সকল নারী অ্যানাল সেক্স ট্রাই করে না। কিন্তু যারা এটি ট্রাই করেছে, আইডেন্টিটির দিক থেকে তাদের রেসপন্স ভিন্ন ভিন্ন। কারও কারও নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হয় এবং তারা এটা পুনরায় রিপিট করতে চায় না। আবার অন্যরা এটাকে একটি ইরোটিক অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে দেখে। কোনো কোনো নারী রেগুলার অ্যানাল সেক্স করতে পছন্দ করে যেমন শাওয়ার নেয়ার পূর্বে অথবা বাওয়েল মুভমেন্ট (মলত্যাগ ) নিশ্চিত করার পর। অ্যানাল সেক্সের প্রতি এক একজনের আগ্রহ এক একপ্রকার এবং তাদের পছন্দের মাঝে ব্যাপক বৈচিত্র্যতা আছে। এটি একটি স্পেক্ট্রাম। “কিছু নারী অ্যানাল সেক্সকে চূড়ান্তভাবে আনন্দদায়ক মনে করে এবং এটার মাধ্যমে তারা অ্যানাল অর্গ্যাজম অ্যাসিভ করে। এক্ষেত্রে, পুরুষ ও নারী দুজনেরই অর্গ্যাজম হয়। কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে ইজ্যাকুলেশন এবং অর্গ্যাজম এক ব্যাপার নয়”।
সাধারণত, এটা মনে করা হয় যে, পুরুষের ইজ্যাকুলেশন হলো যৌন জাগরণ এবং অর্গ্যাজমের সময় সিমেন রিলিজ হওয়া। এ সময় তার শ্রোণিচক্রের পেশি সংকুচিত হয় এবং মূত্রনালী দিয়ে স্প্যার্ম বের হয়। ইজ্যাকুলেশন হওয়ার পর একজন পুরুষের মধ্যে সেনসেশন এবং সেন্স অব রিলিজ তৈরি হয়ে থাকে। অন্যদিকে অর্গ্যাজম হলো, সুতীব্র শারীরীক ও মানসিক ক্লাইমেক্স। এ সময় শ্রোণিচক্র ও যৌনাঙ্গের চারপাশে ছন্দোবদ্ধভাবে পেশি সংকুচিত হয়। “আমরা অর্গ্যাজমকে ডিফাইন করি প্লেজার, হৃদস্পন্দের মাত্রা ও সেক্সচুয়াল টেনশন রিলিফের ওপর”। অতএব দেখা যাচ্ছে, নারী ও পুরুষ দুজনের ক্ষেত্রেই অর্গ্যাজম একই ব্যাপার। “একজন পুরুষের বীর্যপাত হওয়ার পূর্বেও তার এক বা একাধিকবার অর্গ্যাজম হতে পারে। “অর্গ্যাজম হওয়ার জন্য যে সিমেন অথবা ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই”। কোনো কোনো সময় অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশন একসাথেও হতে পারে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা সময়েও ঘটতে পারে।
“নারীর ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন। একজন পুরুষ যদিও ইজ্যাকুলেশনের সময় স্প্যার্ম রিলিজ করে। একজন নারী অর্গ্যাজম অথবা সেক্সচুয়াল অ্যাকটিভিটির সময় কোনো ডিম নিঃস্বরণ করে না। নারীর ডিম তার গর্ভাশয়ে জমা থাকে, এটি চক্রাকারে প্রতি মাসিকে একটি করে নিঃস্বরণ হয়। একজন নারী সেক্স করলেও তার ডিম নিঃস্বরণ হয়, সেক্স না করলেও তার ডিম নিঃস্বরণ হয়। এ প্রক্রিয়াকে বলে অভিউলেশন বা ডিম্বোস্ফোটন। পুরুষের শুক্রাণু নারীর ডিম্বাশয়ে প্রবেশ করে, এজন্য পুরুষের ইজ্যাকুলেশন প্রয়োজন। পুরুষের তো কোনো ডিম্বাশয় নেই, যে নারী ইজ্যাকুলেশনের মাধ্যমে পুরুষকে প্র্যাগনেন্ট করবে”!
তবে নারীরও একপ্রকার “ইজ্যাকুলেশন” আছে। এটাকে বলে “squirting’’। এটি অর্গ্যাজম থেকে আলাদা ব্যাপার। স্কোয়ার্টিং এর সময় নারীর যোনি থেকে পুরুষের মতো কোনো স্প্যার্ম বা ডিম রিলিজ হয় না। এটি কী দিয়ে তৈরি এটা নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না। তাদের মধ্যে এ নিয়ে বিতর্ক ও গবেষণা চলছে। ইন্টারকোর্সের সময় নারীর যোনিতে একপ্রকার ন্যাচারাল লুব্রিকেন্ট তৈরি হয়, যেটি পেনিট্রেশনকে মসৃণ করে ও ঘর্ষণ হ্রাস করে। নারীর ইজ্যাকুলেশনের তরল পদার্থটি কী দিয়ে তৈরি সেটি ব্যাখ্যা করার জন্য বেশ কিছু থিওরি আছে। “একটি থিওরি অনুসারে, এটি উৎপন্ন হয় “Skene’s glands” থেকে। যেটি তার মূত্রনালীর আশেপাশের অবস্থান করে। এ গ্ল্যান্ডকে পুরুষের প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের সমতূল্য মনে করা হয়”।
যাইহোক। এতক্ষণে আপনারা হয়তো বুঝতে পেরেছেন, অর্গ্যাজম ও ইজ্যাকুলেশনের তারতম্য। অর্গ্যাজম হলো, সেক্সচুয়াল টেনশন রিলিফের একটি বায়োলজিক্যাল প্রক্রিয়া, যেটি শ্রোণিচক্রের ছন্দোবদ্ধ সংকোচন, হ্রদস্পন্দন বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের কিছু হর্মোন ও নিউরোট্রান্সমিটার নিঃস্বরণের সাথে জড়িত যেমন ডোপামিন, অক্সিটোসিন ও এন্ডোরপিন। নারী ও পুরুষ দুজনের ক্ষেত্রেই অর্গ্যাজমের সময় এই হর্মোন ও নিউরোট্রান্সমিটারগুলো ডিসচার্জ বা নিঃস্বরণ হয়।
“তবে পুরুষ ও নারীর মধ্যে দু-একটি নিউরোট্রান্সমিটারে কিছুটা তারতম্য আছে। উদাহরণস্বরূপ, পুরুষের অর্গ্যাজমের সময় তাদের মস্তিষ্কে হর্মোন টেস্টোস্টেরন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেটি তার যৌন সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে ও অর্গ্যাজমে তীব্রতা সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, নারীর ক্ষেত্রে, কিছুকিছু প্রমাণ আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছে যে, হর্মোন প্রোল্যাক্টিন তার ইনফ্রেক্টরি পিরিয়ড নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে। এটি হলো অর্গ্যাজমের পরপর, যখন তার পক্ষে পরবর্তী অর্গ্যাজম অর্জন করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। নারীর অর্গ্যাজমের পরপর প্রোল্যাক্টিন লেভেল বৃদ্ধি পায়। যেটি সাময়িক সময়ের জন্য তার যৌন জাগরণ হ্রাস করে”।
প্রশ্ন হলো, অ্যানাল অর্গ্যাজম সম্ভব?
হ্যাঁ, সম্ভব!
“আমরা ইতোমধ্যেই জেনে ফেলেছি, যে অর্গ্যাজম হলো দেহের চূড়ান্ত যৌন উদ্দীপনার সময় টেনশন রিলিফের একটি প্রসেস। এটি একটি নিউরোবায়োলজিক্যাল প্রসেস। এ সময় কোনো তরল ডিসচার্য হয় না, কেবল টেনশন রিলিফ হয়।”
গবেষকরা বলছেন, একজন নারীর যোনিতে যেমন সেক্সচুয়াল স্টিমুলেশনের জন্য সেন্সরি নার্ভ আছে, তার নিতম্বের ছিদ্রের চারপাশেও প্রচুর পরিমাণ সেন্সরি নার্ভ উপস্থিত। এ সকল নার্ভের মধ্যে আছে, পুডেন্ডাল নার্ভ __ যেটি ক্লাইটোরিসের সাথে সংযুক্ত। “এ পুডেন্ডার নার্ভ বা স্নায়ুগুলো আপনার সেনশনকে পেরিনিয়াম থেকে ভ্যাজাইনা, ভালবা এবং অ্যানাসে নিয়ে যায়। তার মানে বুঝতেই পারছেন, লোকেশন আলাদা আলাদা হলেও, কানেকশন বা নেটওয়ার্ক একই”।
অ্যানাল অর্গ্যাজম রেগুলার অর্গ্যাজমের মতোই, তবে এটি রেগুলার অর্গ্যাজম থেকেও অনেক তীব্র হয় কারণ পুডেন্ডাল নার্ভ খুবই সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। শুধু নারী কেন, পুরুষও অ্যানাল সেক্স করে মজা পেতে পারে! এটা গোপন কোনো ব্যাপার নয় যে, অ্যানাল সেক্সের সময় পুরুষ যখন পেনিট্রেট করে, তখন তাদের খুবই ক্ষুদ্র একটি ছিদ্র ভেদ করতে হয়, আর এ সময় তারা অবিশ্বাস্য রকমের যৌনসুখ লাভ করে। তবে সকল পুরুষ অ্যানাল সেক্স পছন্দ করে না। প্রচুর পরিমাণ পুরুষ এটার প্রতি একদমই আকৃষ্ট নয়। কেউ কেউ সামান্য কৌতুহল দেখালেও সেটা খুবই কম।
সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে, একটি ভালো পরিমাণ নারী অ্যানাল সেক্স পছন্দ করে কিন্তু তারা এটা নিয়ে আলোচনা করে না। এদের মধ্যে কেউ কেউ এটাতে ডুবে থাকে। শাওয়ার নেয়ার সময়, ড্রিংকস করার সময় এবং কিছু লুব্রিকেশন নিয়ে তারা এটা ট্রাই করে। আবার কিছু কিছু নারী আছে এটাকে ডিসকাসন টেবিলের বাহিরে রাখে_ সেটাও কোনো সমস্যা নয়। শেষ কথা হলো, সেক্সের সময় যদি তোমার দেহ কোনোকিছুতে অস্বস্তি ও অনিরাপত্তাবোধ করে_ এটা করার কোনো প্রয়োজন নেই, কোনো লজ্জা নেই, পরিস্কারভাবে তোমার ভালোবাসার মানুষকে সেটা জানিয়ে দাও।
তথ্যসূত্র:
- Do Women Really Like Anal Sex? Medium
- সায়ানোব্যাক্টেরিয়া থেকে সাইবারসেক্স
বিস্তারিত জানতে পাঠ কর:
বইটি সংগ্রহ কর: হাইপারস্পেস থেকে ( Hyperspace: The Dimension Hoppers )
আরও পড়ুন: সায়ানোব্যাক্টেরিয়া থেকে সাইবারসেক্স
অর্গ্যাজম কী? অ্যানাল অর্গ্যাজমের বায়োলজি?/অর্গ্যাজম কী? অ্যানাল অর্গ্যাজমের বায়োলজি?/অর্গ্যাজম কী? অ্যানাল অর্গ্যাজমের বায়োলজি?/অর্গ্যাজম কী? অ্যানাল অর্গ্যাজমের বায়োলজি?/অর্গ্যাজম কী? অ্যানাল অর্গ্যাজমের বায়োলজি?