স্কুল জীবন থেকেই আমরা রসায়নের পর্যায় সারণীর সাথে পরিচিত। যেখানে ১১৮টি ভিন্ন মৌল রয়েছে যাদের মধ্যে বেশিরভাগের ধর্ম, ভর, আচরণ একটির থেকে অন্যটির আলাদা।
ঠিক সেরকমভাবে ফিজিক্স এ একটা পর্যায় সরণী রয়েছে যাকে বলা হয় স্ট্যান্ডার্ড মডেল অব এলেমেন্টারি পার্টিকেল। এই মডেলে আমরা যদি ঠিকভাবে লক্ষ্য করে থাকি তাহলে আমরা দেখবো সেখানে থাকা পর্টিকেলের মধ্যে কারো ভর অনেক, কারও ভর অনেক কম আবার কারও ভর একেবারে শূন্য।
কিন্তু কেন এমন হয়?
এই পার্টিকেল বা কোন বস্তুর মধ্যে ভরের সৃষ্টি হয় কিভাবে?
স্কুল জীবন থেকে আমরা জেনে আসছি ভর হলো পদার্থ বিজ্ঞানের একটি মৌলিক তত্ত্বগত ধারণা। এটি হলো কোনো বস্তুর এমন এক মৌলিক বৈশিষ্ট্য যা বল প্রয়োগে বস্তুতে সৃষ্ট ত্বরণের বাধার পরিমাপক। কারন নিউটন এর গতির দ্বিতীয় সূত্র অনুযায়ী, আমরা জানি।
F=ma
বা, a=F/m.
যেখানে ভর ত্বরণের ব্যাস্তানুপাতিক হিসেবে অবস্থান করে এবং ভরের প্রায়োগিক ধারণা হচ্ছে বস্তুুর ওজন। ভর একটা ধ্রুব রাশি এবং এর পরিমাপ কর সম্ভব নয়।
নিউটনীয় বলবিদ্যায় বল প্রয়োগ করলে ভরযুক্ত বস্তু কেমন আচরণ করবে এবং বলের সাথে ভরের সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ভর কোথায় থেকে আসে সেটা নিয়ে কিছু বলা নেই।
কিন্তু আজকে আমরা দেখবো কিভাবে বস্তুর মধ্যে ভরের সৃষ্টি হয়। এবং ভর নিয়ে নানা রঙবেরঙের কথা।
ধরুন আপনার একটা কমলা রঙের বিড়াল আছে যার ওজন ৬০ কেজি (জাস্ট ধরে নিন প্লিজ হাসবেন না)। এখন বলুন তো এর এই ভরের মূল উৎস কোথায়? খুব সহজে বলা যায় এর অনু-পরমাণুর ভরগুলো যোগ করলে করলে বস্তুটার ভর পাওয়া যাবে৷ হ্যা কথাটা ভুল না ঠিক। কিন্তু বিড়াল টা যদি অলওয়েজ ১০০ m/s বেগে গতিশীল থাকে তাহলে তার একটা গতিশক্তি থাকবে, রাইট? তাহলেও কি এর এই ভরই থাকবে? উত্তর হলো না আইন্সটাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব থেকে আমরা জানতে পারি আপেক্ষিক ভরের কথা। যা বলে এই গতিশক্তিকে আলোর বেগের বর্গ দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যাবে ঠিক সে পরিমাণ ভর এখন বিড়ালটির বেশি পাওয়া যাবে।
আসুন বিষয়টা একটু গনিতের ভাষায় দেখি।
ধরি বিড়াল এর ভর m= 60kg
- বেগ, v=100 m/s
- তাহলে গতিশক্তি হবে, Ek=1/2mv^2
- =1/2×60×100^2
- =300,000 J
এখন এই মানটাকে c^2 দিয়ে ভাগ করলে পাই= 300,000/(3×10^8)2=3.33×10^-12 kg
মানে এ ক্ষেত্রে বিড়ালটির গতিশীল অবস্থা ভর বৃদ্ধি পাবে 3.33×10^-12 kg
বুঝতেই পারছেন এই ভর এর পরিমাণ এতোই কম যে দৈনন্দিন জীবনে যা আমাদের চোখেই পরে না। কারণ দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেভাবে চলাফেরা করি এবং যা কিছু পর্যবেক্ষণ করি তার সবকিছু মহাবিশ্বের আলোর বেগের ধারে কাছেও নেই তাই এই ভর এর পরিবর্তন (ভরবেগের পরিবর্তন) এর বিষয়টা আমাদেরকে কোন প্রকার প্রভাবিত করে না। এমনকি Halios-2 নামের যে স্পেস প্রোবের বেগ 70,000m/s সেটার বেলাও এই ভরের বিষয়টা তেমন প্রভাবিত করে না। তবে আপনি যদি বিড়ালটাকে আলোর কাচাকাচি বেগে ছুটাতে পারেন তাহলে তাহলে আপেক্ষিক ভরের বিষয়টা লক্ষণীয় হবে।
আমরা জানলাম অণু-পরমাণু মূলত বস্তুর ভর তাহলে চলুন এবার অনু-পরমাণুর গভীরে যাওয়া যাক।
আমরা জানি ইলেকট্রন, নিউট্রন আর প্রোটনের ভর আছে । এদের ভর যোগ করলে এক একটা পরমাণুর ভর পাওয়া যাবে, রাইট?। এখন পর্যন্ত আমাদের জানামতে ইলেকট্রন হলো একটি মৌলিক কণিকা। এটিকে ভাঙলে শুধু ইলেকট্রনই পাওয়া যাবে আর কিছু না। ইলেকট্রিক ফিল্ড আর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মতো করে মহাবিশ্বে ছড়ানো আছে আরেকটা ফিল্ড যাকে বলা হয় হিগস ফিল্ড আর এই হিগস ফিল্ডই বস্তুর মধ্যে ভর দেয়। ফোটনের সাথে হিগস ফিল্ডের কোনো সম্পর্ক নেই তাই এর স্থির ভর শূন্য। কিন্তু ইলেকট্রন এই ফিল্ডে ছড়িয়ে যায় তাই ইলেকট্রনের একটা ভর পাওয় যায় কিন্তু এই ভর নিউট্রন আর প্রোটনের তুলনায় খুবই নগন্য প্রায় ১৮৪০ গুণ । তাই আমরা হিসেবের খাতা থেকে ইলেকট্রনও বাদ দিতে পারি। এবার বাকি থাকলো প্রোটন আর নিউট্রন , এরা কোয়ার্ক দিয়ে তৈরি। দুইটা আপ-কোয়ার্ক আর একটা ডাউন-কোয়ার্ক দিয়ে প্রোটন আর দুইটা ডাউন-কোয়ার্ক আর একটা আপ-কোয়ার্ক নিয়ে নিউট্রন তৈরি। এখনও পর্যন্ত জানা এই কোয়ার্ক মৌলিক কনিকা। তাই এদের ভর আসে হিগস ফিল্ড থেকে। কিন্তু কোয়ার্ক গুলোর ভর মিলিয়ে নিউট্রন প্রোটনের ভরের মাত্র ১ থেকে ২ পার্সেন্ট হয়।
তাহলে বাকি বিপুল পরিমাণ ভর কোথা থেকে এলো?
খুবই চিন্তার বিষয় তাই না? Don’t worry….
আসলে কোয়ার্কগুলো তো স্থির থাকে না। এরা প্রায় আলোর বেগে ছুটতে থাকে সবসময়। যেহেতু এরা গতিশীল থাকে তাই এর একটা গতিশক্তি থাকে। আবার এতো তীব্র গতির কারণে এরা নিউট্রন আর প্রোটন এর গন্ডি ছাড়িয়ে বের হয়েও আসতে পারে না। কারণ এদের আটকানোর জন্য হিউজ পরিমাণ বন্ধন শক্তি আছে, যা দ্বারা এদের ক্ষুদ্র একটি জায়গায় আটকে রাখা হয়েছে। আর এই গতিশক্তি আর বন্ধন শক্তিকে আলোর বেগের বর্গ (c^2) দিয়ে ভাগ দিলেই বেরিয়ে আসবে হিসেব না মেলা সেই কাঙ্ক্ষিত ভর।
মানে কোন বস্তুর মোট ভরের সামান্য পরিমাণ ভর আসে হিগস ফিল্ড থেকে আর বাকিটা আসে কোয়ার্ক এর গতির কারনে সৃষ্টি হওয়া গতিশক্তি আর ঐ বন্ধন শক্তির কারণে। আর বস্তুর গতির কারণে সৃষ্টি হওয়া এই ভরকেই বলা হয় Relativistic mass।
কিন্তু কি এই হিগস ফিল্ড এবং কীভাবে এই হিগস ফিল্ড থেকে বস্তুর মধ্যে ভর আসে?
১৯৬৪ সালে পিটার হিগস নামে একজন ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী এমন একটি ক্ষেত্রের ধারণা উপস্থাপন করলেন যা মহাবিশ্বের অস্তিত্বের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে পারে। সেই হাইপোথিটিক্যাল ক্ষেত্রের নাম হয় হিগস ফিল্ড বা হিগস ক্ষেত্র। এই ধারণা অনুসারে এই মহাবিশ্ব বিশাল হিগস ক্ষেত্র দ্বারা আবৃত। এই ক্ষেত্র দিয়ে অতিক্রমের সময় মৌলিক কণাসমূহ ক্ষেত্রের সাথে যে মিথস্ক্রিয়ায় লিপ্ত হয় তা তাদেরকে ভর দান করে। কিছু কণা হিগস ফিল্ডের সাথে বেশিমাত্রায় ক্রিয়া করে ফলে তারা বেশি ভর লাভ করে আবার কিছু কণা কম ক্রিয়ার ফলে তুলনামূলক কম ভর লাভ করে। আলোর কণা কোন ক্রিয়াই করে না তাই এটির ভর শূন্য।
আপনি যদি স্ট্যান্ডার্ড মডেলের দিকে খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন সেখানে থাকা কিছু পার্টিকেলের ভর বেশি এর কারণ সে কণিকাগুলো হিগস ফিল্ড এর সাথে বেশি ক্রিয়া করে। আবার যে সব কণিকার ভর কম তারা কম ক্রিয়া করে। আবার কিছু কণা কোন ক্রিয়া করে না তাই তাদের ভর শূন্য যেমন ফোটন।
বিষয়টা আরো সহজে বোঝার জন্য কল্পনা করুন আপনি একটা অচেনা অঞ্চলে গেলেন। এখন সেখানে গেলে কেউ আপনাকে চিনবে না যার ফলে আপনার সাথে কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলবে না এবং কোনো কাজে বা কোনো কারণে আটকাবেও না। কিন্তু আপনি যদি একজন বড় সেলিব্রিটি হন তাহলে কিন্তু বিষয়টা উল্টো হবে। সেই অঞ্চলটা আপনার জন্য নতুন হলেও ঐ অঞ্চলের মানুষদের জন্য আপনি নতুন নয়। যার ফলে সবাই আপনার পথ আটকাবে আপনার সাথে ছবি তুলবে। রাইট?
ঠিক এইরকমই ভিন্ন রূপে কিছু ঘটে হিগস ফিল্ড-এর মধ্যে দিয়ে কোনো পার্টিকেল যাওয়ার সময়। যে পার্টিকেল যত সহজে ঐ ফিল্ড দিয়ে যেতে পারে সে পার্টিকেলের ভর তত কম হবে। আর যে পার্টিকেল যত কম সহজে যেতে পারবে তার ভর তত বেশি হবে।
হিগস-বোসন কণাঃ
আমরা জানি প্রত্যেকটা মৌলিক পার্টিকেলের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা ক্ষেত্র বা ফিল্ড। এবং ঐ ফিল্ড এ শক্তি প্রদান করার ফলে তৈরি হবে আলাদা আলাদা কণা। যেমন ইলেকট্রন ফিল্ড এ শক্তি প্রদান করার ফলে তৈরি হবে ইলেকট্রন পার্টিকেল। কোয়ার্ক ফিল্ড এ শক্তি প্রদান করার ফলে তৈরি হবে কোয়ার্ক কণিকা। ঠিক তেমনি এই হিগস ফিল্ড এ শক্তি প্রধান করার ফলে তৈরি হবে হিগস-বোসন কণা বা গড পার্টিকল।
অস্ট্রোপিলি
কিন্তু এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। তাহলে এই হিগস- বোসন কণিকায় ভর আসে কোথা থেকে কারণ আমরা স্ট্যান্ডার্ড মডেল এ দেখেছি হিগস-বোসন কণার ভর 124.97 GeV/c^2। এখন সকল কণিকার প্রাথমিক ভর বা রেস্ট মাস এর উৎস যদি এই হিগস ফিল্ড হয় তাহলে ঐ গড পার্টিকল এর ভর আসে কোথা থেকে?
আসলে গড পার্টিকেল এর ভরও আসে হিগস ফিল্ড থেকেই। আমরা আগেই বলেছি সকল মৌলিক কণিকা সৃষ্টি হয় তার নিজস্ব ফিল্ড থেকে। যেমন কোয়ার্ক ফিল্ড এর কম্পনের ফলে যে স্থানে তার তরঙ্গের বিস্তার বেশি হবে সে স্থানকেই মূলত আমরা বলে থাকি কোয়ার্ক পার্টিকল আর যে স্থানে তরঙ্গ থাকবে না সেখানে কোন কোয়ার্ক নাই। কিন্তু হিগস ফিল্ড এর ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা এ ফিল্ড এর সকল স্থানেই তরঙ্গ থাকবে। মানে এই ফিল্ড এর ভ্যালু কখনো শূন্য হয় না। এখন এই হিগস ফিল্ড এ স্বাভাবিক যে তরঙ্গ আছে সেটাকে গড পার্টিকল বলা যাবে না। মূলত এই ফিল্ড এ যখন এক্সট্রা কিছু তরঙ্গের বিস্তার দেখা যাবে তখন সেটাকেই বলা হবে হিগস-বোসন পার্টিকেল। যার ফলে হিগস- বোসন উৎপন্ন হওয়ার পর পরই এই ফিল্ড এর সাথে ক্রিয়া করতে শুরু করে যার ফলে এর মধ্যে সৃষ্টি থেকেই ভর থাকে। Read more: স্ট্রিং তত্ত্ব ও মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচন
কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনুযায়ী কোন ফিল্ড এ শক্তি প্রদান করলে সেখানে সৃষ্টি হবে ওয়েব-ফাংশন। এখন যে স্থানে ঐ ওয়েন-ফাংশন-এর বিস্তার বেশি হবে সে স্থানে সে কণাটিকে পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি হবে যখনি আমরা কণাটিকে দেখার চেষ্টা করবো তখনি ওয়েব-ফাংশন কল্যাপ্স করবে বা সাই এর ভাঙন দেখা দেবে । কিন্তু হিগস ফিল্ড এ তেমন কোন ওয়েব-ফাংশন দেখা যায় না সেখানে অলওয়েজ একই রূপ ওয়েব দেখা যায় যে কারণে সেখানে হিগস-বোসন কে কোথায় পাওয়া যাবে তার কোন ফাংশন থাকে না। সেখানে যখন এক্সট্রা শক্তি দেওয়া হয় তখনই কণিকাটিকে পাওয়া যাবে।
ঠিক এ কারণেই হয়তো মিচিও কাকু তার গড ইকুয়েশন বইয়ে বলেছেন কোয়ান্টাম থিয়োরিতে সিমেট্রি ব্রেক করার জন্য হিগস বোসন প্রয়োজনীয় পার্টিকেল।
২০১২ সাল এর আগে পর্যন্ত এই হিগস-বোসন একটা থিওরি ছিলো মাত্র। কিন্তু ২০১২ সালের ৪এ জুলাই সুইজারল্যান্ড এর জেনেভায় অবস্থিত চার্ন (Cern) এর বিজ্ঞানিরা এই পার্টিকল ডিটেক্ট করতে পারেন।
সেখানে উচ্চ গতিতে কিছু প্রোটন এর সাথে প্রোটন এর সংঘর্ষ ঘটানো হয়। এই সংঘর্ষের ফলে মাঝে মধ্যে হিগস- বোসন এর সৃষ্টি হয়। যেমন গড়ে ১০০ কোটি সংঘর্ষের ফলে একটি হিগস-বোসন পার্টিকেলের সৃষ্টি হয়। সাধারণত Cern এর বিজ্ঞানীরা LHC তে (Large Hadron Collider) শক্তিকে ভরে রূপান্তর করে থাকে। এবং সেখানে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন পার্টিকেল।
LHC. যার ভেতর পার্টিকেলদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটানো হয়।
কিন্তু হিগস-বোসন কণা উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথে অন্য পার্টিকেলে রূপান্তর হয়ে যায় ( হিগস-বোসন কণার আয়ু মাত্র ১০^-২২ সেকেন্ড) । যার ফলে সেখানে থাকা পার্টিকেল ডিটেক্টর সে কণাকে ডিটেক্ট করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে হিগস-বোসন কণা উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথে সেটা নানা রকম পার্টিকেলে রূপান্তরিত হয়ে যায়। তবে বিজ্ঞানীরা মূলত হিগস-বোসন এর রূপান্তরিত হওয়া ফোটনের দিকে ফোকাস করে। সাধারণত একটি হিগস-বোসন রূপান্তরিত হওয়ার পরে তা থেকে দুটি ফোটন উৎপন্ন হয়। এখন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন পার্টিকের সংঘর্ষের পরে কোন দুটো ফোটন হিগস- বোসন থেকে উৎপন্ন হয়েছে সেটা জানাটা আরো বড় জটিল বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এ সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য বিজ্ঞানীরা অ্যাপ্লাই করেন শক্তির নিত্যতার সূত্র।
মনে করুন সংঘর্ষের ফলে একটি হিগস-বোসন উৎপন্ন হয়েছে। তাহলে তার শক্তি হবে E=mc^2 [m= হিগস-বোসন এর ভর]
এখন হিগস-বোসন যদি ফোটন তৈরি করে তাহলে দুটি ফোটন তৈরি হবে এবং এদের গতিপথ হবে বিপরীত দিকে।
সুতরাং এ ক্ষেত্রে উৎপন্ন দুটি ফোটন এর মোট শক্তি হবে E=প্রথম ফোটন এর মোট শক্তি Ek1+ দ্বিতীয় ফোটন এর মোট শক্তি Ek2
বা, E=m1c^2+Ek1+m2c^2+Ek2
বা, E=Ek1+Ek2 [ ফটোন এর ক্ষেত্রে m=0]
যেহেতু Ek1 আর Ek2 একই। কারন দুইটাই ফটোন এর গতিশক্তি।
সুতরাং E=E
বা, mc^2=Ek1+Ek2
বা, Ek1=1/2mc^2
এবং Ek2=1/2mc^2
এখান থেকে আমরা বলতে পারি LHC এর পার্টিকেল ডিটেক্টর এমন দুটি ফোটন ডিটেক্ট করে যাদের প্রত্যকটির গতিশক্তি হিগস-বোসন এর ভরের অর্ধেক হয়ে থাকে। এবং যাদের গতিপথ বিপরীত দিকে। এখন যদি এমন দুটো ফোটন পাওয়া যায় যাদের গতিপথ একটি অন্যটির বিপরীতে হবে এবং যদের পরস্পরের গতিশক্তি হিগস-বোসন এর ভরের অর্ধেক হবে তাহলে বলতে পারব হিগস-বোসন উৎপন্ন হয়েছিলো। ঠিক এইভাবে Cern এর বিজ্ঞানীরা গড পার্টিকল এর অস্তিত্ব প্রমাণ করেন।
কিন্তু তখনই এইভাবে হিগস-বোসনের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যাবে যখন এই কণাটি স্থির অবস্থায় সৃষ্টি হবে মানে এর ভরবেগ শূন্য হবে। কিন্তু বাস্তবে তো এর ভরবেগ আছে। তখন এই সমস্যা সমাধান এ ব্যবহার করা হয় কোন প্রসঙ্গ কাঠামো এবং তখন সূত্রটি দাঁড়ায় E^2=(mc^2)^2+(pc)^2।
মূল কথা হলো , দুটি ফটোন এর মধ্যে প্রত্যকটির গতিশক্তি যদি হিগস – বোসন এর ভরের অর্ধেক হয়ে থাকে এবং তাদের গতিপথ যদি একটি অন্যটির বিপরীতে হয় তাহলে আমরা বলতে পারবো যে হিগস-বোসন উৎপন্ন হয়েছে।
- The OSQAR experiment looks for particles that could be a component of dark matter and explain why our universe is made of matter instead of antimatter, OSQAR
- বইঃ আইন্সটাইন ও পদার্থ বিজ্ঞানের ঐক্যবদ্ধ মতবাদ ২য় খন্ড (ড. মোঃ তাজউদ্দীন)
- বইঃ অপদার্থ বিজ্ঞান (রাতুল খান)
- বইঃ থিওরি অব রিলেটিভিটি (মোহাম্মদ জাফর ইকবাল)
- বইঃ পদার্থ বিজ্ঞান ক্লাস ৯-১০
- বইঃ চা কফি আর কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স
- Science Universe youtube channel
- Waqas Nasir youtube channel
- BigganPiC youtube channel