মিচিও কাকু একজন থিওরিটিক্যাল ফিজিসিস্ট, ফিউচারিস্ট এবং পপুলার সায়েন্স কমিউনিকেটর। তিনি ফিউচার টেকনোলজি ও সায়েন্সের ওপর প্রেডিকশন করে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের কল্পনাকে ক্যাপচার করেছেন। তিনি স্ট্রিং ফিল্ড থিওরির কো-ফাউন্ডার এবং তার নিউরন থেকে বেরিয়ে এসেছে “হাইপারস্পেস” ও “ফিউচার অব দ্য মাইন্ডের” মতো বেস্ট সেলিং অনেক বই। কমপ্লেক্স সায়েন্টিফিক টার্মকে সাধারণ মানুষের কাছে বোধগম্যভাবে উপস্থাপন করার জন্য তিনি বিখ্যাত। তিনি একজন বিজ্ঞানের স্পিকার ও অজস্র টেলিভিশন প্রোগ্রামের ফিচার যার মধ্যে রয়েছে “দ্য ডেইলি শো’’, “দ্য কোলবার্ট রিপোর্ট’ এবং “ থ্রু দ্য ওয়ার্মহোল”। ফিউচার টেকনোলজি সম্পর্কে তার ইউনিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বিশ্বের ফিউচার কনভারসেশনে তিনি একটি লিডিং ভয়েস হয়ে উঠেছেন। আমি আজ কাকুর দুর্দান্ত কিছু প্রেডিকশন আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
ইন্টারনেট কন্ট্যাক্ট লেন্স
ব্ল্যাকমিরর-এর একটি সুপরিচিত এপিসোড, নোসেডিভ। নোসেডিভ আমাদের এমন একটি বিশ্ব দেখিয়েছিল যেখানে মানুষ চোখে একটি স্পেশাল আই ইমপ্ল্যান্ট পরিধান করে। যেটি তাদের পার্ম্যান্টলি অনলাইনে রাখতে পারে। প্রত্যেকেই একটি ইউনিভার্স্যাল সোশ্যাল র্যাংকিং সিস্টেমের অংশ। প্রত্যেকেই প্রত্যেককে রেটিং করে , তাদের প্রতিদিনের অ্যাকশনের ওপর ভিত্তি করে। চায়না অলরেডি এই সিস্টেম ব্যবহার করছে। যেখানে দেশের প্রতিটি সিটিজেনকে কম্পিউটারের মাধ্যমে ট্র্যাক করা হয়। যদিও অনেকে মনে করেন এটা পারসোনাল প্রাইভেসির অবমাননা। এবার আমরা আরও সামনের দিকে অগ্রসর হই। কাকুর মতে, আগামী কয়েক দশকের ভেতর ইন্টারনেট কন্ট্যাক্ট লেন্স বাস্তবতা পাবে। আর কোনো ব্যাপারই না আপনি জীবনের কোন পর্যায়ে আছেন , এ প্রযুক্তি উপকারী। শিক্ষার্থীরা চোখের ইশারায় পরীক্ষা দেবে। তাদের কি-বোর্ড অথবা মাউস কিছুই প্রয়োজন হবে না। মনে করুন, আপনি কোনো একটি ককটেল পার্টিতে অংশ নিলেন যেখানে আপনি কাউকেই চেনেন না কিন্তু ইন ফিউচার এই কন্ট্যাক্ট লেন্স আপনাকে বলে দেবে, আপনি কোথায় আছেন এবং কাদের সাথে আছেন, কেউই আপনার অপরিচিত থাকবে না। ব্লাইন্ড ডেটের কথাই চিন্তা করুন। অপরিচিত কারও সাথে ডেটিং করলে সে আপনাকে মিথ্যা তথ্য দিতে পারে। এই কন্ট্যাক্ট লেন্স পরিধান করলে আপনার সাথে ব্লাইন্ড ডেট করে কেউ মিথ্যা বলতে পারবে না। মনে করুন, কেউ একজন বলল, আমি ধনী, সিঙ্গেল এবং উপলব্ধ কিন্তু কন্ট্যাক্ট লেন্স আপনাকে তার রিয়েল টাইম ডেটা প্রদান করবে। এ যুগে প্রাইভেসির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। সবাই সবার কাছে একদম ক্লিয়ার। এখানে কোনো ব্লাইন্ড ডেট নেই। যদিও এথিক্যালি সমর্থনযোগ্য নয় কিন্তু আর কয়েক দশক পরই আমরা এ যুগে প্রবেশ করছি। কোনো ভাষা শিখতে হবে না আপনাকে। আজ মুনজেরিন শহিদ ইংরেজী ভাষার ওপর আধিপত্য অর্জনের কারণে সারা দেশে জনপ্রিয়। এ ধরণের মানুষদের তখন কোনো গুরুত্বই থাকবে না কারণ গ্রীক অথবা চায়না যে কোনো ল্যাঙ্গুয়েজ এ কন্ট্যাক্ট লেন্স অটোম্যাটিক্যালি রিয়েল টাইমে অনুবাদ করবে।
ট্রিপ টু দ্য মুন
পৃথিবী চিরকাল থাকবে না। তার পক্ষে মানুষকে ধারণ করা সম্ভব না। ডিজেস্টার, ওভারপপুলেশন অথবা এনভায়রমেন্টাল ডিগ্রেশন অথবা রিসোর্স ডিপ্লেশনের কারণে পৃথিবী মানুষকে ছেড়ে দেবে। যখন এটি ঘটবে, মানুষ পৃথিবী ত্যাগ করবে ও অন্য কোনো গ্রহে কলোনি গড়ে তুলবে অথবা বিলুপ্তি। মানুষকে সবশেষে উপরে যেতেই হবে, আকাশে, যদি সে বিলুপ্ত না হয়ে যায়। প্রশ্ন হলো কখন ঘটবে এটি? আজ থেকে ৫ বিলিয়ন বছর পর সূর্য পৃথিবীকে খাবে। আজ থেকে ৫০ মিলিয়ন বছরের স্ক্যালে আমাদের অ্যাস্টারয়েড কোয়ালিশন নিয়ে ভাবতে হবে। আজ থেকে ১০,০০০ বছরের স্ক্যালে, আমাদের দুশ্চিন্তা করতে হবে আর একটি বরফ যুগ নিয়ে। পরবর্তী কয়েক দশকে, আমাদের গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও নিউক্লিয়ার প্রোলিফারেশন সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে। আমাদের ব্যাক আপ প্ল্যান প্রয়োজন। কাকু বলেন, আমি বলছি না যে, আমাদের পৃথিবী ত্যাগ করা অথবা সরিয়ে ফেলা উচিত__ কারণ এটা খুবই ব্যায়বহুল। আমাদের ইনসিউরেন্স পলিসি প্রয়োজন। আর এটি প্রতি বছর স্বস্তা থেকে স্বস্তা হয়ে উঠছে। এলন মাস্ক বলেছেন, তিনি চন্দ্র ও মঙ্গলে যাওয়ার জন্য নিজস্ব রকেট তৈরি করছেন। আমি প্রেডিক্ট করছি , ইন ফিউচার, আমাদের গ্র্যান্ড চিল্ড্রেনরা চন্দ্রে হানিমুন করতে যাবে। পাথরের মতো প্রাইজ কমে যাবে। আর আমাদের কাছে অন্তত তিনটি ক্যাপেবল রকেট আছে চন্দ্রে যাওয়ার জন্য।
ইন্ডিভিউজুয়াল কোনো দেশই থাকবে না
মানবতা এখন প্ল্যানেটারি হোলনেসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে , আমাদের ১৯৫টি দেশের কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা কোনোকিছুর র্যাংকিং করব এনার্জি দিয়ে। তাই, টাইপ ১ সিভিলাইজ্যাশন হবে প্ল্যানেটারি, তারা আবহাওয়া কন্ট্রোল করবে। তারা জলবায়ু কন্ট্রোল করবে এবং তাদের গ্রহের জলবায়ুর জিওলজিক্যাল বিষয়গুলো। টাইপ ২ সিভিলাইজ্যাশন স্টেলার__ তারা সমগ্র স্টার সিস্টেমের আউটপুট কন্ট্রোল করবে। টাইপ ২ সিভিলাইজ্যাশন হবে ফেডারেশন অব প্ল্যানেট। টাইপ ৩ সিভিলাইজ্যাশন গ্ল্যালাক্টিক। এই সৃষ্টিরা গ্যালাক্টিক স্পেস লেনে ভ্রমণ করবে স্টারওয়্যার মুভির মতো। তাই, মানবতার গ্র্যান্ড স্কেল এখন কোথায়? আমরা একটি টাইপ ০ সিভিলাইজ্যাশন। আমরা এখনো এই স্কেলে নেই। আমরা মৃত বৃক্ষ, কয়েল ও অয়েল থেকে শক্তি পাই। তিনি বলেন, কিন্তু আমি মনে করি আমরা টাইপ ১ সিভিলাইজ্যাশন থেকে মাত্র ১০০ বছর দূরে। উদাহরণস্বরূপ, ইন্টারনেটের দিকে তাকান। ইন্টারনেট প্ল্যানেটারি টেলিফোন সিস্টেমের শুরু ছিল। প্রথম টাইপ ১ টেকনোলজি এক শতাব্দির মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। ভাষার কথাই চিন্তা করুন। টাইপ ১ প্ল্যানেটারি সিভিলাইজ্যাশন কোন ভাষায় কথা বলবে? আমরা জানি বর্তমানে ইংরেজী ও ম্যান্ডারিন ভাষা ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী। স্পোর্ট ও এন্টারটেইনমেন্টের কথা চিন্তা করুন, আমাদের অলিম্পিক ও ফুটবল আছে। ফ্যাশনের কথা চিন্তা করুন আমাদের Gucci, Chanel আছে। এমনকি প্ল্যানেটারি মিউজিকও ডেভেলপ হচ্ছে। পৃথিবীতে এত হাজার ভাষা ও সংস্কৃতি থাকার পরও প্ল্যানেটারি স্কেলে দুটি ভাষা, অল্প কিছু খেলা ও ফ্যাশন ফলো করা হচ্ছে। মিচিও কাকু বলেন, আমরা এখন প্ল্যানেটারি কালচার সম্পর্কে আলোচনা করছি যা আমাদের চোখের সামনেই তৈরি হয়েছে আর আমি মনে করি আগামী ১০০ বছর পর আমরা প্ল্যানেটারি সিভিলাইজ্যাশনে পরিণত হব।
ডিজিটাইজড টাইম মেশিন
আপনি যখন টাইম মেশিনের কথা কল্পনা করেন , আপনি একটি বিরাট মেশিনের ভেতর প্রবেশ করার কথা চিন্তা করেন যেটি আপনাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ফিজিক্যালি নিয়ে যাবে। টাইম ট্র্যাভেল একসময় বাস্তব হবে___ তবে আপনার ফিজিক্যাল বডি নয়, আপনার ডিজিটাল ভার্সন টাইম ট্রাভেল করতে সক্ষম হবে। একদিন আমরা হিউম্যান বডি ডিজিটালাইজ করব__ আমাদের মেমরি ও আমাদের ব্রেন সেল। সকল ইনফরম্যাশন দিয়ে আমরা আমাদের কার্বন কপি তৈরি করব। আপনি লাইব্রেরিতে যাবেন এবং উইনস্টন চার্চিলের বই পড়ার পরিবর্তে আপনি তার ডিজিটাল ফর্মের সাথে কথা বলবেন। আমরা এই ইনফরম্যাশন ল্যাজার বিমের মধ্যেও রাখতে পারব। এক সেকেন্ডেই আপনি চন্দ্রে চলে যাবেন। বিশ মিনিটে আপনি মঙ্গলে চলে যাবেন, ছয় ঘন্টার ভেতর আপনি প্লুটোয় চলে যাবেন। চার বছরে আপনি চলে যাবেন নিকটবর্তী নক্ষত্রে। মিচিও কাকু বলেন, এলিয়েনরা ইতোমধ্যে এ প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করছে। আমরা যে মহাকাশে ফ্লাইং শশার দেখি বলে চিৎকার করি। এটা এলিয়েনদের কাছে খুবই ওল্ড কনসেপ্ট। তারা পৃথিবীতে স্পেসশিপে করে আসবে না। এটা আমাদের ২০ শতকের একটি স্টেরিওটাইপ। বাস্তবিকই এলিয়েনরা এতটাই অ্যাডভান্স যে তারা ফিজিক্যাল কোনো ফর্মে পৃথিবীতে আসেই না। তারা নিজেদের ডিজিটালাইজড করে ফেলেছে। তারা লেজার বিমের মাধ্যমে তাদের কনসানেসকে আলোর গতিতে ইন্টারগ্যালাক্টিক ল্যাজার হাইওয়েতে নিক্ষেপ করে। এই হাইওয়ে আমাদের ঠিক পাশ দিয়ে চলে গেলেও আমরা ডিটেক্ট করতে পারব না! তারা পৃথিবীতে আত্মার রকেট পাঠায়, ফিজিক্যাল রকেট নয়। মহাকাশে এরকম বিলিয়ন বিলিয়ন সোল রকেট ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু আমাদের কাছে সেগুলোকে ডিটেক্ট করার মতো কোনো ইনস্ট্রুমেন্ট নেই।
রেকর্ডিং মেমরি
ব্ল্যাক মিররে একটি রক্তশীতল করা এপিসড আছে যেখানে ইনভেস্টিকেটর অ্যাক্সিডেন্সিয়ালি মেমরি রেকর্ড টেকনোলজি ব্যবহার করে একটি পুরাতন মার্ডার উন্মোচন করেছিলেন। এর মানে হলো, ব্যক্তিকে একটি মেশিনের সাথে সংযুক্ত করা হয় এবং মনের চোখ দিয়ে তার মেমরি কল্পনা করতে বলা হয়। এই ভিজুয়াল তার চোখের সামনেই ভিডিও আকারে রিপ্রোডিউস করা হয়। কাকু বলেন, এ প্রযুক্তি ফিউচারে আসবে না, এটি অলরেডি আছে। আমরা এখন মেমরি রেকর্ড করতে পারি। এটা দারুণ। প্রথম মেমরি আমরা রেকর্ড করেছি দু-বছর আগে আর এটা ইন্টারনেটে পাঠানো যায়। ইন্টারনেটের ফিউচার হলো ব্রেন নেট। আমরা আমাদের ইমোশন, ফিলিং ও সেনসেশন সেন্ড করতে পারব। চিন্তা করার সময় রক্ত প্রবাহের ফিজিক্স দেখে, আমরা একটি জীবন্ত মস্তিষ্কের চিন্তাকেই দেখতে পারি। কয়েক বছর পূর্বে, ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর গবেষকরা দেখেছেন, বিজ্ঞানীরা এখন আমরা কারও চেহারার দিকে তাকালেই ইলেক্ট্রোসাইকোলজিক্যাল ডেটা দেখে মুখের ছবি পুনর্গঠন করতে পারে। যার অর্থ হলো তাদের ব্রেন ওয়েভ রেকর্ড করা হয়েছিল ও এ ছবি ডিজিটালি রিক্রিয়েট করা হয়েছিল। একজন আলজেইমার রোগী কেবল একটি বাটমে প্রেস করবে আর তার মেমরি তার হিপ্পোক্যাম্পাসে ফিরে আসবে, তারা স্মরণ করতে পারবে তারা কারা ছিল। কিন্তু এটা প্রবলেমেটিক প্রমাণিত হয়েছে। এমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়, ফলস মেমরি ইনসার্ট করেছিল যা অনেকগুলো ইথিক্যাল প্রশ্ন জন্ম দেয়। এক সময় আপনি ছুটি কাটানোর জন্য কোথাও যেতে চাইবেন কিন্তু আপনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেড সেটের মাধ্যমে ডিজিটাইলজড ডেস্টিনেশনে পাঠানো হবে, আপনার মস্তিষ্কে ফলস মেমরি তৈরি করা হবে যেখানে আপনি আসলে যেতে চাননি। যখন সেটা রিমুভ করা হবে, আপনার রিয়েল ও ফেইক মেমরি মিক্স হয়ে যাবে। আপনার মস্তিষ্কে বিশ্বাসযোগ্য কোনো মেমরি পাওয়া যাবে না। পুলিশ মামলা মিমাংসা করতে গিয়ে বিরাট সমস্যায় পড়ে যাবে। কারণ সাক্ষীর মেমরি একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
কিলার রোবট
হলিউড আমাদের মিসলিড করে এটা চিন্তা করতে যে, রোবট ডেঞ্জারাস হয়ে উঠবে ও মানবতাকে ধবংস করবে। কিন্তু বাস্তবে আমাদের সবচেয়ে অ্যাডভান্স রোবটও একটি তেলাপোকা থেকে বুদ্ধিমান নয়। রোবট একসময় বিবর্তিত হবে ও বানরে পরিণত হবে। বানর কিন্তু জানে যে সে বানর আর ঠিক তখনই বিপর্যয় নেমে আসবে। কাকু সতর্ক করেছে যখন এটি ঘটবে, আমাদের অবশ্যই রোবটের ভেতর একটি চিপ স্থাপন করতে হবে তাকে শাট ডাউন করার জন্য। কারণ সে যে কোনো সময় ডেঞ্জারাস অথবা মার্ডারাস হয়ে উঠতে পারে। ফিউচার টেকনোলজি অনিশ্চিত, আর এজন্য এ ব্যাপারে সচেতনতা জরুরী এবং পটেনশিয়াল রিস্ক বিবেচনা করে আমাদের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।
ইম্মর্ট্যালিটি
আপনি যখন অমরত্বের কথা চিন্তা করেন আপনি হয়তো এমন কারও ছবি অংকন করেন যে চিরকাল তরুণ, সকল ডিজেস্টারেও যে টিকে থাকে শতাব্দীর পর শতাব্দী। আপনি হাইল্যান্ডার মুভির ক্রিস্টোফার ল্যাম্বার্টের কথা চিন্তা করতে পারেন, পরী অথবা তেলোপোকার কথা চিন্তা করতে পারেন যা নিউক্লিয়ার বোমা মারার পরও সার্ভাইভ করতে পারে। কাকু বলেন, মানব সভ্যতা দ্রুতই অমর হতে যাচ্ছে ডিজিটাল ও বায়োলজিক্যাল উভয় সেন্স থেকেই। আপনি মেশিনের ভেতর সার্ভাইভ করার কথা শুনেছেন? পপুলার টিভি শো “ফ্রেন্ডস” এ রোস জয়ির রুমম্যাট জ্যানিনকে এই ধারণাটি ব্যাখ্যা করেছিল। সে মেনশন করেছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে কম্পিউটার মানুষের মস্তিষ্কের মতো ফাংশন সম্পাদন করতে পারবে। যার অর্থ হলো আপনি থিওরিটিক্যালি আপনার চিন্তা ও মেমরি কম্পিউটারে চিরকালের জন্য ট্র্যান্সফার করতে পারবেন। অলরেডি সিলিকন ভ্যালিতে, এমন অনেক কোম্পানি আছে যারা আপনার সম্পর্কে যা জানে সবই ডিজিটালাইজড করতে চায়__ আপনার ক্রেডিট কার্ড রেকর্ড, ইনস্টাগ্রাম পিকচার ও সবকিছু। মিচিও কাকু বলেন, হিউম্যান কানেক্টম প্রজেক্ট মস্তিষ্ককে ম্যাপ করছে। মাত্র দশ মাসের মধ্যে বিজ্ঞানীরা ফ্রুট ফ্লাইয়ের মস্তিষ্কের ১০০,০০০ নিউরন ডিজিটালাইজড করেছে। আমাদের মস্তিষ্কে ১০০ বিলিয়ন নিউরন আছে, আর এটাকে ডিজিটালাইজড করতে ১০০ বছর লাগবে আর তারপর আমরা ইম্মর্টাল হয়ে যাব। আমরা আপনার ইমোশন ও ফিলিংস ডিজিটালাইজ করতে পারব। তারপর প্রশ্ন হলো আপনি কে? এটা নির্ভর করে আপনি কিভাবে নিজেকে ডিফাইন করেন। আপনি যদি বায়োলজিক্যাল এন্টিটি হয়ে থাকেন তবে এই ইম্মর্ট্যালিটি ট্যাপ রেকর্ডারের মতো। কিন্তু আপনি যদি স্বপ্ন, অনুভূতি, মেমরি ও আকঙ্ক্ষার সমষ্টি হয়ে থাকেন, যদি আপনার আত্মাকে ইনফরম্যাশনে রিডিউস করা যায় তবে আপনি চিরকাল জীবিত থাকবেন। এর মানে হলো ফিউচারে, আপনার একটি ভার্চুয়াল কার্বন কপি তৈরি করা সম্ভব যে আপনার সকল চিন্তা, মেমরি ও অভিজ্ঞতা ধারণ করবে। পপুলার টিভি শো ব্ল্যাক মিরর তার কিছু এপিসডে এই আইডিয়া এক্সপ্লোর করেছে যেমন “স্যান জুনিপেরো” যেখানে মানুষ মৃত্যুর পরও ডিজিটাল পরকাল রিক্রিয়েট করে। একদিন লাইব্রেরিতে আপনার গ্রেট, গ্রেট, গ্রেট চিল্ড্রেন আপনার সাথে কথা বলতে চাইবে আর আপনি আপনার গ্রেট গ্রেট গ্রেট চিল্ড্রেনকে টক ব্যাক করবেন এটাই ডিজিট্যাল ইম্মর্ট্যালিটি। ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিকোণ থেকে__অমরত্ব হলো চিরকাল জীবিত থাকা__ এটি এখনো প্রশ্নের বাহিরে নয়। এক সময় আমরা মিলিয়ন মিলিয়ন বৃদ্ধ ও তরূনকে ডিজিটালাইজড করব এবং দেখব তাদের সমস্যা কোথায় ছিল, তারপর জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ার ব্যবহার করব সে সমস্যা সমাধান করার জন্য। মিচিও কাকু বলেন, অতএব আমি মনে করি না যে এই ধরণের ইম্মর্টালিটি অনেক বেশি দূরে।
আরও পড়ুন:
মিচিও কাকুর সেরা প্রেডিকশন /মিচিও কাকুর সেরা প্রেডিকশন /মিচিও কাকুর সেরা প্রেডিকশন /মিচিও কাকুর সেরা প্রেডিকশন /মিচিও কাকুর সেরা প্রেডিকশন