নারীর অর্গাজম বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের সবচেয়ে প্যারাডক্সিক্যাল একটি বিষয়। এ পর্যন্ত কেউই ফিমেইল অর্গাজমের সঠিক এক্সপ্লেইনেশন দিতে পারেনি বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন। নারীর মনস্তত্বের মতোই তার অর্গাজমকে বোঝা খুবই জটিল। কেন এটি বিবর্তিত হলো? এর বিবর্তনীয় উপযোগিতা কী? অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন নারীর অর্গাজমের কোন বিবর্তনীয় উপযোগীতা নেই, একসময় যেটি প্রজননের উদ্দেশ্যে বিবর্তিত হয়েছিল। তারা কারণ প্রদর্শন করেন যে ফিমেইল অর্গাজম পুরুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই পালসেশনের মাধ্যমে পুরুষের স্পার্ম তাদের ভ্যাজাইনাতে যায়। কিন্তু প্রাকৃতিকভাবেই নারীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বস্ফোটন ঘটে, সেক্সচুয়াল রেসপন্স ছাড়াই। তাহলে নারীদের তো অর্গাজমের কোন প্রয়োজন ছিল না? ওয়েট, বুঝিয়ে বলছি, পুরুষ সেক্সের সময় স্পার্ম আউট করে, আর সেই স্পার্ম নারীর ভ্যাজাইনাতে প্রবেশ করে। কিন্তু নারীর ডিম্ব এমনি এমনি প্রডিউস হয়, একদম স্বতস্ফূর্তভাবে, কোনো প্রকার স্টিমুলেশন ছাড়াই। পুরুষের অর্গাজম প্রয়োজনীয় কারণ শুক্রাণুগুলো নারীর জরায়ুতে প্রবেশ করে।কিন্তু নারী সে তরল নিঃস্বরণ করছে। এটা তো শুধু শুধু অপচয়! এর তো কোন কাজ নেই! তার যোনিতে স্টিমুলেশন তৈরির পূর্বেই তার ডিম্বস্ফোটন স্বতস্ফুর্তভাবেই ঘটেছিল। তাহলে কেন আবার অযথা নতুন করে এই তরল নিঃসৃত হচ্ছে? এর উপযোগ কী? অন্যকিছু প্রজাতি যেমন বেড়াল এবং র্যাবিট এদের শরীরে স্টিমুলেশন ছাড়া কোনপ্রকার ডিম্ব রিলিজ হয় না, ওভুলেশনের জন্য তাদের স্টিমুলেশন প্রয়োজন। কিন্তু মানুষের মধ্যে এ ধরণের কোন স্টিমুলেশন প্রয়োজন নেই। যোনিকে কোনকিছু ছেদ করা ছাড়াই এটি তৈরি হয়। Smithsonian এ প্রকাশিত The Evolutionary Reason why Woman orgasm নামক একটি আর্টিকেলে বলা হয়, ১০০০ নারী বলছে ৬১.৬ শতাংশ ইন্টারকোর্সের সময় অর্গাজম ফিল করে না। নারীদের যোনিতে ক্লাইটোরিস নামক একটি অর্গান রয়েছে ,যেটিকে মনে করা হয় পুরুষের পেনিসের ফিমেইল ভার্সন । ১৫৫৯ সালে ইতালিয়ান অ্যানাটমিস্ট রিয়েল্ডো কলোম্বো ক্লাইটোরিস আবিষ্কার করেন, এর আগে নারীরাও হয়তো জানত না তাদের দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা অর্গান আছে।
BBC তে নারীর অর্গাজমের রহস্য নিয়ে প্রকাশিত একটি আর্টকেলে বলা হয়, ভ্যাজাইনা ও ক্লাইটোরিসের মস্তিষ্কের সাথে বিভিন্ন ডাইরেক্ট রুট রয়েছে। ক্লাইটোরিস স্পাইনাল কোর্ডের সাথে সম্পৃক্ত। যদি মেয়েদের স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি হয় তবে ক্লাইটোরিসে স্টিমুলেট করলেও কোন ফিল তৈরি হবে না।(Komisaruk conducted a study with Beverly Whipple that looked at women with varying degrees of spinal cord injury. They found that even when their injuries blocked the known nerve pathways in the spinal cord from the genitals to the brain, these women could still feel when their vagina and cervix were being touched)
নারীরা বলছে, ক্লাইটোরিসের অর্গাজম সুনির্দিষ্ট ও দৃশ্যমান। আর ভ্যাজাইনাল অর্গাজম ইন্টারনাল এবং এখানে সম্পূর্ণ শরীর জড়িত থাকে। এর কারণ হয়তো যে নার্ভ ক্লাইটোরিস থেকে ব্রেনে স্টিমুলেশন নিয়ে যায় তা ভ্যাজাইনাল নার্ভ থেকে আলাদা। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো ভ্যাজাইনাল অর্গাজম পেইন রিলিজ করে , যে নার্ভ স্পাইনাল কর্ডের সাথে সম্পৃক্ত তা হয়তো ব্যাথার সাথে সম্পৃক্ত নিউরোট্রান্সমিটার রিলিজ করে। এ সিগন্যাল যখন ব্রেনে যায় তখন নিউরোকেমিক্যাল এন্ডোরপিন রিলিজ হয় যা পেইন রিলিভ করে।
FMRI এর মাধ্যমে জানা গিয়েছে অর্গাজমের সময় নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের অ্যাকটিভিটির সাদৃশ্য অনেক বেশি। তাহলে তাদের অনুভূতিও কী আসলে একই? ব্রেন অ্যাকটিভিটিজ যদি একইরকম হয় অনুভূতিও কি একই হওয়ার কথা নয়? কিন্তু অর্গাজম কোথায় থেকে শুরু হয়, সেটা এখনো জানা যায়নি। যদি অর্গাজমের সময় মস্তিষ্কের সব অংশ অ্যাকটিভ হয়ে ওঠে, তবে শুরুর পয়েন্ট নির্ণয় করা খুবই জটিল। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, অর্গাজমের পরও নারীর ব্রেন যোনি থেকে সিগন্যাল রিসিভ করে যার জন্য তারা মাল্টিপল টাইম ক্লাইম্যাক্স ক্রিয়েট করতে পারে। তবে কোমিসারুকের মতে, অর্গাজম বিশেষ করে নিউক্লিয়াস একুম্বেন্সের সাথে জড়িত যা ডোপামিন রিলিজ করে, অর্গাজমের পর পুরুষের মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট এলাকা ডিঅ্যাকটিভ হয়ে যায় কিন্তু নারীর মস্তিষ্ক তখনও অ্যাকটিভ থাকে।
কিন্তু অর্গাজম কেন বিবর্তিত হয়েছিল? এর উপযোগিতা কী? এটি কী মানুষের শরীরের অ্যাপেন্ডিক্স অথবা পেঙ্গুইনের ডানার মতো একটি ভেস্টিজিয়াল অর্গান যা একটা সময় কোন একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহারিত হতো কিন্ত এখন আর কাজ নেই অন্য উদ্দেশ্য কাজ করছে? যেমন- পেঙ্গুইনের ডানা দিয়ে এখন তারা উড়তে পারে না ঠিকই কিন্তু সুইম করে? আমরা দেখেছি যে নারীর অর্গাজমের সময় এন্ডোক্রিন রিলিজ হয়। প্রোলেকটিন ও অক্সিটোসিন ইঁদুর ও অন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে রিলিজ হতে দেখা যায়, এগুলো হলো প্রাকৃতিক ক্যামিকেল যা তাদের শরীরকে ডিম্বস্ফোটনের কথা বলে। Oxford Academy তে The effect of intercourse on pregnancy Rats during assisted human Reproductions নামক একটি আর্টিকেলে বলা হয়, মানুষের ব্রেন কানেকশন রয়েছে অন্যান্য অর্গানিক প্রাণীদের সাথে যে কানেকশনগুলো ডিম্বস্ফোটনের নির্দেশনা দিত। মানুষের বিবর্তনের পূর্বেই-অর্গাজমের ব্রেন কানেকশন বিবর্তিত হয়েছিল যা মূলত ডিম্বস্ফোটনের প্রক্রিয়াকে ট্রিগার করত কারণ তখন স্বতস্ফূর্তভাবে ডিম্বস্ফোটন হতো না। কিন্তু একটা সময় মানুষের মধ্যে স্বতস্ফূর্ত ডিম্বস্ফোটন বিবর্তিত হয় আর কোন স্টিমুলেশন ছাড়াই এখন তাদের ডিম্বস্ফোটন ঘটতে থাকে কিন্তু মিলিয়ন মিলিয়ন বছর অতীতের সেই হর্মোনাল রিয়েকশন যা অর্গাজমের সাথে সম্পৃক্ত ছিল সেটি এখনো রয়ে গেছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা বলছে, স্বতঃস্ফূর্ত ডিম্বোস্ফোটনের কারণেই নারীদের ক্লাইটোরিসের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে এবং সম্ভবত এ জন্যেই ক্লাইটোরিস ও ভেজাইনার নার্ভ সম্পূর্ণ আলাদা। মাঝেমাঝেই শোনা যায়, কিছুকিছু নারী সবসময় অর্গাজম অনুভব করে না, পাভলিয়েভের গবেষণা বলছে, এর মানে এই নয় যে এ সকল নারীদের মধ্যে কোন ত্রুটি আছে, এর মানে হলো এদের মধ্যে একটি ত্রুটি নেই, কারণ অর্গাজম একটি ভেস্টিজিয়াল বৈশিষ্ট্য, এটার আসলে এখন প্রয়োজন নেই আর যে সব নারীদের অর্গাজম কম হয় তারা অ্যানাটমিক্যালি ডিফেক্টিভ নয় বরং উচ্চমাত্রিকভাবে বিবর্তিত!
বিজ্ঞানীরা বলেন, শরীরের সবচেয়ে বড় সেক্সচুয়াল অর্গান পেনিস, ক্লাইটোরিস বা ভ্যাজাইনা কোনটাই নয়, ব্রেনই হলো সবচেয়ে বড় সেক্স অর্গান, অর্গাজমের জন্য ব্রেনের জাগরণও প্রয়োজন।
হেলেন ফিশার বলেন, যে সকল নারীর অর্গাজম বেশি হয়, তাদের সন্তান রেগুলারলি যাদের অর্গাজম হয় তাদের তুলনায় আসলে বেশি না। কোন অর্গাজমিক নারীর জীবনে অধিক সংখ্যক সেক্স পার্টনার থাকে তাও কিন্তু না , এর কোনো প্রজনগত সুবিধা নেই! ( Lioyd 2005)। অনেকেই মনে করেন, পুরুষের নিপলের মতোই নারীর অর্গাজমও ইউজলেস, এটি অতীতে হয়তো প্রজননগত সুবিধা দিত কিন্তু এখন এর কাজ নেই। এটা কোন অ্যাডাপসন নয় (Symon1979) কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, অর্গাজমের গুরুত্ব থাকুক বা না থাকুক। ক্লাইটোরিস কিন্তু পুরুষের নিপলের মতো নিষ্ক্রিয় কোন অঙ্গ নয়, এটা অত্যন্ত সেনসেটিভ নার্ভের ঝোপ যা অর্গাজমের প্রধান ভূমিকা পালন করে। নারীর অর্গাজম একটা জার্নি, চেতনার একটি বিকৃত অবস্থা, এটি বিশৃঙ্খলা কমিয়ে দেয়, প্রশান্তি তৈরি করে, তৈরি করে আগ্রহ ও বন্ধন। আর ফিলিংস অব এটাচম্যান্ট যুগল বন্ধনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যুগল বন্ধনের কারণেই সন্তান টিকে থাকার ক্ষেত্রে উপযোগীতা পায়। আবার নারীর অর্গাজম পুরুষের ব্রেনকে একটা সিগন্যাল দেয় যে আমি তোমার উপর সন্তুষ্ট। কারণ এতে পুরুষ বুঝবে ঐ নারী তার উপর কৃতজ্ঞ আর সে অন্য কোন পুরুষ অনুসন্ধান করবে না।
নারীর অর্গাজম পুরুষের মস্তিষ্ককে আশ্বস্ত করে, তাকে আত্মবিশ্বাস প্রদান করে, যে তুমি সত্যিকারের পুরুষ, তুমি একদম পারফেক্ট , যার ফলে পুরুষের মস্তিষ্কে Sense of attachment আরও বেড়ে যায়। আর পুরুষটির তার প্রতি ভালোবাসা ও মায়া ক্রমশ বাড়তে থাকে। সেক্সের পর একজন পুরুষ যদি নারীকে প্রশ্ন করে, তোমার হয়েছে? আর সে যদি উত্তর দেয়, আমি কিছুই অনুভব করতে পারিনি! তবে ঐ পুরুষটি মনে কষ্ট পাবে, আত্মবিশ্বাস কমে যাবে,নিজের উপর ঘৃণা তৈরি হবে, ডিপ্রেসনে ফিল করবে এবং এর প্রভাব তার জীবনের সর্বত্র কাজ করতে পারে, তার মধ্যে সবসময় অক্ষমতার একটা উপলব্ধি কাজ করবে। অনেক নারী এভাবে পুরুষকে মানসিকভাবে বিকালঙ্গ করে দেয়। আর এভাবে আপনার প্রতি তার সন্দেহ ও ক্ষোভ বেড়ে যাবে এবং Sense of attachment হারিয়েও ফেলতে পারে! নারীর অর্গাজম পুরুষের কাছে অনেক সময় মহাবিশ্বের সবকিছু থেকে মূল্যবান! পুরুষ নারীর মধ্যে কৃতজ্ঞতা ও বিনয় দেখতে চায় এবং যদি সেটা পায় তবে পুরুষটির কোন সেক্সচুয়াল সমস্যা বা জড়তা থাকলেও সেটা কেটে যেতে পারে। সে আপনাকে আরও বেশি বেশি সুখ দেয়ার আগ্রহবোধ করবে! অর্গাজমের ফলে পিটুইটারি গ্ল্যান্ড থেকে অক্সিটোসিনও নির্গত হয় যা প্লেজার, সেক্সচুয়াল পরিপূর্ণতা ও এটাচমেন্ট তৈরি করে! নারীদের সে সকল পুরুষের প্রতি ক্লাইম্যাক্স ক্রিয়েট হয় যারা সেক্সচুয়ালি খুবই অ্যাটেনটিভ, দীর্ঘস্থায়ী ও বিশ্বাসযোগ্য পার্টনার। নারীরা তার স্বামীর সাথেই বেশি অর্গাজম অর্জন করে। কোন গোপন প্রেমিক বা এক রাতের পার্টনারের তুলনায় তারা স্থিতিশীল প্রেমিকের সাথেই অর্গাজম অর্জন করে। ফিমেইল অর্গাজম বিবর্তনের পেছনে আরও একটি কারণ থাকতে পারে বলে হেলেন ফিশার মনে করেন, মূলত অর্গাজম সত্য ও মিথ্যার প্রতি প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। নারীর অর্গজম ভুল ও সঠিক মানুষের প্রতি আলাদা আলাদা রেসপন্স করে। যদি সঠিক ব্যক্তির সাথে সেক্স হয় তবে অর্গাজম জরায়ুকে ট্রিগার করে, আর জরায়ু একটি নির্দিষ্ট ছন্দে সংকুচিত হয়, পাম্পের মতো, এবং স্পার্মগুলো চুষে খেয়ে ফেলে, যেন জরায়ুর ভেতর ডিম্বাশয়ে পৌঁছে যেতে পারে (Bake and Bills 1995)।
আপনি যখন নারীর যোনি থেকে তরলগুল বের করে দিতে পারবেন তখন সে রিলাক্স হয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকবে, স্পার্মগুলো ভ্যাজাইনাল ক্যানেলে অনেক্ষণ ধরে রাখবে, প্রকৃতপক্ষে সেক্সের পর, যে সকল পুরুষ তাদের যোনি থেকে তরলগুলো নিঃস্বরণ করে দেয় বা অর্গাজম প্রদান করে তাদের স্পার্মগুলোকে আটকে ধরে রাখে আর এতে করে পুরুষটির DNA পরবর্তী প্রজন্মে পৌঁছানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নারীকে যদি পুরুষ রিলাক্স করতে না পারে তবে তার জিন ফিউচারে নাও যেতে পারে! কারণ সেক্সের পর নারী নাড়াচাড়া করবে এবং তার জরায়ু ছন্দায়িত ভাবে সংকুচিত হবে না!
অবশেষে বলতে হয়, নারীর অর্গাজম বিবর্তিত হয়েছে, মিঃ সঠিক ও মিঃ ভুল মানুষের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করার জন্য , সেন্স অব এটাচম্যান্ট বাড়ানোর জন্য। যা যুগল সম্পর্ক তৈরি করে এবং প্রজনন সঙ্গীর প্রতি যত্ম বাড়ায়। নারীর অর্গাজম অধিক সন্তান তৈরির জন্য বিবর্তিত হয়নি। কিন্তু এর মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক ভাবে ফিট ও সন্তান লালন পালনে সক্ষম পুরুষ চেনা যায়__ যা শিশুদের টিকে থাকতে সাহায্য করে।
2021 সালে “Do woman pretend orgasm” নামক একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয় সেখানে বলা হয় নারীরা ফেইক অর্গাজম ক্রিয়েট করতে পারে, এটা হল “Mate Retention Stagey”। আপনি বুঝতেও পারবেন না! সে আপনার সাথে প্রতারণা করেছে। মূলত অসভ্য ও ছিনাল পুরুষ যারা নারীকে, নির্জন ঘরে একা পেয়ে অথবা তার কোন আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে তাকে ব্লাকমিলের মাধ্যমে সেক্স করে তাদের ক্ষেত্রে সে এটা করতে পারে। পরকিয়া প্রেমিক যার কাছ থেকে টাকার জন্য নিজের শরীর প্রদান করে তাদের ক্ষেত্রেও। অতএব নারী পরকীয়ায় জড়ালেও, তার যোনিতে অন্য কারো পেনিস প্রবেশ করার সুযোগ প্রদান করলেও, মস্তিষ্ক থেকে ডোপামিন ও এন্ড্রোরপিন রিলিজ হলেও, তার যোনি কিন্ত ঠিকই তার স্বামীর প্রতি বিশ্বস্ত আচরণ করে!
মূলত আমরা অর্গাজম পেয়েছি আমাদের বৃক্ষবাসী পূর্বসূরি থেকে। নারী প্রাইমেটদের মধ্যেও ক্লাইটোরিস দেখা যায়। শিম্পাঞ্জির ক্লাইটোরিস আমাদের থেকে বড়। নারী একবার এক্সাইটেড হলে, সে তার পছন্দের পুরুষের সাথে মিশতে চায়, যা বলে যে নারী শিম্পাঞ্জির মধ্য বেশ কয়েকবার ক্লাইম্যাক্স ক্রিয়েট হয়। অর্গাজমের পর ব্লাড প্রেসার, রেসপায়ারশন, হৃদস্পন্দন, পেশির টেনশন, হর্মোন লেভেল চেঞ্জ হয়ে যায়, ভোকাল টোন স্বতন্ত্র হয়ে ওঠে, তারা খুবই নরম ও বিনীত গলায় কথা বলে, এ স্বর এমন একটি স্বর যা পুরুষের নিকট মহাবিশ্বের যে কোনোকিছু অপেক্ষা অধিক মূল্যবান। অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যেও অর্গাজম আছে। লুসির মধ্যেই সর্বপ্রথম অর্গাজম দেখা গিয়েছিল যা সে আর্দি বা আদির কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে, অর্গাজমই নির্বান, অর্গাজমই শান্তি ও মুক্তি।
ফিমেইল অর্গাজমের সাপেক্ষে আমার নিজস্ব হাইপোথেসিস হলো, মূলত পুরুষরা দেখতে চায় নারীর যোনি থেকে কিছু একটা বের হোক। কারণ সে আসলে নারীকে সন্দেহ করে। আমাদের আদিম পূর্বসূরিরা যখন হারেম ও হর্ডে বাস করত তখন থেকেই এ সন্দেহ জন্মলাভ করেছে এবং জিনগতভাবে আমরা এখনো সে সন্দেহ লালন করছি। একটি তত্ত্ব অনুসারে, পুরুষ নারীর যোনিতে ১০-২০ মিনিট স্ট্রোক করে শুধু মাত্র তার যোনি থেকে অন্য পুরুষের স্পার্ম থাকলে সেটা বের করে দেয়ার জন্য। এইবার মনে করুন, বিশ মিনিট পর নারী যোনি থেকে সেই তরল নিসৃত হলো না। এটা কী পুরুষটিকে সফলতার সিগন্যাল দিচ্ছে? নিশ্চয় নয়! পুরুষটি তখন থেকেই আপনাকে অকৃতজ্ঞ ও অসভ্য ভাবতে শুরু করবে! সে ভাববে আপনি বহুগামী! সে ভাববে, নারীটি হয়তো আসলে অনেক পুরুষের পেনিস নিতে নিতে এখন তার পেনিস নারীর যোনিতে কোন স্টিমুলেশন তৈরি করতে পারছে না! নয়তো, খামোখা নারীর যোনি থেকে একটা তরল বের করার জন্য পুরুষ পেনিস দিয়ে এতবার স্ট্রোক করছে কেন? আমার জানা মতে জগতে এমন একটা পুরুষ পাওয়া যাবে না যে নারীর যোনিতে স্ট্রোক করতে চায় না, সে এটাকেই, তার বীরত্ব মনে করে, কিন্তু এটি কেন? আমি কী সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য এমন করছি! How funny!
পৃথিবীর ৩.৮ বিলিয়ন পুরুষের মধ্যে একজন পাগলও খুঁজে পাওয়া যাবে না যে সন্তান জন্ম দেবার জন্য বা জিনের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেক্স করে, পুরুষরা শুধু নারীর গলার শীৎকার শুনতে চায়, তার চোখের কোণে বিন্দু বিন্দু জল দেখতে চায়, আর তার যোনিতে অর্গাজম দেখতে চাই! নারীর অর্গাজম আমাদের মনে আত্মবিশ্বাস জন্ম দেয় বলে , আমি তার প্রতি সেন্স অব এটাচম্যান্ট ফিল করব এটা আমি মানি না, কারণ আমার মধ্যে একপ্রকার জেলাসি ছিল, তাই আমি তাকে স্ট্রোক করছি। আর এখানেই আমার হাইপোথিস,
আমি মনে করি নারীর যোনি থেকে নির্গত তরল আমাকে বলে যে, অন্য কোন পুরুষের স্পার্ম এখন আমার ভ্যাজাইনায় নেই, সেটা আমি বের করে দিলাম, আমি তোমার, আমি শুধুই তোমার! এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, যে নারী কখনো সেক্সই করেনি, তার ক্ষেত্রে? উত্তর সহজ , মিলিয়ন বছর অতীতের জিনগত সন্দেহ পুরুষের মধ্যে কাজ করে আর নারীর যোনিও সে সন্দেহ দূর করার জন্য বিশেষভাবে দক্ষ আর মিঃ পারফেক্ট পেলে সে তাকে নিশ্চয়তার সিগন্যাল দেবেই!
প্রাইমেটদের অনেক প্রজাতি আছে যারা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে সেক্স করে না। মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট একটি সময় আছে যেটিকে বলে এস্ট্রাস। তারা শুধু এস্ট্রাসের সময় সেক্স করে। কিন্তু মানুষ এস্ট্রাস হারিয়ে ফেলেছে, আমাদের নারীরা যেকোন সময় যেকোন মুহূর্তে তার ভালোলাগলেই সে সেক্স করতে পারে। কিন্ত কেন তারা এস্ট্রাস হারালো? আমেরিকার বিবাহিত মহিলারা প্রতি সপ্তাহে তিনবার সেক্স করে। এটা নির্ভর করে বয়সের উপর। আবার অনেক সংস্কৃতিতে তারা প্রতিদিন, প্রতিরাত সহবাস করে, নারীর যোনিতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও তারা পেনিসটা রাখতে চায় কিন্তু যুদ্ধ, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা অন্যান্য কাস্টমের সময় তারা এটা স্থগিত রাখে। মেনোপজের সময়ও সেক্স শেষ হয়ে যায়না। এর মানে এই নয় যে নারীর মধ্যে সবসময় লিবিডো বা যৌন আসক্তি কাজ করে কিন্তু হেলেন ফিশার বলেন, তারা তাদের “Period of Heat” হারিয়েছে যা তাদেরকে যেকোনো মুহূর্তেই সেক্স করতে সক্ষম করে তোলে, যেকোনো পরিস্থিতিতে! ভালোবাসার ইভোল্যুশনারী এক্সপ্লেইনেশন জানতে আমার লেখা এ বইটি অবশ্যই পড়া উচিত সবার: