সারপ্রাইজিং!
গবেষকরা ল্যাবে তৈরি মানুষের টিস্যুর সাথে কম্পিউটারের ইলেক্ট্রিক সার্কিটের সমন্বয় ঘটিয়ে একটি হাইব্রিড বায়োকম্পিউটার তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে!
এটা খুবই ভয়াবহ একটি ব্যাপার। এতদিন বায়োলজিক্যাল কম্পিটারকে বিজ্ঞানীরা প্রায় অসম্ভব মনে করেছিল। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, কিছুদিন পর হয়তো আমরা শুনব গুগল বার্ড, চ্যাটজিপিটি ও মিডজার্নি এআই কেবল কম্পিউটার নিউরাল সার্কিট দ্বারা পরিচালিত নয়, ইলেক্ট্রিক্যাল নিউরাল সার্কিটের সাথে মানুষের টিস্যু একত্রিত হয়ে যৌথভাবে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সগুলো কাজ করবে।
হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনেছেন। মানুষের যেমন নিউরাল নেটওয়ার্ক আছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সগুলোরও নিউরাল নেটওয়ার্ক আছে। এই সকল এআই মানুষের ব্রেন নিউরাল নেটওয়ার্ক অনুসরণ করেই তৈরি করা। মানুষের টিস্যু ( জৈবিক টিস্যু ) যদি এই আর্টিফিশিয়াল নিউরাল সার্কিটে যোগ দেয়, তাহলে ইন ফিউচার, গুগল বার্ড ও চ্যাটজিপিটি হবে একইসাথে রোবট ও বায়োলজিক্যাল মেশিন।
তার মানে, রোবট দিন দিন জৈবিক সত্তা হয়ে উঠবে! বিজ্ঞানীরা এই সকল আর্টিফিশিয়াল টিস্যুর নাম দিয়েছেন অর্গ্যানয়েড। অর্গ্যানয়েড মস্তিষ্কের সেলকে অনুকরণ করে তৈরি। এটি তৈরি করা হয় স্টেম সেল থেকে।
তারা অর্গ্যানয়েড ব্যবহার করে যে হাইব্রিড কম্পিউটার তৈরি করেছে, তার নাম রেখেছে ব্রেনওয়ার। ব্রেনওয়ার নামক এই কম্পিউটারটি বর্তমানে ভয়েস রিকগনিশনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে এখানে একটি টুইস্ট আছে। চ্যাটজিপিটি ও গুগল বার্ডের উত্থানের পর মানুষের মাঝে একটি মিসকনসেপশন দেখা গিয়েছিল, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স একদিন জৈবিক সত্তাকে ডেস্ট্রোয় করে দেবে। কিন্তু অর্গ্যানয়েডের আবিষ্কার আমাদের সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রশ্ন তৈরি করছে। চ্যাটজিপিটি অথবা গুগল বার্ডের ব্রেন কী দিন দিন বায়োলজিক্যাল হয়ে যাবে!? তাহলে কী ল্যাব ক্রিয়েটেড টিস্যুই একদিন এআই নিউরাল সার্কিটের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করে হিউম্যানিটির সাথে লড়াই করবে?
কীভাবে ব্রেনওয়ার তৈরি হয়?
একটি প্লেট নিন। সেখানে হাজার হাজার ইলেক্ট্রোড রাখুন। এই হাজার হাজার ইলেক্ট্রোডের মধ্যে একটি অর্গ্যানয়েড ছেড়ে দিন। ইলেক্ট্রোডগুলো এই ব্রেন টিস্যুগুলোকে ইলেক্ট্রিক সার্কিটের সাথে কানেক্ট করে নেবে। তারপর টিস্যুটিকে ডেটা ফিড করুন। এজন্য আপনাকে যে কোনো ডেটাকে ইলেক্ট্রিক পালসে রূপান্তর করতে হবে এবং সেই পালসটি টিস্যুর কাছে পাঠাতে হবে। অনেকটা ইলেক্ট্রিক চিঠির মতো। টিস্যুটি এই সিগন্যালের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া করবে। এই প্রতিক্রিয়া শুনবে সেন্সর এবং এই প্রতিক্রিয়ার প্যাটার্নে কী লেখা ছিল সেটা ডিকোড বা পাঠাদ্ধার করবে মেশিন-লার্নিং অ্যালগোরিদম। এজন্য গবেষকরা সিস্টেমকে ৮ জন মানুষের ২৪০ টি ভয়েস রেকর্ড শোনান। প্রতিটি ভয়েস শোনার পর অর্গ্যানয়েড ভিন্ন ভিন্ন প্যাটার্নের নিউরাল অ্যাকটিভিটি তৈরি করে। এআই এই সকল প্রতিক্রিয়া পড়ে ভয়েসটি কার সেটা শনাক্ত করতে পারে। আর এই প্যাটার্ন রিকগনিশনে যথার্থতার হার ৭৮%।
Reference:
‘Biocomputer’ combines lab-grown brain tissue with electronic hardware, Nature journal
জৈবিক টিস্যু দিয়েই এআই তৈরি হবে!/ জৈবিক টিস্যু দিয়েই এআই তৈরি হবে!