Can't find our books? Click here!

নারীদের বীর্যপাত হয়?

Last updated:

সেক্স ভিডিওতে কেন মেয়েদের সিমেন আউট হতে দেখি না?

অধিকাংশ পর্নোভিডিওতে দেখা যায় মেয়েদের কোনো সিমেন আউট হয় না_ অনেকে এ ব্যাপারে প্রশ্নবিদ্ধ হয়। মেয়েদের সিমেন দেখার জন্য অনেকে একের পর এক সেক্স ভিডিও দেখতে থাকে কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা হতাশ হয়। এখানে সমস্যাটি কী? এজন্য আপনাকে অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশন বা বীর্যপাতের তারতম্য বুঝতে হবে। নারীদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় অর্গ্যাজম হয়। অর্গ্যাজম তার মস্তিষ্কের একটি নিউরোকেমিক্যাল পরিস্থিতি, যৌন উত্তেজনা যখন চরম শিখরে পৌঁছে, তখন নারীর শরীর ও ভ্যাজাইনায় একপ্রকার প্রেসার সৃষ্টি হয়, চূড়ান্তে যখন এই প্রেসার রিলিজ হয়, তখন তারা যৌনসুখ লাভ করে। এ সময় তার যোনি থেকে পুরুষের মতো কোনো তরল পদার্থ নিঃসৃত হবে এমন কোনো কথা নেই। এটি হতেও পারে আবার নাও হতে পারে!

সাধারণত, এটা মনে করা হয় যে, পুরুষের ইজ্যাকুলেশন হলো যৌন জাগরণ এবং অর্গ্যাজমের সময় সিমেন রিলিজ হওয়া। এ সময় তার শ্রোণিচক্রের পেশি সংকুচিত হয় এবং মূত্রনালী দিয়ে স্প্যার্ম বের হয়। ইজ্যাকুলেশন হওয়ার পর একজন পুরুষের মধ্যে সেনসেশন এবং সেন্স অব রিলিজ তৈরি হয়ে থাকে। অন্যদিকে অর্গ্যাজম হলো, সুতীব্র শারীরীক ও মানসিক ক্লাইমেক্স। এ সময় শ্রোণিচক্র ও যৌনাঙ্গের চারপাশে ছন্দোবদ্ধভাবে পেশি সংকুচিত হয়। “আমরা অর্গ্যাজমকে ডিফাইন করি প্লেজার, হৃদস্পন্দের মাত্রা ও সেক্সচুয়াল টেনশন রিলিফের ওপর”। অতএব দেখা যাচ্ছে, নারী ও পুরুষ দুজনের ক্ষেত্রেই অর্গ্যাজম একই ব্যাপার। “একজন পুরুষের বীর্যপাত হওয়ার পূর্বেও তার এক বা একাধিকবার অর্গ্যাজম হতে পারে।অর্গ্যাজম হওয়ার জন্য যে সিমেন অথবা ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই”। কোনো কোনো সময় অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশন একসাথেও হতে পারে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা সময়েও ঘটতে পারে।

নারীর ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন। একজন পুরুষ যদিও ইজ্যাকুলেশনের সময় স্প্যার্ম রিলিজ করে। একজন নারী অর্গ্যাজম অথবা সেক্সচুয়াল অ্যাকটিভিটির সময় কোনো ডিম নিঃস্বরণ করে না। নারীর ডিম তার গর্ভাশয়ে জমা থাকে, এটি চক্রাকারে প্রতি মাসিকে একটি করে নিঃস্বরণ হয়। একজন নারী সেক্স করলেও তার ডিম নিঃস্বরণ হয়, সেক্স না করলেও তার ডিম নিঃস্বরণ হয়। এ প্রক্রিয়াকে বলে অভিউলেশন বা ডিম্বোস্ফোটন। পুরুষের শুক্রাণু নারীর ডিম্বাশয়ে প্রবেশ করে, এজন্য পুরুষের ইজ্যাকুলেশন প্রয়োজন। কিন্তু পুরুষের তো কোনো ডিম্বাশয় নেই, যে নারী ইজ্যাকুলেশনের মাধ্যমে পুরুষকে প্র্যাগনেন্ট করবে!

তবে নারীরও একপ্রকার “ইজ্যাকুলেশন” আছে। এটাকে বলে “squirting’’। এটি অর্গ্যাজম থেকে আলাদা ব্যাপার। স্কোয়ার্টিং এর সময় নারীর যোনি থেকে পুরুষের মতো কোনো স্প্যার্ম বা ডিম রিলিজ হয় না। এটি কী দিয়ে তৈরি এটা নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না। তাদের মধ্যে এ নিয়ে বিতর্ক ও গবেষণা চলছে। ইন্টারকোর্সের সময় নারীর যোনিতে একপ্রকার ন্যাচারাল লুব্রিকেন্ট তৈরি হয়, যেটি পেনিট্রেশনকে মসৃণ করে ও ঘর্ষণ হ্রাস করে।  নারীর ইজ্যাকুলেশনের তরল পদার্থটি কী দিয়ে তৈরি সেটি ব্যাখ্যা করার জন্য বেশ কিছু থিওরি আছে। “একটি থিওরি অনুসারে, এটি উৎপন্ন হয় “Skene’s glands” থেকে। যেটি তার মূত্রনালীর আশেপাশের অবস্থান করে। এ গ্ল্যান্ডকে পুরুষের প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের সমতূল্য মনে করা হয়”।

যাইহোক। এতক্ষণে আপনারা হয়তো বুঝতে পেরেছেন, অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশনের তারতম্য। অর্গ্যাজম হলো, সেক্সচুয়াল টেনশন রিলিফের একটি বায়োলজিক্যাল প্রক্রিয়া, যেটি শ্রোণিচক্রের ছন্দোবদ্ধ সংকোচন, হ্রদস্পন্দন বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের কিছু হর্মোন ও নিউরোট্রান্সমিটার নিঃস্বরণের সাথে জড়িত যেমন ডোপামিন, অক্সিটোসিন ও এন্ডোরপিন। নারী ও পুরুষ দুজনের ক্ষেত্রেই অর্গ্যাজমের সময় এই হর্মোন ও নিউরোট্রান্সমিটারগুলো ডিসচার্জ বা নিঃস্বরণ হয়।

তবে পুরুষ ও নারীর মধ্যে দু-একটি নিউরোট্রান্সমিটারে কিছুটা তারতম্য আছে। উদাহরণস্বরূপ, পুরুষের অর্গ্যাজমের সময় তাদের মস্তিষ্কে হর্মোন টেস্টোস্টেরন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেটি তার যৌন সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে ও অর্গ্যাজমে তীব্রতা সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, নারীর ক্ষেত্রে, কিছুকিছু প্রমাণ আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছে যে, হর্মোন প্রোল্যাক্টিন তার ইনফ্রেক্টরি পিরিয়ড নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে। এটি হলো অর্গ্যাজমের পরপর, যখন তার পক্ষে পরবর্তী অর্গ্যাজম অর্জন করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। নারীর অর্গ্যাজমের পরপর প্রোল্যাক্টিন লেভেল বৃদ্ধি পায়। যেটি সাময়িক সময়ের জন্য তার যৌন জাগরণ হ্রাস করে।

অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশনের পার্থক্য:

অর্গ্যাজম এবং ইজ্যাকুলেশন সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। পুরুষের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশন একই সাথে হয়। এজন্য তারা মনে করে , নারীদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। নারীর অর্গ্যাজম একটি নিউরোকেমিক্যাল ব্যাপার, অর্গ্যাজম ছাড়াও বীর্যপাত হতে পারে। সেটা নারীর ভালভা এবং ক্লাইটোরিস হোক অথবা পুরুষের পেনিসই হোক__ কোনো ব্যাপার না।

প্রতিটি নারীর কী বীর্যপাত হয়?

পুরুষের মতো নারীরও ডিসচার্জ হয়, তবে প্রতিবার সেক্স করার পরই এটা বের হবে এমন কোনো কারণ নেই। বেশিরভাগ সময় তাদের শরীরের শুধু টেনশন রিলিফ হয়, যেটা তাদের মস্তিষ্কে কিছু নিউরোকেমিক্যাল রিলিজ করে। একবার গেম শেষ হলে, নারীর মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অক্সিটোসিন রিলিজ করে, যেটি জরায়ুর ভেতর সংকোচন ও প্রসারণ তৈরি করে। অক্সিটোসিন হলো ভালো অনুভূতির হর্মোন। এটি পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে তৈরি হয় এবং নিঃস্বরণ ঘটে হাইপোথ্যালামাসে!

এই গ্ল্যান্ড থেকে ডোপামিনও নিঃস্বরণ হয়, যেটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ভেন্ট্রাল টেগমেন্টাল অ্যারিয়া থেকেও ডোপামিন নির্গত হয়, যা আপনার ব্রেনের অন্যান্য অংশের সাথে যোগাযোগ করে সন্তুষ্টি নিশ্চিত করে। কিন্তু যোনি থেকে কিছু বের হচ্ছে না যে? আগেই বলেছি, অর্গ্যাজম আর ইজ্যাকুলেশন বা বীর্যপাত এক কথা নয়। তবে ১০  শতাংশ নারীর অর্গ্যাজমের সাথে ইজ্যাকুলেশন বা বীর্যপাতও হয়। উইলি অনলাইন লাইব্রেরীতে প্রকাশিত একটি রিসার্চ পেপারে বলা হয়, মহিলা বীর্যপাত বলতে মূত্রনালী দিয়ে নির্গত প্রায় এক চা চামচ (3–5 cc) তরল বোঝায় যা দেখতে জলযুক্ত চর্বিমুক্ত দুধের মতো, স্বাদ মিষ্টি এবং প্রস্রাবের মতো গন্ধ হয় না। তরল বিশ্লেষণ দেখায় যে এটি প্রস্রাব থেকে রাসায়নিকভাবে ভিন্ন। আরও পড়ুনঃ যে সকল নারীর অর্গাজম হয়না তারা উচ্চমাত্রিকভাবে বিবর্তিত?

তাহলে পুরুষের কেন অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশন একই সাথে হয়?

না। এটা সবসময় ঘটে না। শুধু নারীর অর্গ্যাজমই যে মানসিক ব্যাপার তাই নয়, পুরুষের অর্গ্যাজমটাও মানসিক ব্যাপার। বীর্যপাত একটি জটিল প্রক্রিয়া, যার মধ্যে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাঠামো জড়িত এবং বিস্তৃত নিউরোকেমিক্যাল এবং হরমোনাল নিয়ন্ত্রণের অধীনে এটি ঘটে। অবশ্যই অর্গ্যাজম বীর্যপাতের সাথে সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু এটি ভিন্ন রকম একটি সাইকোলজিক্যাল প্রসেস, বীর্যপাত থেকে আলাদা। এ অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশনকে সিনক্রোনাইজ ঘটনা ভাবা যেতে পারে। যাইহোক, এ দুটি এক না। একই পুরুষ বীর্যপাতের পূর্বে একাধিক অর্গ্যাজম তৈরি করতে পারে। এমনকি বীর্যপাত হওয়ার পূর্বে তারা মাল্টিপল অর্গ্যাজমও তৈরি করে।

অনেকে হয়তো এ কথাটি শুনে অবাক হবেন কারণ তাদের এ ব্যাপারে কোনো শিক্ষা নেই। এমনকি পেনিসের ক্ষেত্রেও বীর্যপাত, অর্গ্যাজম একই ব্যাপার নয়? সেক্স আসলে শুধু জৈবিক নয়। এটি বায়োলজি, সাইকোলজি ও সোশিওলজির একটি মিশ্রণ।

কীভাবে এটি কাজ করে?

১) মানুষকে শেখানো হয়, অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশন একই ব্যাপার।

২) আর এজন্য তারা যখন সেক্স করে তখন তারা দুটিকে একসাথে দেখতে চায়।

৩) তারা ইজ্যাকুলেশন বা বীর্যপাত হলেই সেটা অর্গ্যাজম ভেবে বসে থাকে!

এর মানে এই নয় যে, অর্গ্যাজম খুব জটিল একটি ব্যাপার। এর অর্থ এটাই যে, একজন ব্যক্তির বীর্যপাত হলেই যে অর্গ্যাজম হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বীর্যপাত ছাড়াও আপনি অর্গ্যাজম অনুভব করতে পারেন কিন্তু আপনি সেটা রিয়ালাইজ করতে পারেন না। আপনি যদি পর্নোভিডিও দেখে থাকেন, তবে আপনি দেখবেন বীর্যপাতের সময় কিছু পুরুষ গর্জন করছে, এর কারণ হলো তার শুধু বীর্যপাতই হয়নি, তার অর্গ্যাজমও হয়েছে। আবার কিছু কিছু পুরুষ চুপচাপ বীর্যপাত করে কারণ তার কোনো অর্গ্যাজম হয়নি। নারীরা যেমন চরম উত্তেজনায় গোঙায়, পুরুষ  সবসময় তেমন করে না। কারণ পুরুষের নারীর পর্নোস্টারের মতো সবসময় অর্গ্যাজম নাও হতে পারে।

বিস্তারিত জানতে নিচের বইটি পড়তে পারেন। বইটি সংগ্রহ করতে পারেন : হাইপারস্পেস থেকে ( Hyperspace: The Dimension Hoppers )

আরও পড়ুন:

তথ্যসূত্রঃ