এই তো কিছুদিন পূর্বেই রয়েল সোসাইটি প্রমাণ করেছিল নারী একটি আনকনসাস হিপোক্রেট। আমার কথা শুনে ফেমিনিস্টদের রাগান্বিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, আমি আমার বক্তব্যের সাপেক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করছি।
তার আগে পুরুষদের নারীর বায়োলজির একটি হিংসাত্মক দিক উপস্থাপন করি। মনে করুন, আপনার একজন প্রেমিকা আছে, সে আপনাকে ভীষণ ভালোবাসে। আপনাকে ছাড়া সে অনন্ত অসীম মহাবিশ্বে একটি সিঙ্গুলারিটি পয়েন্টের মতোই একা। সে আপনার প্রতি একটি গৃহপালিত কুকুরের মতো বিশ্বস্ত, সে কখনো আপনাকে ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের সাথে মেসেজ বা সেক্সটিং কিছুই করেনি। আপনি ছিলেন তার ভালোবাসার ডায়নোসর!
সে আপনাকে এত বেশি ভালোবাসে যে, সে আপনার জন্য সুইসাইড করতে পারে। আপনার এক বন্ধু ছিল জিসান, যে ছিল সিরিয়াল কিলার, নার্সিসিস্ট, সাইকোপ্যাথ এবং সাইকোসিস। সে আপনার প্রেমিকার প্রতি ক্রাশ। আপনার প্রেমিকা সচেতন মনে কখনো তার কথা কল্পনাও করেনি। কিন্তু শুনলে কেমন হবে এতকিছু পরও তার ডিম জিসানের প্রতি ক্রাশ খেতে পারে?
এটাকে বলা হয় “Cryptic female choice”। বিজ্ঞানীরা একটা সময় বিশ্বাস করত, সেক্সের পর নারীর ডিমের পক্ষ থেকে পুরুষের শুক্রাণুর কাছে একটি কেমিক্যাল মেসেজ যায় আর সেই কেমিক্যাল মেসেজ অনুসরণ করে শুক্রাণু ডিমের দিকে ছুটে আসে। কোন শুক্রাণু নারীর ডিমকে নিষিক্ত করবে অথবা করবে না, সে ব্যাপারে এই কেমিক্যাল সিগন্যালে কিছু লেখা ছিল না। কিন্তু আমাদের আধুনিক গবেষণা বলছে এ ধারণা ভুল।
ল্যাবরেটরি সেটিংসে বিজ্ঞানীরা নারীর গর্ভাশয়ের ভেতর থেকে তার ডিম বের করে নিয়ে আসেন। নারীর ডিম সাধারনত ফলিকিউলার ফ্লুয়েড নামক একপ্রকার তরল পদার্থের ভেতর থাকে।
মনে করুন, বিজ্ঞানীরা আপনার প্রেমিকার ফলিকিউলার ফ্লুয়েডের ভেতর আপনার সাইকোপ্যাথ বন্ধু জিসান এবং আপনার স্প্যার্ম ছেড়ে দিল। তারপর তারা দেখতে লাগলো ফলিকিউলার ফ্লুয়েড কোন পুরুষের স্প্যার্মকে প্রায়োরিটি দেয়। বিস্ময়করভাবে তারা দেখতে পায়, নারীর ডিম জিসানের শুক্রাণুকে স্পেশাল লাভ লেটার পাঠিয়েছে। অন্যকথায় নারীর ডিম যাদৃচ্ছিকভাবে সকল পুরুষের স্প্যার্মকে কেমিক্যাল সিগন্যাল পাঠায় না। নারীর ডিমের মধ্যে কেমোট্র্যাক্ট্যান্ট নামক একটি ম্যাগনেটিক ব্যাপার আছে, এটি কেবল সে সকল পুরুষকেই লাভ লেটার পাঠায়, যারা জেনেটিক্যালি আলফা অথবা ডোমিন্যান্ট। এবার সেই জিন আপনার অথবা পৃথিবীর ৩.৯ বিলিয়ন পুরুষের যারই হোক, নারীর কিছুই আসে যায় না।
তার ডিম আণুবিক্ষণিক স্তরে বিলগেটস, জাকারবার্গ অথবা ইলন মাস্কের জিনকেও রিজেক্ট করতে পারে, যদি এটি তার থেকে উন্নততর কোনো জেনেটিক উপাদানের দেখা পায়। আমরা যখন ডোমিন্যান্ট পুরুষ শব্দটি মেনশন করি, আমরা কেবল পুরুষের আগ্রাসন, শক্তি ও সামাজিক ক্ষমতার দিকেই ফোকাস করি না, আমরা ডোমিন্যান্ট বলতে উচ্চতর কোয়ালিটির জিনের দিকেও ফোকাস করি।
একজন নারীকে ১০ হাজার পুরুষ ডেটিং অফার করলে, সে থিওরিক্যালি দশ হাজার পুরুষকেই নেগেটিভ রিয়েক্ট করবে কারণ তার প্র্যাগন্যান্সির রিস্ক আছে, তার দেহে ডিমের পরিমাণ সীমাবদ্ধ ( সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ফ্যাক্টর এনে ভ্যান ভ্যান কইরেন না)। সে তার সেফটি ও সিকিউরিটির কথা চিন্তা করে পার্টনার নির্বাচনে সিলেক্টিভ হয়। সে মনে মনে যে মানুষটিকে পছন্দ করে তার প্রতিও নেগেটিভ রিয়েক্ট করে, তার শারীরীক ও মানসিক শক্তি পরীক্ষা করার জন্য। একজন মেয়ে দেখতে যত আকর্ষণীয়, পুরুষের প্রতি তার নেগেটিভ রিয়েক্ট ততই বেশি, এটাকে বলে রিভার্স সাইকোলজি। উদাহরণ হিসেবে, নারী হাতি পুরুষ হাতিকে সূড় দিয়ে খেলাচ্ছলে খুব কঠিনভাবে আঘাত করে পুরুষটির ডোমিন্যান্স এবং শক্তি পরীক্ষা করার জন্য। নারী ম্যান্ড্রিল দলের সবচেয়ে আগ্রাসী ও ডোমিন্যান্ট পুরুষের সাথে আরও বেশি আগ্রাসন প্রদর্শন করে তার কাছে ভ্যালিডেশন পাওয়ার জন্য। কাটল মাছ যখন নারীর জন্য প্রতিযোগিতা করে, তখন নারী কাটল তাদের প্রতি নেগেটিভ রিয়েক্ট করে, দলের সবচেয়ে বেস্ট পুরুষ খুঁজে বের করার জন্য। মানব পুরুষকে মানব নারী নেগিং বা ক্রিটিসাইজ করে তার মানসিক ফিটনেস ও ইন্টেলেকচুয়াল পাওয়ার টেস্ট করার জন্য।
পুরুষ তার কাছে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য কবিতা, উপন্যাস ও সাহিত্য রচনা করে। পুরুষ তাকে জয় করার জন্য রকেট, বিমান, স্পেসশিপ ও কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করে। সে তার ফিজিক্যাল, মেন্টাল, ইন্টেলেকচুয়াল, পলিটিক্যাল ও ইকোনোমিক্যাল ডোমিন্যান্স প্রদর্শন করে তার মন জয় করতে চায়!
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, মেয়েটি ছেলেটিকে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে ফোর্স করে, সমাজের অন্যান্য মেয়েদের কাছে তার ইমেজ নষ্ট করে, তারপর একসময় নিজেকে সাবমিট করে, যেন পুরুষটি তাকে ছেড়ে অন্য কোনো নারীর কাছে না যায়। ক্রমশ তাদের মধ্যে আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবার একটি বন্ধন তৈরি হয়।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, সেক্সের পরও নারীর এই সিলেকশন প্রসেস চলতেই থাকে। নারীর ডিম্বাশয়ের ভেতর ডারউইন স্যার বসে বসে তার বিবর্তনের অংক কষে। প্রশ্ন হলো কেন? কেন এই সিলেকশন? কেন সেক্সের পরও এই সিলেকশন প্রসেস চলতে থাকে??
কারণ সে প্রাগৈতিহাসিক বিশ্বে বহুগামী ছিল। সে আনুমানিক ৫-৬ মিলিয়ন বছর পূর্বের প্রস্টিটিউট। আফ্রিকার সাভানায় সে অসংখ্য পুরুষের সাথে ম্যাটিং করেছিল, তার ডিমের কেমোট্র্যাক্ট্যান্ট তারই সাক্ষী। নারীর এই সিলেক্টিভ মেকানিজমের কারণেই এ পৃথিবীতে আমাদের মতো উন্নত জেনেটিক ম্যাটারিয়াল সম্পন্ন মানুষের বিবর্তন ঘটেছে। সম্ভবত, আমাদের বুদ্ধিমত্তার বিবর্তনের পেছনে এই বহুগামী নারীরাই দায়ী। এই প্রাগৈতিহাসিক প্রস্টিটিউটরাই আমাদের শ্রদ্ধেয় মা। নারীই প্রকৃত ডোমিন্যান্সের অধিকারী। গড সিলেক্টর।
তবে হ্যাঁ, জেনেটিক্যালি মানুষ বহুগামী হলেই যে, আপনাকে বহুগামিতা করতে হবে, এটা একেবারেই ঠিক নয়। পাকস্থলির বিবর্তন ঘটেছে খাবার পরিপাক করার জন্য কিন্তু সারাদিন চকলেট খাওয়া সুস্থ্যতা নয়। পায়ের বিবর্তন ঘটেছে হাঁটার জন্য কিন্তু আপনি সারাদিন পাহাড়ে অথবা পর্বতে হেঁটে বেড়াবেন, এটাও সুস্থ্যতা নয়। পেনিসের বিবর্তন ঘটেছে, ইউরিন ও স্প্যার্ম রিলিজের জন্য কিন্তু আপনি সারাদিন ইউরিন রিলিজ করবেন, এটা হাস্যকর! অপ্রয়োজনে যেমন ইউরিন রিলিজ করার দরকার নেই, অপ্রয়োজনে আপনার বহুগামিতা করারও প্রয়োজন নেই। সো বি রিল্যাক্স!
( পাবলিক অ্যাটেনশন ও সহজবোধ্য করার জন্য এই লেখায় কিছু লজিক্যাল ফ্যালাসি করা হয়েছে যেমন: Overgeneralization, Emotional Language, Appeal to Emotion, Anthropomorphism। এই লেখার সাপেক্ষে সব গবেষণা চ্যাটজিপিটি অথবা গুগলে পাওয়া যাবে না, কিছু পেপার আছে ফিজিক্যাল)
আরও পড়ুন: কেন দুজন প্রেমিক প্রেমিকা বহুগামী হয়ে একে অন্যকে একগামী করে রাখতে চায়? https://wp.me/pcBpKx-30g
Reference:
1) Chemical signals from eggs facilitate cryptic female choice in humansh
https://royalsocietypublishing.org/…/10…/rspb.2020.0805
2) Eberhard, W. G. (1996). “Female Control: Sexual Selection by Cryptic Female Choice.” Princeton University Press ( https://press.princeton.edu/…/9780691010847/female-control
3) itnick, S., Wolfner, M. F., & Suarez, S. S. (2009). “Sperm-Female Interactions.” Springer.
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/26183721/
4) Spehr, M., Schwane, K., Riffell, J. A., Barbour, J., Zimmer, R. K., & Neuhaus, E. M. (2003). “Particulate and Soluble Guanylate Cyclase Mediate a Cnidarian Sperm Chemotaxis Signal Transduction Pathway.” Journal of Cell Biology, 162(1), 73-84.
5) Particulate and soluble adenylyl cyclases participate in the sperm acrosome reaction https://www.researchgate.net/…/6309224_Particulate_and…
6) Sperm guidance in mammals – An unpaved road to the egg https://www.researchgate.net/…/7173327_Sperm_guidance…
7) Birkhead, T. R., & Pizzari, T. (2002). “Postcopulatory Sexual Selection.” Nature Reviews Genetics, 3, 262-
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/11967551/
8) The Evolution of Polyandry: Sperm Competition, Sperm Selection, and Offspring Viability
https://www.annualreviews.org/…/annurev.ecolsys.36…
9) Buss, D. M. (1995). “Evolutionary Psychology: A New Paradigm for Psychological Science.” Psychological Inquiry, 6(1), 1-30.
https://psycnet.apa.org/record/1995-23617-001
10) Trivers, R. (1972). “Parental Investment and Sexual Selection.” In B. Campbell (Ed.), Sexual Selection and the Descent of Man (pp. 136-179). Aldine-Atherton.
https://roberttrivers.com/Publications…/Trivers%201972.pdf
11) Vasopressin-dependent neural circuits underlying pair bond formation in the monogamous prairie vole
https://www.sciencedirect.com/…/abs/pii/S0306452203009187