নয়! চেতনা বায়োলজিক্যাল নয়! আর এজন্যই আমরা মানুষের মস্তিষ্কের কানেক্টমকে কম্পিউটারে সিমুলেট করতে পারি। আমরা মানুষের সিমুলেটেড চেতনাকে থামিয়ে (Pause) রেখে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর পর অন্য কোনো গ্যালাক্সিতে পুনরায় চালু (Reboot) করতে পারি। এ যেন এক ওয়ার্মহোল, আপনি কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই যা আপনাকে এক গ্যালাক্সি থেকে অন্য গ্যালাক্সিতে নিয়ে যায়। আজ আমরা মহাবিশ্বের তেরো বিলিয়ন বছর অতীতকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ প্রেরণ করি। তবে যদি আমরা সিমুলেটেড কনসাসনেস তৈরি করতে পারি, তাহলে সরাসরি আমাদের চেতনা একদিন মহাবিশ্বের তেরো বিলিয়ন বছর অতীত ভ্রমণ করতে পারবে! কিন্তু কীভাবে? এর পেছনেও মূলত লুকিয়ে আছে গিউলিয়ো টনির বিশ্ববিখ্যাত এক এক্সপেরিমেন্ট! যে পরীক্ষাটি আসলে তুড়ি মেরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার মতো নয়!
প্রচ্ছদ মূল্য: ৭০০৳ ,বিক্রয় মূল্য: ৪৯০ ৳(৩০ % ডিসকাউন্ট),পেজ সংখ্যা: ৩০০, হার্ডকাভার, ম্যাট লেমিনেটিং
ইসলাম ও সহিষ্ণুতার ভবিষ্যৎ : একটি সংলাপ স্যাম হ্যারিস এবং মাজিদ নাওয়াজ অনুবাদ : কাজী মাহবুব হাসান
২০১৫ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, এই ছোট বইটি প্রকাশ করেছিল। বইটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের দার্শনিক স্যাম হ্যারিস ও যুক্তরাজ্যের কুইলিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, লেখক মাজিদ নাওয়াজের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি সংলাপ। স্যাম হ্যারিস ও মাজিদ নাওয়াজ বর্তমান সময়ের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয় একটি সংলাপে পাঠকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন: ইসলাম কী শান্তির, নাকি যুদ্ধের ধর্ম? ইসলাম কী সংস্কারের জন্য উন্মুক্ত? কেনই বা এত বেশি সংখ্যক মুসলমান জঙ্গীবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকেন? ইসলামবাদ (Islamism), জিহাদিজম (jihadism), আর মৌলবাদ (fundamentalism) শব্দগুলো আজকের এই পৃথিবীতে কী ধরনের অর্থ বহন করছে? একজন সুপরিচিত নিরীশ্বরবাদী এবং প্রাক্তন উগ্রপন্থী, উদারনৈতিক সংস্কারবাদী আন্দোলন কর্মীর এই কথোপকথন এর বিশ্লেষণী গভীরতা আর ব্যাপ্তিতে নানা কারণেই উল্লেখযোগ্য। একটি সভ্য বিতর্কের কাঠামোয় কীভাবে আমরা এই সময়ের সবচেয়ে সংবেদনশীল, বিতর্কিত আর মেরুকরণকারী বিষয়গুলো নিয়ে নির্ভয়ে এবং পূর্ণাঙ্গরুপে আলোচনা করতে পারি, এবং যার মাধ্যমে আসলেই কিছু অগ্রগতি করাও সম্ভব হতে পারে, সেই বিষয়ে তারা কথা বলেছেন। বইটি প্রকাশ করার সুস্পষ্ট একটি উদ্দেশ্য ছিল, আরো ব্যাপকভাবে এই ধরনের সাধারণ আলোচনা প্ররোচিত করার উদাহরণ হিসাবে এটিকে উপস্থাপন করা। ভুল বোঝাবুঝি আর সহিংসতায় আক্রান্ত এই পৃথিবীতে হ্যারিস ও নাওয়াজ এই বইয়ে প্রদর্শন করেছেন, খুবই ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিসহ দুইজন ব্যক্তি কীভাবে গঠনমূলক আলোচনার একটি সাধারণ মঞ্চ খুঁজে পেতে পারেন।
মিথ্যা স্যাম হ্যারিস অনুবাদ: কাজী মাহবুব হাসান
মিথ্যা বলা উচিত নয়, স্যাম হ্যারিসের এই ক্ষুদ্র বইটির এটাই মূল বক্তব্য। কিন্তু একই সাথে এটি মিথ্যা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রস্তাবনা করেছে, যা চারিত্রিক শুদ্ধতা নির্মাণ, ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের সম্পর্ক আর পারস্পরিক বিশ্বাসের অপূরণীয় ক্ষতি এড়ানোর মত পরিস্থিতিতে প্রাসঙ্গিক হতে পারে। মূলত এই বইটি মিথ্যা নিয়ে আরো সচেতন হয়ে ওঠার একটি আহবান। স্পষ্টতই খুব পরিচিত এই মূলনীতিটি আপাতদৃষ্টিতে সুন্দর জীবন কাটানোর সহজে অনুসরণযোগ্য একটি লক্ষ্য বলেই মনে হতে পারে। কিন্তু আসলেই কী এটি সহজে অনুসরণযোগ্য হতে পারে? বিবর্তন আমাদের মিথ্যাভাষণ আর প্রবঞ্চনা করার ঈর্ষণীয় দক্ষতা দিয়েছে। মিথ্যা বলার প্রলোভন মানব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার অন্তরঙ্গ এবং জটিল একটি অংশ, যা নিয়ে আমরা কদাচিৎ ভাবি। আর মিথ্যা বলা কিংবা না বলার সেই উভয়সংকট সংক্রান্ত ভাবনাগুলোকে প্ররোচিত করতে এই বইটি ভূমিকা পালন করবে। পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, আমাদের কী সবসময় সত্য বলা উচিত? আমাদের সামাজিক জীবনে মিথ্যাভাষণের পরিণতি সুস্পষ্ট, কিন্তু তারপরও আমরা মিথ্যা বলি। এমনকি সবচেয়ে নির্দোষ কোনো মিথ্যা কী কখনো সমর্থনীয় হতে পারে? কিংবা আমাদের কী সেই মিথ্যাভাষণের উদ্দেশ্যটি বিবেচনা করা উচিত? ব্যক্তিক জীবনে এই সব মিথ্যার পরিণতি কী? এমনকি যে মুহূর্তে আমরা মিথ্যা বলতে নৈতিক তাড়না অনুভব করি সেগুলো কী আসলেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে? ব্যক্তি, পরিবার আর সমাজের সাথে মিথ্যামুক্ত মিথস্ক্রিয়ার পরিণতি আসলেই কী হতে পারে? আমরা কী আসলেই আমাদের জীবনকে জটিলতা মুক্ত করতে পারি শুধু সত্য কথা বলে, যেখানে অন্যরা প্রায়শই মিথ্যা বলেন? মিথ্যামুক্ত একটি সমাজ কী আমরা কল্পনা করতে পারি?
নিউ এম্পেরর অভ সেপিয়েন্সিস( মিচিও কাকুর ফিউচার অভ দ্যা মাইন্ড বইটির উপর লেখা)
আমরা কী ভিন্ন কোনো গ্যালাক্সিতে চলে যেতে পারি? অন্তত আমরা আমাদের কনসাসনেসকে কোয়ান্টাম ট্রান্সজিশনের মধ্যমে ভিন্ন কোনো মহাবিশ্বে প্রেরণ করতে সক্ষম? মহাবিশ্ব ধবংস হয়ে যাওয়ার পরও আমাদের পক্ষে কী সম্ভব আমাদের কনসাসনেসকে প্রিজার্ভ করা? কিন্তু সেটা কোন পদ্ধতি মেনে? কীভাবে শক্তির মধ্যে চেতনাকে এনকোড করা যায়? আমাদের থেকে মিলিয়ন বছর পূর্বে মহাবিশ্বে এসেছে এমন কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব আছে? তাদের চিন্তার পদ্ধতি কেমন? তারা কী আমাদের থেকে প্রযুক্তিগতভাবে মিলিয়ন গুণ এগিয়ে নয়? যদি তাই হয় তারা বর্তমানে কোথায়? ইন্টারগ্যালাক্টিক স্পেস জয়ের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছে? পারমাণবিক যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে গেছে নাকি তারা কম্পিউটারের ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট হিসেবে বাস করছে এখন? এলিয়েনরা কী চেতনার দিক থেকেও এলিয়েন? ইম্মর্টালিটি অর্জনে বর্তমান বিজ্ঞান ঠিক কতদূর অগ্রসর হয়েছে?
প্রচ্ছদ মূল্য:৭৫০৳ ,বিক্রয় মূল্য: ৫২৫৳(৩০%) পেজ সংখ্যা: ৫০০, হার্ডকাভার, ম্যাট লেমিনেটিং
গড ডিল্যুশন, রিচার্ড ডকিন্স, কাজী মাহবুব হাসান
কার্ল সাগান তার ‘‘পেল ব্লু ডট’’ এ লিখেছিলেন: কেন এরকম হলো যে, প্রধান ধর্মগুলোর প্রায় কোনটাই বিজ্ঞানকে অন্ততঃ সামান্য হলেও একটু বোঝার চেষ্টা করেছে এবং এই সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছে , “আমরা যা ভেবেছিলাম এটাতো তার চেয়েও অনেক ভালো! এই মহাবিশ্বতো আমাদের নবীরা যা বলে গেছেন তার চেয়েও অনেক বিশাল, আরো সুক্ষ আর অভিজাত”; বরং বলেছে, “না, না, না! আমার ইশ্বর হলো ছোট ইশ্বর আর আমরা চাই সে সেভাবেই থাকুক” ; কোন ধর্ম, নতুন কিংবা পুরাতন যাই হোক, যা কিনা আধুনিক বিজ্ঞানের মাধ্যমে উন্মোচিত এই মহাবিশ্বের অসাধারণত্বকে গুরুত্ব দিয়েছে, হয়তো চিরাচরিত বিশ্বাস যা পারেনি তার চেয়ে অনেক বেশী শ্রদ্ধার জন্ম দিতে পারতো। কার্ল সাগান সব বইগুলোই আমাদের সর্ব্বোচ্চ বিস্ময়গুলোকে সরাসরি স্পর্শ করে, যার উপর গত শতাব্দীগুলোতে এক্চ্ছত্র দখল ছিল ধর্মগুলোর। আমার নিজের বইগুলো সেভাবে সবাইকে স্পর্শ করুক সেটা আমারো কাম্য। সম্ভবতঃ সে কারনে একজন গভীরভাবে ধার্মিক বলে আমাকে প্রায়ই বর্ণনা করা হয় বলে শুনেছি। একজন আমেরিকান ছাত্রী আমাকে লিখেছিল, তার এক অধ্যাপককে, আমার সম্বন্ধে কোন মতামত আছে কিনা জানতে চেয়েছিল। ‘অবশ্যই”, তিনি উত্তর দিয়েছিলেন“তার ইতিবাচক বিজ্ঞান ধর্মের সাথে সঙ্গতিপুর্ণ নয় ঠিকই, কিন্তু, প্রকৃতি আর মহাবিশ্ব নিয়ে তিনি যেভাবে তিনি আবেগময় উচ্ছাস প্রকাশ করেন, আমার কাছে, সেটাইতো ধর্ম”’; কিন্তু ‘ধর্ম’ শব্দটা কি সঠিক এক্ষেত্রে ? আমি সেটা মনে করি না। নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী (এবং একজন নীরিশ্বরবাদী) স্টীফেন ওয়াইনবার্গ তার ‘‘ড্রিমস অব ফাইনাল থিওরী’’ অনেকের মতই এই প্রসঙ্গে লিখেছিলেন: ঈশ্বর সম্বন্ধে কিছু মানুষের ধারনা এত ব্যপক আর নমনীয় যে, এটা অবশ্যম্ভাবী যে তারা যেদিকে খুজবে সেখানেই ইশ্বরকে খুজে পাবে। মাঝে মাঝে শোনা যায়, ‘ইশ্বরই চুড়ান্ত’ অথবা ‘ইশ্বর আমাদের ভালো অংশ’ বা ‘ইশ্বরই এই মহাজগত’; অবশ্যই, অন্য যে কোন শব্দের মতোই ইশ্বর শব্দটিকে আমরা আমাদের ইচ্ছামতন অর্থ করতে পারি। আপনি যদি বলতে চান বলতে পারেন যে ‘ইশ্বরই শক্তি’, তাহলে আপনি ইশ্বরকে এক টুকরো কয়লার মধ্যে পেতে পারেন। স্টীফেন ওয়াইনবার্গ অবশ্যই সঠিক, যদি ‘ইশ্বর’ শব্দটা আমরা পুরোপুরি অব্যবহারযোগ্য করে ফেলতে না চাই, তাহলে একে ব্যবহার করতে হবে ঠিক সেভাবে, যেভাবে বেশিরভাগ মানুষ সাধারণতঃ শব্দটা অর্থ করে: অর্থাৎএকজন অতিপ্রাকৃত সৃষ্টিকর্তাকে বোঝাতে, যিনি ‘আমাদের উপাসনার উপযুক্ত’।
আউটগ্রোয়িং গড, রিচার্ড ডকিন্স, কাজী মাহবুব হাসান
রিচার্ড ডকিন্স এই বইয়ে বিজ্ঞান, দর্শন এবং কৌতূহলোদ্দীপক উদাহরণ ব্যবহার করে সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান নির্ভর ইচ্ছানিরপেক্ষ প্রতিক্রিয়াগুলোর উর্ধে উঠে সমালোচনামূলক একটি চিন্তার কাঠামো গড়ে তোলার সাহসী পদক্ষেপ নেবার আহবান জানিয়ে অস্তিত্বের কেন্দ্রে থাকা মৌলিক একটি প্রশ্ন নিয়ে আমাদের ভাবতে উৎসাহী করেছেন।
স্যাপিয়েন্স আফ্রিকা ছাড়েনি
হোমো ইরেক্টাসরা বিশ লাখ বছর এ গ্রহে টিকেছিল। আর স্যাপিয়েন্স এসেছে এইতো এক লাখ বছর হল। সভ্যতার স্কেলে আমরা টাইপ ০ স্তরে অবস্থান করছি যারা সবেমাত্র মাধ্যাকর্ষ বলকে ত্যাগ করতে শিখেছে। ধর্ম ও জাতীয়তার স্বতন্ত্র গল্প থেকে আমরা একে অন্যের বিপক্ষে পারমাণবিক বোমা তৈরি করেছি। একটি গল্প অন্য আর একটি গল্পকে পারমাণবিক বোমা মেরে শেষ করে দিতে চাইছে। গ্রহ নিজেই নিজের বিপক্ষে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করতে চায়। এটি একটি ইল্যুশন কারণ আমরা বুঝতে পারছি না, আমরা প্ল্যানেটারি সুইসাইড করলে এ গ্রহে ঈশ্বর, ধর্ম ও জাতীয়তা সার্ভাইভ করতে পারবে না। ড্র্যাক সমীকরণ থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন, মানুষ আফ্রিকার জঙ্গল থেকে মাইগ্রেট করার মিলিয়ন বছর আগেও এ মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান সভ্যতা ছিল। আমরা উন্নত সভ্যতার রেডিও সিগন্যাল পাই না কারণ তারাও ধর্ম ও জাতীয়তা প্রিজার্ভ করার জন্য বহু মিলিয়ন বছর আগেই পারমাণবিক যুদ্ধে শেষ হয়ে গিয়েছে।
ম্যাজিক অব দ্য রিয়েলিটি
জাদু বহু রূপ নিতে পারে। প্রাচীন মিসরীয়রা রাতকে ব্যাখ্যা করতে প্রস্তাব করত, রাত হচ্ছে সেই সময় যখন আকাশের দেবী ন্যুট সূর্যকে গিলে ফেলে। ভাইকিংরা রংধনুকে দেবতাদের বানানো সেতু মনে করত, যা ব্যবহার করে তারা পৃথিবীতে নেমে আসেন। এইসব কিছুতেই জাদুময়তা আছে, অসাধারণ সব কাহিনী। কিন্তু আরো এক ধরনের জাদু আছে, আর সেই জাদুটি এই সব প্রশ্নগুলোর সত্যিকারের উত্তর আবিষ্কার করার তীব্র আনন্দের মধ্যে থাকে। আর এটাই হচ্ছে বাস্তবতার জাদু - বিজ্ঞান। মহাশূন্য, সময় আর বিবর্তন বিষয়ে উদ্দীপ্ত করার মতো অসংখ্য ব্যাখ্যা সম্বলিত, হাস্যরস আর বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তার পরীক্ষার নানা উদহারণের সঠিক মিশ্রণে ‘দ্য ম্যাজিক অব রিয়েলিটি’ বইটি প্রাকৃতিক প্রপঞ্চগুলোর বিস্ময়কর বিশাল একটি সম্ভারকে অনুসন্ধান করেছে। কোনো কিছু আসলে কী দিয়ে তৈরি? মহাবিশ্ব কত প্রাচীন? সুনামি কেন হয়? প্রথম পরুষ, অথবা নারী, কে ছিলেন? এটি সুখপাঠ্য, অসাধারণ একটি রহস্য গল্পের মতো, যা শুধুমাত্র বিজ্ঞানের পুঞ্জিভূত জ্ঞানের খনিতে এর উত্তরের যোগসূত্রগুলো অনুসন্ধানই করেনি, একজন বিজ্ঞানীর মতো ভাবতেও এটি এর পাঠককে প্রস্তুত করেছে। সব বয়সের পাঠকদের জন্যেই রিচার্ড ডকিন্স এই বইটিতে প্রাকৃতিক জগতের বিস্ময়গুলোকে ব্যাখ্যা করেছেন অননুকরণীয় স্পষ্টতা আর সমৃদ্ধতায়, যা ভবিষ্যত বহু প্রজন্মকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত এবং তথ্যাভিজ্ঞ করা অব্যাহত রাখবে।
প্রচ্ছদ মূল্য: ৬০০৳ ,বিক্রয় মূল্য: ৪২০ ৳ ( ৩০% ছাড়) পেজ সংখ্যা: ৩৫০, হার্ডকাভার, ম্যাট লেমিনেটিং
ফ্যাক্ট চেকিং-এর প্রথম পাঠ
সময়টা ২০২০ সাল, যখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতন বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। চারিদিকে তখন লকডাউন আর সেলফ আইসোলেশনের বিভীষিকায় মিথস্ক্রিয়ার প্রয়োজনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ছাড়া মানুষের ঠাঁই নেবার অন্য কোনো জায়গা নেই। মহামারিকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া এই নতুন, অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে গুজবের নৌকার পালে যেন এক নতুন হাওয়া লাগতে শুরু করে। আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। সেই সময়ে কাকতালীয় অথবা কোকিলতালীয়ভাবে ‘ফ্যাক্টওয়াচ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বরাতে আমার ফ্যাক্ট চেকিংয়ের হাতেখড়ি হয়। কিছুদিন শেখার পর টের পাই, এ এক নেশার মতন। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগের সাহায্যে কিছু কলাকৌশল প্রয়োগ করেই এটি করা যায়। শুরুতে আশ্চর্য লাগত এটা লক্ষ্য করে যে, একটা সময়ে যে সমস্ত সংবাদমাধ্যমে কাজ করার স্বপ্ন দেখতাম, সেই সংবাদমাধ্যমগুলো থেকেও ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়। যেসকল মানুষদের অনেক সচেতন এবং দায়িত্বশীল হিসেবে জানতাম, অবাক হতাম তাদেরও গুজবের ফাঁদে পা দিতে দেখে। ধীরে ধীরে তখন বুঝতে শুরু করি, ডিজিটাল যুগের নয়া বাস্তবতা ক্রমশই আমাদের জীবন-যাপন কে যে দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তারই একরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে হাজির হয়েছে অনলাইন তথ্য বিভ্রাট যার সহসা কোনো সমাধান নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেয়া তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি। একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি এবং ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ কোটি ২৮ লাখ। উক্ত পরিসংখ্যান স্পষ্ট ইঙ্গিত করছে, বর্তমানে দেশের একটি বৃহৎ অংশ ইন্টারনেটের আওতায় রয়েছে এবং এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাবে। করোনা মহামারি আমাদের আগের তুলনায় আরও বেশি ইন্টারনেট নির্ভর করে তুলেছে, আবার অনেক দুরত্বে থেকে বিভিন্ন ধরণের কাজ চালিয়ে যাবার অপার সম্ভাবনাও উন্মোচন করেছে। পূর্বের যেকোন সময়ের তুলনায় স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এখন অনেক বেশি সহজলভ্য। এর প্রভাবে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, বাণিজ্য, বিনোদন সহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে স্মার্ট ডিভাইস এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তথ্য এখন আরও সহজলভ্য, বলা চলে প্রায় সর্বস্তরের মানুষের একদম হাতের মুঠোয়। নেট দুনিয়ায় কিছু লিখে সার্চ করলে নিমিষেই ভূরি ভূরি তথ্য হাজির হচ্ছে। তথ্যের এই সহজলভ্যতার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে এক নতুন সংকট। এত এত তথ্যের ভীড়ে কোনটি আসল আর কোনটি ভেজালযুক্ত এই ভাবনা এখন আমাদের জন্য অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। তথ্যের এই সংকট মোকাবেলায় নতুন নামে হাজির হয়েছে সাংবাদিকতার পুরনো এক চর্চা, যার নাম ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ বা তথ্য যাচাই। গুজবের ভিড়ে সঠিক তথ্যটি খুঁজে পেতে ফ্যাক্ট চেকিংয়ের কলাকৌশল এখন বয়স, পেশা এবং শ্রেণীভেদে প্রায় সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর জানা প্রয়োজন। পর্যাপ্ত সঠিক তথ্য শিক্ষিত ও সচেতন সমাজ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইতিহাস জুড়ে দেখা যায়, তথ্যাভিজ্ঞ মানুষরাই তাদের জীবন ও গোষ্ঠী সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্তগুলো ঠিকঠাকভাবে নিতে পারেন। ‘ট্রাস্ট, বাট ভেরিফাই: ফ্যাক্টরস অ্যাফেক্টিং মিডিয়া ট্রাস্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কোনো সংবাদমাধ্যমে ভুয়া খবর প্রকাশিত হলে ২২ শতাংশ পাঠকই তা তাৎক্ষণিকভাবে ধরতে পারেন না। জ্ঞানগত পক্ষপাত, তথ্য স্বাক্ষরতার অভাব, রাজনৈতিক অস্থিরতা, স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন, অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য সহ বিভিন্ন কারণে প্রতিনিয়ত ভুল ও অপতথ্যের অবাধ সমাগম ঘটছে আমাদের অনলাইন থেকে অফলাইন জগতে। অল্প সময়ে সাম্প্রদায়িক সংঘাত থেকে শুরু করে, গণপিটুনি, মানহানি, নির্বাচন প্রভাবিত করা, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি সহ বিভিন্ন রকমের বিপর্যয় সৃষ্টিতে ইতিমধ্যে গুজবের ভূমিকা ব্যাপকভাবে লক্ষণীয়। কেউ গুজব ছড়ালে তার জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী, ডিজিটাল মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ মিথ্যা তথ্য ছড়ালে তিন বছর থেকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডে তিনি দন্ডিত হতে পারেন। অথচ এই আইন পুরোপুরি গুজবের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না, থামাতে পারছে না অপতথ্য প্রচারকারীদের তৎপরতা। কথায় আছে, “প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম”। প্রযুক্তিগত গোপনীয়তার বলয়ে থাকা অপরাধীদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি যে কাজটি এখন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, সেটি হচ্ছে গুজব রোধ করা। অর্থাৎ গুজবে বিশ্বাস না করা, গুজব চিহ্নিত করা এবং তা ভাইরাল হতে না দেয়া। গুজব সৃষ্টিকারীর সাথে পাল্লা দিয়ে সঠিক তথ্যটি খুঁজে বের করে সকলের সামনে হাজির করা। বর্তমানে বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্বের গুজব পরিস্থিতির যে নাজুক হাল তা কেবল গুটিকয়েক ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থার মাধ্যমে পরিবর্তন সম্ভব নয়। তথ্য মহামারির এই ক্রান্তিলগ্নে ফ্যাক্ট চেকিং কে তাই প্রাতিষ্ঠানিক জায়গা থেকে ছড়িয়ে দিতে হবে ব্যক্তিগত ব্যবহারিক পর্যায়ে, জনসাধারণের মাঝে বাড়াতে হবে তথ্য স্বাক্ষরতার হার। আশার কথা, বাংলাদেশে ক্রমশ ফ্যাক্ট চেকিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় প্রতিবছর নতুন নতুন ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা গড়ে উঠছে। মূলধারার সংবাদমাধ্যমে ফ্যাক্ট চেকিং নিয়ে একরকম উদাসীনতা দেখা গেলেও পেশাদার সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতা বিষয়ে অধ্যয়নরত প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য ফ্যাক্ট চেকিং জানা আবশ্যক, অন্তত গুজব ছড়ানো থেকে নিজেদের বিরত রাখতে। আমি যখন ফ্যাক্ট চেকিং শুরু করেছিলাম, তখন এমন কোনো বই আমার চোখে পড়ে নি। এখন মনে হয়, যদি বাংলা ভাষায় তথ্য যাচাই সংশ্লিষ্ট কোনো বই তখন পেতাম, তাহলে হয়তো আরও বেশি সমৃদ্ধ হতে পারতাম। সেই ভাবনা থেকেই আমার ফ্যাক্ট চেকিং শেখা এবং চর্চার অভিজ্ঞতাগুলো আগ্রহীদের কাছে তুলে ধরতে এই বইটির কাজ শুরু করেছিলাম। বইটিতে ফ্যাক্ট চেকিংয়ের কিছু সাধারণ কলাকৌশল ও টুল সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি চেষ্টা করা হয়েছে ফ্যাক্ট চেকিংয়ের ইতিহাস ও বিভিন্ন রকমের তথ্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়ার, বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ এবং কিছু কেস স্টাডি। বইটি লিখতে নিজের কর্মঅভিজ্ঞতা ছাড়াও বিভিন্ন বই, গবেষণাপত্র, নিবন্ধ, সংবাদ প্রতিবেদন এবং প্রাসঙ্গিক দলিল থেকে তথ্য-উপাত্তের সাহায্য আমি নিয়েছি। ফ্যাক্ট চেকিং এ আমার হাতেখড়ি যাদের মাধ্যমে হয়েছিল, যে দুইজন মানুষের কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ, তারা হলেন আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ফ্যাক্টওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সুমন রহমান স্যার এবং আমার সাবেক সহকর্মী সাজিয়া শারমিন আপু। এছাড়াও বিডি ফ্যাক্টচেক এবং কদরুদ্দিন শিশির ভাইয়ের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ, যাদের কার্যক্রম আমাকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছে, শিখিয়েছে তথ্য যাচাইয়ের অনেক খুঁটিনাটি। পরিশেষে আমার সাবেক দুই সহকর্মী সামস ওয়াহিদ এবং জহিরুল ইসলাম কে স্মরণ করছি, যাদের সাহচার্য আমাকে পেশাদার ফ্যাক্ট চেকার হয়ে উঠতে নিরন্তর প্রেরণা জুগিয়েছে। ফ্যাক্ট চেকিংয়ের কলাকৌশলগুলো শুধু বই পড়ে শেখা সম্ভব নয় বলে আমি মনে করি। এর বেশিরভাগটাই আসলে হাতে কলমে করে শিখতে হয়। এখানেই বইয়ের সীমাবদ্ধতা এবং প্রশিক্ষণের স্বার্থকতা। আমি ফ্যাক্ট চেকিংয়ের পাশাপাশি এই বিষয়ে সাংবাদিক, সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী এবং ফ্যাক্ট চেকারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। বইটির একাংশ তাই প্রশিক্ষণের ভাষায় লেখা হয়েছে যা হাতেকলমে শেখানোর ভঙ্গিতে নবাগতদের তথ্য যাচাইয়ের প্রাথমিক ধারণা লাভে সহায়ক হবে। ফ্যাক্ট চেকিংয়ের ইতিহাস, গুজবের অর্থনীতি ও সমাজ-মনস্তত্ত্ব, বাংলাদেশের গুজব পরিস্থিতি, তথ্য যাচাইয়ের প্রাথমিক কিছু কলাকৌশল ও প্রয়োজনীয় টুলের ব্যবহার, এবং তথ্য যাচাইয়ের নীতি-নৈতিকতা সম্পর্কে ধারণা দিতে এই বইটি শাস্ত্রীয় সীমানা পেরিয়ে প্রায় সকল জ্ঞানকান্ডের শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, অধ্যাপক এবং নবীন ফ্যাক্ট চেকারদের সামান্য হলেও সাহায্য করবে বলে আমি মনে করি। ফ্যাক্ট চেকিং করতে গিয়ে প্রায়শই অনেক প্রচলিত বর্ণনাকে আমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছি। তথ্য যাচাইয়ের পেশাদারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তথ্য স্বাক্ষরতা বিষয়ক তৎপরতায় খানিকটা লিপ্ত থেকেছি। এই বইটির চূড়ান্ত পান্ডুলিপি প্রস্তুত করা শেষে আমার খুঁতখুঁতে মনে একটি স্বভাবসুলভ সন্দেহ দানা বেঁধেছে, অবচেতন মনে আমিও কি এই বইয়ের কোথাও ভুল তথ্য দিয়েছি? যদি ভুলবশত তা করেই থাকি, তবে সেটি খুঁজে বের করার দায়িত্ব বইটির পাঠকদের কাছেই আমি অর্পণ করলাম। বইটি নিয়ে আপনার যেকোনো প্রশ্ন, ভাবনা, এবং মতামত আমাকে লিখে জানাতে পারেন ইমেইলে। বইটি যদি কোনোভাবে কারও কাজে লাগে, ফ্যাক্ট চেকিংয়ের প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে, তবেই বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের শ্রম স্বার্থক হবে। গুজবের বিরুদ্ধে এই অন্তহীন লড়াইয়ে আপনাকে স্বাগতম!
আমাদের বইগুলো যারা সংগ্রহ করতে চান “এখানে” মেসেজ করুন। হাইপারস্পেসের বইগুলোর সংগ্রহ করার জন্য অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করতে হয়। অর্ডার করার ৭-৮ দিনের মধ্যে আপনার কাছে বই পৌঁছে যাবে। যদি কোনো কারণে বই পেতে বিলম্ব হয় দ্রুত আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমাদের সাথে যোগাযোগের ঠিকানা: 01721470953।
কাজী মাহবুব হাসান
কাজী মাহবুব হাসানের পেশাগত প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র চিকিৎসাবিজ্ঞান, চিকিৎসা অণুজীববিজ্ঞান, রােগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য। অনুবাদ আগ্রহের ক্ষেত্রজীববিজ্ঞান, বিজ্ঞানের ও শিল্পকলার ইতিহাস, সভ্যতার বিকাশে বিজ্ঞান ও শিল্পকলার মিথস্ক্রিয়া। ব্যক্তিগত ব্লগ জীবনের বিজ্ঞান।
এ এইচ লিহন
অ্যান্ড্রোস লিহন। বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে আছে- ভালোবাসার ফসিল ( ফিশারের অ্যানাটমি অব লাভ অনুসরণে), ব্রেন: তোমার কানেক্টমের গল্প (ডেভিড ইগলম্যান), গড ইকুয়েশন (মিচিও কাকু), হাইপারস্পেস (মিচিও কাকু), প্যারালাল ওয়ার্ল্ড (মিচিও কাকু), নিউ এম্পেরর অব সেপিয়েন্সিস (মৌলিক), মলিক্যুল অব মোর ( অনুবাদ) ও স্যাপিয়েন্স আফ্রিকা ছাড়েনি (মৌলিক)।