Can't find our books? Click here!

দার্শনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সম্রাট আকবর

ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে সম্রাট আকবর ছিলেন এক আর্থ শাটারিং ব্যক্তিত্ব! তিনি জালালউদ্দিন মোহাম্মদ আকবর নামে পরিচিত ছিলেন। ১৫৫৬ থেকে ১৬০৫ সাল পর্যন্ত তিনি মুঘল সম্রাজ্যের শাসক ছিলেন (তৃতীয়)(১)। আকবর জন্মগতভাবে একজন মুসলিম হলেও তার চিন্তার নীতি ছিল সর্বজনীন। ইতিহাসে তার মতো আর কোনো মুসলিম শাসক ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতি এতটা সহনশীল ছিলেন বলে জানা যায় না। কিন্তু এর পেছনে রহস্য কী? আবুল ফজল তার গ্রন্থ “আকবরনামায়” লিখেছিলেন, আকবর একবার মান্ধাকার নামক পাশ্ববর্তী একটি গ্রামে শিকারে বের হয়েছিলেন, যখন তিনি একদল চারণ কবির গান শুনলেন। এ গান তাকে এতবেশি মুভ করেছিল যে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনি খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর দরবারে ভ্রমণ করবেন। তার অনুসারীরা এত দূরবর্তী এলাকায় তাকে ভ্রমণ করতে নিষেধ করেছিল, কারণ এটি ছিল বিপদজ্জনক একটি স্থান।

কিন্তু সকল প্রতিরোধ অগ্রাহ্য করে তিনি গরীব নাওয়াজের দরবারে পৌঁছান। চারণ কবিরা তাকে স্বাগত জানিয়েছিল এবং তাকে আরও অনেক গান শুনিয়েছিল। তারা গ্রেট আকবরকে বলেছিলেন, তারা খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর অনুসারী। আকবর চিশতী মইনুদ্দিনকে নিয়ে তার অনুসারীদের গান ও ভালোবাসা দেখে সম্মোহিত হয় এবং তিনি সেখানে কিছুদিন থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে অবস্থানকালীন আকবর খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর শিক্ষা পদ্ধতির সাথে পরিচিত হয়। তিনি বিশেষ করে প্রভাবিত হয়েছিলেন, সূফিদের সহনশীলতা ও সহানুভূতি দেখে। আকবর খাজা গরীব নাওয়াজের পদচিহ্ন অনুসরণ করলেন এবং তিনিও তার সম্রাজ্যে সহনশীলতা ও নিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়ন করলেন। যাইহোক, আকবর তার স্পিরিচুয়াল উপদেষ্টা শেখ সেলিম চিশতীর দ্বারাও অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। শেখ সেলিম ছিলেন খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর বংশধর এবং তিনি ছিলেন আকবরের শ্বশুর। তিনি একজন অত্যন্ত সম্মানিত সুফি সাধক ছিলেন এবং আকবর তাঁর শিক্ষা দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত ছিলেন। ১৫৬২ সালে তিনি সর্বপ্রথম আজমির ভ্রমণ করেছিলেন।খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর প্রতি তার অনুরাগ তার বিভিন্ন লেখায় প্রকাশ হয়েছিল। আকবর লিখেছিলেন(২)-

O Moinuddin Chishti, you are the light of my heart,

 The source of my inspiration, the guide of my soul.

I come to you in my times of need,

And you always know how to comfort me.

You have taught me the true meaning of love,

And shown me the way to God.

I am eternally grateful for your guidance, and I will always cherish your memory.

খাজা মইনুদ্দিন চিশতী ছিলেন মোহাম্মদ (আ) উত্তরসুরী , তিনি হজরত আলী (আ) সন্তান ইমাম হোসাইনের সরাসরি উত্তরসূরী (৩)। তিনি এমন একজন মনিষী যিনি বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি মানুষের সাথেই আল্লাহর সম্পর্ক আছে, মানুষ আর প্রকৃতির সম্পর্ক নিগুড়। সমুদ্রের একটি বাবল, সমুদ্র থেকে পৃথক হলেও, এটি যেমন পানি দিয়ে গঠিত__ তেমনি মানুষকে সংবেদনগত দিক থেকে মহাজাগতিক সত্য থেকে পৃথক মনে হলেও, মহাবিশ্ব ও মানুষের সম্পর্ক নির্ধারণ করার জন্য পৃথক কোনো পরিমাপক বা ক্রাইটেরিয়া নেই। তিনি বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি মানুষই নবী ও রাসুল যদি তিনি এই কসমিক ইউনিটি বুঝতে পারেন(৪)।

দার্শনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সম্রাট আকবর
ফিগার:এ ছবিতে আমরা খাজা মইনুদ্দিন চিশতির হাতে একটি কালো পাথর দেখতে পাচ্ছি। এ পাথরটির বিভিন্ন দার্শনিক ইন্টারপ্রিটেশন আছে। একটি ইন্টারপ্রিটেশন অনুসারে, একটি পাথরের সর্বত্র যেমন একই উপাদান উপস্থিত, তেমনি মহাবিশ্বের সর্বত্র একই রিয়েলিটি উপস্থিত।

মইনুদ্দিন চিশতী প্রচার করেছিলেন, যিনি মহাবিশ্বের সর্বজনীন সত্যের সাথে জড়িত, তিনিই ঈশ্বরের মেসেঞ্জার। তিনি জীবন ও মহাবিশ্বের একত্বে বিশ্বাস করতেন, তিনি বিশ্বাস করতেন, ভালোবাসাই একমাত্র ডিফেন্স মেকানিজম, যার মাধ্যমে বিশ্বের সকল মানুষকে একীভূত করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তিনি বলেছিলেন, “Love is the language of the heart, and it is the only language that can truly unite us”। খাজা মইনুদ্দিন চিশতী বিশ্বাস করতেন, মহাবিশ্ব সেলফ সিমিলার। উপমা হিসেবে, একটি এক কোষী জীব যেমন বাইনারী ফিশন পদ্ধতিতে নিজেকে অসংখ্য ভাগে বিভক্ত করে কিন্তু জেনেটিক উপাদান একই, তেমনি আমরা এ মহাবিশ্বে যা কিছু দেখছি, সবকিছুর ভেতর একটি হিডেন ইউনিটি কাজ করছে, আর সেটার অনুসন্ধান ও উপাসনা করাই এবাদত। খাজা মইনুদ্দিন চিশতী আরও বলেছিলেন, “The whole universe is a mirror, and God is the reflection in that mirror or A friend of God must be generous like a river. We all get water from the river to quench our thirst. It does not discriminate whether we are good or bad or whether we are a relation or a stranger(৪)“। আমরা বাদশাহ আকবরের মধ্যেও একই সত্যের প্রতিফলন দেখতে পাই। বাদশাহ আকবর বলেছিলেন, “The different religions are like different streams that flow into the same ocean”। তিনি আরও বলেছিলেন, সকল ধর্মের ফাউন্ডেশন একই কেবল, শাখা ভিন্ন ভিন্ন। সকল ধর্মের মূল কথা হলো, ভালোবাসা, শান্তি ও সহানুভূতি। বাদশা আকবরের পিতা বাদশাহ হুমায়ুন  ছিলেন একজন দার্শনিক, চিন্তাশীল ও বিজ্ঞানমনস্ক।(৫)

বাদশাহ হুমায়ুনের পুত্র বাদশাহ আকবর ছিলেন ইতিহাসের এক মহান যোদ্ধা। তার মিলিটারি ক্ষমতা ছিল খুবই কৌশলী ও বুদ্ধিদীপ্ত। তার সময় মুঘল সৈন্যরা অসংখ্য রাজ্য জয় করেছিল, তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্র নিজের সম্রাজ্য সম্প্রসারণ করছিলেন। কিন্তু ধর্মীয় দিক থেকে তিনি ছিলেন সুপার ফ্ল্যাক্সিবল। আসলে প্রচলিত দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে আকবর ধার্মিক ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক ও সর্বজনীন মন। মইনুদ্দিন চিশতী বলেছিলেন, “A friend of God must have affection like the Sun. When the sun rises, it is beneficial to all irrespective of whether they are Muslim, Christian, or Hindu.(৫ ) তিনি আরও বলেছিলেন,  “A friend of God must be generous like a river” । আকবার এটাই রিপিট করেছিলেন। তিনি তৎকালীন সময়ে অমুসলিমদের ওপর আরোপিত জিজিয়া কর নিষিদ্ধ করেছিলেন, যেটি একটি ধর্মের সাথে অন্য ধর্মের বৈষম্য সৃষ্টি করে।  আকবর বিয়ে করেছিলেন একজন হিন্দু নারী মারিয়াম-উজ-জামানকে, যিনি যোধা বাই বলে পরিচিত ছিলেন। যোধা বাই ছিলেন রাজা ভরমল এর কন্যা। সম্রাট আকবরের সাথে যোধা ভাইয়ের গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। আকবর যোধা বাই-এর ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেননি। তিনি তার প্রাসাদে স্ত্রীর জন্য একটি হিন্দু মন্দির নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। আকবরের আদালতে মারিয়াম-উজ-জামান ছিলেন একজন ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তিনি তার বুদ্ধিমত্তা ও সৌন্দর্যের জন্য সুপরিচিত ছিলেন।

দার্শনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সম্রাট আকবর
ফিগার: সম্রাট আকবর এবং তার স্ত্রী যোধা বাই

আকবর একজন যোদ্ধা হলেও তিনি শিল্প ও বিজ্ঞানের একজন কঠিন সমর্থক ছিলেন। তার লাইব্রেরীতে বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত চিন্তাশীলদের লেখা প্রায় ২৪,০০০ গ্রন্থ পাওয়া যায়। “Divine Faith: The Eclectic Religion of Akbar the Great” গ্রন্থে জন রিচার্ড বলেছিলেন, আকবর বিশ্বাস করতেন সকল ধর্ম একটি কমনগ্রাউন্ড শেয়ার করে। তিনি হিন্দু, মুসলিম, বোদ্ধ, খ্রিষ্ঠান এবং জরথুস্ত্র সকল ধর্মের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তিনি দেখেছিলেন, সকল ধর্মের মধ্যেই একটি কমনগ্রাউন্ড আছে। এভাবে, তিনি সকল ধর্মের সর্বজনীন নিয়মগুলো সমন্বিত করে একটি নতুন ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ ধর্মের নাম ছিল “ডিভাইন ফ্যাইথ”। যেটি ইসলাম ধর্মের রক্ষনশীল ও সংকীর্ণ মতাদর্শ থেকে অনন্য ও উদার!

আকবর কী বিজ্ঞানের সমর্থক ছিলেন?

আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে যে আকবর একজন বিজ্ঞানের সমর্থক। তিনি ফতেহপুর সিকরিতে “এবাদত খানা অথবা “House of worship” প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সূফি আদর্শ অনুসারেই এটি পরিচালিত হয়েছিল। এবাদত খানায় সাধারণত মুসলিমরা নামাজ পড়ে কিন্তু সূফি মতাদর্শে বিশ্বাসীদের মসজিদ হলো বিজ্ঞান,দর্শন, সুর ও নৃত্যের একটি বন্দর। আনুষ্ঠানিক ধর্মে বিশ্বাসীরা সালাত শব্দের অর্থ নামাজ মনে করে কিন্তু সূফি মতাদর্শে বিশ্বাসীরা মনে করেন, সালাত শব্দের অর্থ গবেষণা। তারা যাকাত বলতে বোঝেন, অজ্ঞতার অবসান এবং হজ্ব বলতে বোঝেন একত্বের অনুধাবন। কোরবান বলতে বোঝেন, বিশ্বমানবতার কল্যাণের জন্য নিজের ব্যক্তিগত সীমারেখা লঙ্ঘন, মহাজাগতিক পারসোনালিটি চর্চার মনোভাব, এখানে কোরবান পশু জবাই করার সাথে সম্পৃক্ত কোনো রিয়ালিটি নয়, এখানে এটি একটি ফিলসফিক্যাল আদর্শ(৬)।

“একইভাবে, বাদশাহ আকবরের এবাদত খানা ছিল সিক্রেট উন্মোচনের একটি জায়গা। এখানে সকল ধর্মের সকল দার্শনিক ও বিশেষজ্ঞদের আহ্বান করা হতো। তারা প্রত্যেকে নিজেদের ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিকোণ উপস্থাপন করতেন। এটি ছিল নিরপেক্ষভাবে জ্ঞান প্রচার ও সম্প্রসারণের একটি প্রক্রিয়া। কারণ আকবর বিশ্বাস করতেন, সকল মানুষের মধ্যে সেলফ সিমিলারিটি আছে। সকল কিছুর মধ্যে একটি প্রতিসাম্য ও একতা আছে।”

দার্শনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সম্রাট আকবর
ফিগার: বাদশাহ আকবরের এবাদত খানা। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, উপাসনালয় কোনো বিশেষ ব্যক্তির জন্য নয়। একটি উপাসনালয়ে কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক ও বিজ্ঞানী সবার অংশগ্রহণ থাকবে । একটি উপাসনালয় হলো একটি সূর্যের মতো, যেটি হিন্দু,মুসলিম,বোদ্ধ ও খ্রিষ্ঠান সবার জন্য উন্মুক্ত।

আমরা মহান বিজ্ঞানী আইনস্টাইনকেও, প্রকৃতির ফান্ডামেন্টাল ফোর্সগুলোর মধ্যে ইউনিটি অনুসন্ধান করতে দেখতে পাই। আইনস্টাইন তার জীবনের শেষ ৩০ বছর অপচয় করেছিলেন, গ্র্যান্ড ইউনিফায়েড থিওরির সন্ধানে। এছাড়া স্ট্রিং থিওরির মূল লক্ষ্য হলো, একটি দেড় ইঞ্চি সমীকরণ অনুসন্ধান, যেটাকে গড ইকুয়েশন বলা হয়, এ ইকুয়েশনের মূল শক্তি হলো প্রকৃতির ফান্ডামেন্টাল ফোর্সগুলোর মধ্যে একতা ও প্রতিসাম্যতা। এছাড়া, আমরা আজ জানি, মহাবিশ্বের সর্বত্র ফিজিক্সের ইকুয়েশনগুলো সমান। অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সিতে কোন ধরনের পদার্থবিদ্যার আইন কাজ করে সেটি জানার জন্য, আমাদের কোনো ডায়মেনশনাল পোর্টাল তৈরি করার প্রয়োজন নেই, আমার হাতের মুঠোয় যে পদার্থবিদ্যার আইন উপস্থিত, একই পদার্থবিদ্যার আইন মহাবিশ্বের সর্বত্র। খাজা মইনুদ্দিন চিশতী অথবা বাদশাহ আকবরের বিশেষত্ব ছিল, তারা ফিলসফিক্যালি একটি কসমিক ইউনিটির দিকে ফোকাস করেছিলেন, একটি আন্তঃসংযোগ।

            আকবর অ্যাস্ট্রোনোমি এবং ম্যাথম্যাটিকসের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। দিল্লীতে তার একটি অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল মানমন্দির ছিল বলেও জানা যায়। তবে এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক কন্ট্রাডিকশন আছে । এছাড়া তিনি ফতেউল্লাহ সিরাজীর একজন সমর্থক ছিলেন, যিনি ত্রিকোণোমিতি ফাংশন গণনা করার জন্য নতুন উপায় অনুসন্ধান করেছিলেন এবং আলজেবরার ওপর একটি বইও লিখেছিলেন। আকবর বিজ্ঞানকে সমর্থন করেছিলেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে সম্প্রসার করেছিলেন মুঘল সম্রাজ্যের উন্নতির জন্য(৭)।

তার সম্রাজ্যের বিশেষজ্ঞরা জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, আমরা মহারাজা জয়সিং স্থাপিত “Jantar Mantar observatory”- এর কথা বলতে পারি। তিনি ছিলেন তখনকার সময়ের একজন শ্রেষ্ঠ জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও গণিতবিদ। মহারাজা জয়সিং-এর সময় সম্রাট আকবরের ছেলে সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্ব ছিল।

আকবরের পর ভারতীয় উপমহাদেশের ইন্টেলেকচুয়াল ও বৈজ্ঞানিক পরিবেশ এ ধরনের উদ্ভাবনকে প্রভাবিত করেছিল এতে কোনো সন্দেহ নেই। আকবরের কোর্টের একজন বিখ্যাত স্কলার বা পণ্ডিত ছিলেন আবুল ফজল। তিনি মুঘল সম্রাজ্যের ওপর একটি বোধগম্য এনসাইক্লোপিডিয়া লিখেছিলেন, যেখানে বিজ্ঞানের জন্যেও একটি শাখা ছিল। এ সেকশনে জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত, মেডিসিন এবং ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়েও আলোচনা করা হয়েছিল। আকবরের কোর্টের আর একজন স্কলার ছিলেন ফাইযি, তিনি ছিলেন একজন কবি ও গণিতবিদ। ফাইযি গণিতের ওপর সংস্কৃত ভাষায় লেখা বই “Lilavati” ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন।(৮-৯)

দার্শনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সম্রাট আকবর
এ বইটি সম্রাট আকবরের স্কলার ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন।

            আকবর  কেবল একজন সম্রাট অথবা যোদ্ধাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বিজ্ঞান ও গণিতের সমর্থক। তিনি তার রাজ্যের স্কলারদের বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রেরণ করেছিলেন, নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার জন্য।  তিনি ছিলেন কবিতা, সুর ও শিল্পের একজন একনিষ্ঠ অনুরাগী। তিনি ছিলেন একজন মহান দার্শনিক। তিনি তার সম্রাজ্যে বিজ্ঞান চর্চা ও বিস্তারের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশের বিজ্ঞান ও দর্শনের ইতিহাসে আকবর এক আনপ্যারালাল ব্যক্তিত্ব।(৮)  

তথ্যসূত্র:

  1. AKBAR AND THE DARGAH OF AJMER, JSTOR, According to Abul Fazl, Akbar’s court historian, Akbar was on a hunting trip near the village of Mandhakar when he heard the minstrels singing. He was so moved by their songs that he decided to visit the shrine, despite the warnings of his followers about the dangers of traveling to remote places1.
  2. The poem that you have cited is often attributed to Akbar, but there is no definitive evidence that he wrote it. The earliest known source of the poem is a book called “The Sufi Path of Love” by Pir Vilayat Inayat Khan, which was published in 1926.
  3. Moiuddin Chishti Family Tree: Khwaja Moinuddin Chishti, also known as Gharib Nawaz, was a Persian Sunni Muslim preacher and the founder of the Chishtiyya order of Sunni mysticism in the Indian subcontinent. He was born in Sijistan (modern-day Sistan) in Iran in 1141-42 CE and later settled in Ajmer, India where he preached and drew the attention of the local populace, poor people, peasants, and nobles from far and wide1.According to some sources, Khwaja Moinuddin Chishti was both a Hasani (maternal) and Husseini (paternal) Syed2He was blessed with direct lineage to the Holy Prophet ﷺ through his father, Khwaja Ghiyasuddin Hasan (ra), who was a direct descendant of Hazrat Imam Hussein, son of Hazrat Ali2
  4. Sadar Uddin Ahmed Chishty is a Sufi author who writes about Faqirism and Higher Spirituality
  5. The URL provided leads to a page on the website wahiduddin.net, which contains a collection of sayings attributed to Khwaja Mu’inuddin Chishti, a famous Sufi saint and founder of the Chishtiyya order of Sunni mysticism in the Indian subcontinent1The page contains many quotes and teachings from Khwaja Mu’inuddin Chishti on topics such as love, devotion, and spiritual enlightenment1
  6. it is true that King Humayun, the father of King Akbar, was known for his interest in philosophy, thinking, and science. Humayun was the second Mughal ruler of India and ruled from 1530 to 1540 and again from 1555 to 15561He inherited the Mughal Empire from his father, Babur, who had founded the dynasty1. Humayun’s return from Persia was accompanied by a large retinue of Persian noblemen and signaled an important change in Mughal court culture. The Central Asian origins of the dynasty were largely overshadowed by the influences of Persian art, architecture, language, and literature. There are many stone carvings and thousands of Persian manuscripts in India dating from the time of Humayun2
  7. Abul Fazl was a famous scholar in Akbar’s court. He was the grand vizier of the Mughal emperor Akbar, from his appointment in 1579 until his death in 16021He was the author of the Akbarnama, the official history of Akbar’s reign in three volumes, (the third volume is known as the Ain-i-Akbari) and a Persian translation of the Bible1. The Ain-i-Akbari is a comprehensive encyclopedia on the Mughal Empire, which also had a section for science. Astronomy, Mathematics, Medicine and Engineering were also discussed in this section1.
  8. Another scholar of Akbar’s court was Faizi, a poet and mathematician. Faizi was the elder brother of Abul Fazl and was also one of the Nine Jewels (Hindi: Navaratnas) of Akbar’s royal court2Faizi translated the Sanskrit book “Lilavati” on mathematics into Persian2. Lilavati is Indian mathematician Bhāskara II’s treatise on mathematics, written in 1150 AD. It is the first volume of his main work, the Siddhānta Shiromani3.

আরও পড়ুন: ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিপক্ষে যুক্তি

দার্শনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সম্রাট আকবর /দার্শনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সম্রাট আকবর /দার্শনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সম্রাট আকবর